রাজধানী থেকে নিখোঁজ দুই বোন পটুয়াখালীতে উদ্ধার

রাজধানীর কদমতলী থেকে নিখোঁজ দুই বোনকে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৮ এর ওয়ার্ড কমান্ডার এসএম হাসান সিদ্দিকী।

গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার কদমতলী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন দুই বোন। জানা যায়, অপহরণের শিকার হয়েছিলেন তারা। এ ঘটনায় র‍্যাবের একাধিক ব্যাটালিয়ন যৌথ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দশমিনা থেকে তাদের উদ্ধার করে এবং স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করে।

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ দুই বোন জাপানি বাজার এলাকায় তাদের নানি ও খালাকে এগিয়ে দিতে গিয়েছিলেন। এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান না পাওয়ায় তাদের বাবা কদমতলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ঘটনাটি তদন্তে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে এবং যৌথ অভিযানের মাধ্যমে দুই বোনকে উদ্ধার করে।

র‍্যাব জানায়, উদ্ধারকৃত দুই বোন বর্তমানে নিরাপদে আছেন। অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




বাউফলের কালাইয়া কলেজে হামলায় রিশাদ গ্রেপ্তার

পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনায় অভিযুক্ত মোহাম্মদ রিশাদকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন দ্বাদশ শ্রেণির সাব্বির হোসেন (১৭) ও জহিরুল ইসলাম (১৭)।

ঘটনার সূত্রপাত হয় কলেজের এক ছাত্রীকে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে। গত রোববার কলেজ প্রাঙ্গণে বহিরাগত কিশোর গ্যাং সদস্য আলভি, তাবজিল, হানিফ ও রিশাদ মিলে ওই ছাত্রীকে হয়রানি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তার সহপাঠীরা অভিযুক্তদের কলেজ থেকে বের করে দেয়। এর জের ধরে সোমবার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে ১০-১৫ জন বহিরাগত কলেজে প্রবেশ করে সাব্বির ও জহিরুলকে ছুরিকাঘাত করে।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে রিশাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের আগে তাকে থানায় নিয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী একটি কিশোর গ্যাং। ‘কমরেড’ নামের এই গ্যাংটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের বিরুদ্ধে আগেও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। তবে স্থানীয় এক প্রভাবশালী যুবলীগ নেতার কারণে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মামলা করতে সাহস পায় না।

থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, রিশাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



শেখ হাসিনার সেই পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয় ৬২৬ কোটি

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই আলোচিত ৪০০ কোটি টাকার মালিক ব্যক্তিগত সহকারী (পিয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাংক হিসাবে ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

যদিও আলোচিত জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রীর কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুদক উপপরিচালক রাশেদুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে সহকারী পরিচালক পিয়াস পাল বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামি জাহাঙ্গীর আলম স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করায় এবং তিনি ও তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ ভোগ করার মানসে আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা/ক্রেডিট ও জমা করা অর্থ বিভিন্ন মাধ্যমে উত্তোলন বা স্থানান্তর করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, মো. জাহাঙ্গীর আলম এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে তার নিজ নামে ও তায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলেছেন। তার আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা এবং ৬২৪ কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৬৭১ টাকা উত্তোলিত হয়েছে। যা দুদকের অনুসন্ধানে সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে বিভিন্নভাবে তার হিসাবে জমা হওয়ার পর তিনি তা বিভিন্ন পন্থায় স্থানান্তর করেছেন। যার মধ্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম তার মালিকানাধীন স্কাই রি এরেঞ্জ নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি চলতি হিসাবে শুধু ২০২৪ সালের (প্রথম ৫ মাসে) ৮৩ দিনে মোট ১৭৮ কোটি টাকা জমা এবং ১৭৮ কোটি ৯৩ টাকা উত্তোলন/ফান্ড ট্রান্সফার করেন।

অপর একটি মামলায় আসামি করা হয় মো. জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারকে। তিনি নিজ নামে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদ ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

গত ১৪ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার বাসার পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না।’

এ ঘটনায় আলোচনায় আসেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানী মিরপুরে বাড়িসহ বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার নামে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় বছরে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার আয়ের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ব্যাংকে সোয়া ১ কোটি টাকা, তার নিজের নামে আড়াই কোটি টাকা থাকার কথাও উল্লেখ করেন। বিভিন্ন কোম্পানিতে তার অংশীদারিত্ব থাকার তথ্য উঠে আসে।




মেহজাবীনের অভিষেক সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে

মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে এবার প্রথমবারের মতো তাকে দেখা যাবে প্রেক্ষাগৃহের বড় পর্দায়। আগামী ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে তার অভিষেক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’। সংবাদ সম্মেলনে এই অভিনেত্রী তার অভিনয়ের শুরুর দিকের চ্যালেঞ্জ এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন।

মেহজাবীন বলেন, “আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দেশের বাইরে। বাংলা ভাষায় দুর্বল ছিলাম, উচ্চারণ সমস্যাও ছিল। অভিনয়ে নিয়মিত হওয়ার পর তা কাটিয়ে উঠেছি। এই সিনেমা আমার জীবনের একটি বড় মাইলফলক।”

ছবিটির গল্প একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সংগ্রামী নারী মালতী রানী দাশকে কেন্দ্র করে। মেহজাবীন চরিত্রটিতে নিজের সবটুকু ঢেলে দিয়েছেন বলে জানান। মালতীর জীবনে প্রেম, লড়াই এবং নতুন অধ্যায় শুরু করার গল্পই সিনেমাটির মূল প্রতিপাদ্য।

‘প্রিয় মালতী’ পরিচালনা করেছেন শঙ্খ দাশগুপ্ত, প্রযোজক আদনান আল রাজীব ও রেদওয়ান রনি। সিনেমাটিতে মেহজাবীনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন আজাদ আবুল কালাম, নাদের চৌধুরী, মোমেনা চৌধুরী, শাহজাহান সম্রাট, সমু চৌধুরী, আনিসুল হক বরুন, রিজভী রিজু প্রমুখ।

মুক্তির আগে সিনেমাটি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয়েছে। তবে এটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে প্রথমবার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত, প্রযোজকরা, এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। তারা সবাই সিনেমার ভবিষ্যৎ সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ : হাইকোর্ট

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে আনা কয়েকটি বিষয় অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংবিধানে গণভোটের বিধান ফিরিয়ে এনেছেন আদালত।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, গণতন্ত্র হচ্ছে আমাদের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ। এই গণতন্ত্র বিকশিত হয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে এবং প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনে তাতে জনগণের ইচ্ছার কোনো প্রতিফলন হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের আত্মবিশ্বাস জনগণের মধ্যে জন্ম নেয়নি। যার ফলশ্রুতিতে হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান। রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশে পরিণত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তি–সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে এ রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেন, অনুচ্ছেদ দুটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে, যেটি হচ্ছে গণতন্ত্র। পঞ্চদশ সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেছেন আদালত। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন ও প্রতিস্থাপন আনা হয়েছিল।

রায়ে আদালত বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটা বাতিল করা হচ্ছে না। বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আগামী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন আদালত। রায়ে আদালত আরও বলেছেন, সংসদ আইন অনুসারে জনগণের মতামত নিয়ে বিধানগুলো সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করতে পারবে। এর মধ্যে জাতির পিতার স্বীকৃতির বিষয়, ২৬ মার্চের ভাষণের বিষয়গুলো রয়েছে।

গণভোটের বিষয়ে রায়ে হাইকোর্ট বলেন, গণভোটের বিধান বিলুপ্ত করা হয়, যেটি সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অংশ ছিল। এটি ১৯৯১ সালে দ্বাদশ সংশোধনীতে যুক্ত হয়। সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের গণভোটের বিধান বিলুপ্তি সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হলো। ফলে দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হলো।

হাইকোর্টের রায়ে ৭ ক,৭ খ এবং ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে। ৭ ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ এবং ৭ খ সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য করার কথা বলা ছিল। এদিকে ৪৪ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ বিষয়ে বলা আছে। ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বলছে, এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটিয়ে সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোনো আদালতকে তার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সব বা এর যে কোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করতে পারবেন। এই অনুচ্ছেদটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে রায়ে।

এদিন সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে রায় ঘোষণা শুরু হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব পৌনে দুই ঘণ্টাব্যাপী এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন, রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। চার আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ, ইন্টারভেনর হিসেবে ছিলেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, সেন্টার ফর ল’ গভর্নেন্স ও পলিসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ বেশকিছু বিষয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

দীর্ঘ ২৩ কার্য দিবস শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এরপর ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন।

গত ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ অন্যদের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ রুল জারি করেন।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বিদ্যমান ৪৫-এর স্থলে ৫০ করা হয়। এছাড়া বেশকিছু বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়।




প্রশিক্ষণরত ৫৯ এসআইকে শোকজ

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সারদায় অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ৪০তম বিসিএসের ২৫ জনকে শোকজ করা হয়েছে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে প্রশিক্ষণরত এই ২৫ এএসপিকে চিঠি দেওয়া হয়। সারদায় অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (বেসিক ট্রেনিং-২) মো. তানভীর সালেহীন ইমন এই ২৫টি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সারদায় পুলিশের আরও ৫৮ এসআইকে অব্যাহতি
তিনি বলেন, সারদায় অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ৪০তম বিসিএস’র ২৫ জন এএসপিকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ব্যাখ্যার চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনি এএসপি (পুলিশ) ব্যাচের একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত রয়েছেন। গত ২৬ নভেম্বর সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুযায়ী বিকেলের সেশনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্যারেড চালু হওয়ার পর কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএএসআই কেন্দ্রীয় কমান্ডের অংশ হিসেবে দৌড়ের নির্দেশ দিলে আপনি আরো কয়েকজনের সঙ্গে যোগসাজশ করে দৌড় না দিয়ে এলোমেলোভাবে হেঁটে হেঁটে চলা শুরু করেন।

আপনাদের কারণে মাঠের অন্যান্য প্রশিক্ষণার্থীর সঠিকভাবে দৌড়াতে পারছিলো না। আপনাকে বারবার দৌড়ানোর কথা বলা হলেও আপনি তার কথায় কোনো কর্ণপাত না করে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তিমূলক কথা বলা শুরু করেন। আপনিসহ আপনার অন্যান্য সহযোগীদের এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে মাঠে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একজন প্রশিক্ষণরত এএসপি (প্রবেশনার) হিসেবে আপনার এরূপ আচরণ ও কার্যকলাপ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করে এবং মাঠের অন্যান্য প্রশিক্ষণার্থীদেরকে শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, এমতাবস্থায়, আপনার এহেন কার্যকলাপ ও আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর কেন প্রেরণ করা হবে না, তার কারণ ব্যাখ্যাপূর্বক নোটিশ প্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে আপনার লিখিত বক্তব্য নিম্নস্বাক্ষরকারীর কাছে দাখিল করার জন্য আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হলো।




৫ বিলিয়ন ডলার লোপাট : হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রুল

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম তমাল।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

রিটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটের বিবাদী করা হয়।

গত ১৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

বেশ কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন। বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধানকারী গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশনের তথ্যের বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদন করা হয়।




ঝালকাঠিতে শেখ হাসিনা ও আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে মামলা

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি জিবা আমিনা আল গাজী ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুসহ ৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এই মামলাগুলি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সময়ে বিএনপির প্রার্থী জিবা আমিনা আল গাজীর নির্বাচনী প্রচারণার সময় ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা তার ওপর হামলা চালিয়ে তার গাড়িবহর ভাঙচুর ও তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে। হামলায় জিবা আমিনা আল গাজীসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, এজাহার দুটি এখন মামলার রেকর্ডিং প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জিবা আমিনা আল গাজীর আইনজীবী, অ্যাডভোকেট ফয়সাল খান বলেন, “২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপির প্রার্থীকে প্রচারণা চালাতে দেয়নি এবং তাদের ওপর হামলা করেছিল। এই হামলা শেখ হাসিনা ও আমির হোসেন আমুর নির্দেশে ঘটেছিল, এবং এখন সময় এসেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার।”

মহিলা দলের নেতা জিবা আমিনা আল গাজী বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আমরা অনেকদিন ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করেছি, কিন্তু এখন সময় এসেছে। এজন্যই আমি এজাহার দায়ের করেছি।”

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, “এজাহারটি পর্যালোচনা করা হবে এবং মামলা রেকর্ড করা হবে।” ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামানও বলেন, “এজাহার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং শিগগিরই মামলা রেকর্ড করা হবে।”

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী অভিযুক্ত করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। একইসঙ্গে জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন।‌

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক প্রতিবেদন হস্তান্তর করে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে– গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এছাড়াও হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে; যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

প্রতিবেদনে গুমের শিকার ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।

কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন ফোর্স নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি আরও জানান, গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাদের ওপর এতটাই ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তারা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সদস্যরা অধ্যাপক ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানান।

তারা বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভিকটিমরা অভয় পেতে পারেন।’

প্রধান উপদেষ্টা তাদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে সেগুলো দেখতে যাবেন।

তিনি কমিশন সদস্যদের তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তারা তিন মাস পর মার্চে আরও একটি ইন্টেরিম রিপোর্ট দেবেন। কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ।




বাউফলে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনএম জাহাঙ্গির হোসেনকে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দাশপাড়া ইউনিয়নের ল্যাড়া মুন্সীর ব্রিজের কাছে চেয়ারম্যানের অফিসে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রায় ৪০-৫০ জন লোক অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। ঘটনার সময় চেয়ারম্যান এনএম জাহাঙ্গির হোসেন তার বাসভবনে অবস্থান করছিলেন। তিনি পুলিশকে সহায়তা চাইলে, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

চেয়ারম্যানের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা প্রথমে অফিসের সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। তারা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ৪৫ বস্তা চাল এবং জরুরি কাগজপত্র নিয়ে যায়। এরপর অফিসের আসবাবপত্র বাইরে এনে পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়।

তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চলে যায়। পরবর্তীতে হামলাকারীরা ফের এসে তাণ্ডব চালায়।

বাউফল থানার এসআই হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক খলিলুর রহমানের দায়ের করা মামলায় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বুধবার দিবাগত রাত দেড়টায় বাউফল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোয়েল মোল্লাকেও (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকেও একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম