পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) তার ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ অটোমেশন বা অনলাইন পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য এই নতুন ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু সময় সাশ্রয়ীই নয়, তাৎপর্যপূর্ণভাবে আরো সহজতর হয়ে উঠেছে।
অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমের শুরুটা ১২ অক্টোবর থেকে এবং এটি ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসেই রেজিস্ট্রেশন, ফি প্রদান এবং অন্যান্য সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। এ প্রক্রিয়ায় কোনো সরাসরি কাগজপত্র জমা দিতে হবে না বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে না, যা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
অনলাইন প্রক্রিয়া: কীভাবে কাজ করবে?
এই নতুন প্রক্রিয়াটি শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ কিছু ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রাথমিকভাবে জিএসটি সিস্টেমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে লগইন করে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করবেন। মোবাইল নম্বর যাচাইয়ের মাধ্যমে লগইন করার পর, শিক্ষার্থীরা তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার তথ্য যাচাই করে পূর্ণাঙ্গ ভর্তি ফরম পূরণ করবেন। সবশেষে, কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভর্তি ফি পরিশোধ করতে হবে এবং রসিদ ডাউনলোড করে তা সংরক্ষণ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, “এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা কোনো ঝামেলা ছাড়াই, সময় ও খরচ বাঁচিয়ে তাদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।”
অটোমেশন: ভবিষ্যতের প্রস্তুতি
পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম এ উদ্যোগকে “ভোগান্তি মুক্ত ভবিষ্যতের এক ধাপ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি একটি বিশাল সফলতা। আমরা এখন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রমকেও অনলাইনে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরো কমানো সম্ভব হবে।”
কীভাবে এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের উপকার করবে?
অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এবার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকবে। এই উদ্যোগটি বিশেষভাবে সুবিধাজনক হবে গ্রামীণ ও দূরবর্তী অঞ্চল থেকে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য, যারা ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশ নিতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়।
এছাড়া, অনলাইন সিস্টেমে ছাত্রদের ভর্তির প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় মানসিক চাপও কম থাকবে।
প্রথমবারের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
পবিপ্রবির এই নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। প্রযুক্তির সঙ্গে শিক্ষার সমন্বয় এনে এটি ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থার একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির এই অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া যেনো শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক এবং ভোগান্তি মুক্ত একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, সে আশায় রয়েছেন পবিপ্রবির শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীরা।