বরিশাল অফিস: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় এসিল্যান্ডের ঘুষের পরিমাণ নির্ধারণ করার ঘটনায় আরও চার তহশিলদার ও সহকারী তহশিলদারকে বদলি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা (ইউএনও) সঞ্জিব দাশ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে ওই চারজনকে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের দেওয়া এক আদেশে তাদের জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বদলি করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের তহশিলদার সন্তোষ কুমার মণ্ডলকে কাউখালী উপজেলার আমড়াঝুড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে, দেউলবাড়ি দোবরার এসএম মিজানুর রহমানকে কাউখালী উপজেলার চিড়াপাড়ায়, দীর্ঘার এম জাকির হোসেনকে নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়ায় ও শাঁখারীকাঠী ইউনিয়নের সাখাওয়াত হোসেনকে নেছারবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনয়িনের ভূমি অফিসে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার আরও চার তহশিলদার ও সহকারী তহশিলদার এবং পরে দুই কর্মচারীকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়।
এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় নাজিপুর উপজেলার এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এর আগে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের তহশিলদাররা জমি মিউটেশনের জন্য আসা সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কেস প্রতি ১৫-২০ হাজার টাকা করে ঘুষ নিতেন।
এসিল্যান্ড মো. মাসুদুর রহমান গত ৮ জুন নাজিরপুরে যোগদানের পর নিজ অফিসে বসে ওই ঘুষের টাকা কমিয়ে ছয় হজার টাকা করে নিতে বলেন এবং ওই টাকা থেকে তিনি চার হাজার টাকা করে নিজের জন্য দাবি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘুষের পরিমাণ বেঁধে দেওয়ার কথোপকথনের অডিও ফাঁস করে দেন তহশিলদাররা। ভাইরাল হওয়া ওই অডিওতে এসিল্যান্ডের প্রধান সহযোগী হিসেবে শাঁখারীকাঠী ইউনিয়নের সাখাওয়াত হোসেনের নাম উঠে আসে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী নিয়োগের পর থেকে একই কর্মস্থলে চাকরি করছেন। এতে তারা সেখানে ব্যাপক প্রভাব খাটাচ্ছেন ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেকেই অবৈধভাবে সরকারি জমি দখলসহ ব্যাপক সম্পদের মালিক হয়েছেন। ভূমি সেবাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এমন কর্মচারীদেরও বদলি করা জরুরি।