শিরোনাম

ঝালকাঠিতে অসময়েও থেমে নেই নদীভাঙন

Views: 9

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীতে অব্যাহত নদীভাঙন বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেড়ে গেছে। একদিকে যেমন কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, তেমনি বিপদাপন্ন রয়েছে বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ, সড়ক, কালভার্টসহ ব্যাপক এলাকা। এসব সমস্যার সমাধানে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। স্থানীয়দের দাবি, একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হোক যাতে নদীভাঙন থেকে এলাকাটি রক্ষা পায়।

গত শনিবার সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে জানা যায়, নলছিটির মগর ও ভৈরবপাশা ইউনিয়নে ভাঙনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। এখানে কিছু এলাকা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। মগর ইউনিয়নের বহরমপুর, সিকদারপাড়া, খোজাখালি ও কাঠিপাড়া এলাকার সাতটি সড়ক এবং দুটি কালভার্ট নদী গর্ভে চলে গেছে। এসব এলাকার বহু স্থাপনা ও শত শত বিঘা ফসলি জমিও নদীতে বিলীন হয়েছে। এর ফলে এলাকার বাসিন্দারা প্রচণ্ড ক্ষতির মুখে পড়েছে। বহরমপুর গ্রামের মানচিত্র ছোট হয়ে গেছে, এবং ভিটেমাটি হারিয়ে বহু মানুষ পথে বসেছেন।

এছাড়া, গত ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর বহরমপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন মৃধার বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। যদিও জরুরি ভিত্তিতে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল, তা কার্যকর হয়নি। গ্রামের বাসিন্দা রহমান মৃধা জানান, “আমার বাপ-দাদার কবরের শেষ চিহ্নটুকুও নদী গ্রাস করছে। আমাদের সমস্ত জমি, ভিটে চলে গেছে। আমাদের থাকার জায়গা নেই।”

স্থানীয় মগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাসুম লস্কর শাহাজাদা বলেন, “বহরমপুর, ঈশ্বরকাঠি, কাঠিপাড়া সহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রামের ২০০ বসতবাড়ি, মসজিদ, বিদ্যালয়সহ একাধিক স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে। দ্রুত একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে সামনে আরও বড় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।”

এদিকে, নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভাঙনরোধে উপজেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানাবে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। জেলা পাউবো প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা জানান, “এ বছরের মধ্যে সুগন্ধা নদীর চারটি স্থানে নদীরক্ষা কাজ শুরু করা হবে, যা ভাঙনরোধে কার্যকর হবে।”

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *