এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩০ রানের মাথায় তিন উইকেট হারায় বাবর আজমের দল। দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে বিশ্বকাপে পা রাখা ডাচরা যেন ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। সেখান থেকে রিজওয়ান-শাকিল পাকিস্তানকে টেনে তোলেন। সমান ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছেন দুজনই। এছাড়া শেষদিকে মোহাম্মদ নেওয়াজ ও শাদাব খানের ত্রিশ পেরোনো ইনিংসে বাবররা জয়ের ভিত পায়। পাকিস্তানের এমন ব্যাটিং দৈন্যতায় বড় ভূমিকা রেখেছেন ডাচ পেসার বাস ডি লিড। তিনি একাই চার উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ম্যাচ খেলতে নামার নেদারল্যান্ডসের অলরাউন্ডার বাস ডি লিড বলেছিলেন, ‘আজকের ম্যাচের জন্য আমাদের ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। আমরা শুধু এই ম্যাচ নয়, সেমিফাইনালেও খেলতে চাই।’ তার সেই কথার তেজ ম্যাচ শুরু হতেই টের পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে রানখরায় ভুগছিলেন ফখর জামান। সেইসঙ্গে ইমাম-উল-হকও ছিলেন ব্যাট হাতে অধারাবাহিক। বিশ্বকাপ যাত্রাতেই তাদের রানে ফেরার দারুণ সুযোগ ছিল। দুজনেই ফিরেছেন যথাক্রমে ১২ ও ১৫ রান করে। হোঁচট খাওয়ার শুরুটা হয়েছিল ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। বল ঠিকমতো ব্যাটে আসার আগেই শট খেলতে চেয়েছিলেন ফখর, আক্রমণে থাকা লোগান ভ্যান বিকের হাতেই তিনি ক্যাচ তুলে দেন। এরপর ম্যাচে দায়িত্ব নেওয়ার দায় ছিল অধিনায়ক বাবরের ওপর। তবে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই ৮০-উর্ধ্ব রান পাওয়া এই তারকা ব্যাটার এদিন ক্রিজে রান পেতে বেশ হিমশিম খেয়েছেন
১৭ বল খেলে বাবরের ব্যাটে আসে মাত্র ৫ রান। সে কারণে হয়তো বাউন্ডারি খেলার চাপে পড়েন তিনি। অফ-ব্রেক স্পিনার কোলিন অ্যাকারম্যানের শর্ট লেংথের বল কিছুটা জায়গা নিয়ে পাক অধিনায়ক পুল শট খেলেন। কিন্তু সেই বলটি বাউন্ডারিতে পৌঁছানোর আগেই সাকিব জুলফিকারের তালুবন্দী হয়ে যায়। তার পরপরই বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন ওপেনার ইমামও। ১৯ বলে ১৫ রান করে তিনি ভ্যান মিকেরানের বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন
মাত্র ৩৮ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান দারুণ বিপর্যয়ে পড়ে। তাদের খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে অভিজ্ঞ ব্যাটার রিজওয়ান সঙ্গী বানান তরুণ বাঁ-হাতি সৌদ শাকিলকে। দুজনে ধীরে চাপে ফেলতে থাকেন ডাচ বোলারদের ওপর। তাদের জুটিতে ১৯৯২-এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ১২০ রানের শক্ত ভিত পায়। ডি লিডের বলে আউট হওয়ার আগে শাকিল আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট চালিয়েছেন। ৫২ বলে ৯টি চার ও এক ছক্কায় ৬৮ রান করে স্পিনার আয়ান দত্তের বলে ক্যাচ দেন তিনি। অনেক্ষণ তার সঙ্গে বোঝাপড়া দেখানো রিজওয়ানও এরপর ফেরেন একই ফিগারের ইনিংস খেলে। ডি লিডের বলে স্টাম্প হারানোর আগে তার ইনিংসটি সাজান ৭৫ বলে ৮টি চারের বাউন্ডারিতে।
ডাচদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ফর্মে থাকা ব্যাটার ইফতিখার আহমেদ। তিনি মাত্র ৯ রানে ফিরেছেন। এরপর টেল এন্ডারে মোহাম্মদ নেওয়াজ ও শাদাব খান ৬৪ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু ক্রিজে থিতু হয়েও তাদের কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। নেওয়াজ ৩৯ (৪৩ বল) এবং শাদাব ফেরেন ৩২ রান (৩৪ বল) করে। শেষদিকে পাকিস্তানের পুঁজি কিছুটা বাড়িয়েছেন হারিস রউফ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। শাহিন ১৩ ও রউফ করেন ১৯ রান। রউফ স্টাম্পিং হতেই এক ওভার বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে ডি লিডের চারটি ছাড়াও দুটি উইকেট নিয়েছেন অ্যাকারম্যান। এছাড়া আয়ান, ভ্যান বিক ও মিকেরান একটি করে শিকার করেন।