অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ ৫ খাবার

প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করতে শর্করা এবং স্টার্চ ভেঙে দেয়। এই প্রক্রিয়া শুধু খাবার সংরক্ষণ করে না, বরং উপকারী এনজাইম, ভিটামিন বি১২, ওমেগা-৩ ফ্যাট এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার সমারোহ যোগ করে। এগুলো অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। জেনে নিন অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক ৫ প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা—

১. দই:
প্রোবায়োটিক খাবারের মধ্যে দই সবচেয়ে পরিচিত। ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং বিফিডোব্যাকটেরিয়াম ব্যাকটেরিয়া দিয়ে দুধ গাঁজন করে এটি তৈরি করা হয়। ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনে ভরপুর দই সহজলভ্য এবং এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবারও তৈরি করা সম্ভব।

২. কিমচি:
কোরিয়ার জনপ্রিয় এই খাবারটি বাঁধাকপি এবং মূলা দিয়ে তৈরি একটি মসলাদার ফার্মেন্টেড ডিশ। এতে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা অন্ত্রের জন্য দারুণ উপকারী। কিমচি কোরিয়ান খাবারের একটি প্রধান উপাদান হলেও এটি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।

৩. পিকেল:
শসা যখন লবণ পানির ব্রাইনে ফার্মেন্টেড হয়, তখন এটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ পিকেলে পরিণত হয়। তবে ভিনেগার মিশ্রিত পিকেল প্রোবায়োটিক নয়। এই টক ও সুস্বাদু শসা খাবারে বাড়তি প্রোবায়োটিক পাঞ্চ যোগ করে।

৪. টেম্পেহ:
ফার্মেন্টেড সয়াবিন থেকে তৈরি এই প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারটি বাদামের বিকল্প হিসেবে বেশ কার্যকর। ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়াটি প্রোবায়োটিক যোগ করার পাশাপাশি পুষ্টির শোষণ বাড়িয়ে তোলে, যা নিরামিষাশীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।

৫. ইডলি:
দক্ষিণ এশিয়ার এই জনপ্রিয় খাবারটি চাল ও ডাল মিশিয়ে তৈরি করা হয়। ফার্মেন্টেড ব্যাটারের কারণে ইডলি ও দোসা নরম এবং তুলতুলে হয়। এতে থাকা অন্ত্র-বান্ধব ব্যাকটেরিয়া হজমশক্তি উন্নত করে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



 ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়াল

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর এসেছে, ফলে চলতি বছর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬১ জনে। এ সময়েই নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪১ জন ডেঙ্গু রোগী। চলতি বছর এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ৯ জনে পৌঁছেছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩৫ জন, খুলনা বিভাগে ১১ জন, ময়মনসিংহে ৫ জন এবং রাজশাহীতে ৮ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭০ জন ডেঙ্গু রোগী। এ পর্যন্ত মোট ৯৮ হাজার ২৬৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে ৫৬১ জন ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, “ডেঙ্গু এখন আর সিজনাল নয়, এটি সারা বছরই হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সর্বত্র প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।”

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলেন, “মশানিধন কেবল জেল-জরিমানা এবং জনসচেতনতা বাড়িয়ে হবে না, সঠিক জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছিল এবং ১ হাজার ৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিল, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




সুস্থ থাকতে ফল ও সবজি কীটনাশকমুক্ত রাখার সহজ উপায়

সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সবুজ শাকসবজি ও ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান। তবে বাজার থেকে কেনা এই শাকসবজি ও ফলে প্রায়শই কীটনাশকের উপস্থিতি দেখা যায়, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই বিষাক্ত কীটনাশক যদি রক্তে মিশে যায়, তাহলে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ফল ও সবজি খাওয়ার আগে সঠিক পদ্ধতিতে তা পরিষ্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোন কোন শাকসবজিতে বেশি কীটনাশক থাকে?

পালং শাক

বাজার থেকে কেনা বেশিরভাগ পালং শাকে পার্মাথ্রিন নামক কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এটি এক ধরনের নিউরোটক্সিন, যা স্নায়ুতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। তাই শাক রান্নার আগে লবণ-পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

আঙুর ও আপেল

আঙুর ও আপেলের গায়ে ডাইফিনাইলঅ্যামাইন নামক রাসায়নিক পাওয়া যায়, যা মানুষের শরীরের জন্য চরম ক্ষতিকর। অনেকে আঙুর বা আপেল না ধুয়ে সরাসরি খেয়ে থাকেন। এতে শরীরে বিষ প্রবেশের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এসব ফল পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে খাওয়া উচিত।

পেয়ারা

পেয়ারা অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল হলেও এর গায়ে কীটনাশকের উপস্থিতি থাকে। যদি ভালোভাবে না ধুয়ে খাওয়া হয়, তাহলে লিভারের গুরুতর অসুখ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ফল ও সবজি কীটনাশকমুক্ত করার ঘরোয়া পদ্ধতি

১. বেকিং সোডার দ্রবণ ব্যবহার
এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পানির একটি দ্রবণ তৈরি করুন। এতে সবজি বা ফল ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন। এতে ৯০ শতাংশ কীটনাশক দূর হয়ে যাবে।

২. ভিনেগার ও লবণের মিশ্রণ
সম পরিমাণে ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করুন। এতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে দিন। এবার ফল বা সবজি এই দ্রবণে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। পরে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন।

সতর্কতা

কোনো রাসায়নিক মিশ্রিত দ্রবণ ব্যবহার করবেন না। এই প্রক্রিয়াগুলো প্রয়োগ করলে ফল ও শাকসবজি নিরাপদভাবে খাওয়ার উপযোগী হবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ ও সমাধান

ভিটামিন ডি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। সূর্যের আলো এর প্রধান উৎস হলেও কিছু খাবার থেকেও এটি পাওয়া যায়। তবে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার ধরন অনুযায়ী অনেক সময় শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি সরবরাহ হয় না। এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি হয় যখন সূর্যের অতিবেগুনী বি (UVB) রশ্মি ত্বকে শোষিত হয়। পরে লিভার ও কিডনির মাধ্যমে এটি সক্রিয় অবস্থায় পরিণত হয়, যা শরীর ব্যবহার করতে পারে। চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন হওয়ায় এটি শোষিত হওয়ার জন্য খাদ্যের চর্বি ও শরীরের অন্তঃস্রাব ব্যবস্থার সুস্থতা প্রয়োজন। তবে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে শরীরে নানা সংকেত দেয়।

ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ:

১. হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা
ভিটামিন ডি-এর অভাবে শরীর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণে বাধাগ্রস্ত হয়। এতে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং ব্যথা ও ফাটল দেখা দিতে পারে। বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি হাড়ের ভঙ্গুরতার ঝুঁকি বাড়ায়।

২. পেশী দুর্বলতা ও খিঁচুনি
পেশীর কার্যক্রমের জন্য ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে দুর্বলতা, খিঁচুনি এবং ব্যথা দেখা দেয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এটি মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

৩. দাঁতের সমস্যা
ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁতের গহ্বর ও অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটি দাঁতের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং পিরিয়ডোনটাইটিসসহ মুখের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।

৪. চুল পড়া
ভিটামিন ডি চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে কেরাটিনোসাইট নামক কোষের কার্যকারিতা কমে যায়, যা চুল পড়ার একটি বড় কারণ।

৫. ক্লান্তি
ভিটামিন ডি-এর অভাবে মেজাজের পরিবর্তন, অলসতা এবং মানসিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ভালো ঘুমের পরও যদি ক্লান্তি দূর না হয়, তবে তা এই ভিটামিনের ঘাটতির ইঙ্গিত হতে পারে।

৬. ক্ষুধা কমে যাওয়া
ভিটামিন ডি লেপটিন নামক ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। এর অভাবে ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং খাওয়ার প্রতি অনীহা দেখা দেয়।

ভিটামিন ডি-এর অভাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত সূর্যের আলোতে থাকা, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



সুপারফুড: স্বাস্থ্যকর হলেও হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে

সুপারফুড এমন ধরনের খাবার, যা কম ক্যালোরিতে সর্বাধিক পুষ্টি সরবরাহ করে। এতে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ। সাধারণত এগুলোকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সুপারফুড বেশি পরিমাণে খেলে বা শরীরের নির্দিষ্ট সংবেদনশীলতা থাকলে হজমের জটিলতা তৈরি হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন সুপারফুডগুলো হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

ক্রুসিফেরাস শাক-সবজি যেমন ব্রকলি, ফুলকপি প্রভৃতি পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে এতে থাকা ফাইবার এবং রাফিনোজ নামক শর্করা অনেকের ক্ষেত্রে গ্যাস ও ফুলাভাবের সৃষ্টি করতে পারে।

চিয়া সিড ওমেগা-৩ এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি শরীরে প্রচুর পানি শোষণ করে। যদি পর্যাপ্ত পানি না পান করা হয় বা অতিরিক্ত খাওয়া হয়, তবে পেট ফোলার ঝুঁকি বাড়ে।

বাদাম এবং বীজ উচ্চমাত্রার ফ্যাট ও ফাইবারের কারণে হজম করতে সময় নিতে পারে। অতিরিক্ত খেলে এগুলো পেট খারাপ বা গ্যাসের কারণ হতে পারে।

দুগ্ধজাত খাবার প্রোবায়োটিকের কারণে অন্ত্রের জন্য উপকারী হলেও ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি হজমের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

কাঁচা রসুন ও পেঁয়াজে থাকা ফ্রুকটান নামক কার্বোহাইড্রেট অনেকের পেটে গ্যাস, ফুলাভাব বা ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

লেগুম, যেমন মসুর ডাল, ছোলা বা মটরশুটি ফাইবার ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ। তবে এগুলোতে থাকা অলিগোস্যাকারাইড অন্ত্রে গাঁজনের মাধ্যমে গ্যাস ও ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে।

গ্লুটেন-মুক্ত শস্য পুষ্টিকর হলেও যারা উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবারে অভ্যস্ত নন বা সংবেদনশীল তাদের জন্য এটি হজমে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, এসব খাবার পরিমিত পরিমাণে এবং শরীরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে খেলে এই সমস্যাগুলো এড়ানো সম্ভব।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




শীতে কানের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

শীত আসার সঙ্গে সর্দি-কাশির সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই কানের ব্যথায় ভুগছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে এমন ব্যথা হয়। পাশাপাশি তরল জমা ও প্রদাহও কানের ব্যথার একটি সাধারণ কারণ। তবে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই এই যন্ত্রণা কমানো সম্ভব।

আদার জাদু

আদা একটি প্রাকৃতিক প্রদাহ-বিরোধী উপাদান। কানের চারপাশে আদার রস বা আদার সঙ্গে মিশ্রিত অলিভ অয়েল হালকা গরম করে প্রয়োগ করলে ব্যথা কমে যায়। তবে খেয়াল রাখুন, কানের ভেতরে যেন আদার রস না ঢুকে।

অলিভ অয়েলের ব্যবহার

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্সের মতে, অলিভ অয়েল হালকা গরম করে কানের মধ্যে দু-এক ফোঁটা দিলে ব্যথা তৎক্ষণাৎ কমে যেতে পারে। তবে তেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই তা ঠান্ডা করে নিতে হবে।

টি ট্রি অয়েলের কার্যকারিতা

টি ট্রি অয়েলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক, এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কানের সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে। এটি হালকা গরম করে কানের চারপাশে ম্যাসাজ করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। তবে যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, তাহলে এই তেল এড়িয়ে চলুন।

রসুনের শক্তি

রসুন কানের সংক্রমণ নিরাময়ে একটি কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিকার। এতে থাকা অ্যালিসিন নামক উপাদান প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। কাঁচা রসুন খেলে বা রসুনের তেল ব্যবহার করলে ব্যথা কমে। তবে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শেষ কথা

উল্লেখিত প্রতিকারগুলো ব্যবহার করে দ্রুত কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শীতকালে নিজের যত্ন নিন এবং সুস্থ থাকুন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



পটুয়াখালীতে নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

পটুয়াখালী সদর উপজেলার কলাতলা এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকে পড়ে এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন আরও একজন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সেপটিক ট্যাংকে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত দুই শ্রমিক নিচে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই মো. সাগর (৩৮) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তিনি গাইবান্ধা জেলার বালুরচর উপজেলার বাদিয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা এবং মাহাতাব মিয়ার ছেলে। অপর আহত শ্রমিকের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, মৃতদেহটি পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে এবং এ ঘটনায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



স্কুলে যাওয়ার আগে শিশুকে যেভাবে প্রস্তুত করবেন

সন্তানের বয়স তিন বছর পার হলেই বাবা-মা ভালো স্কুল খুঁজতে শুরু করেন। কারণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরু শিশুর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সঠিক বয়সে স্কুলে ভর্তির আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। এটি শিশুর সামাজিক, মানসিক, এবং শারীরিক বিকাশে সহায়তা করে।

শিশুকে নতুন পরিবেশ, বন্ধু, এবং লেখাপড়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত করতে হবে। স্কুলে যাওয়ার আগে বাড়িতেই কয়েকটি বিষয়ের চর্চা করলে শিশুর জন্য এই পথচলা সহজ হয়ে ওঠে।

প্রথমত, বাচ্চাকে প্রি-স্কুল বা প্লে স্কুলে পাঠানোর মাধ্যমে নিয়মিত বাইরে থাকার অভ্যাস করান। প্রথম দিকে মা-বাবাকে না দেখলে শিশুরা কান্নাকাটি করে। ধীরে ধীরে এই অভ্যাস তাদের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সহজ করে।

যা শেখানো জরুরি:

১. অন্যের সঙ্গে মানিয়ে চলা: শিশুকে শেখান, কীভাবে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হয়। তাদের অনুভূতিকে সম্মান করা, মজা করে গায়ে হাত না তোলা এবং নিজেদের আবেগ প্রকাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

২. ভাগ করে নেওয়া শিখুন: চকোলেট বা খেলনা ভাগ করার পাশাপাশি, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই চর্চা চালু রাখুন।

৩. শ্রদ্ধা করার মানসিকতা তৈরি করুন: মা-বাবা, পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর চর্চা ছোট থেকেই শুরু করুন।

৪. দ্রুত শেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন: শিশুকে কেবল মুখস্থ নয়, বিষয়বস্তুকে বোঝার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করে।

৫. দায়িত্বশীলতা শিখুন: নিজের জিনিস গুছিয়ে রাখা, নিজে খাবার খাওয়া, এবং নিজের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নিতে শেখান।

শিশুর জীবনের প্রথম স্কুলে যাত্রা একটি বড় পদক্ষেপ। সঠিক প্রস্তুতি শিশুর জন্য এই যাত্রাকে আনন্দময় এবং ফলপ্রসূ করে তুলতে পারে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



শীতে পেশির টান ও গাঁটের ব্যথা কমানোর সহজ উপায়

শীতের কনকনে ঠান্ডায় পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, পেশিতে টান ধরা কিংবা গাঁটের ব্যথা খুবই সাধারণ সমস্যা। অনেকেরই ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান ধরে ব্যথা শুরু হয়। আবার সকালে হাঁটতে গেলে শিরায় টান লাগতে পারে। পায়ের আঙুল হঠাৎ বেঁকে যাওয়া কিংবা ব্যথার কারণে চলাফেরা করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে শরীরে নানা সমস্যার প্রকোপ বাড়ে। তার মধ্যে প্রধান কারণ হলো শরীরে পানির ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশন। অনেকেই শীতে অলসতার কারণে পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। চলাফেরা কমিয়ে দেওয়াও গাঁটের ব্যথা ও পেশির টান বাড়াতে পারে।

শীতে পেশির টান ও গাঁটের ব্যথা কমাতে যা করবেন

১. নিয়মিত শরীরচর্চা:
শীতকালে আলস্যের কারণে শরীরচর্চা এড়িয়ে গেলে সমস্যা বাড়ে। তাই নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন। হাঁটা-চলা, সাঁতার কাটা, জগিং কিংবা সাধারণ যোগব্যায়াম পেশিকে শিথিল রাখে এবং গাঁটের ব্যথা কমায়।

২. গরম সেঁক ও গরম পানিতে গোসল:
শীতকালে গরম পানিতে গোসল করলে এবং ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়। এটি পেশির শক্তভাব কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে।

৩. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ:
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এসব খাবার পেশিকে শিথিল করে, হাড়কে মজবুত রাখে এবং ব্যথা-যন্ত্রণা কমাতে সহায়তা করে।

৪. পানি পানের অভ্যাস:
শীতকালে অনেকেই পানি কম খান। শরীর ডিহাইড্রেটেড হলে পেশিতে টান ধরার ঝুঁকি বাড়ে এবং গাঁটের ব্যথা তীব্র হয়। তাই শরীরে পানির ঘাটতি হতে দেবেন না।

৫. ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা:
যদি ব্যথা বাড়তে থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন। নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

শীতকালে এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে পেশির টান এবং গাঁটের ব্যথার ঝুঁকি সহজেই কমানো সম্ভব। সুস্থ ও সচল থাকতে নিয়মিত শরীরচর্চা ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করুন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



দীর্ঘ সময় প্রস্রাব চেপে রাখার অভ্যাসে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি

আমাদের অনেকেরই বাইরে থাকলে প্রস্রাব চেপে রাখার প্রবণতা রয়েছে। নানা অজুহাতে এই অভ্যাস অব্যাহত রাখার ফলে শরীরে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রস্রাব করা মূলত কিডনি, মূত্রাশয় এবং স্নায়ুতন্ত্রের সমন্বিত একটি প্রক্রিয়া। কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ ফিল্টার করে প্রস্রাব তৈরি করে এবং তা ইউরেটারের মাধ্যমে মূত্রাশয়ে সংরক্ষণ হয়। একটি সুস্থ মূত্রাশয় গড়ে ৪০০-৬০০ মিলিলিটার প্রস্রাব ধারণ করতে পারে।

মূত্রাশয় পূর্ণ হয়ে গেলে তার দেয়ালের রিসেপ্টরগুলো মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায়, ফলে প্রস্রাব করার তাগিদ অনুভূত হয়। তবে দীর্ঘ সময় চেপে রাখলে এ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে এবং দেখা দেয় বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা।

দীর্ঘ সময় প্রস্রাব চেপে রাখার ক্ষতি

১. মূত্রাশয়ের দুর্বলতা:
বেশিক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখলে মূত্রাশয়ের পেশীগুলো স্বাভাবিক ক্ষমতার বাইরে প্রসারিত হয়। এটি পেশীগুলিকে দুর্বল করে দিতে পারে, ফলে মূত্রাশয় পুরোপুরি খালি করা কঠিন হয়ে যায়।

২. সংক্রমণের ঝুঁকি (ইউটিআই):
দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব রাখলে মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়, যা মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউটিআই-এর ঝুঁকি বাড়ায়। এতে প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া, শ্রোণীতে ব্যথা এবং ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দেয়।

৩. কিডনির ক্ষতি:
দীর্ঘ সময় প্রস্রাব আটকে রাখলে তা কিডনিতে ফিরে যেতে পারে, যা সংক্রমণ বা কিডনির স্থায়ী ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ অবস্থা ভেসিকোরেটেরাল রিফ্লাক্স নামে পরিচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রস্রাব চেপে রাখার এই অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি। কিডনি ও মূত্রাশয় সুস্থ রাখতে সময়মতো প্রস্রাব করা উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম