ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ

ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে দুটি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে লঞ্চ দুটির সম্মুখভাগের বিভিন্ন অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সৌভাগ্যক্রমে কোনো যাত্রী হতাহত হননি।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পদ্মার হাইম চরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ দুটি একে অপরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের পর, এমভি কীর্তনখোলা-১০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও, এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ নামের অপর লঞ্চটি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে নোঙর করে রাখা হয়।

এ ঘটনায়, যদিও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, তবে লঞ্চ দুটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত লঞ্চগুলোর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

মো: তুহিন হোসেন,**
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে সংঘর্ষ, নিহত ১

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে প্রায় সাত থেকে আটটি যানবাহন একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা নাগাদ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের সিংপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিংপাড়া আন্ডারপাসে একটি সাকুরা পরিবহনের বাস কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয়। এরপর পেছনে থাকা মাইক্রোবাসসহ তিনটি যাত্রীবাহী বাস একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী জানান, দুর্ঘটনার ফলে মাইক্রোবাসের চালক গুরুতর আহত হন। তাকে শ্রীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, চিকিৎসকরা সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যান্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে গেছেন।

এ ঘটনায় এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর এলাকায় প্রায় ৪০ মিনিটের জন্য সড়কে তীব্র জ্যাম সৃষ্টি হয়, যার ফলে যাত্রীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর সড়ক চলাচল স্বাভাবিক হয়।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




হাসিনা পালিয়ে দিল্লিতে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তলানিতে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: কয়েক দশক ধরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের মধ্যে ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে সেই সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরে এবিসি নিউজের করা এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভের ফলে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘দেশব্যাপী আন্দোলনে’ পরিণত হয়।

ছাত্র-জনতার এই গণআন্দোলনকে “বিশ্বের প্রথম জেন-জি বিপ্লব” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান — এবং এরপর থেকে তিনি দিল্লিতেই নির্বাসিত রয়েছেন।

এর পরের মাসগুলোতে নানা ঘটনাবলীর প্রেক্ষপটে বাংলাদেশে এক হিন্দু নেতাকে গ্রেপ্তার এবং ভারতে বাংলাদেশের একটি কনস্যুলেটে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতার হামলার ঘটনা দুই দেশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

এখন দক্ষিণ এশীয় এই দুই জায়ান্ট দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে নেমেছে এবং সম্পর্কের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনাও বিদ্যমান রয়েছে।

‘সহিংসতা আমাদের শত্রু’
‘আয়রন লেডি’ খ্যাত শেখ হাসিনার কট্টর ও স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে তার অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল অংশীদার বলে মনে করেত।

যদিও আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা সকলেই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। কিন্তু হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল গত আগস্টে আকস্মিকভাবে অবসান ঘটার পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।

বাংলাদেশের ১৭৪ মিলিয়ন বা ১৭ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ এবং তাদের অনেকেই ঐতিহাসিকভাবে হাসিনার আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ অনেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রতীক এবং কিছু ক্ষেত্রে দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিন্দুদেরও টার্গেট করেছিল।

সেই সময়ে ড. ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে “অর্থহীন সহিংসতার” নিন্দা করেছিলেন এবং হামলা বন্ধ না হলে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সহিংসতা আমাদের শত্রু। দয়া করে আর শত্রু তৈরি করবেন না। শান্ত হোন এবং দেশ গড়তে প্রস্তুত হন।

তবুও ড. ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট কাজ না করার অভিযোগ করেছে ভারত। ভারতে নির্বাসিত থাকা হাসিনাও দাবি করেছেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে “গণহত্যার” জন্য দায়ী এই সরকার।

পাকিস্তানের সঙ্গে সংলাপ : যে শর্ত দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-গাজার মধ্যে চলমান সংঘাত এবং বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উল্লেখ করে “অপ্রত্যাশিত” পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

কিন্তু গত নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশে একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এটি ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে বড় ধরনের কূটনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

‘স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক’
চলতি বছরের অক্টোবরে এক সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করার অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তার সমর্থকদের বিশ্বাস, হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে সোচ্চার থাকায় তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় এক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার দাবিগুলো অতিরঞ্জিত করে সামনে আনা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই ভারতে উগ্র কট্টরপন্থি হিন্দু গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং বাংলাদেশের ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি অনেক দলই ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে এবং উভয় দেশের সরকার — যারা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করেছে — ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় রয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসিনা সরকারের পতনের অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশে ভারতকে নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো অমিত রঞ্জন বলেন, “বাংলাদেশি সমাজের সবসময়ই এই অনুভূতি থাকে যে— বাংলাদেশের বিষয়ে খুব বেশি হস্তক্ষেপ করে ভারত। বাংলাদেশিদের এই অনুভূতিও আছে যে— হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন টিকে ছিল ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টের সমর্থনে।”

বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির গবেষক খন্দকার তাহমিদ রেজওয়ান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শুধুমাত্র “হাসিনার আওয়ামী শাসনামলের সাথে উষ্ণ ছিল, সাধারণ মানুষের সাথে নয়। এখানে বাংলাদেশে আমরা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বলে উপহাস করতাম।”

হাসিনার পতনের পর ভারতীয় কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা করেছে। আর উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের এমন ছবি যা বাংলাদেশে ভারতের প্রতি ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এবং চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরুতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে সম্প্রতি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সময় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সেখানে ভাঙচুর চালায় এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার পাশাপাশি অবমাননা করে।




শের-ই–বাংলা মেডিকেলের চক্ষু বিভাগ: অর্ধযুগ ধরে প্যাকেটবন্দি ১২ কোটি টাকার ল্যাসিক যন্ত্র

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের অত্যাধুনিক ল্যাসিক মেশিনটি গত ছয় বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এই অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলার প্রায় দেড় কোটি মানুষ উন্নত চোখের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু ল্যাসিক মেশিনই নয়, চোখের ছানি অপারেশনের ফ্যাকো মেশিনটিও দীর্ঘ সাত মাস ধরে অকেজো অবস্থায় রয়েছে, যার ফলে রোগীরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

চক্ষু বিভাগের স্টাফরা জানালেন, “এখানে আগে রোগীদের ভিড় থাকত, কিন্তু বর্তমানে বড় অপারেশন বন্ধ হওয়ায় ঢাকায় রেফার করা হচ্ছে।” এক রোগী, হোসনেয়ারা বেগম জানান, “গত বছর চোখে ছানি অপারেশন করিয়েছিলাম, কিন্তু এখন আবার সমস্যা হচ্ছে, ডাক্তার বলছে অপারেশন বাইরে করাতে হবে কারণ হাসপাতালের মেশিন নষ্ট।”

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের মেশিনটি ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহ করা হয় এবং এটি বাংলাদেশে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপার্টমেন্ট (সিএমএসডি) থেকে কেনা হয়েছিল। তবে প্রথম বছরেই মেশিনের ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ পাওয়া যায়নি এবং টেকনিশিয়ানরা মেশিনটি চালানোর প্রক্রিয়া জানতেন না। এর পর ২০১৫ সালে মেশিনটি চালু করা হলেও ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে এটি বিকল হয়ে যায়। পরবর্তীতে একাধিকবার মেরামত করা হলেও ২০১9 সাল থেকে এটি আর চলতে পারেনি।

চক্ষু বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই মেশিনটি সারাতে কমপক্ষে ১ কোটি টাকা প্রয়োজন এবং এটি চালু রাখার জন্য বিশেষ যন্ত্রাংশ ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, “ল্যাসিক মেশিনটি চালু থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য চোখের উন্নত চিকিৎসার সুযোগ থাকত।”

এদিকে, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে এম মশিউল মুনির বলেন, “শেবাচিম হাসপাতাল বহু পুরোনো হলেও প্রয়োজনীয় জনবল এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। আমরা এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি এবং মন্ত্রণালয় ও সিএমএসডির সাথে আলোচনা শুরু করেছি।” তিনি আশাবাদী যে, শীঘ্রই এই সমস্যা সমাধান হবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




নির্দেশনা মানছে না বরিশালের দেড়শ কলকারখানা

বরিশাল নগরীতে আবাসিক এলাকায় চলমান বৃহৎ কলকারখানাগুলোর কারণে নগরবাসীকে প্রতিবছর নতুন করে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১৫ বছর ধরে প্রতি বছর শিল্প কারখানাগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, গত এক দশকে মাত্র একটি ওষুধ কারখানা আংশিক সরানো হয়েছে। বাকিরা এখনও সেই নির্দেশনা মানেনি, ফলে পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হচ্ছে।

নগরবাসীর অভিযোগ, কারখানার মেশিনের শব্দ এবং নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের কারণে প্রতিদিনই অসহনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। একদিকে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি, অন্যদিকে বিশুদ্ধ বাতাস ও শান্ত পরিবেশের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বরিশাল পরিবেশ অধিদফতর জানায়, গত ১৫ বছরে ওষুধ কোম্পানিগুলোসহ অন্যান্য কারখানার মালিকদের মোট ১৫ বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে কিছু কারখানা নিজ উদ্যোগে অন্যত্র চলে গেলেও অধিকাংশই এখনও আবাসিক এলাকায় রয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম জানান, সেগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় রেখে দূষণমুক্ত উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ সংগঠক সিলভিয়া বলেন, “বরিশাল শহরের মধ্যে দেড়শ কলকারখানা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব অনুভূত হচ্ছে।”

প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, যারা দিনদিন এই কলকারখানার কারণে সমস্যায় পড়ছেন। এক বাসিন্দা, আরাফাত হোসেন বলেন, “শব্দদূষণের কারণে মাথা ধরেছে, আর রাতের বেলা তো ঘুমানোর উপায় থাকে না।” আরেক বাসিন্দা, খাইরুল জানান, “ফ্যাক্টরির কারণে আমাদের গাছপালাও নষ্ট হয়ে গেছে, ফলন কমে গেছে।”

এদিকে, কিছু কারখানা যেমন অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড এবং কেমিস্ট ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড সরানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে অধিকাংশ কারখানা এখনও নগরীতেই রয়ে গেছে। সিলভিয়া বলেন, “যতদিন না কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ততদিন নাগরিকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

এছাড়া, বরিশাল কলকারখানা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল মহানগরীতে দেড়শেরও বেশি বৃহৎ কলকারখানা রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি বৃহৎ ওষুধ কোম্পানির কারখানাও অন্তর্ভুক্ত। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




২২ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া-গৌরনদী হানাদারমুক্ত দিবস

বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা ২২ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশে বিজয় ঘোষণা হলেও, ছয় দিন পর ২২ ডিসেম্বর বরিশালের এই দুই উপজেলায় উড়েছিল বিজয়ের পতাকা।

দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে মুক্তিবাহিনী ও মুজিব বাহিনীর যৌথ আক্রমণের পর, ২২ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা বাধ্য হয়ে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় আত্মসমর্পণ করে। শতাধিক পাকিস্তানি সেনা মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, এবং এর মাধ্যমে এই দুই অঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে এই অঞ্চলে প্রবেশ করে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। তাদের প্রবেশের পর, গৌরনদীর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা সাউদের খালপাড়ে অবস্থান নেয় এবং পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরোধ করে। সেদিন, পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন গৌরনদীর সৈয়দ আবুল হাসেম, চাঁদশীর পরিমল মণ্ডল, গৈলার আলাউদ্দিন (আলা বক্স), ও বাটাজোরের মোক্তার হোসেন হাওলাদার। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে আটজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল। এটি বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম স্থলপথে যুদ্ধ ছিল।

পাকিস্তানি সেনারা ও তাদের দোসররা এই অঞ্চলের হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। অনেক মা-বোনের ইজ্জত হারাতে হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অবিরাম প্রতিরোধের পর, ২২ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে গৌরনদী কলেজ ক্যাম্পে অবস্থানরত শতাধিক পাকিস্তানি সেনা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, এবং এর মাধ্যমে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া হানাদারমুক্ত হয়ে ওঠে।

এই বিশেষ দিবসটি প্রতিবছর আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলায় ‘হানাদারমুক্ত দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। বিজয়ের এই দিনের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




বরগুনায় আওয়ামী লীগ নেতার হাতে দেশীয় অস্ত্র, ভিডিও ভাইরাল

বরগুনায় এক আওয়ামী লীগ নেতার হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বরগুনা জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি এবং সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া একটি দেশীয় অস্ত্র (চাকু) হাতে উত্তেজিতভাবে বাগবিতণ্ডা করছেন। ভিডিওটি শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ১৭ সেকেন্ড, যেখানে গোলাম কিবরিয়া একটি ঘরের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করছেন। পরে উত্তেজিত হয়ে তিনি দেশীয় অস্ত্র হাতে উপস্থিত লোকজনের দিকে ধাবিত হতে চেষ্টা করেন। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন তাকে বাধা দিলে বড় কোনো অঘটন ঘটেনি।

বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. তালিমুল ইসলাম পলাশ এই ভিডিওর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, গোলাম কিবরিয়া এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন, পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁর দাবি, ভিডিওটি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিচায়ক এবং এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি কিবরিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম বলেন, “এই ভিডিওর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে যদি অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




বরিশালে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ

বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের বি এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. মতিয়া বেগমের বিরুদ্ধে সরকারি নতুন বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসারে, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি দেখিয়ে অতিরিক্ত বই শিক্ষা অফিস থেকে বিদ্যালয়ে আনা হয়েছিল। আর এ বইগুলো শনিবার সকালে প্রধান শিক্ষক নিজে বিক্রি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রধান শিক্ষক মোসা. মতিয়া বেগম আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে ৪২৮ কেজি বই বিক্রি করেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক। তাঁর দাবি, বিদ্যালয়ের আলমারি খালি করতে কিছু পুরোনো কাগজপত্র কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে, কিন্তু নতুন বই বিক্রি করার বিষয়টি তিনি জানেন না।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. ইউনুছ খান জানান, বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন এবং নতুন বই বিক্রির কাজ করেন। তাঁর দাবি, ২০২৩ ও ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বইগুলো বিক্রি করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বিদ্যালয়ে গত দুই বছরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকলেও প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী বেশি দেখিয়ে অতিরিক্ত বইয়ের চাহিদা দিয়েছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে বই এসেছে এবং অধিকাংশ বই বিদ্যালয়ে অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। বই রাখা না থাকায় প্রধান শিক্ষক এসব বই বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বই ক্রেতা আশরাফুল সরদার জানান, তিনি প্রধান শিক্ষকের ফোনে ডেকে নিয়ে বিগত বছরের বই কেনার প্রস্তাব পান। পরে ১৫ টাকা কেজি দরে ৪২৮ কেজি বই কিনেন। তাঁর দাবি, বিক্রি হওয়া বইগুলো পুরোনো কিছু কাগজপত্র ছিল না।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোসা. মতিয়া বেগম জানান, তিনি বই বিক্রির বিষয়টি জানেন না। তবে কিছু পুরোনো কাগজপত্র কেজি দরে বিক্রি করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, “সরকারি বই বিক্রি করা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। অতিরিক্ত চাহিদা দিয়ে বই আনা হলে, সেগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ না করে শিক্ষা কার্যালয়ে ফেরত দিতে হবে।” এছাড়া পুরোনো বই বিক্রির জন্য বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ (ম্যানেজিং কমিটি) সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। তিনি জানান, বই বিক্রির এই অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ভোলায় গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও দুই সমবায় সমিতি

ভোলার দৌলতখান উপজেলার দুইটি সমবায় সমিতি গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গ্রাহকেরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এবং সমিতির অফিসের সামনে রাত-দিন অপেক্ষা করছেন।

দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে আইডিয়াল মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এবং নিউ আইডিয়াল মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে দুটি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে। এই সমিতির সভাপতি আব্দুর রব গ্রাহকদের উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন। গ্রাহকদের মাঝে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে এই টাকা সংগ্রহের পর, গত নভেম্বর মাসে সমিতির অফিসে তালা মেরে তিনি আত্মগোপন করেন।

জানা গেছে, সমিতির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এক লাখ টাকার বিপরীতে ১৫ হাজার টাকার উচ্চ মুনাফা দেওয়া হতো এবং দ্বিগুণ লাভের অফারও দেওয়া হতো। এই লোভনীয় অফারগুলোতে আকৃষ্ট হয়ে দৌলতখান এবং আশপাশের এলাকার গ্রাহকরা তাদের পুঁজি জমা রাখেন। একসময় এই সমিতির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে গ্রাহকরা তাদের জমাকৃত টাকার ফেরত পেতে চরম উদ্বেগে রয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম জানান, তিনি তার গরু-ছাগল বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি তার টাকার হাল জানেন না। সুরমা বেগমও জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি ৩০ হাজার টাকা জমা রেখেছিলেন, কিন্তু সেই টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না। বিধবা মাজেদা বেগমও জানিয়েছেন, তার মৃত স্বামী রেখে যাওয়া ৩ লাখ টাকা তিনি সমিতিতে জমা রেখেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি অফিসে গিয়ে কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার ফেসবুক আইডিতে তিনি জানান, তার বাড়িঘর বিক্রি করে হলেও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেবেন।

দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “যদি কোনো গ্রাহক থানায় লিখিত অভিযোগ দেন, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা সমবায় কার্যালয়ের উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, সমবায় আইন অনুযায়ী যদি কোনো অভিযোগ আসে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




বরিশালে অবৈধ ঘাটে যাত্রী বহন করে ফিটনেস বিহীন অবৈধ স্পিডবোট

বরিশাল সদর উপজেলা শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন থেকে মেহেন্দিগঞ্জ-পাতারহাট নৌপথে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। যদিও এই অঞ্চলের প্রধান বাহন হিসেবে লঞ্চ ব্যবহার করা হয়, তবে অধিকাংশ যাত্রী সময়ের অভাবে স্পিডবোটে যাতায়াত করেন।

তবে, এই নৌপথে চলাচলরত ৫০ থেকে ৫৫টির অধিক স্পিডবোটের একটিরও বিআইডব্লিউটিএ’র লাইসেন্স নেই, যার ফলে এই স্পিডবোটগুলো অবৈধ এবং ফিটনেস বিহীন। বেশিরভাগ বোটে দক্ষ চালকও নেই, যা যাত্রীদের জন্য বিপজ্জনক। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জানা গেছে, বর্তমানে বরিশাল-মেহেন্দিগঞ্জ-পাতারহাট রুটে অর্ধশতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে, এবং এগুলোর কোনো লাইফ জ্যাকেট নেই বা তা ব্যবহারের উপযোগী নয়। এসব বোটে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে স্পিডবোট চালকরা দুর্ব্যবহার করেন, তাই ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিআইডব্লিউটিএ’র নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই অবৈধ স্পিডবোটগুলো চলাচল করছে এবং প্রশাসন একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, স্পিডবোট মালিক সমিতির নেতারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে স্পিডবোট চালাচ্ছেন।

এছাড়া, অবৈধ স্পিডবোট ঘাটে স্থানীয় দোকানদারদের সাথে চাঁদাবাজি করার অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নদী ও বাঁধের ক্ষতির জন্য এই অবৈধ স্পিডবোটগুলো দায়ী। অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে এবং এর ফলে নদীর পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাবাদ স্পিডবোট ঘাটে কোনো কমিটি বা লাইনম্যান নেই। যাত্রীদের কাদা পানি পার করে বোটে উঠতে হয়, যা তাদের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। এসব সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।

এ বিষয়ে বরিশাল অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্পিডবোটগুলো অবৈধভাবে চলাচল করছে এবং এর জন্য প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই স্পিডবোটগুলোর লাইসেন্স না থাকায় সেগুলোর বন্ধের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হতে বলা হয়েছে।

অবশেষে, প্রশাসন যদি দ্রুত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পাবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম