শিরোনাম

শিশুদের চোখে চশমা: সমাধানে করণীয়

Views: 76

লতিফুর রহমান : আমরা মনে করি, পুষ্টির অভাবে বাচ্চাদের চোখে সমস্যা হয় এবং চশমা পরতে হয়। একটু চিন্তা করলে দেখা যাবে, এটা সত্য নয়। কারণ বস্তি ও গ্রামের শিশুরা অপেক্ষাকৃত কম পুষ্টি পেলেও তাদের চোখে চশমা নেই। অথচ উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের ঘরে ঘরে বাচ্চাদের চোখে চশমা পরতে হচ্ছে।

সুতরাং পুষ্টি নয়, বরং অন্য কিছুর কারণে এমন হচ্ছে। আর সেটা হচ্ছে- খেলাধুলা না করা এবং মোবাইলে আসক্তি। যেসব শিশুরা মোবাইলে বেশি সময় কাটাচ্ছে তাদের চোখে চশমা উঠছে। আসুন কারণটা একটু ঘেটে দেখি।

মূলত চোখে আলো প্রবেশ করলে আমরা দেখতে পাই। চোখের কালো মনিতে রয়েছে প্রথমে কর্নিয়া, অতপর লেন্স এবং সবশেষে রেটিনা। কর্নিয়া ও লেন্সের মধ্যে দিয়ে আলো রেটিনায় পড়লে আমরা দেখতে পাই। লেন্স পেশি দিয়ে আটকানো থাকে। পেশি লেন্সকে নড়াচাড়া করিয়ে কোনো বস্তুকে রেটিনায় ফোকাস করতে সাহায্য করে। দূরের বস্তু দেখার সময় পেশি প্রশারিত হয় এবং কাছের বস্তু দেখার সময় পেশি সংকুচিত হয়।

আমরা খুব কাছ থেকে মোবাইল চালাই। এতে লেন্সের পেশি দীর্ঘসময় সংকুচিত হয়ে থাকে। ফলে পেশি আগের মতো কাজ করে না এবং কাছের বস্তু ঠিক মতো ফোকাস করতে পারি না। আমরা তখন ঘোলা দেখি। ডাক্তার চশমা দেন।

অথচ চশমা মূলত সমাধান দেয় না। কিছুদিন পর আরও বেশি পাওয়ারের চশমা নিতে হয়। কারণ মূল সমস্যা তো রয়েই গেছে। চোখের পেশির যে সমস্যা হয়েছে সেটা তো ঠিক হচ্ছে না।

তাহলে সমাধান কী?

সমস্যা বুঝলে সমাধানও খুব সহজ। বলুন তো, মোবাইলে ফুটবল খেলা দেখা এবং মাঠে ফুটবল খেলার মধ্যে পার্থক্য কী? খুব সহজ উত্তর। মোবাইলে খেলা দেখলে একভাবে তাকিয়ে থাকতে হয়। আর মাঠে খেলা করলে বিভিন্ন দূরত্বে হাজার বার তাকানো হয়। চোখের পেশিকে এক জায়গায় স্থির থাকতে হয় না।

তাই সমাধান হচ্ছে বাচ্চা থেকে বড় সবাইকে বেশি বেশি দূরের দৃশ্য দেখতে হবে। নীল আকাশ, লেক-নদী-সাগর, পার্কের গাছগাছালি ইত্যাদি। আর খেলাধুলা করতে হবে।

একারণে বাচ্চাদের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়া সমাধান নয়। মূলত দূরে না তাকানোকে বেশি দায়ী মনে করতে হবে। আর খেলার সময় কাছে দূরের সব দিকেই তাকানো হয়। এজন্য চোখ থেকে চশমা দূর করতে খেলাধুলার বিকল্প নেই।

এছাড়া কিছু চোখের ব্যায়াম করা যায়। যেমন- চোখের সামনে বুড়ো আঙ্গুল কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে হবে। এভাবে কাছ থেকে দূরে তাকানোর অনূশীলন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *