পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার গুলি আউলিয়াপুর গ্রামে মন্দিরের প্রতি ধর্মীয় বিরোধের কারণে হিন্দু ধর্মাবলম্বী দুই পক্ষের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে এবং গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রণগোপালদী ইউনিয়নের গুলি আউলিয়াপুর গ্রামে কৃষ্ণ ও মতুয়া ভক্তদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গুলি আউলিয়াপুর গ্রামে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে একটি কৃষ্ণ মন্দির রয়েছে, যা মতুয়া ভক্তদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রায় এক বছর আগে, মতুয়া ভক্তরা ওই মন্দিরের পাশে নতুন একটি মন্দির স্থাপন করে পূজা শুরু করেন, যা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও বিরোধ ক্রমেই বেড়ে যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, কৃষ্ণা রানী মন্দিরে পূজা দিতে এলে কৃষ্ণ ভক্ত লক্ষ্মী রানীর সঙ্গে তাঁর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন, যার ফলে অন্তত ১০ জন আহত হন।
আজ বুধবার সকালে সংঘর্ষের দ্বিতীয় দফায়, উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কৃষ্ণা রানী (৩৫), চন্দ্র হাওলাদার (১৭), ভিবাস চন্দ্র হাওলাদার (৩০), ঝুমুর রানী (২৫), লক্ষ্মী রানী (৪০), সুবর্না রানী (১৫), অন্তরা রানী (১৫), চপলা রানী (২৫) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। গুরুতর আহত ৬ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মতুয়া ভক্ত কৃষ্ণা রানী অভিযোগ করেছেন যে, কৃষ্ণ ভক্তরা তাদের মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করে খালে ফেলে দেয়। অপরদিকে, কৃষ্ণ ভক্ত লক্ষ্মী রানী দাবি করেছেন যে, মতুয়া ভক্তরা তাদের মন্দিরের জায়গা দখল করে অন্য মন্দির নির্মাণ করেছেন, এবং এ নিয়ে এক সপ্তাহ আগে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ আবদুল আলীম বলেন, “পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছেন এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কৃষ্ণ ভক্তদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”