শিরোনাম

বই নেই, পাঠকও নেই ভোলার পাবলিক লাইব্রেরিতে

Views: 10

চরফ্যাশন পাবলিক লাইব্রেরি, ভোলা: দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে সুশিক্ষার আলো ছড়ানোর যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে গড়ে ওঠেছিল চরফ্যাশন পাবলিক লাইব্রেরি, তা আজ পরিণত হয়েছে এক শূন্যতা এবং হতাশার গল্পে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বহু মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, কিন্তু আজ সেই স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে সময়ের স্রোতে। এর পরিপ্রেক্ষিতে লাইব্রেরিটির বর্তমান অবস্থা এমন যে, এখানে নেই কোনো পাঠক, নেই পর্যাপ্ত বই, এবং নেই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা।

লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘‘লাইব্রেরিতে বই নেই, পুরোনো বইগুলো নষ্ট হয়ে গেছে, নতুন বই কেনার জন্য কোনো তহবিল নেই এবং পাঠকদের আকর্ষণ করার মতো পর্যাপ্ত রেফারেন্স বই বা সায়েন্স ফিকশন, সাহিত্য, উপন্যাসের অভাব রয়েছে।’’ তাঁর মতে, এতদিন ধরে বহু চেষ্টা করেও কোনো সহযোগিতা তিনি পাননি। ‘‘নিজের জীবদ্দশায় লাইব্রেরির উন্নয়ন দেখে যেতে পারলে শান্তি পেতাম,’’ বলেছেন ফরহাদ।

চরফ্যাশন, যেটি দেশের বৃহত্তম উপজেলা এবং বিশাল জনগণ নিয়ে গড়ে ওঠা, সেখানে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরি এখনও আধুনিকতার ছোঁয়া পায়নি। স্কুল-কলেজ, ব্যাংক, হাসপাতাল—এইসব সুবিধা থাকলেও একটি আধুনিক পাবলিক লাইব্রেরি গড়ে উঠতে পারেনি। চরফ্যাশন উপজেলার যুবক, গবেষকসহ অনেকের জন্য রেফারেন্স বইয়ের অভাব একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই লাইব্রেরিটি, দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় আজ সংকটের মধ্যে রয়েছে। ফরহাদ হোসেন জানান, তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে গিয়েছেন, এমনকি সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের কাছেও গিয়েছিলেন লাইব্রেরির উন্নয়নের জন্য, কিন্তু সেখান থেকেও কোনো সাড়া পাননি।

লাইব্রেরির বর্তমান অবস্থা এমন যে, এখানে সাহিত্য, উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন, শিশুতোষ বইসহ বিভিন্ন ধরনের বই নেই। পুরোনো বইগুলো অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে পাঠকরা কোনো কাজে আসা বই পাচ্ছে না। আর্থিক দুরাবস্থা কারণে লাইব্রেরিতে নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে প্রভাষক ও গবেষক সিরাজ মাহমুদ বলেন, ‘‘গ্রন্থাগার শিক্ষা ও সমাজের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু চরফ্যাশনে আধুনিক লাইব্রেরির অভাব রয়েছে। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।’’

প্রভাষক বেলাল শামীম বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি একটি জাতির মেধা, মনন এবং সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধনের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ।’’

গ্রন্থাগারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, ‘‘উপজেলা প্রশাসন পাবলিক লাইব্রেরির সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছে। আশা করছি, অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।’’

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *