মেয়ে এত সুন্দর কেন! ডিএনএ পরীক্ষা করালেন বাবা

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: মেয়ের বয়স যত বাড়ছে, ততই সে সুন্দর হচ্ছে। তবে বাবা, মায়ের সঙ্গে চেহারার কোনও মিল নেই। এমনকী পরিবারের কারও সঙ্গে মেয়ের চেহারার কোনও মিল খুঁজে পাননি বাবা। এর থেকেই শুরু সন্দেহ। স্ত্রীর সঙ্গে নিত্যদিন ঝামেলা। অবশেষে মেয়ের ডিএনএ পরীক্ষা করালেন বাবা। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেই রীতিমতো থ হয়ে যান তিনি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে ভিয়েতনামে। ল্যান নামের এক কিশোরী হ্যানয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে জানতে পারে, তার সহপাঠীর জন্মদিন একইদিনে। এমনকী এক শহরের এক হাসপাতালেই তারা জন্মেছিল। ল্যান ও তার বন্ধুর জন্মদিন একসঙ্গে পালন করা হত স্কুলে। সম্প্রতি জন্মদিনে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল ল্যান। তাকে সামনে দেখেই চমকে যান বন্ধুর মা। কারণ ল্যানের সঙ্গে বন্ধুর মায়ের চেহারার হুবহু মিল রয়েছে।

এরপরই ল্যানের মা হংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বন্ধুর মা। দুই বান্ধবীর চেহারা নিয়ে আলোচনাও করেন তাঁরা। অবশেষে দুইপক্ষ মেয়েদের ডিএনএ পরীক্ষা করায়। তাতেই ধরা পড়ে, হাসপাতালের ভুলে তাঁদের সন্তান বদলে যায়। দীর্ঘ কয়েক বছর পর ডিএনএ পরীক্ষার পর তা জানতে পারেন সকলে।

হং জানিয়েছেন, মেয়ের চেহারা নিয়ে স্বামীর সন্দেহ হয়েছিল শুরুতেই। তাঁর সন্দেহ ছিল, হং বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। ল্যান যে তাঁর সন্তান নয়, এমনটাই সন্দেহ হত। এর জেরেই তুমুল ঝামেলা করতেন। অবশেষে বাড়ি ছেড়ে ল্যানকে নিয়ে হ্যানয়ে থাকতে শুরু করেন হং। সেখানে স্কুলে ভর্তি করার পরেই আসল সত্যি সামনে আসে।




৪ হাজার আলোকবর্ষ দূরে পৃথিবীর মতো গ্রহ আবিষ্কার

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: ৪,০০০ আলোকবর্ষ দূরের একটি তারা ঘিরে পৃথিবীর মতো একটি পাথুরে গ্রহ আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এটি সৌরজগতের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করেছে। পৃথিবীর মতো ওজনের এই গ্রহটি ধবল বামন নামে পরিচিত একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। ধবল বামন মিথুন নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত।

গবেষণায় দেখা গেছে, ধবল বামন একটি তারার অবশিষ্টাংশ, যা জ্বালানির অভাবে বাইরের স্তরগুলোকে হারিয়ে ফেলে। এটি সূর্যেরও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে। সূর্য যখন লাল দৈত্যে পরিণত হবে, তখন এটি প্রসারিত হবে। এ সময় কোন কোন গ্রহ গ্রাস হবে, সেটিই মূল প্রশ্ন।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলির গবেষকরা ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় কেএমটি-২০২০-বিএলজি-০৪১৪ নামক একটি সিস্টেম পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা একটি ধবল বামন নক্ষত্র এবং পৃথিবীর সমান আকারের একটি গ্রহ নিয়ে গঠিত। এই গ্রহটি নক্ষত্রটির চারপাশে পৃথিবী থেকে দ্বিগুণ দূরত্বে প্রদক্ষিণ করছে। গবেষণায় আরও একটি ব্রাউন ডোয়ার্ফ পাওয়া যায়, যা বৃহস্পতির তুলনায় প্রায় ১৭ গুণ বেশি ভারী।




পঙ্গু বাবার চিকিৎসা ও সংসার চালাতে জন্য ভিক্ষা করেন শিশু নুসরাত

বরিশাল অফিস :: মায়াভরা চোখের শিশুটির নাম নুসরাত। বয়স মাত্র পাঁচ-ছয় বছর। মিষ্টি ও বিনয়ী স্বভাবের এই শিশুটি প্রতিদিন তার পঙ্গু বাবার চিকিৎসা সংসার চালানোর অর্থ যোগাতে হুইল চেয়ারে বসিয়ে নিয়ে ভিক্ষা করে বেড়ায় বরিশাল শহরের বিভিন্ন জায়গায়।

শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বরিশালের জিলা স্কুলের সামনে এমনই এক দৃশ্য দেখে মর্মাহত হন চা দোকানে বসা মানুষজন।

এ সময় শিশুটি অসহায়ভাবে জানায়, আমার বাবা কাজ করতে পারে না। সংসারের খরচ ও বাবার চিকিৎসারখরচ জোগাতে বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়।

নুসরাতের বাবা নুরে আলম জানান, ২০১৪ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার পায়ে গুরুতর আঘাত পায়। এরপর পায়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে, যার কারণে ২০২১ সালে পুরো পা কেটে ফেলতে হয়। এখন তিনি হুইল চেয়ারে চলাচল করেন। বরিশালের কাউনিয়া বিসিক রোডের একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। নুসরাত তাদের বড় মেয়ে এবং ছোট একটি ছেলে আছে। ভিক্ষা করেই চলছে তাদের সংসার।

বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে আরও করুণ তথ্য। নুরে আলমের পরিবার প্রায় ১০ বছর ধরে কাউনিয়ার একটি ছোট টিনের ঘরে থাকছেন। ঘরভাড়া ৩ হাজার টাকা, এবং লাকড়ির চুলায় রান্না করেন তারা।

নুসরাতের মা কাকলী বেগম জানান, খাদ্য সংকটের কারণে তাদের সন্তানদের সঠিকভাবে শিক্ষাদান করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি সহায়তা চাইলেও তারা এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাননি।

পরিবারটির অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে বাড়িওয়ালা রেনু বেগম বলেন, ওরা খুব ভদ্র মানুষ, তবে আমার পক্ষে তাদের সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে না।




পরীমনি, সিনেমার মতোই তাঁর জীবন

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: বছর পাঁচেক আগের কথা। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠান চলছে। প্রায় সব পুরস্কার দেওয়া শেষ। সেরা নায়িকার মনোনয়ন থাকলেও পুরস্কারে চিত্রনায়িকা পরীমনির নাম নেই! তিনি কেঁদে একাকার। একসময় ঘোষণা এল, বিশেষ সমালোচক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। চোখ মুছতে মুছতে মঞ্চে উঠলেন। বরেণ্য অভিনেত্রী কবরীর হাত থেকে পুরস্কার নিলেন ভেজা চোখে। কবরী বললেন, ‘পরীদের কাঁদতে নেই।’ কাঁদো কাঁদো স্বরে পরী বললেন, ‘আমি তো ডানাকাটা পরী।’

কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিমানবন্দর। দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দরে সবার সামনে কাঁদছেন পরী। কর্মকর্তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ়! হেতু কী? জানা গেল, একটি ফুটবল নিয়েছিলেন ঢাকায় আনবেন বলে। কলকাতা থেকে ফেরার পথে সেটা বিমানে তুলতে দেবে না কর্মীরা। শেষমেশ বাতাস বের করে চ্যাপটা বলটি বাংলাদেশে এল পরীর সঙ্গে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সার্চ দিলে পরীর কান্নার অনেক ভিডিও পাওয়া যাবে। আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অঝরে কেঁদেছেন। কেঁদেছেন সংবাদ সম্মেলনে। এক জীবনে অনেকবার কেঁদেছেন পরী। দুঃখে কেঁদেছেন, সুখে কেঁদেছেন। তবে পরীর কান্নার লোনাজলে যেন হাসিটাই লুকিয়ে থাকে। ফেসবুকজুড়ে পরীর হাসিমুখের জয়জয়কার। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরীর হাসিমুখের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। আজ পরীর জন্মদিন। নেট দুনিয়ায় জানান দিয়েছেন, এক কোটি ছয় লাখ ভক্তকে নিয়েই কেক কেটেছেন।

পরীর গল্প কে না জানে। যাঁর জীবনটাই যে একটা গল্প। যে গল্পে এই হাসি, এই কান্না। মন চাইলে নাচ করেন। বেদনার সুরে গুনগুন করেন। মন চাইলে সেজেগুজে বেরিয়ে পড়েন। আজ ঢাকা তো কাল পিরোজপুর, পরশু কক্সবাজার কিংবা কলকাতা! মন চাইলে এর ওপর, তার ওপর রাগ ঝাড়ছেন। রান্না করছেন। সন্তানের ছবি তুলে ফেসবুকে দিচ্ছেন।




নিয়তের কারণে আমলের নেকি বৃদ্ধি পায়: ইসলামের আলোকে নিয়তের মহত্ব

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, মানুষের কর্মের মূল ভিত্তি হচ্ছে তার নিয়ত বা ইচ্ছা। কোনো কাজের পিছনে থাকা নিয়তই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। একজন মানুষ ভালো কাজ করার ইচ্ছা করলেও যদি কোনো কারণে সেই কাজটি করতে না পারে, তবুও তার নিয়তের জন্য সে আল্লাহর কাছে পুরস্কৃত হয়। এই বিষয়টি ইসলামের বিশেষ এক মহত্বের উদাহরণ, যেখানে নিয়তের বিশুদ্ধতা ও সদিচ্ছার কারণে মানুষ অনেক নেকি অর্জন করতে পারে।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে, হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা তার ফেরেশতাদের বলেন, আমার বান্দা যদি কোনো গুনাহের কাজ করার ইচ্ছা করে কিন্তু তা বাস্তবে না করে, তাহলে তার জন্য কোনো গুনাহ লেখা হবে না। বরং সে যদি আমার ভয়ে সেই কাজ থেকে বিরত থাকে, তাহলে তার জন্য একটি নেকি লেখা হবে। অপরদিকে, যদি কেউ কোনো ভালো কাজ করার ইচ্ছা করে কিন্তু তা করতে না পারে, তাহলেও তার জন্য একটি নেকি লেখা হয়। আর যদি সে সেই ভালো কাজটি করে, তাহলে তার জন্য ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত নেকি দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি)

এটি স্পষ্টভাবে বোঝায় যে, নিয়তের বিশুদ্ধতা ও আন্তরিকতার উপর ভিত্তি করে আল্লাহ মানুষকে পুরস্কৃত করেন। মানুষ যদি কোনো গুনাহের কাজ করার ইচ্ছা করেও আল্লাহর ভয় বা সংযমের কারণে তা না করে, তবে সে শুধু গুনাহ থেকে রেহাই পায় না, বরং নেকি অর্জন করে। এটি ইসলামের মহান দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা মানুষকে শুধু বাহ্যিক কর্মে সীমাবদ্ধ না থেকে আন্তরিকতাকে গুরুত্ব দেওয়ার শিক্ষা দেয়।

**সদকার নিয়তের উদাহরণ:**

রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি গল্পের মাধ্যমে নিয়তের গুরুত্বের কথা বলেছেন, যেখানে এক ব্যক্তি রাতে সদকা দেওয়ার ইচ্ছা করেছিল। সে অজান্তে এক অসতী নারীর হাতে সদকা দিয়ে দেয়। সকালে মানুষজন এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা শুরু করে যে, “গত রাতে এক অসতীকে সদকা দেওয়া হয়েছে।” এ কথা শুনে সে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং বলে, “হে আল্লাহ! অসতীকে সদকা দেওয়ার ব্যাপারেও আপনারই প্রশংসা।” এরপর সে আবার সদকা দেওয়ার নিয়ত করে এবং এবার তা এক ধনী ব্যক্তির হাতে দিয়ে দেয়। পরের দিন লোকজন আবারও আলোচনা করে, “গত রাতে ধনীকে সদকা দেওয়া হয়েছে!” এরপরও সেই ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করে এবং আবার সদকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শেষবারে সে একজন চোরের হাতে সদকা দেয়, এবং পরের দিন আবারও লোকজন বলে, “গত রাতে চোরকে সদকা দেওয়া হয়েছে!” তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয় যে, তার সদকা কবুল হয়েছে। সম্ভবত তার সদকার কারণে অসতী নারী অন্যায় থেকে ফিরে আসবে, ধনী ব্যক্তি তার সম্পদ ব্যয় করার গুরুত্ব বুঝবে, আর চোর তার চুরির পথ থেকে সরে আসবে। (মুসলিম, হাদিস: ২,২৫২)

এই উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, সদকা বা অন্য কোনো ভালো কাজের পিছনে নিয়ত থাকলে আল্লাহ তা কবুল করেন, এমনকি সেই সদকার প্রকৃত প্রাপক সম্পর্কে ভুল হলেও। আল্লাহ মানুষের অন্তরের অবস্থার উপর ভিত্তি করে তার পুরস্কার নির্ধারণ করেন, যা কর্মের বাহ্যিক ফলাফল থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

**নিয়তের বিশুদ্ধতা ও আল্লাহর পথে ইচ্ছা:**

নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সততার সঙ্গে আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার ইচ্ছা করবে, আল্লাহ তাকে সেই মর্যাদা দান করবেন, যদিও সে বিছানায় মৃত্যুবরণ করে। (মুসলিম, হাদিস: ৪,৮২৪) অর্থাৎ, একজন ব্যক্তি তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল লাভ করবে, যদিও সে বাস্তবিকভাবে সেই কাজ সম্পাদন করতে না পারে।

এছাড়াও, হাদিসে উল্লেখ আছে যে, যদি কেউ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার ইচ্ছা করে কিন্তু ঘুম তাকে ঘিরে ফেলে এবং সে উঠতে না পারে, তাহলেও তার জন্য তাহাজ্জুদের নেকি লেখা হয়। আর তার ঘুমকে আল্লাহ সদকাহ হিসেবে গণ্য করেন। (ইমাম নাসায়ি আস-সুনান, হাদিস: ১,৭৮৭)

ইসলামে নিয়ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা মানুষের আমলকে মহৎ করে তোলে। আল্লাহ তাআলা মানুষের বাহ্যিক কর্মের চেয়ে অন্তরের বিশুদ্ধতাকে বেশি প্রাধান্য দেন। তাই আমাদের উচিত সব সময় নিয়ত বিশুদ্ধ রাখা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ভালো কাজ করা। আমাদের কর্মের উদ্দেশ্য যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়, তবে আমরা অবশ্যই সেই কাজের জন্য পুরস্কৃত হব, এমনকি তা বাস্তবায়ন করতে না পারলেও।




বরিশালের দুর্গা সাগরে পর্যটকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও সুবিধার সংকট

বরিশাল অফিস :: বরিশালের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন ও পর্যটন এলাকা দুর্গা সাগর দীঘি। শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরত্বের এই পর্যটন স্পটে এখনো নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়নি দর্শনার্থীদের জন্য। শুধু যে বখাটেদের উৎপাত এখানে তা কিন্তু নয়। সবচেয়ে বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে দুর্গা সাগর দীঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। রোগী সেজে বিনা টিকিটে প্রবেশ করা ছাড়াও ভিতরে বেড়েছে ভিক্ষাবৃত্তি। নেই দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীর জন্য কোনোরকম সেবামূলক ব্যবস্থা।

খাবার, বিশ্রাম, গাড়ি পার্কিংসহ পরিচ্ছন্ন টয়লেট সুবিধাও অনুন্নত। ভিতরে চমৎকার একটি মিনি চিড়িয়াখানা করা হলেও শিশুদের বিনোদনের জন্য রাখা হয়নি কোনো উপকরণ। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয়টি চমৎকার হংশমুখো বোট দেয়া হলেও তা প্যাকেটবন্দী হয়ে পড়ে আছে পুকুর ঘাটে। এর পরিবর্তে প্লাস্টিকের দুটো সাধারণ বোট ভাসছে দীঘিতে। এগুলো স্থানীয় বখাটেদের নিয়ন্ত্রণে। এসব নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানালেন ফরিদপুর, পটুয়াখালী ও ঢাকা থেকে আগত কয়েকজন দর্শক।

সরেজমিনে ১৪ অক্টোবর বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নে অবস্থিত ইতিহাস ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন দুর্গা সাগর দীঘির প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে এসব অভিযোগ শুনতে হলো। তাদের অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেল ভিতরে প্রবেশ মাত্রই। এসময় বেশ কয়েকজন তরুনকে দেখা গেল মোটরসাইকেল নিয়ে দিঘির পাড়ের সরু সড়কে ছুটে বেড়াতে। যাদের দেখে দিঘি পাড়ে বসা মেয়েরা দ্রুত  উঠে বের হয়ে গেল।

এই ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের দুর্গা সাগর দীঘি দেখার জন্য বরিশাল থেকে এসে প্রথমেই চোখে পড়বে প্রথম প্রবেশদ্বারে লেখা আছে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত গেট। ভুল করে এখানে নেমে পড়লে কিন্তু হাঁটতে হবে পুরো দেড় কিলোমিটার পথ। কারণ, এই প্রবেশদ্বারটি জন্মলগ্ন থেকেই তালাবদ্ধ থাকে। শুধু মাত্র প্রশাসনের প্রয়োজনেই খোলা হয় বলে জানালেন আশেপাশের বাসিন্দারা। দীঘি পাড়ের মূল প্রবেশদ্বারটিতে তখনও মেরামত কাজ চলছে। টিকিট কাউন্টারে বসা লোকটি ২০ টাকা দরে সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ৭৮টি টিকিট বিক্রি করতে পেরেছেন।

বিকেল তিনটার পর মোটামুটি ভীড় হয় বলে জানালেন টিকিট কাউন্টারে থাকা ব্যক্তি। ভিতরে প্রবেশ করে হাতের ডানেই রয়েছে মাটির তৈরি তৈজসপত্র নিয়ে দুটো বাণিজ্যিক পসরা। আর হাতের বামে ওয়াশরুম লেখা ভবনের পাশে দুটি সাইনবোর্ড দৃষ্টি কাড়ে। যেখানে লেখা এই দীঘির ইতিহাস। জানা যায়, স্থানীয় জনগণের পানি সংকট দূর করার জন্য ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে এ দীঘিটি খনন করা হয়। তৎকালীন চন্দ্রদ্বীপ পরগনার রাজা শিব নারায়ন তার স্ত্রী রানী দুর্গাবতীর নামে এই দীঘি খনন করেন। জনশ্রুতি রয়েছে রাণী দুর্গাবতী একটানা বিশ্রামহীন যতদূর পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলেন ততদূর পর্যন্ত এ দীঘি খনন করা হয়েছে। আর এ কাজে তখনকার সময়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

চন্দ্রদ্বীপের রানী দুর্গাবতীর নামেই দীঘিটির নামকরণ করা হয় দুর্গা সাগর। দীঘি খননে একরাতে রাণী প্রায় ৬১ কানি জমি হেঁটেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী দীঘিটি ৪৫ একর ৪২ শতাংশ জমিতে অবস্থিত। এর ২৭ একর ৩৮ শতাংশ জলাশয় এবং ১৮ একর চার শতাংশ পাড়। এছাড়া দীঘির চারপাশ দিয়ে ১.৬ কিলোমিটার হাঁটার রাস্তা রয়েছে। পাড়টি উত্তর-দক্ষিণে লম্বা ১৪৯০ ফুট এবং প্রশস্ত পূর্ব-পশ্চিমে ১৩৬০ ফুট। দীঘিটির মাঝখানেই রয়েছে ছোট একটি দ্বীপ।

যা এ দীঘির সৌন্দর্য আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে তুলেছে। আর এখানেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে ঢাকা থেকে আগত দর্শক সাপ্তাহিক সময় পূর্বাপর পত্রিকার সম্পাদক ও গায়ক হাসান মাহমুদ বলেন, ঐ যে দ্বীপটি ওটিকে ঘিরেই হতে পারে এই দুর্গা সাগরের অন্যতম আকর্ষণ। পিকনিক স্পট যেটা পাড়ে তৈরি হয়েছে, সেটি ওখানে হতে পারে। পাশাপাশি ওখানে শিশুদের জন্য একটি বিনোদন ব্যবস্থা হলে খুবই চমৎকার হবে। তখন এই দীঘির আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে। বোটগুলোও নিয়মিত ব্যবহার হবে এরফলে। তবে সবার আগে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান হাসান মাহমুদ।

ঢাকা থেকে স্ব-পরিবারে এই দুর্গা সাগর দীঘির পাড়ে এসেছেন কবি ও কণ্ঠশিল্পী হাসান মাহমুদ। তার সহধর্মিণী বললেন, এখানে পাড়ে ঘুরতে বেশ ভালো লেগেছে। চমৎকার সবুজের বেষ্টনী ও মিনি চিড়িয়াখানার পরিকল্পনা। চারপাশের পরিচ্ছন্নতাও খুবই সুন্দর। কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে আসা আমাদের বসার জন্য, খাবার জন্য একটু রিফ্রেশ হওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেই কেন? আধুনিক সুযোগ সুবিধা কিছুই নেই। ওয়াশরুম বা টয়লেট যা আছে তা খুবই নিম্ন মানের বলে জানান তিনি। এখানে সরকারি উদ্যোগে পর্যটনের রেষ্টরুম ও রেষ্টুরেন্ট থাকা উচিত বলে জানান তিনি।

এ সময় পাশে এসে দাঁড়ালেন ফরিদপুর থেকে আগত এক দম্পতি সোহেল ও শবনম। তারা বললেন, পশ্চিম পাড় থেকে আমরা দ্রুত এপাশে চলে এসেছি। ওপাশে এখন মোটরসাইকেল নিয়ে একদল বখাটে আড্ডা দিচ্ছে। দুর্গন্ধের সিগারেট বা গাঁজা ব্যবহার করছে ওরা। এটা এখানে আশা করিনা আমরা।

পটুয়াখালী থেকে আগত দু,জন দর্শনার্থী বলেন, পর্যটন স্পট এটি। টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। অথচ ভিতরে রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যেখানে বিনা টিকিটের রোগী প্রবেশ করেন। অনেকেই এটা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে। ভিতরে ভিক্ষুকের জন্য বসা যায় না বলে জানান তারা।

এসময় বেশ আন্তরিকতা নিয়ে ছুটে এলেন এখানকার দীর্ঘদিনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর খান। তিনি জানালেন, চলমান পরিস্থিতিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার চেষ্টা চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে বরিশালের জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন দুইবার ঘুরে গেছেন এখানে। একজন ম্যাজিস্ট্রেটও এখানে দায়িত্ব পালন করছেন। চারপাশে দেয়াল নির্মাণ শেষ হয়েছে। প্রধান ফটকের কাজ শেষ হলেই কার পার্কিং ব্যবস্থার কাজ শুরু হবে। এগুলো শেষ হলে নিরাপত্তা বিষয়ে আরো সচেতন হওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

বরিশালের ভূমি ও পর্যটন দপ্তরের অধীনে মাধবপাশার এই দুর্গা সাগর দীঘিতে নিয়মিত মাছ ধরে নিয়ে যায় সরকারি কর্মকর্তারা। পদাধিকার বলে এটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। প্রশাসনের উদ্যোগেই এখানে পিকনিক স্পট ও টিকিট কেটে মাছ ধরার ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রতিদিন এই দীঘি থেকে গড় আয় ৫০০০ টাকা। শুক্র ও শনিবার ১২-১৫ হাজার টাকাও হয় বলে জানা গেছে। এরপরেও দর্শনার্থীদের যত্নের কোনো ব্যবস্থা নেই এই পর্যটন স্পষ্টে।




বরিশালের ‘লৌহ মানব’ ও ‘সিংহ পুরুষ’দের খোঁজ নেই

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও তার সরকার পতনের পর আত্মগোপনে থাকা বরিশালের ৭ এমপি‘দের নিয়ে নানা আলোচনা –সমালোচনার শেষ নেই। ইতোমধ্যে রাশেদ খান মেনন ও বরিশাল সদর আসনের এমপি সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহিদ ফারুক গ্রেপ্তার হয়ে কারান্তরীন হয়েছেন। অন্যদের মধ্যে কেউ আছেন দেশে আত্মগোপনে। আবার কেউ ক্ষমতা ছাড়ার আগে-পরে পাড়ি জমাতে সক্ষম হয়েছেন প্রতিবেশী দেশ সহ বিদেশে। অনেকে আবার দেশত্যাগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হবার দিন কয়েক পরেই।

তবে বরিশালের ৬টি সংসদীয় আসন ছাড়াও একটি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি কোন দিনই এলাকার নিদিষ্ট লোকদের বাইরে আমজনতা সহ এলাকার উন্নয়ন ও ভালমন্দের তেমন কোন খোজ খবর রাখতেন না বিধায় তাদের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি এলাকার রাজনীতিতে এখনো তেমন কোন প্রভাব ফেলেনি। নির্বাচিত ৬ এমপি’র মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত বরিশাল-২ আসনের রাশেদ খান মেনন একাধিকবারের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন। তবে তিনি অন্যদের তুলনায় কিছুটা ব্যতিক্রমও ছিলেন। এমপি বা মন্ত্রী অবস্থায় তিনি নিজ এলাকা ছাড়াও নির্বাচনী এলাকা এবং বরিশালের যেকোনো মানুষের উপকারের চেষ্টা করে গেছেন। মহাজোট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে বরিশালের উন্নয়নে সম্ভব সবকিছু করারও চেষ্টা করেছেন মেনন।

তবে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অংগ সংগঠন যাকে এতদিন ‘দক্ষিণাঞ্চলের অভিভাবক’ হিসেবে উল্লেখ করতেন, সেই বরিশাল-১ আসনের এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ছাত্র আন্দোলনের শুরুতেই দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। দীঘ রাজনৈতিক জীবনে আবুল হাসনাত সব সময়ই বিপদের আগাম আঁচ করতে পারেন বলে খ্যাতি আছে। এবারো তিনি আন্দোলনের শুরুতেই মুম্বাইতে মেয়ের বাড়ীতে চলে গেছেন। অতীতে ভারতে অবস্থানকালে তিনি বেশীরভাগ সময়ই আজমির শরিফে অবস্থান করে এবাদত বন্দেগীতে রত থাকতেন। এবারো তার অন্যথা হচ্ছে না বলে ঘনিষ্ঠজনেরা মনে করছেন। তবে ইতোমধ্যে নিজ এলাকা আগৈলঝাড়াতে এক ছাত্রদল নেতাকে ক্রস ফায়ারে হত্যার দায়ের পুলিশের ডিঅই‌জি ও এসপি সহ কয়েকজনের নামের মামলায় আবুল হাসনাতের নামও উঠে এসেছে।

বরিশাল-৩ আসনে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্র গোলাম কিবরিয়া টিপু’র কোন খোজ নেই। যদিও তিনি ক্ষমতার আমলেও এলাকার তেমন কোন খোজ খবর রাখতেন না। তবে ক্ষমতা হারানো সরকারী দলের কোটায় নির্বাচন করে এমপি হওয়া আস্থা-ভাজন বিরোধী দলের এ নেতাও এখন অনেকটা নিরুদ্দেশ। তিনি দেশে না বিদেশে তাও বলতে পারছেন না ঘনিষ্ঠজনেরা।

এমনকি বরিশাল-৪ আসনের এমপি পংকজ দেবনাথও নিরাপদে ভারতে পালিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। তার বিরুদ্ধেও দু বছর আগে বিএনপি অফিসে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ মামলা হয়েছে। দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাম্মি আহমদ সুপ্রিম কোট থেকে অযোগ্য ঘোষিত হলেও পরে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। শাম্মি আহমদ বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া অবস্থান করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানালেও ৫ আগস্টের পরে তার নিশ্চিত অবস্থান নিকটজনদেরও অজানা। অস্ট্রেলিয়ার পাসপোটধারী শাম্মির সন্তানেরা সেখানেই বসবাস করছে বলে জানা গেছে।

বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম গত ২ আগস্ট সর্বশেষ এলাকায় এসে খুব অল্প সময় অবস্থানের পর ঢাকায় ফিরে যান। ৩ আগস্ট তার বাড়ীতে হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। সরকার পতনের পরে ঢাকায় অবস্থান করলেও বরিশাল জেলা এবং মহানগর বিএনপি অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মামলায় তাকে সম্প্রতি ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পরে বরিশালে নিয়ে আসা হয়। পরে মহানগর বিএনপি’র শান্তি-সংহতি মিছিল এবং দলীয় নেতা জিয়া-উদ্দিন শিকদার সহ অন্যান্যদের ওপর হামলার অভিযোগে আরো একটি মামলায় জাহিদ ফারুককেও আসামী করা হয়েছে।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৬ আসনে প্রথমবার নৌকার টিকিট নিয়ে এমপি হওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুল হাফিজ মল্লিক-এরও কোন খোঁজ নেই। সরকার পতনের পরে এলাকার ঘনিষ্ঠজনেরও তার অবস্থান জানেন না। এলাকায় অনেকটা বসন্তের কোকিল হিসেবে পরিচিত হাফিজ মল্লিক নির্বাচন এলেই এলাকার মানুষের খোজ খবর রাখতেন বলে খ্যাতি আছে। এখনো তার অন্যথা হচ্ছেনা বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক-গন মনে করছেন। তবে এখনো কোন মামলায় তার নাম আছে বলে জানা যায়নি।

মহানগরীর বগুড়া রোডের বাসিন্দা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা আমীর হোসেন আমু ঝালকঠী সদর ও নলছিটি উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি হলেও বরিশালের রাজনীতি সহ সব কিছুতেই সুদূর অতীত থেকে প্রভাব বিস্তার করে ছিলেন। তবে সদ্য পট পরিবর্তনের পরে তারও কোন খোঁজ নেই। ইতোমধ্যে বরিশাল ও ঝালকাঠিতে তার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঝলকাঠীর বাসায় আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল কর্মীরা নগদ ৫ কোটি টাকাও উদ্ধার করেছেন। পোড়া গন্ধ আর ধ্বংসস্তুপের শুনশান নীরবতায় দাড়িয়ে আছে বরিশাল ও ঝালকাঠিতে আমীল হোসেন আমুর সুরম্য অট্টালিকা। কেউ বলছেন তিনি ভারতে পালিয়েছেন, আবার কেউ বলছেন দেশেই অবস্থান করছেন।

নিরুদ্দেশ আছেন সাম্প্রতিককালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহ’ও। আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে তার বাসভবনে হামলার আগেই ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান এরপরে আর কোন সন্ধান নেই। তবে তার বাসায় হামলা ও অগ্নি সংযোগের পরে সেখান থেকে সাবেক কাউন্সিলর লিটু সহ ৩ জনের মৃতুদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এভাবেই নিকট অতীতের একেকজন লৌহমানব ও সিংহ পুরুষেরা ক্ষমতা হারাবার পরে কেউ নিরাপদ আশ্রয়ে, আবার কেউ নিরাপদে থাকার লক্ষে ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

তবে যেহেতু দল আর ক্ষমতায় নেই, তাই তাদের নামের আগে-পরে এখন আর কোন তকমা নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মহলের মতে, ‘ক্ষমতা কি জিনিষ তা ইতোমধ্যে টের পেতে শুরু করেছেন বরিশালের সিংহ পুরুষ সহ নানা বিশেষণে অভিষিক্ত সদ্য ক্ষমতা হারানো নেতারা। ক্ষমতা এতদিন তাদের উত্থানের চূড়ান্ত শিখরে নিয়ে গেলেও তার ফলও এখন তারা ভোগ করছেন’ বলেও মনে করছেন বিশ্লেষক-গন।




পবিপ্রবিতে প্রথমবার সম্পূর্ণ অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) তার ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ অটোমেশন বা অনলাইন পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য এই নতুন ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু সময় সাশ্রয়ীই নয়, তাৎপর্যপূর্ণভাবে আরো সহজতর হয়ে উঠেছে।

অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমের শুরুটা ১২ অক্টোবর থেকে এবং এটি ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসেই রেজিস্ট্রেশন, ফি প্রদান এবং অন্যান্য সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। এ প্রক্রিয়ায় কোনো সরাসরি কাগজপত্র জমা দিতে হবে না বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে না, যা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

অনলাইন প্রক্রিয়া: কীভাবে কাজ করবে?

এই নতুন প্রক্রিয়াটি শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ কিছু ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রাথমিকভাবে জিএসটি সিস্টেমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে লগইন করে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করবেন। মোবাইল নম্বর যাচাইয়ের মাধ্যমে লগইন করার পর, শিক্ষার্থীরা তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার তথ্য যাচাই করে পূর্ণাঙ্গ ভর্তি ফরম পূরণ করবেন। সবশেষে, কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভর্তি ফি পরিশোধ করতে হবে এবং রসিদ ডাউনলোড করে তা সংরক্ষণ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, “এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা কোনো ঝামেলা ছাড়াই, সময় ও খরচ বাঁচিয়ে তাদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।”

অটোমেশন: ভবিষ্যতের প্রস্তুতি

পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম এ উদ্যোগকে “ভোগান্তি মুক্ত ভবিষ্যতের এক ধাপ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি একটি বিশাল সফলতা। আমরা এখন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রমকেও অনলাইনে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরো কমানো সম্ভব হবে।”

কীভাবে এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের উপকার করবে?

অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এবার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকবে। এই উদ্যোগটি বিশেষভাবে সুবিধাজনক হবে গ্রামীণ ও দূরবর্তী অঞ্চল থেকে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য, যারা ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশ নিতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়।

এছাড়া, অনলাইন সিস্টেমে ছাত্রদের ভর্তির প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় মানসিক চাপও কম থাকবে।

প্রথমবারের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

পবিপ্রবির এই নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। প্রযুক্তির সঙ্গে শিক্ষার সমন্বয় এনে এটি ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থার একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির এই অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া যেনো শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক এবং ভোগান্তি মুক্ত একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, সে আশায় রয়েছেন পবিপ্রবির শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীরা।




মধ্যপ্রাচ্য এশিয়ার যেসব দেশ দখলে নিতে চায় ইসরায়েল

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ সাম্প্রতিক এক ডকুমেন্টারিতে ইহুদি রাষ্ট্রের সীমানাবৃদ্ধির একটি পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি ইসরায়েলি সীমান্ত ভবিষ্যতে জর্ডান নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হবে বলে মন্তব্য করেন। তার এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

স্মোট্রিচের মতে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে ঘিরে রেখেছে যেসব অঞ্চল তা বৃহত্তর ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্ত হবে। সে হিসেবে ইসরায়েল রাষ্ট্র সম্পূর্ণ ফিলিস্তিন, লেবানন, জর্ডান এবং মিসর, সৌদি আরব, ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

ফ্রান্স-জার্মান ভিত্তিক নিউজ ম্যাগাজিন আর্টে রিপোর্টেজ থেকে নির্মিত ‘ইন ইসরায়েল : মিনিস্টারস অব কেয়াস’ নামের ডকুমেন্টারিটি এই মাসে মুক্তি পেয়েছে। সেখানে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ইহুদি রাষ্ট্রের বিস্তৃতি নিয়ে কথা বলেন।

ডকুমেন্টারিতে স্মোট্রিচ একটি ‘ইহুদি রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য তার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন এই বলে, ‘এটি লেখা আছে যে জেরুজালেমের ভবিষ্যৎ দামেস্কে প্রসারিত হবে।’ ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ মতবাদ নিয়ে ধর্মীয় ব্যাখ্যাও দাঁড় করিয়েছেন চরম ডানপন্থি এই মন্ত্রী।

‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ জায়নিস্ট ইহুদিদের একটি মতবাদ যেখানে তারা দাবি করে, তাদের পবিত্রভূমি ইসরায়েলের বিস্তার মিসরের নীলনদ থেকে ইরাকের ফোরাত নদী পর্যন্ত। এই এলাকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সম্পূর্ণ ফিলিস্তিন, লেবানন, জর্ডনা এবং মিসর, সৌদি আরব, ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ। জায়নিস্ট ইহুদিদের দাবি, পবিত্র বাইবেলে এই অঞ্চল ইহুদিদের ভূমি হিসেবে বর্ণিত আছে।

এই প্রসঙ্গে, ইসরায়েলি সাংবাদিক ওদেদ ইয়েনন বলেছেন, পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের জন্য তেলআবিবের পরিকল্পনা ইহুদিবাদের প্রতিষ্ঠাতা থিওডোর হার্জলের দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে যেটি ইসরায়েল লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, ইরাক, মিসর এবং সৌদি আরবের বিশাল অংশকে সংযুক্ত করে গঠন করা হবে।

ডকুমেন্টারিতে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, অনেকের কাছে এই দৃষ্টিভঙ্গি চরমপন্থি বলে মনে হতে পারে। তবে এটি ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের জনসাধারণের বক্তৃতার অংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে।

সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড এবং আনাদোলু এজেন্সি




শেবাচিম হাসপাতালে বাচ্চা চুরি সন্দেহে কিশোরীকে পুলিশে দিলো জনতা

বরিশাল অফিস  :: শেবাচিম হাসপাতালে বাচ্চা চুরি করার সন্দেহে এক কিশোরীকে আটক করে পুলিশে দিলো নবজাতকের বাবা ও রোগীর স্বজনরা।

চোর সন্দেহে আটক কিশোরী কাউনিয়া থানাধীন ৪ নং ওয়ার্ড, মহাবাজ পোল এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হাওলাদারকে মেয়ে সুমাইযা আক্তার মুসকান (১৩)।

গতকাল শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত ১০ টায় শেবাচিম হাসপাতালের তৃতীয় তলা (শিশু ওয়ার্ডে) ঘটনাটি ঘটে।

নবজাতকের বাবা ভুক্তভোগী রাহাত বলেন, আমি একমাস ধরে বরগুনার বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করালেও কোন উন্নতি হয়নি। এরপর শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার চার মাসের বাচ্চা রাফসানকে চিকিৎসা করাতে আছি।

তিনি জানান,কিন্তু গতকাল শুক্রবার রাতে আমার বাচ্চার পাশে বসে বিভিন্ন ধরনের কথা বার্তা বলে মেয়েটি, তখন জিজ্ঞেস করলে বলে আমার বাসা বিএম কলেজের সামনে, আপনার বাচ্চাটা দেখতে খুব ভালো লাগে, এভাবে বিভিন্ন ধরনের কথা বার্তা বলে বাচ্চা কোলে নিয়ে লিফটে করে যাওয়ার সময় সন্দেহের কারনে তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে জনতা।

এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি ৯৯৯ নাম্বারে কল পেয়ে পুলিশ সত্যতা জানতে ঘটনা স্থান গিয়ে এক কিশোরীকে থানায় নিয়ে আসেন। কিন্তু এখন পযন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।