বরিশাল অফিস: ইলিশ সম্পদ রক্ষায় অভিযানে নেমে এবার জেলেদের ছোঁড়া পেট্রোল বোমা হামলায় নৌ-পুলিশের ইনচার্জ (ওসি), উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীর চর জানপুর নামক এলাকায়।
শুক্রবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জেলেদের হামলায় আহত উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এম এম পারভেজ জানিয়েছেন, ইলিশ সম্পদ রক্ষায় সরকারি চলমান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অসাধু মৌসুমী জেলেরা মেঘনায় ইলিশ শিকার করছিলেন। এ অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে হিজলা উপজেলা নৌ-পুলিশের ইনচার্জসহ একদল পুলিশ নিয়ে অভিযানে নামা হয়। একপর্যায়ে অভিযানিক দল হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনা নদীর চর জানপুর নামক এলাকায় পৌঁছলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নদীতে থাকা জেলেদের একাধিক ট্রলার থেকে তাদের ওপর অসংখ্য পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, এ হামলায় তিনিসহ নৌ-পুলিশের ওসি তরিকুল ইসলাম, এএসআই আমিনুল ইসলাম, মাঝি ইয়াছিন, সাইদুল ইসলামসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। জেলেদের পেট্রোল বোমাকে উপেক্ষা করেও অভিযানিক দল ধাওয়া করার একপর্যায়ে দ্রুতগতির ট্রলার চালিয়ে জেলেরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। হামলায় গুরুত্বর আহত মাঝিদের উপজেলা হাসপাতালে এবং অন্যান্যের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও মৎস্য কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনার চর আবুপুর, আসলি আবুপুর, হরিনাথপুর, নাছকাঠি জানপুর, চর জানপুর, বিশকাঠালি, অন্তরভাম, গৌরনদীর আড়িয়াল খাঁ নদীর মিয়ারচর, উজিরপুরের সন্ধ্যা ও মুলাদীর মৃধারহাট, ভেদুরিয়া এবং আবুপুর এলাকার নদীতে অসাধু জেলেরা মা ইলিশ নিধন করে আসছে। গত ১৮ অক্টোবর রাতে মুলাদীতে অভিযান দলের ওপর অসাধু জেলেরা টেঁটা হামলা চালায়। পরে ১৯ অক্টোবর ১১ টি ট্রলার, চারটি স্পিড বোট, পাঁচটি ফাইটার নৌকা নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তা, নৌ-পুলিশের ইনচার্জসহ চারটি পুলিশ ফাঁড়ি ও মুলাদী থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত বিশাল বাহিনী নিয়ে মৃধারহাট, ভেদুরিয়া, আবুপুর, গোসাইরহাট উপজেলার মধ্যপয়েন্ট এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের বহর দেখেই জেলেরা পালিয়ে যায়। এ সময় ওইসব এলাকার নদীতে পেতে রাখা ৭০টি জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।