শিরোনাম

বরগুনায় ঘন কুয়াশায় পান চাষীদের সর্বনাশ, শীতের কারণে পান পাতার ক্ষতি

Views: 5

বরগুনা জেলার তালতলী এবং আমতলী উপজেলার পান চাষীরা এই শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। একদিকে শীতের তীব্রতা, অন্যদিকে কুয়াশায় আচ্ছাদিত পরিবেশে পান পাতাগুলি দ্রুত শুকিয়ে লাল হয়ে পড়ে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। ফলে চাষীরা তাদের কষ্টের ফসলের মূল্য পেতে পারছেন না। লাখ লাখ টাকা খরচ করে যাদের পান বরজ তৈরি হয়েছিল, তারা এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন।

এই অঞ্চলের চাষীরা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পান চাষে বিনিয়োগ করলেও বর্তমানে তারা চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। বিশেষত তালতলী ও আমতলী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পান বরজের ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। চাষীরা তাদের কষ্টের ফসল চোখের সামনে হারিয়ে যেতে দেখে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন।

তালতলী উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ও ছোটবগী এবং আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নে পান চাষীরা শীতে পান পাতা ঝরে যাওয়ার ফলে তাদের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে। অনেক চাষীই জানিয়েছেন, তারা তাদের পানের বরজ রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বরজের পান পাতা লাল হয়ে শুকিয়ে পড়েছে।

গুলিশাখালী গ্রামের চাষী কপিল মাঝি জানিয়েছেন, “১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ৭০ শতাংশ জমিতে পান চাষ করেছি। শীত আর কুয়াশায় সব পান পাতা ঝরে পড়েছে। এভাবে চললে আমি কিভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব?” অন্যদিকে, আমতলী উপজেলার খতকালী গ্রামের চাষী আক্কাচ হাওলাদারও একই ধরনের অভিযোগ করেছেন, “এখন কি হবে, এনজিওর কিস্তি দেব কীভাবে? আমি সর্বশান্ত হয়ে গেছি।”

বরজের পান নষ্ট হওয়ার কারণে বাজারে দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক চল্লি (৩৬টি পান) বড় সাইজের ৯০-১০০ টাকায় এবং ছোট সাইজের ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা এখন পানি কেনার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ছালেহ জানিয়েছেন, ঘন কুয়াশা, অতিরিক্ত শীত এবং আবহাওয়া মেঘলা থাকার কারণে পান গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে জৈব বালাইনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে এবং শৈত্য প্রবাহের হাত থেকে বরজ রক্ষায় পলিথিন টাঙিয়ে বেড়া দেওয়া যেতে পারে।

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *