উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে ভুল ধারণা ও করণীয়

অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো উচ্চ রক্তচাপ, যা প্রায়ই একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত। এর জন্য চিকিত্সা ও প্রতিরোধ খুবই জরুরি। তা না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি হঠাত্ করে মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা। তাই এ সম্পর্কে সচেতন থাকার বিকল্প নেই। যদি কারো রক্তচাপ নরমাল মাত্রার চাইতে বেশি হয় এবং অধিকাংশ সময় এমনকি বিশ্রামকালীনও বেশি থাকে, তবে ধরে নিতে হবে তিনি উচ্চ রক্তচাপের রোগী। প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো :

(১) কোনো এক সময় একবার উচ্চ রক্তচাপ হলেই কি রোগী হিসেবে বিবেচনা করা হবে?

উত্তর: না, কেউ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে তা বলার আগে বেশ কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। যেমন—অন্তত তিন দিন ভিন্ন সময়ে বেশ কয়েক বার রক্তচাপ মাপতে হবে। এরপর যদি দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেশি, তবেই বলা যাবে তিনি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। অবশ্যই বসে রক্তচাপ মাপা উচিত, শরীর ও মন যেন শান্ত অবস্থায় থাকে, এমন সময় রক্তচাপ মাপতে হবে।

(২) কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ তো নেই, কেন চিকিৎসা নেব বা ওষুধ খেতে হবে?

উত্তর : অনেকেই মনে করেন যে, উচ্চ রক্তচাপ তার দৈনন্দিন জীবনপ্রবাহে কোনো সমস্যা করছে না বা রোগের কোনো লক্ষণ নেই, তাই উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে চান না বা প্রয়োজন মনে করেন না। তাদের ধারণা, ভালোই তো আছি, ওষুধের কী দরকার?

এই ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভুল। অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না। এটাই উচ্চ রক্তচাপের সবচেয়ে খারাপ দিক। নিয়ন্ত্রণ করা না হলে উচ্চ রক্তচাপ ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। যদিও অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের রোগীর বেলায় কোনো লক্ষণ থাকে না, তবু নীরবে উচ্চ রক্তচাপ শরীরের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ জন্যই উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। অনিয়ন্ত্রিত ও চিকিত্সাবিহীন উচ্চ রক্তচাপ থেকে মারাত্মক শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি অঙ্গে মারাত্মক ধরনের জটিলতা হতে পারে। যেমন—হূিপণ্ড, কিডনি, মস্তিষ্ক ও চোখ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হূদ্যন্ত্রের মাংশপেশি দুর্বল হয়ে হূদ্যন্ত্র রক্ত পাম্প করতে পারে না এবং এই অবস্থাকে বলা হয় হার্ট ফেইলিওর। রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি বিকল হয়ে কার্যকারিতা হারাতে পারে। এছাড়া মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক হয়ে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে এবং চোখের রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি এবং বড় ধরনের জটিলতা এড়াতেই ওষুধ দেওয়া হয়।’

(৩) উচ্চ রক্তচাপ হলে কি চিকিৎসা করাতেই হবে? ওষুধ সেবন কি খুবই জরুরি?

উত্তর : অনেকেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত জানার পরেও ওষুধ খেতে অনিহা প্রকাশ করেন বা খেতে চান না। কারো কারো ধারণা, একবার ওষুধ শুরু করলে তা আর বন্ধ করা যাবে না। সারা জীবন খেতে হবে। তাই ওষুধ শুরু না করাই ভালো। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল, এই চিন্তাও বিপজ্জনক। মনে রাখতে হবে, উচ্চ রক্তচাপ সারে না, একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর জন্য নিয়মিত ওষুধপত্র সেবন করতে হবে।

(৪) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এলে ওষুধ কি বন্ধ করা যাবে?

উত্তর :অনেক রোগী কিছুদিন ওষুধ ব্যবহার করার পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এলে ওষুধ বন্ধ করে দেন, মনে করেন রক্তচাপ ভালো হয়ে গেছে, কাজেই ওষুধ খাওয়ার দরকার কী? এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এ ধরনের রোগীরাই হঠাত্ করে হূদেরাগ বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, এমনকি মৃত্যুও হয়ে থাকে। কোনোক্রমেই ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া ওষুধ সেবন বন্ধ করা যাবে না। অবশ্যই ডাক্তারদের পরামর্শ নিতে হবে, নিয়মিত সারা জীবন ওষুধ সেবন করতে হবে এবং নিয়মিত চেক করাতে হবে।

(৫) উচ্চ রক্তচাপ কি শুধু বয়স্কদেরই হয়?

উত্তর : শুধু বয়স্কদের উচ্চ রক্তচাপ হয়—এ ধারণা ঠিক নয়। যে কোনো বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বয়স হলে রক্তচাপ একটু বেশিই থাকে, এ জন্য চিন্তার কিছু নেই—এমন ধারণাও সঠিক নয়। উচ্চ রক্তচাপ যে বয়সেই ধরা পড়ুক, তাকে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবেই গণ্য করা উচিত।

(৬) তরুণ বয়সে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে কি?

উত্তর : অনেকে ভাবেন, উচ্চ রক্তচাপ বয়স্কদের রোগ। আসলে তা নয়। অল্প বয়সেও উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা আছে, যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে সন্তানেরও উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি নিকটাত্মীয়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও অন্যদের রক্তচাপের ঝুঁকি থাকে। এছাড়া অন্যান্য কারণ হতে পারে, যেমন—অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্ত্যাদি। অধিক ওজন এবং অলস জীবনযাত্রা, খেলাধুলা, ব্যায়াম বা কায়িক শ্রমের অভাবে অল্প বয়সিদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বাড়ছে।

কিছু কিছু অঙ্গে আক্রান্ত রোগের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া গেলে একে বলা হয় সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন। যেমন—কিডনির রোগ, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি ও পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার, ধমনীর বংশগত রোগ, গর্ভধারণ অবস্থায় অ্যাকলাম্পসিয়া ও প্রি অ্যাকলাম্পসিয়া হলে, অনেক দিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ব্যবহার, স্টেরয়েড গ্রহণ এবং ব্যথা নিরামক কিছু কিছু ওষুধ সেবন করলে।

(৭) উচ্চ রক্তচাপ হলে ঘাড়ে ব্যথা হয় কি?

উত্তর : ঘাড়ে ব্যথা হলে কেউ কেউ মনে করেন, নিশ্চয়ই রক্তচাপ বেড়েছে। এই ধারণা অমূলক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্তচাপ বাড়ার কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না।

(৮) লবণ ভেজে খাওয়া যাবে কি?

উত্তর :উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে বাড়তি লবণ ব্যবহার বারণ। শুধু তরকারিতে যতটুকু লবণ দেওয়া হয়, তা খাওয়া যাবে। অনেকের ধারণা, কাঁচা লবণ নিষেধ, কিন্তু লবণ ভেজে খাওয়া যাবে। এ ধারণাও সম্পূর্ণ ভুল। কাঁচা বা ভেজে খাওয়া লবণে কোনো পার্থক্য হবে না।

(৯) মাংস, ডিম, দুধ খাওয়া নিষেধ কি?

উত্তর : অনেকের ধারণা, উচ্চ রক্তচাপ হলে মাংস, ডিম, দুধ খাওয়া নিষেধ। এসব খাবার খেলে রক্তচাপ বাড়ে। এটা ঠিক নয়। পরিমাণমতো এগুলো খাওয়া যাবে, তবে গরু বা খাসির মাংসের চর্বি পরিহার করতে হবে।

(১০) তেঁতুল গুলে খেলে বা টক খেলে রক্তচাপ কমে কি?

উত্তর : অনেকে মনে করেন, রক্তচাপ বাড়লে পানিতে তেঁতুল গুলে খেলে বা টক খেলে রক্তচাপ কমবে। আসলে মনে রাখতে হবে, এই ধারণা সম্পুর্ণ ভুল, তেঁতুল বা টক খাওয়ার সঙ্গে রক্তচাপ কমার কোনো সম্পর্ক নেই।

উপসংহার : মনে রাখতে হবে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, মদ্যপান, তেল-চর্বিজাতীয় খাবার, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ ইত্যাদি উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। জীবনাচরণ পরিবর্তন করে রক্তচাপ বাড়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। আর ওষুধ সেবনের বেলায় অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেকেই ফার্মেসিতে গিয়ে দোকানির কাছ থেকে অথবা নিজের ইচ্ছমেতো ওষুধ কিনে সেবন করে থাকেন। যে কোনো ওসুখের ক্ষেত্রেই এটি বিপজ্জনক। মনে রাখতে হবে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য জীবনযাপন পদ্ধতির সঠিক পরিবর্তনের সাথে নিয়মিত ওষুধ সেবন অত্যন্ত জরুরি। যারা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, তাদের অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিয়মিত চেক করাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ’র লেখাটি ইত্তেফাক থেকে নেয়া।



হিট স্ট্রোকের সহজ ঘরোয়া প্রতিকার




স্মৃতিশক্তি বাড়ায় ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমায় ব্যায়াম




হাড় ভালো রাখে যেসব ভিটামিন




হাঁটু ব্যথা কেন হয়? জেনে নিন উপসর্গ ও চিকিৎসা 




চিনি খাওয়া বন্ধ করলে শরীরে যা ঘটে




দুপুরে ঘুমালে শরীরে যা ঘটে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পর বিছানায় গা এলিয়ে দেন অনেকেই। দুপুরের ঘুমের মধ্যে অনেকেই শান্তি খুঁজে পান। তবে এই ঘুম কি শরীরের জন্য আদৌ ভালো? বিশেষজ্ঞদের মতে, দুপুরের ঘুম পেশিকে আরও শিথিল করে দিতে পারে।

এ বিষয়ে ভারতীয় আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ঐশ্বর্য্য সন্তোষ জানান, দুপুরের ঘুম মানুষের শরীরে স্নিগ্ধ প্রভাব ফেলে। এটি প্রশান্তি দিলেও এর থেকে নানা ধরনের অসুবিধা দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে খাবার খাওয়ার পরপরই দিনে বা রাতে কখনোই ঘুমানো উচিত নয়। অন্তত শোয়ার ঘণ্টাখানেক আগে হাঁটাচলা করা কিংবা বসে থাকা আবশ্যক বিষয়। না হলে খাবার হজম হবে না। শরীরে দুর্বলতা দেখা দেবে।

তবে শিশুরা দুপুরে ঘুমাতে পারে। আবার যারা অনেক ভোর থেকেই পরিশ্রম করেন শক্তি বাড়ানোর জন্য তারাও ভাতঘুম দিতে পারেন।

এছাড়া বয়স্ক মানুষ ও যারা দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণ করেছেন এমন মানুষেরা দুপুরে একটু ঘুমিয়ে নিতে পারেন। এমনকি যারা অসুস্থ, দুর্বল ও কম ওজনে ভুগছেন তারাও দুপুরে ঘুমাতে পারেন।

অন্যদিকে যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগী, হজমের সমস্যায় ভুগছেন কিংবা যাদের শরীরে ব্যথা বেশি তারা দুপুরে একেবারেই ঘুমাবেন না।

দুপুরে ঘুমালে অনেকের শরীরে ভারী ভাব, খাবারে অ্যালার্জি, অত্যধিক মাথাব্যথা, নাকে জ্বালাভাব, ক্রনিক রাইনিটিস অথবা পেশিতে টান অনুভব করতে পারেন। তা প্রয়োজন দুপুরের ঘুম এড়িয়ে যাওয়াই শরীরের জন্য ভালো।

সূত্র: ইন্ডিয়ান 

 




রান্নাঘরের এই ৭ খাবার আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে




ফ্রিজ দীর্ঘ বছর ভালো রাখার ৫ উপায়




শখের বসে কোয়েল পালনে সফল নাহিদ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ। শখের বসে কোয়েল পালন থেকে এখন চাষি। পটুয়াখালী পৌর শহরের উপজেলা সড়কের হেতালিয়া বাধঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. নাহিদ ইসলাম একজন সফল কোয়েল চাষি। নাহিদ ৩ বছর আগে শখের বসে ৮ জোড়া কোয়েল পাখি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন।

বর্তমানে যখন অনলাইন গেমস আর মাদকের সাথে মিলেমিশে যাচ্ছে যুব সমাজ ঠিক সে সময়ে টগবগে যুবক মো. নাহিদ ইসলাম নিজ বাড়িতে পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে তুলেছেন কোয়েল পাখির খামার। শখের বসে বাজার থেকে প্রথমে কিছু কোয়েল পাখি কিনে বাসায় একটি খাঁচায় রেখে পালন করতে শুরু করলেও বর্তমানে তার রয়েছে ২টি খামার। তাতে তিন হাজারেরও বেশি কোয়েল পাখির দেখাশুনা করছেন। প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পাখিদের খাবার দেয়া, পরিচর্যা এবং ডিম সংগ্রহের কাজ করে দিন পার হয় এই যুবকের । বর্তমানে কোয়েল পাখিগুলো ডিম দেয়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তরুণ এ উদ্যোক্তা। প্রতিদিন এ সব পাখি থেকে ২৪০০ থেকে ২৫০০ ডিম সংগ্রহ করা হয় তাতে গড়ে প্রতিদিন ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা আয় হচ্ছে বলে জানান তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ।

নাহিদ জানান, আমার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল ছোটবেলা থেকেই। শখের বসে কোয়েল পালন শুরু করে এটাকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখলাম কোয়েল পালন সহজ ও লাভজনক। তাই ব্যাপকভাবে এর লালন পালন শুরু করি। আজ আমার খামারে তিন হাজারেরও বেশি কোয়েল পাখি আছে।

আরো পড়ুন : ধর্ষণের পর হত্যা, ঝুলিয়ে রাখা হয় লাশ, গ্রেপ্তার যুবক

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক সরদার বলেন, কোয়েল পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। হাঁস মুরগির তুলনায় জায়গা এবং খাবার কম লাগে। এলাকায় তেমন বেশি কোয়েল পালন হয় না। দু’চার জনে কোয়েল পালন করে এবং তারা লাভজনক পর্যায়ে আছে। কোয়েলের ডিম হাঁস মুরগির ডিমের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে।

পোলট্রিতে এগারোটি প্রজাতি রয়েছে, তারমধ্যে কোয়েল একটি ছোট আকারের গৃহপালিত পাখি। অন্যান্য পোলট্রির তুলনায় কোয়েলের মাংস এবং ডিম গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট। আনুপাতিক হারে কোয়েলের ডিমে কোলেস্টেরল কম এবং আমিষ বেশি। একটি মুরগির পরিবর্তে ৮টি কোয়েল পালন করা সম্ভব। কোয়েল পাখি প্রতিপালন করে পারিবারিক পুষ্টি জোগানের সাথে সাথে অতিরিক্ত কিছু আয় করাও সম্ভব। স্বল্প মূল্যে, অল্প জায়গায়, অল্প খাদ্যে কোয়েল পালন করা যায়। কোয়েল পালনের সুবিধা কোয়েল দ্রুত বাড়ে। ৬-৭ সপ্তাহে ডিমপাড়া শুরু করে এবং বছরে ২৫০-২৬০ পাড়ে ডিমে দেয়। কোয়েল ১৭-১৮ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, রোগবালাই খুব কম এবং খাবার খুবই কম লাগে বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের উপযোগী। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোয়েল পালন দেশের পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।