কলাপাড়ায় গরু চুরি করে পালানোর সময় চোর আটক

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে গরু চুরি করে পালানোর সময় এক চোরকে আটক করেছে স্থানীয়রা। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, বাদল হাওলাদারের গোয়ালঘর থেকে রাতের আঁধারে একটি গরু চুরি করে আমতলী বাজারে বিক্রি করতে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে চোরকে ধাওয়া করে আটক করা হয়। পরে স্থানীয়রা কলাপাড়া থানা পুলিশকে খবর দিলে চোরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

আটককৃত চোরের নাম আলাউদ্দিন, তার বাড়ি মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে। আলাউদ্দিন জানান, তিনি শনিবার সকাল থেকেই দৌলতপুর এলাকায় ছিলেন এবং রাতে গরু চুরি করে আমতলী বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নীলগঞ্জ ইউনিয়নে প্রায়ই চুরি, ডাকাতি, এবং ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটে। এই ধরনের অপরাধে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। তারা চুরি, ডাকাতি এবং ছিনতাই বন্ধে প্রশাসনের কাছ থেকে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, “আমরা নীলগঞ্জ ইউনিয়নে আগেই একটি মিটিং করেছি এবং স্থানীয়দের বলেছি, যেকোনো চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটলে স্থানীয়রা চোরকে আটক করে পুলিশকে খবর দিবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয়রা চোরকে আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

 




‘বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন হাসিনা’ – আনন্দবাজারের প্রতিবেদন

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা নিয়ে ভারতীয় সংশ্লিষ্টতার দাবি তুলেছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। সম্প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘সত্য উদঘাটন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পেশ করেছে এই কমিশন, যা ২১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস প্রকাশ করেছে। বাসসের প্রতিবেদনের বরাতে রোববার আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের অনলাইনে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম ছিল – “‘বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন হাসিনা’! গুমকাণ্ডে দিল্লির যোগও ‘খুঁজে পেল’ মুহাম্মদ ইউনূসের তদন্ত কমিশন।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে অপরাধে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে গুম করা হত। তদন্ত কমিশন দাবি করেছে, সেই সময়ে এই গুমের ঘটনায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের কাজ হয়ে থাকতে পারে এবং এসব বন্দির ভাগ্য নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। দুটি উল্লেখযোগ্য মামলার উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে, যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে সুখরঞ্জন বালি, যাকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং পরে ভারতের জেলে পাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি হলো বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ, যাকে ২০১৫ সালে ঢাকায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের যোগসূত্র হিসেবে তার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন আরও দাবি করেছে যে, কিছু বন্দি এখনও ভারতের জেলে থাকতে পারে। তদন্ত কমিশন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন তারা ভারতের জেলে থাকা যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিককে খুঁজে বের করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। তবে, কমিশন জানায়, বাংলাদেশের সীমানার বাইরে বিষয়টি তদন্ত করার এখতিয়ার তাদের নেই।

কমিশনের প্রতিবেদনে র‌্যাব গোয়েন্দা শাখার নিয়োজিত সেনা সদস্যদের সাক্ষাৎকারে জানা গেছে, ২০১১ সালের দিকে র‌্যাব গোয়েন্দা শাখা ভারত থেকে বন্দি গ্রহণ করার সময়, বিএসএফ সদস্যরা তাদের উপস্থিত ছিলেন। এক ঘটনায়, দুই বন্দিকে গ্রহণ করার পর রাস্তার পাশে হত্যা করা হয়, এবং অন্য ঘটনায়, একজন বন্দিকে জীবিত অবস্থায় গ্রহণ করে বাংলাদেশে আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

কমিশন আরও দাবি করে যে, এই ধরনের আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা পরিষেবা সমন্বয় গুমের ঘটনার প্রাতিষ্ঠানিক ও আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি নির্দেশ করে। তবে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কতটা সম্পৃক্ততা ছিল এবং দুই দেশের জন্য এর তাৎপর্য কী, তা বোঝার জন্য আরও বিশদ তদন্ত প্রয়োজন।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ভোলায় অপহরণের ৭ ঘণ্টা পর মায়ের কোলে ফিরল শিশু

ভোলায় অপহরণের সাত ঘণ্টা পর ১৫ মাস বয়সী কন্যাশিশু আয়াতকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অক্ষত অবস্থায় শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে, পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

এদিকে, ঘটনাটি ঘটেছিল ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার জয়নাল আবেদীন তালুকদারের বাড়িতে। শিশুটি সকাল ৭টার দিকে নিখোঁজ হয়, যখন সে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। আয়াত শিশুটির মা জাকিয়া তাকে দুধপান করিয়ে ঘুম পাড়িয়ে বাইরে গিয়েছিলেন। পরে, ঘরে ফিরে তিনি দেখতে পান শিশুটি নেই।

শিশু আয়াত ওই এলাকার মৌলভী আলী আহমেদ ও বিবি ফাতেমা দম্পতির বড় মেয়ে। তার বাবা ঢাকার হেমায়েতপুর এলাকার একটি স্টিলের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিশুটির মা যখন বাইরে ছিলেন, তখন শিশুটির নানি ফাতেমা ঘরের কাজ করছিলেন। কিছু সময় পরে, শিশুটির মা ফিরে এসে দেখেন ঘরে শিশু নেই। এরপর তারা বাড়ির আশপাশে এবং বিভিন্ন জায়গায় শিশুটির খোঁজ নিতে শুরু করেন, এমনকি মাইকিংও করা হয়। কিন্তু কোথাও শিশুটির খোঁজ মেলেনি।

পরে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে, জেলা শহরের অফিসার পাড়া এলাকায় বোরকা পড়া এক অজ্ঞাত নারী শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে একা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। ৯৯৯-এ কলের পর ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে শিশু আয়াতের মা জাকিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, “সকালে আমার মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে বাইরে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি আমার মেয়ে নেই। পরে পুলিশ আমাকে জানায় যে, শিশুটি তাদের হেফাজতে আছে। পরে পুলিশ আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।”

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, “একটি অজ্ঞাত বোরকা পড়া নারী শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার পর আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। তদন্ত চলছে, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




বরিশাল থেকে চুরি হওয়া ট্রাকসহ দুই যুবক গ্রেফতার

বরিশাল থেকে চুরি হওয়া একটি ট্রাকসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নাজমুল হাসান (২৫) এবং শরীফ হাওলাদার (২১)। তাদেরকে শনিবার রাতে ঢাকার গাজীপুর থেকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে রোববার (২২ ডিসেম্বর) নিশ্চিত করেছেন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন শিকদার। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত যুবকরা একটি চোরাই দলের সক্রিয় সদস্য হিসেবে পরিচিত। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত নাজমুল হাসান (২৫) বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর এলাকার আউয়াল মিয়ার ছেলে, এবং শরীফ হাওলাদার (২১) একই এলাকার হুমায়ূন কবিরের ছেলে।

ওসি জাকির হোসেন বলেন, চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর রাতে বরিশাল নগরীর কাশিপুর ট্রাকস্ট্যান্ডে ট্রাকটি রেখে চালক শামিম শাহ বাসায় ঘুমাতে যান। পরদিন সকালে ট্রাকটি দেখতে না পেয়ে তিনি পুলিশকে জানান। পরবর্তীতে ট্রাক চালক শামিম শাহ বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় চুরি মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় এবং চুরি হওয়া ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




গলাচিপায় মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচিত

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে সুহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রাজা মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. মাসুম বিল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন।

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি গলাচিপা উপজেলা শাখার আয়োজনে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি পটুয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক এম এ মতিন, সদস্য সচিব মনজুরুল আহমেদ, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন খান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মশিউর রহমান (শাহীন)।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুনতাসীর মামুন।

সভাপতি মো. রাজা মিয়া বলেন, “শিক্ষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করাই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য।”

সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমরা শিক্ষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করব এবং শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটানোর জন্য একযোগে প্রচেষ্টা চালাব।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



১৬ বছর পর পটুয়াখালী পৌর মাছ বাজারের ঘাট পুনরুদ্ধার

দীর্ঘ ১৬ বছর পর পটুয়াখালী পৌর মাছ বাজারের ঘাটটি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। গত ২০ ডিসেম্বর ঘাটটিতে থাকা দোকান ভেঙে দখল মুক্ত করা হয়। এতে পৌর মাছ বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বস্তি ও আনন্দ।

নিউ মার্কেট ক্ষুদ্র মৎস্য কার্যনির্বাহী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা এই ঘাটটি দখল করে অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। প্রতিদিন এখানে মদ ও জুয়ার আসর বসত। ঘাটটি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের মাছ আনা-নেওয়ার জন্য বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হতো, যা মাছের দামে প্রভাব ফেলত।

মাছ ব্যবসায়ীরা ঘাটটি পুনরুদ্ধার করায় খুশি হলেও দ্রুত এর সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, ঘাটটি সরাসরি মাছের ট্রলার আসা-যাওয়ার উপযোগী হলে ব্যবসা সহজ হবে এবং মাছের দাম কমে যাবে।

ঘাট পুনরুদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন নিউ মার্কেট ক্ষুদ্র মৎস্য কার্যনির্বাহী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল মন্নান ফকির, সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হাওলাদার, ক্যাশিয়ার মো. শামীম মৃধা, এবং অন্যান্য মাছ ব্যবসায়ী।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




ভোলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে আমনের ভালো ফলন

ভোলা জেলার কৃষকদের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সব শঙ্কা কাটিয়ে এবছর আমন ধানের ফলন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও অতিজোয়ারের কারণে শুরুর দিকে যে সমস্যাগুলি তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে কৃষকরা নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে এবং অতিরিক্ত লাভের আশা নিয়ে ধান কেটে মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছেন। রোগ-বালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণও ছিল কম, যার কারণে এবারের আমন ফসলের ফলন বিশেষত প্রশংসনীয় হয়েছে।

এবছর আমন ধানের ফলন কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। অনেক কৃষক তাদের খরচ মেটাতে সক্ষম হবেন এবং পূর্বের ঋণ পরিশোধও করতে পারবেন। ফলন ভালো হওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে এবং বিশাল মাঠজুড়ে সোনালি ধানের দোল খাওয়া দৃশ্যটি প্রমাণ করছে কৃষকদের আনন্দ।

ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা মিলে ৭ উপজেলায় প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার কৃষক রয়েছে। এর মধ্যে ৪ লাখ ২৫ হাজার কৃষক আমন আবাদ করেছেন। চলতি বছর, জেলার ৭ উপজেলায় আমন ধানের জন্য মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭৬ হেক্টর জমি।

সরেজমিনে ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের আমন ধান চাষ করেছেন, যেমন ব্রি-৫২, বিআর-২২, বিআর-২৩, স্বর্ণা, বিনা-১৭, ২০, ব্রি-৬৬, ৭০, ৭৮, ১০৩ ইত্যাদি। ধানের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ফলনও ভালো হওয়ায় কৃষকরা আশান্বিত। অনেকেই ইতোমধ্যে তাদের জমির পাকা ধান কেটে নিয়েছেন, আর বাকিরা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মোজাম্মেল মাঝি জানান, তিনি ১৩ গন্ডা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো হয়েছে এবং তিনি আশা করছেন লাভবান হবেন। চরসামাইয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রহিম মিয়া ৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন এবং ইতোমধ্যে ১ হেক্টরের ধান ১২ মন পেয়েছেন, যা তিনি ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

এদিকে, ইলিশা ইউনিয়নের কৃষক মো. মাইনউদ্দিন জানান, তার জমিতে প্রথমে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ধানের চারা পচে গিয়েছিল। পরে তিনি আবার ধান রোপণ করেন এবং আশা করছেন ন্যূনতম ২৭ হাজার টাকার ধান পাবেন।

দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের কৃষক মো. মোসলেহউদ্দিন বলেন, তিনি সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আমন ধান আবাদ করেছিলেন। যদিও জোয়ার ও বৃষ্টির কারণে আমনের চারা পচে গিয়েছিল, তবে তিনি আবারও ধান লাগিয়েছেন এবং আশা করছেন লাভ হবে।

ধানের ব্যাপারী মো. মিজান জানান, তিনি সরাসরি কৃষকদের জমি থেকে ১ হাজার ৭০ থেকে ১,১০০ টাকা মণে আমন ধান কিনছেন এবং পরে আড়তদারের কাছে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভে বিক্রি করছেন।

ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কৃষিবিদ এ এফ এম শাহাবুদ্দিন বাসস’কে জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টি ও অতিজোয়ারের কারণে কিছু চারা পচে যাওয়ায় কৃষকরা অতিরিক্ত চারা সংগ্রহ ও কূশী ভেঙে পুনরায় রোপণ করেছেন, যার ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে এবং পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হওয়ায় প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ৪ দশমিক ৯ টন।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




জরাজীর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী ভোলা বাস টার্মিনাল

ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনাল নির্মিত হয় ৩৬ বছর আগে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কোন ধরনের সংস্কার বা মেরামত হয়নি। বর্তমানে টার্মিনালটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং এটি এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে কারণ বিকল্প কোন টার্মিনাল নেই। প্রতিদিন শতাধিক বাস ভাঙা এবং খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে, যা যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

টার্মিনালের চারপাশের নিরাপত্তা দেওয়াল ভেঙে যাওয়ায়, বাস মালিক ও শ্রমিকরা চুরির আতঙ্কে থাকছেন। যাত্রীদের জন্য উপযুক্ত ছাউনি না থাকায় সড়কে অপেক্ষা করতে গিয়ে তারা বিপদে পড়ছেন, বিশেষত বৃষ্টি ও রোদে। তাছাড়া, পাবলিক টয়লেটের অভাবে নারী যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ হাজার যাত্রী এই টার্মিনাল ব্যবহার করেন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই এই সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছেন।

টার্মিনালটি নির্মিত হয় ১৯৮৮ সালে, কিন্তু টার্মিনালের সড়ক এবং অন্যান্য অবকাঠামো এর পর থেকে একবারও সংস্কার হয়নি। প্রায় ৩ একর জমির ওপর অবস্থিত এই টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন পাঁচটি রুটে শতাধিক বাস চলাচল করে। তবে, সড়কটি বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় বাসের যাতায়াতের জন্য এটি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।

যাত্রী আশরাফ আলী, ইয়াছিন, অজিৎ চন্দ্র রায় ও মাকসুদুর রহমান জানান, তারা প্রতিদিন সদর থেকে অন্যান্য উপজেলায় যাতায়াত করতে ভোলা বাস টার্মিনাল ব্যবহার করেন। কিন্তু এই টার্মিনালে এসে তাদের টিকিট কাটতে হয় এবং তারপর সড়কে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়, যেখানে কোন ধরনের যাত্রী ছাউনি নেই। ফলে, রোদ-বৃষ্টি কিংবা ঝড়ের মধ্যে অপেক্ষা করতে হয়, যা অত্যন্ত কষ্টকর।

নারী যাত্রী সুমি বেগম, তৃষ্ণা রানী বর্ণিক ও সুমাইয়া আক্তার জানান, এখানে নারীদের জন্য কোন নিরাপত্তা নেই। বিশেষ করে, শিশুদের নিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকাটা খুবই বিপজ্জনক। তারা দাবি করেন, দ্রুত এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা উচিত।

বাস চালক মো. সুমন, মো. ইলিয়াস ও মো. শামিম হোসেন জানান, ভাঙা সড়ক ও বড় বড় খানাখন্দের কারণে বাসগুলোকে নিরাপদে চলাচল করানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এই খানা-খন্দে বাসে প্রবেশ ও বের হওয়া কঠিন, এবং যেকোনো সময় বাস উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া, নিরাপত্তা দেওয়াল ভেঙে যাওয়ায় বাসের যন্ত্রাংশ ও তেল মবিল চুরি হওয়া বেড়ে গেছে।

ভোলা বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মো. মুনতাসির আলম রবিন চৌধুরী বলেন, “বাসস্ট্যান্ডটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও, বিকল্প কোন স্ট্যান্ড না থাকায় এটি এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই, এটিকে দ্রুত আধুনিক বাস টার্মিনালে রূপান্তরিত করা উচিত।”

ভোলা পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দিন আরজু জানান, “বর্তমানে বীরশ্রেষ্ঠ বাস টার্মিনালের সড়ক ব্যবস্থা, ড্রেন এবং সড়ক বাতির উন্নয়ন কাজের জন্য একটি ছোট প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এর অনুমোদন হলে দ্রুত এই কাজগুলো করা হবে। এছাড়া, পরবর্তীতে বাসস্ট্যান্ডটি একটি আধুনিক বাসস্ট্যান্ডে রূপান্তরিত করা হবে।”

এদিকে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টার্মিনালটি আধুনিকীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। এরই মধ্যে কিছু উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে খুব শিগগিরই এই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ভোলায় চিকিৎসক সংকটে খায়েরহাট হাসপাতালটি বন্ধ হওয়ার পথে

ভোলার খায়েরহাট ৩০ শয্যা হাসপাতালটি বর্তমানে চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে এলাকার বাসিন্দারা স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খায়েরহাট হাসপাতালটি ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী, দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়গনগর, উত্তর জয়নগর, বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা ও গঙ্গাপুর ইউনিয়নসহ আশেপাশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছিল। তবে বর্তমানে চিকিৎসক এবং নার্স সংকটের কারণে হাসপাতালটি কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পথে।

২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর ১০ শয্যা থেকে ৩০ শয্যায় উন্নীত করা হয় খায়েরহাট হাসপাতালটি। উন্নয়নের পর, সেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে খায়েরহাট এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা উন্নত স্বাস্থ্য সেবা পেতে থাকেন। কিন্তু গত ২ বছরে হাসপাতালে কর্মী সংকট দেখা দেয় এবং গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালটি চিকিৎসকশূন্য হয়ে পড়ে। বর্তমানে ৯ জন চিকিৎসকের পদে মাত্র একজন ডেন্টাল চিকিৎসক রয়েছেন এবং তিনি তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়া, ১৩ সিনিয়র স্টাফ নার্সের মধ্যে ১০টি পদ শূন্য থাকায় জরুরি বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোও কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এক মাসে হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি হতে পারেনি, যা নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সুমন শিকদার (২৮) বলেন, “চিকিৎসক এবং নার্স সংকটের কারণে গত ১৯ নভেম্বর থেকে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে কোনো রোগী ভর্তি করতে পারিনি। এখানকার অধিকাংশ মানুষ সমাজের নিম্নশ্রেণির, এবং এ হাসপাতালটি তাদের শেষ ভরসা। এখন তাদেরকে ভোলা সদর হাসপাতাল অথবা বরিশালে নিয়ে যেতে হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।”

এছাড়া, নবজাতক সন্তান নিয়ে হাসপাতাল আসা সাদিয়া আক্তার জানান, “হাসপাতালে এসে জানতে পারলাম, এখানে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এক্ষেত্রে চিকিৎসক পাওয়া গেলে আমি আমার মেয়েকে এখানে দেখাতে পারতাম।”

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হেলপিং হেন্ড সোশ্যাল ফোরামের সভাপতি রাইসুল আলম বলেন, “এখানে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। চিকিৎসকরা আন্দাজের ওপর ওষুধ দেন, যার ফলে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আমরা চাই, খায়েরহাট হাসপাতালের জনবল সংকট দূর করে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হোক।”

খায়েরহাট ২০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরেফিন রশিদ ঢাকা পোস্টকে জানান, “চিকিৎসক এবং নার্স সংকটের কারণে সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমরা যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, জনবল সংকট দূর হলে আন্তঃবিভাগও চালু হবে।”

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ

ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে দুটি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে লঞ্চ দুটির সম্মুখভাগের বিভিন্ন অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সৌভাগ্যক্রমে কোনো যাত্রী হতাহত হননি।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পদ্মার হাইম চরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ দুটি একে অপরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের পর, এমভি কীর্তনখোলা-১০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও, এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ নামের অপর লঞ্চটি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে নোঙর করে রাখা হয়।

এ ঘটনায়, যদিও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, তবে লঞ্চ দুটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত লঞ্চগুলোর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

মো: তুহিন হোসেন,**
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম