শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসলের স্বাস্থ্য উপকারিতা

শীতকাল আসলেই ঠান্ডা পানিতে গোসল করা অনেকের জন্য ভয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই অনেকেই এই সময়ে গরম পানিতে গোসলের অভ্যাস গড়ে তোলেন। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘদিন গরম পানিতে গোসল করলে চর্মরোগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে।

গরম পানিতে গোসলের ক্ষতি

গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা শুষে নেয়, যা চর্মরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এর চেয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি বা সামান্য ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা ত্বক ও শরীরের জন্য অনেক ভালো। ঠান্ডা পানিতে গোসলের ফলে শরীর চাঙ্গা থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।

ঠান্ডা পানির উপকারিতা

ঠান্ডা পানিতে গোসলের কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন:

1. রক্ত চলাচল উন্নত হয়: শরীরের প্রতিটি অঙ্গে রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে।

2. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।

3. মানসিক চাপ কমায়: ঠান্ডা পানিতে গোসল মনকে সতেজ করে তোলে।

গবেষণার ফলাফল

নেদারল্যান্ডের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুযায়ী, নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করা মানুষের অসুস্থতার ঝুঁকি প্রায় ২৯ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এছাড়া বরফ মেশানো পানিতে গোসল করলে শরীর আরও শক্তিশালী ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

কারা ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলবেন

যাদের শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে বা হার্টের সমস্যা আছে, তাদের ঠান্ডা পানিতে গোসল এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি হৃদস্পন্দনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা হৃদরোগীদের জন্য মারাত্মক হতে পারে।

সঠিক উপায়

ঠান্ডা বা গরম পানির বদলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করে গোসল করা শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী। প্রথমে হাত-পা ভেজানোর মাধ্যমে শুরু করুন, এরপর ধীরে ধীরে শরীরের অন্য অংশে পানি ঢালুন।

“মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”

 




চুল কালো রাখার সহজ উপায়

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ধূসর চুল হওয়া স্বাভাবিক। তবে বর্তমান জীবনযাত্রা এবং পরিবেশগত কারণে অকালেই চুল সাদা হওয়া সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। সঠিক যত্নের মাধ্যমে চুলের এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিছু কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাকৃতিকভাবে চুল কালো রাখতে পারেন। আসুন জেনে নিই সেই উপায়গুলো:

কারি পাতা:
কারি পাতা চুলের ফলিকলে মেলানিন উৎপাদনে সাহায্য করে। নারিকেল তেলের সঙ্গে কারি পাতা মিশিয়ে গরম করুন এবং এই তেলটি নিয়মিত মাথায় ম্যাসাজ করুন। এটি চুলে পুষ্টি জোগায় এবং কালো রাখে।

আমলকি তেল বা গুঁড়া:
আমলকি ভিটামিন সি-তে ভরপুর, যা চুলের প্রাকৃতিক রঙ ধরে রাখতে সাহায্য করে। আমলকি তেল মাথায় ম্যাসাজ করুন বা পাউডার দিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করুন। এটি চুলের পিগমেন্টেশন ধরে রাখতে সহায়ক।

ব্ল্যাক টি:
ব্ল্যাক টি চুলের জন্য প্রাকৃতিক রঙ হিসেবে কাজ করে। চা পাতা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন এবং এটি চুলে ব্যবহার করুন। কয়েকদিন পরেই আপনি চুলের রঙে পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

পেঁয়াজের রস:
পেঁয়াজে থাকা ক্যাটালেস এনজাইম চুল প্রাকৃতিকভাবে কালো করতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের রস নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগান। আধা ঘণ্টা রেখে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

মেহেদি হেয়ার মাস্ক:
মেহেদি চুলের জন্য প্রাকৃতিক রঞ্জক হিসেবে কাজ করে। সামান্য পানি দিয়ে মেহেদি গুঁড়া মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করুন। এটি কয়েক ঘণ্টা চুলে রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের রঙ কালো হবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ ৫ খাবার

প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করতে শর্করা এবং স্টার্চ ভেঙে দেয়। এই প্রক্রিয়া শুধু খাবার সংরক্ষণ করে না, বরং উপকারী এনজাইম, ভিটামিন বি১২, ওমেগা-৩ ফ্যাট এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার সমারোহ যোগ করে। এগুলো অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। জেনে নিন অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক ৫ প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা—

১. দই:
প্রোবায়োটিক খাবারের মধ্যে দই সবচেয়ে পরিচিত। ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং বিফিডোব্যাকটেরিয়াম ব্যাকটেরিয়া দিয়ে দুধ গাঁজন করে এটি তৈরি করা হয়। ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনে ভরপুর দই সহজলভ্য এবং এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবারও তৈরি করা সম্ভব।

২. কিমচি:
কোরিয়ার জনপ্রিয় এই খাবারটি বাঁধাকপি এবং মূলা দিয়ে তৈরি একটি মসলাদার ফার্মেন্টেড ডিশ। এতে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা অন্ত্রের জন্য দারুণ উপকারী। কিমচি কোরিয়ান খাবারের একটি প্রধান উপাদান হলেও এটি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।

৩. পিকেল:
শসা যখন লবণ পানির ব্রাইনে ফার্মেন্টেড হয়, তখন এটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ পিকেলে পরিণত হয়। তবে ভিনেগার মিশ্রিত পিকেল প্রোবায়োটিক নয়। এই টক ও সুস্বাদু শসা খাবারে বাড়তি প্রোবায়োটিক পাঞ্চ যোগ করে।

৪. টেম্পেহ:
ফার্মেন্টেড সয়াবিন থেকে তৈরি এই প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারটি বাদামের বিকল্প হিসেবে বেশ কার্যকর। ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়াটি প্রোবায়োটিক যোগ করার পাশাপাশি পুষ্টির শোষণ বাড়িয়ে তোলে, যা নিরামিষাশীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।

৫. ইডলি:
দক্ষিণ এশিয়ার এই জনপ্রিয় খাবারটি চাল ও ডাল মিশিয়ে তৈরি করা হয়। ফার্মেন্টেড ব্যাটারের কারণে ইডলি ও দোসা নরম এবং তুলতুলে হয়। এতে থাকা অন্ত্র-বান্ধব ব্যাকটেরিয়া হজমশক্তি উন্নত করে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



সুস্থ থাকতে ফল ও সবজি কীটনাশকমুক্ত রাখার সহজ উপায়

সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সবুজ শাকসবজি ও ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান। তবে বাজার থেকে কেনা এই শাকসবজি ও ফলে প্রায়শই কীটনাশকের উপস্থিতি দেখা যায়, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই বিষাক্ত কীটনাশক যদি রক্তে মিশে যায়, তাহলে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ফল ও সবজি খাওয়ার আগে সঠিক পদ্ধতিতে তা পরিষ্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোন কোন শাকসবজিতে বেশি কীটনাশক থাকে?

পালং শাক

বাজার থেকে কেনা বেশিরভাগ পালং শাকে পার্মাথ্রিন নামক কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এটি এক ধরনের নিউরোটক্সিন, যা স্নায়ুতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। তাই শাক রান্নার আগে লবণ-পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

আঙুর ও আপেল

আঙুর ও আপেলের গায়ে ডাইফিনাইলঅ্যামাইন নামক রাসায়নিক পাওয়া যায়, যা মানুষের শরীরের জন্য চরম ক্ষতিকর। অনেকে আঙুর বা আপেল না ধুয়ে সরাসরি খেয়ে থাকেন। এতে শরীরে বিষ প্রবেশের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এসব ফল পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে খাওয়া উচিত।

পেয়ারা

পেয়ারা অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল হলেও এর গায়ে কীটনাশকের উপস্থিতি থাকে। যদি ভালোভাবে না ধুয়ে খাওয়া হয়, তাহলে লিভারের গুরুতর অসুখ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ফল ও সবজি কীটনাশকমুক্ত করার ঘরোয়া পদ্ধতি

১. বেকিং সোডার দ্রবণ ব্যবহার
এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পানির একটি দ্রবণ তৈরি করুন। এতে সবজি বা ফল ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন। এতে ৯০ শতাংশ কীটনাশক দূর হয়ে যাবে।

২. ভিনেগার ও লবণের মিশ্রণ
সম পরিমাণে ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করুন। এতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে দিন। এবার ফল বা সবজি এই দ্রবণে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। পরে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন।

সতর্কতা

কোনো রাসায়নিক মিশ্রিত দ্রবণ ব্যবহার করবেন না। এই প্রক্রিয়াগুলো প্রয়োগ করলে ফল ও শাকসবজি নিরাপদভাবে খাওয়ার উপযোগী হবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ ও সমাধান

ভিটামিন ডি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। সূর্যের আলো এর প্রধান উৎস হলেও কিছু খাবার থেকেও এটি পাওয়া যায়। তবে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার ধরন অনুযায়ী অনেক সময় শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি সরবরাহ হয় না। এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি হয় যখন সূর্যের অতিবেগুনী বি (UVB) রশ্মি ত্বকে শোষিত হয়। পরে লিভার ও কিডনির মাধ্যমে এটি সক্রিয় অবস্থায় পরিণত হয়, যা শরীর ব্যবহার করতে পারে। চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন হওয়ায় এটি শোষিত হওয়ার জন্য খাদ্যের চর্বি ও শরীরের অন্তঃস্রাব ব্যবস্থার সুস্থতা প্রয়োজন। তবে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে শরীরে নানা সংকেত দেয়।

ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ:

১. হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা
ভিটামিন ডি-এর অভাবে শরীর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণে বাধাগ্রস্ত হয়। এতে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং ব্যথা ও ফাটল দেখা দিতে পারে। বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি হাড়ের ভঙ্গুরতার ঝুঁকি বাড়ায়।

২. পেশী দুর্বলতা ও খিঁচুনি
পেশীর কার্যক্রমের জন্য ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে দুর্বলতা, খিঁচুনি এবং ব্যথা দেখা দেয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এটি মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

৩. দাঁতের সমস্যা
ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁতের গহ্বর ও অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটি দাঁতের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং পিরিয়ডোনটাইটিসসহ মুখের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।

৪. চুল পড়া
ভিটামিন ডি চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে কেরাটিনোসাইট নামক কোষের কার্যকারিতা কমে যায়, যা চুল পড়ার একটি বড় কারণ।

৫. ক্লান্তি
ভিটামিন ডি-এর অভাবে মেজাজের পরিবর্তন, অলসতা এবং মানসিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ভালো ঘুমের পরও যদি ক্লান্তি দূর না হয়, তবে তা এই ভিটামিনের ঘাটতির ইঙ্গিত হতে পারে।

৬. ক্ষুধা কমে যাওয়া
ভিটামিন ডি লেপটিন নামক ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। এর অভাবে ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং খাওয়ার প্রতি অনীহা দেখা দেয়।

ভিটামিন ডি-এর অভাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত সূর্যের আলোতে থাকা, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



সুপারফুড: স্বাস্থ্যকর হলেও হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে

সুপারফুড এমন ধরনের খাবার, যা কম ক্যালোরিতে সর্বাধিক পুষ্টি সরবরাহ করে। এতে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ। সাধারণত এগুলোকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সুপারফুড বেশি পরিমাণে খেলে বা শরীরের নির্দিষ্ট সংবেদনশীলতা থাকলে হজমের জটিলতা তৈরি হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন সুপারফুডগুলো হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

ক্রুসিফেরাস শাক-সবজি যেমন ব্রকলি, ফুলকপি প্রভৃতি পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে এতে থাকা ফাইবার এবং রাফিনোজ নামক শর্করা অনেকের ক্ষেত্রে গ্যাস ও ফুলাভাবের সৃষ্টি করতে পারে।

চিয়া সিড ওমেগা-৩ এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি শরীরে প্রচুর পানি শোষণ করে। যদি পর্যাপ্ত পানি না পান করা হয় বা অতিরিক্ত খাওয়া হয়, তবে পেট ফোলার ঝুঁকি বাড়ে।

বাদাম এবং বীজ উচ্চমাত্রার ফ্যাট ও ফাইবারের কারণে হজম করতে সময় নিতে পারে। অতিরিক্ত খেলে এগুলো পেট খারাপ বা গ্যাসের কারণ হতে পারে।

দুগ্ধজাত খাবার প্রোবায়োটিকের কারণে অন্ত্রের জন্য উপকারী হলেও ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি হজমের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

কাঁচা রসুন ও পেঁয়াজে থাকা ফ্রুকটান নামক কার্বোহাইড্রেট অনেকের পেটে গ্যাস, ফুলাভাব বা ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

লেগুম, যেমন মসুর ডাল, ছোলা বা মটরশুটি ফাইবার ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ। তবে এগুলোতে থাকা অলিগোস্যাকারাইড অন্ত্রে গাঁজনের মাধ্যমে গ্যাস ও ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে।

গ্লুটেন-মুক্ত শস্য পুষ্টিকর হলেও যারা উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবারে অভ্যস্ত নন বা সংবেদনশীল তাদের জন্য এটি হজমে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, এসব খাবার পরিমিত পরিমাণে এবং শরীরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে খেলে এই সমস্যাগুলো এড়ানো সম্ভব।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




বিশ্বব্যাপী বিবাহবিচ্ছেদের হার কেন বাড়ছে?

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিবাহবিচ্ছেদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই হার সবচেয়ে বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে প্রতি ১০টি বিবাহের মধ্যে প্রায় ৪-৫টির সমাপ্তি ঘটে বিচ্ছেদের মাধ্যমে। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে নারীদের ইচ্ছায়। কিন্তু কেন নারীদের ঝোঁক বেশি?

নারীদের ওপর মানসিক চাপ

গবেষণায় দেখা যায়, বিবাহিত জীবনে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। সন্তান প্রতিপালন, পারিবারিক দায়িত্ব পালন, এবং অফিসের কাজ—সবকিছু সামলানোর পরেও তাদের অনেক সময় স্বামী কিংবা পরিবারের কাছ থেকে কটূক্তি সহ্য করতে হয়। যখন এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন নারীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং একসময় বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।

সমর্থনের অভাব

সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নারীরা সবসময় তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক সমর্থন প্রত্যাশা করেন। কিন্তু যখন সঙ্গীর অসমর্থন, বিদ্রুপ, কিংবা মানসিক অত্যাচারের শিকার হন, তখন তাদের মধ্যে একাকিত্ব তৈরি হয়। এই মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বিবাহবিচ্ছেদের রূপ নেয়।

নারীদের আর্থিক স্বাধীনতা

একটি বড় কারণ হলো, এখন নারীরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। স্বামীর উপর নির্ভরশীল না হওয়ায় তারা আর মানসিক কিংবা শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে চান না। প্রতারণা, অবহেলা কিংবা বিশ্বাসঘাতকতার সম্মুখীন হলে নারীরা নিজেরাই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।

পুরুষদের ভূমিকা

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অনেক পুরুষই বিবাহবিচ্ছেদে ভয় পান। কারণ প্রথমে ডিভোর্স চাইলে স্ত্রীর সম্পত্তির পাওনা মেটাতে হয়। তাই অনেক সময় তারা চুপচাপ পরিস্থিতি এড়িয়ে চলে স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের দিকে ঠেলে দেন।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কোনো নারী শারীরিক কিংবা মানসিক নির্যাতনের শিকার হন, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদই হতে পারে তার মুক্তির উপায়। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




শীতে কানের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

শীত আসার সঙ্গে সর্দি-কাশির সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই কানের ব্যথায় ভুগছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে এমন ব্যথা হয়। পাশাপাশি তরল জমা ও প্রদাহও কানের ব্যথার একটি সাধারণ কারণ। তবে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই এই যন্ত্রণা কমানো সম্ভব।

আদার জাদু

আদা একটি প্রাকৃতিক প্রদাহ-বিরোধী উপাদান। কানের চারপাশে আদার রস বা আদার সঙ্গে মিশ্রিত অলিভ অয়েল হালকা গরম করে প্রয়োগ করলে ব্যথা কমে যায়। তবে খেয়াল রাখুন, কানের ভেতরে যেন আদার রস না ঢুকে।

অলিভ অয়েলের ব্যবহার

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্সের মতে, অলিভ অয়েল হালকা গরম করে কানের মধ্যে দু-এক ফোঁটা দিলে ব্যথা তৎক্ষণাৎ কমে যেতে পারে। তবে তেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই তা ঠান্ডা করে নিতে হবে।

টি ট্রি অয়েলের কার্যকারিতা

টি ট্রি অয়েলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক, এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কানের সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে। এটি হালকা গরম করে কানের চারপাশে ম্যাসাজ করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। তবে যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, তাহলে এই তেল এড়িয়ে চলুন।

রসুনের শক্তি

রসুন কানের সংক্রমণ নিরাময়ে একটি কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিকার। এতে থাকা অ্যালিসিন নামক উপাদান প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। কাঁচা রসুন খেলে বা রসুনের তেল ব্যবহার করলে ব্যথা কমে। তবে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শেষ কথা

উল্লেখিত প্রতিকারগুলো ব্যবহার করে দ্রুত কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শীতকালে নিজের যত্ন নিন এবং সুস্থ থাকুন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে ব্যায়ামের আশ্চর্য প্রভাব

মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ রাখতে শুধু ধাঁধা সমাধান বা নতুন দক্ষতা শেখাই নয়, শারীরিক ব্যায়ামও অত্যন্ত কার্যকর। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ বিহেভিওরাল নিউট্রিশন অ্যান্ড ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাঝারি থেকে জোরালো ব্যায়ামের ফলে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের শক্তি উন্নত হতে পারে।

ব্যায়াম করার সময় আমাদের হৃদপিণ্ড থেকে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্ত ​​প্রবাহিত হয়, যা অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তার দক্ষতা উন্নত করে। গবেষণায় ৫০ থেকে ৮৩ বছর বয়সী ৭৬ জন অংশগ্রহণকারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যারা দ্রুত হাঁটা বা নাচের মতো মাঝারি থেকে জোরালো শারীরিক কার্যক্রমে অংশ নেন। পরীক্ষায় দেখা যায়, ব্যায়ামের পরদিন তাদের স্মৃতি পরীক্ষার স্কোর ছিল উন্নত।

কীভাবে ব্যায়াম মস্তিষ্ককে সুপারচার্জ করে:

১. রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি:
ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ বাড়ে, যা অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে মস্তিষ্ককে আরও সক্রিয় করে তোলে।

২. ফিল-গুড কেমিক্যালের নিঃসরণ:
ব্যায়ামের সময় মস্তিষ্ক ডোপামিন এবং নোরপাইনফ্রাইন নামক রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা মনোযোগ ধরে রাখতে, মেজাজ উন্নত করতে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

৩. ভালো ঘুমের সহায়ক:
গভীর ঘুমের মান উন্নত করতে ব্যায়াম সাহায্য করে। গভীর ঘুমের সময় মস্তিষ্ক স্মৃতি প্রক্রিয়া করে এবং নিজেকে পুনর্গঠিত করে।

৪. স্মৃতিশক্তি উন্নত:
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম মস্তিষ্কের স্মৃতি সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ায়। যারা নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রমে অংশ নেন, তাদের স্মৃতিশক্তি তুলনামূলকভাবে উন্নত।

মস্তিষ্ক এবং শরীর উভয়ের সুস্থতা বজায় রাখতে ব্যায়াম অপরিহার্য। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ব্যায়াম যোগ করুন এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলুন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




স্কুলে যাওয়ার আগে শিশুকে যেভাবে প্রস্তুত করবেন

সন্তানের বয়স তিন বছর পার হলেই বাবা-মা ভালো স্কুল খুঁজতে শুরু করেন। কারণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরু শিশুর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সঠিক বয়সে স্কুলে ভর্তির আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। এটি শিশুর সামাজিক, মানসিক, এবং শারীরিক বিকাশে সহায়তা করে।

শিশুকে নতুন পরিবেশ, বন্ধু, এবং লেখাপড়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত করতে হবে। স্কুলে যাওয়ার আগে বাড়িতেই কয়েকটি বিষয়ের চর্চা করলে শিশুর জন্য এই পথচলা সহজ হয়ে ওঠে।

প্রথমত, বাচ্চাকে প্রি-স্কুল বা প্লে স্কুলে পাঠানোর মাধ্যমে নিয়মিত বাইরে থাকার অভ্যাস করান। প্রথম দিকে মা-বাবাকে না দেখলে শিশুরা কান্নাকাটি করে। ধীরে ধীরে এই অভ্যাস তাদের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সহজ করে।

যা শেখানো জরুরি:

১. অন্যের সঙ্গে মানিয়ে চলা: শিশুকে শেখান, কীভাবে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হয়। তাদের অনুভূতিকে সম্মান করা, মজা করে গায়ে হাত না তোলা এবং নিজেদের আবেগ প্রকাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

২. ভাগ করে নেওয়া শিখুন: চকোলেট বা খেলনা ভাগ করার পাশাপাশি, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই চর্চা চালু রাখুন।

৩. শ্রদ্ধা করার মানসিকতা তৈরি করুন: মা-বাবা, পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর চর্চা ছোট থেকেই শুরু করুন।

৪. দ্রুত শেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন: শিশুকে কেবল মুখস্থ নয়, বিষয়বস্তুকে বোঝার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করে।

৫. দায়িত্বশীলতা শিখুন: নিজের জিনিস গুছিয়ে রাখা, নিজে খাবার খাওয়া, এবং নিজের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নিতে শেখান।

শিশুর জীবনের প্রথম স্কুলে যাত্রা একটি বড় পদক্ষেপ। সঠিক প্রস্তুতি শিশুর জন্য এই যাত্রাকে আনন্দময় এবং ফলপ্রসূ করে তুলতে পারে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম