‘বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন হাসিনা’ – আনন্দবাজারের প্রতিবেদন
বাংলাদেশে গুমের ঘটনা নিয়ে ভারতীয় সংশ্লিষ্টতার দাবি তুলেছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। সম্প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘সত্য উদঘাটন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পেশ করেছে এই কমিশন, যা ২১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস প্রকাশ করেছে। বাসসের প্রতিবেদনের বরাতে রোববার আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের অনলাইনে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম ছিল – “‘বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন হাসিনা’! গুমকাণ্ডে দিল্লির যোগও ‘খুঁজে পেল’ মুহাম্মদ ইউনূসের তদন্ত কমিশন।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে অপরাধে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে গুম করা হত। তদন্ত কমিশন দাবি করেছে, সেই সময়ে এই গুমের ঘটনায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের কাজ হয়ে থাকতে পারে এবং এসব বন্দির ভাগ্য নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। দুটি উল্লেখযোগ্য মামলার উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে, যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে সুখরঞ্জন বালি, যাকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং পরে ভারতের জেলে পাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি হলো বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ, যাকে ২০১৫ সালে ঢাকায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের যোগসূত্র হিসেবে তার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন আরও দাবি করেছে যে, কিছু বন্দি এখনও ভারতের জেলে থাকতে পারে। তদন্ত কমিশন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন তারা ভারতের জেলে থাকা যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিককে খুঁজে বের করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। তবে, কমিশন জানায়, বাংলাদেশের সীমানার বাইরে বিষয়টি তদন্ত করার এখতিয়ার তাদের নেই।
কমিশনের প্রতিবেদনে র্যাব গোয়েন্দা শাখার নিয়োজিত সেনা সদস্যদের সাক্ষাৎকারে জানা গেছে, ২০১১ সালের দিকে র্যাব গোয়েন্দা শাখা ভারত থেকে বন্দি গ্রহণ করার সময়, বিএসএফ সদস্যরা তাদের উপস্থিত ছিলেন। এক ঘটনায়, দুই বন্দিকে গ্রহণ করার পর রাস্তার পাশে হত্যা করা হয়, এবং অন্য ঘটনায়, একজন বন্দিকে জীবিত অবস্থায় গ্রহণ করে বাংলাদেশে আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কমিশন আরও দাবি করে যে, এই ধরনের আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা পরিষেবা সমন্বয় গুমের ঘটনার প্রাতিষ্ঠানিক ও আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি নির্দেশ করে। তবে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কতটা সম্পৃক্ততা ছিল এবং দুই দেশের জন্য এর তাৎপর্য কী, তা বোঝার জন্য আরও বিশদ তদন্ত প্রয়োজন।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম