ভোলার মনপুরা উপজেলায় নদীভাঙনকবলিত হতদরিদ্রদের পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের জন্য বরাদ্দ ৫০-৭৫ হাজার টাকার মধ্যে তারা মাত্র ১০ হাজার টাকার মতো পেয়েছেন, বাকিটা চলে গেছে চেয়ারম্যানদের পকেটে।
২০২১-২২ অর্থবছরে এক কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয় মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট, মনপুরা, উত্তর সাকুচিয়া, এবং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের নদীভাঙনকবলিত ১৫২ পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য। তবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, তারা নাম থাকা সত্ত্বেও একাধিক সমস্যা ও জটিলতার কারণে কম পরিমাণ টাকা পেয়েছেন।
মনপুরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেছেন, ইউপি চেয়ারম্যানরা তাদের কাছ থেকে সব কাগজপত্র সংগ্রহ করে সরকারি টাকা উত্তোলন করেছেন, কিন্তু পরে সেই টাকা তারা নিজেরাই আত্মসাৎ করেছেন। যেমন, হাজিরহাট ও মনপুরা ইউনিয়নের কিছু ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, তারা ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে শুধু ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন, যদিও সরকারিভাবে তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৭৫ হাজার টাকা। একই ধরনের অভিযোগ অন্য ইউনিয়নগুলিরও রয়েছে।
একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তাদের নামের তালিকা হালনাগাদ করার সময় অনেক দলের নেতা ও মেম্বারের নাম রাখা হয়েছিল, যারা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত নয়। সেই সঙ্গে, তারা অভিযোগ করেছেন, চেয়ারম্যানরা তাদের থেকে কমিশনও আদায় করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে, তবে এখন পর্যন্ত কোন বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মনপুরা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছেন, কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে, স্থানীয় চেয়ারম্যানরা এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারাও দায়িত্ব অস্বীকার করেছেন। মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন এবং যুবলীগের নেতা জুয়েল চন্দ্র দাসদের সম্পত্তি দেখিয়ে অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, কিন্তু তারা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম