সুস্বাদু মিষ্টি আনারস চেনার সহজ উপায়

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: আনারস একটি সুস্বাদু ও রসালো ফল, যা শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এবং নানা স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে কার্যকরী। তবে, বাজার থেকে আনারস কেনার সময় অনেকেই ভালো আনারস চিনতে পারেন না, যার ফলে তারা ঠিক পাকা ও মিষ্টি আনারস পান না। আনারসের স্বাদ তার পরিপক্বতা, জাত এবং পরিবেশগত অবস্থার উপর নির্ভর করে।

তীব্র গরমে আনারস খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এতে ভিটামিন এ ও সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে, যা দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে এবং ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি কমাতে সাহায্য করে।

আনারস কেনার সময় মিষ্টি আনারস চেনার কিছু উপায় জানা যাক:

১. রঙ: আনারসের বাইরের খোসার রঙ যদি উজ্জ্বল হলুদ বা সোনালি হয়, তবে তা সাধারণত বেশি পাকা ও মিষ্টি হয়।

২. গন্ধ: আনারসের গোড়া থেকে যদি মিষ্টি গন্ধ আসে, তবে এটি সাধারণত বেশি মিষ্টি হয়ে থাকে।

৩. ওজন: আনারস যদি তুলনামূলকভাবে ভারী হয়, তবে এর মধ্যে রস বেশি থাকে, যা মিষ্টতার ইঙ্গিত দিতে পারে।

বারোমাসি আনারসের মিষ্টতা চাষের পরিবেশ ও জাতের গুণমানের ওপর নির্ভর করে। তাই, মিষ্টি বারোমাসি আনারস কিনতে হলে অবশ্যই পাকা এবং ভালো গন্ধযুক্ত আনারস বেছে নেয়া উচিত।




টয়লেটে ফোন ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: টয়লেটে ফোন ব্যবহার করা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে, এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। টয়লেটের দরজার লক, ফ্লাশ, কমোড, এবং পানি ট্যাপ ইত্যাদিতে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া জমে থাকে। যেহেতু টয়লেট বেশিরভাগ সময় ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে থাকে, তাই এখানে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ছড়াতে পারে।

২০১৬ সালে একটি জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ টয়লেটে মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এই অভ্যাসটি বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এটি বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। দেখে নেওয়া যাক, টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে শরীরে কী কী ক্ষতি হতে পারে:

১. ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ: বাথরুমের পরিবেশে প্রচুর জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থাকতে পারে, বিশেষত ই. কোলাই, সালমোনেলা এবং স্টেফাইলোকক্কাস। ফোনের মাধ্যমে এই জীবাণুগুলো শরীরে প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে।

২. পেটের অসুখ ও খাদ্যবাহিত রোগ: টয়লেটের জীবাণু ফোনের মাধ্যমে খাদ্য বা হাতের সংস্পর্শে আসলে পেটের অসুখ বা ডায়রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৩. হাতের হাইজিনে অবহেলা: টয়লেট ব্যবহারের পর ফোনে মনোযোগ দিলে হাত ধোয়ার প্রক্রিয়া অবহেলিত হতে পারে, ফলে জীবাণু ফোনে এবং অন্যান্য বস্তুতে ছড়িয়ে যেতে পারে।

৪. মনের একাগ্রতা ব্যাহত হওয়া: বাথরুমে ফোন ব্যবহার করলে মনোযোগ বিভক্ত হয়ে যায়, যা দীর্ঘ সময় বাথরুমে থাকার কারণ হতে পারে এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

৫. ফোনের ক্ষতি: টয়লেটে ফোনের মাধ্যমে পানি বা আর্দ্রতা ঢোকার ঝুঁকি থাকে, যা ফোনের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বাথরুমে ফোন নেয়া মানসিকভাবে আরামদায়ক মনে হতে পারে, তবে এটি জীবাণু সংক্রমণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি, এবং ফোনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই বাথরুমে ফোন না নেয়াই শ্রেয়।




কম খরচে ঘুরে আসুন থাইল্যান্ডের আদলে নির্মিত মনোরম পড হাউজ

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: শীতের আগমনের সাথে সাথে বেড়ানোর পরিকল্পনা করতে হয়। যদি আপনার কাছে সময় থাকে, তাহলে কাপ্তাইয়ের মনোরম পড হাউজগুলোতে ঘুরে আসার পরিকল্পনা করতে পারেন, যা সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কাপ্তাই উপজেলা প্রবেশের আগে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের শীলছড়ি এলাকায় অবস্থিত নিসর্গ পড হাউজগুলো প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আদর্শ স্থান। লুসাই পাহাড় থেকে বয়ে আসা শীতল কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে উঠেছে এই পড হাউজগুলো, যা থাইল্যান্ডের আদলে নির্মিত।

নিসর্গ পড হাউজগুলোতে মোট নয়টি কটেজ রয়েছে, প্রতিটি কটেজে তিনজনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য বিনোদনের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে, যেমন ওয়াই-ফাই, কায়াকিং ও বিভিন্ন রাইডিং সুবিধা। পড হাউজগুলোর মধ্যে রয়েছে আকাশ কুঞ্জ, মেঘদূত, চন্দ্র পাহাড়, সাঁঝের মায়া, নদী বিলাস, আকাশ নীলা, আসমানী কুটির, ছায়াবীথি এবং নিঝুম নিরালা।

এছাড়া, এখানে রয়েছে আধুনিক অ্যাটাচড ওয়াশরুম, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা। নদী এবং পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগের পাশাপাশি রুমের সামনে দোলনায় শুয়ে চাঁদনি রাতের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন।

কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সায়দাবাদে পৌঁছে সরাসরি কাপ্তাইয়ের বাসে উঠতে হবে, যেখানে ৭-৮ ঘন্টার মধ্যে পড হাউজে পৌঁছানো সম্ভব। কাপ্তাই যাওয়ার বাসের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় আগেভাগে টিকিট বুক করে রাখা উচিত।

খরচ: পড হাউজে থাকার জন্য ফুল প্যাকেজের খরচ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে হবে, যা তিনবেলার খাবার ও কায়াকিংয়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে। এসি রুমের সুবিধাও রয়েছে।




কাঁচা মরিচ কি সত্যিই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ঝাল খেতে পছন্দ করেন এমন অনেক মানুষের কাছে কাঁচা মরিচ অন্যতম পছন্দের খাবার। এটি শুধু যে খাবারের স্বাদ বাড়ায়, তাই নয়, কাঁচা মরিচের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়েও রয়েছে নানা মত। অনেকেই কাঁচা মরিচের চাটনি বা আঁচারও তৈরি করেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, কাঁচা মরিচ কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর?

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর এলাকার জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শিমু আক্তার জানিয়েছেন, কাঁচা মরিচের কিছু উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে:

1. চোখের জন্য উপকারী: কাঁচা মরিচে বিদ্যমান ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং রাতকানা রোগের চিকিৎসায় সাহায্য করে।

2. ওজন নিয়ন্ত্রণ: কাঁচা মরিচের ক্যাপাসিয়াসিন উপাদান শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং অযাচিত ওজন কমাতে সহায়ক।

3. সর্দি-কাশির চিকিৎসা: কাঁচা মরিচের ব্যবহার নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে, যা শ্বাসনালীকে খুলে দেয়।

4. হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য: কাঁচা মরিচে ভিটামিন কে থাকে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

5. ব্যথা নিরাময়ে সহায়তা: ক্যাপাসিয়াসিন উপাদান ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে, বিশেষ করে মাথাব্যথা এবং বাতের ব্যথা কমাতে।

6. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে কাঁচা মরিচ সহায়ক, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

 

কাঁচা মরিচের স্বাস্থ্য উপকারিতা

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ তুলনামূলকভাবে বেশি, কারণ এতে ক্যালরি নেই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলি বেশি। প্রতিদিন ১২-১৫ গ্রাম কাঁচা মরিচ খাওয়া যেতে পারে।

সতর্কতা

মরিচ খাওয়ার ফলে গ্যাসট্রিক-আলসারের সমস্যা হয় বলে অনেকের ধারণা, তবে সঠিক পরিমাণে খাওয়ার ফলে এই ঝুঁকি কম থাকে।

 




ডেঙ্গু জ্বরে মাড়ি থেকে রক্তপাত হলে করণীয় কী, জানালেন চিকিৎসক

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ডেঙ্গু জ্বরের সময় মাড়ি থেকে রক্তপাত হলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। চিকিৎসক ডা. সানজির হাওলাদার জানান, এটি ডেঙ্গুর অন্যতম উপসর্গ হতে পারে। সাধারণত, ডেঙ্গু জ্বরের সাথে উচ্চ তাপমাত্রা, শরীর ও জয়েন্টে ব্যথা থাকে, কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। জ্বরের তাপমাত্রা কম থাকলেও মাড়ি থেকে রক্তপাত হতে পারে, যা অনেক সময় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের লক্ষণ।

ডা. সানজির বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের কারণে রক্তের প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা কমে যায়, ফলে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ে। জ্বরের সময় বা জ্বর না থাকা অবস্থায় দাঁত ব্রাশ করার সময় যদি মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়, তাহলে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করানো উচিত। বিশেষত, যাদের দাঁতের গোঁড়ায় পাথর জমে থাকে তাদের জন্য এই ঝুঁকি বেশি।

ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথে সাথে প্লাটিলেটও আক্রান্ত হয়, যার ফলে রক্তপাত শুরু হতে পারে। ডেঙ্গু শক সিনড্রোম থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে বেশি করে তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ব্যথানাশক খাবার খাওয়া উচিত নয়। যেকোনো সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।




প্রতিদিন পেস্তা বাদাম খাবেন যে কারণে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: প্রতিদিন বাদাম খাওয়ার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, তার মধ্যে পেস্তা বাদাম দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমনই সুস্বাদু। এই বাদাম অন্যান্য সাধারণ বাদামের তুলনায় অনেক বেশি পুষ্টিকর। হার্টের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত, খাদ্যতালিকায় পেস্তা আপনার সামগ্রিক সুস্থতা বাড়াতে একটি সহজ এবং সুস্বাদু সংযোজন।

### পেস্তা কেন?

পেস্তায় প্রচুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। ২৮ গ্রাম পেস্তায় প্রায় ১৬০ ক্যালোরি, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৩ গ্রাম স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে। এটি ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম সহ বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ।

### হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

হৃদরোগ বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উদ্বেগ। প্রতিদিনের খাবারে পেস্তা যোগ করলে এটি এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই বাদামে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের উপস্থিতি খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণা দেখায় যে নিয়মিত পেস্তা খেলে ধমনী স্বাস্থ্যের উন্নতি, প্রদাহ হ্রাস এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

### অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট

পেস্তা প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন লুটেইন, জিক্সানথিন এবং গামা-টোকোফেরল সমৃদ্ধ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণ। ডায়েটে পেস্তা যোগ করা শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

### ওজন নিয়ন্ত্রণ

যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাদের জন্য প্রতিদিন পেস্তা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পেস্তায় উচ্চ ফাইবার উপাদান ক্ষুধা নিবারণে সাহায্য করে এবং তৃপ্তি প্রদান করে। পেস্তার খোসা ছাড়িয়ে খাওয়ার ফলে খাওয়ার গতি ধীর হয়ে যায়, যা মস্তিষ্ককে পূর্ণতার অনুভূতি বুঝতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

### রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ

পেস্তা বাদামের কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে, যার অর্থ এটি রক্তে শর্করার মাত্রার ওপর ন্যূনতম প্রভাব ফেলে। এই গুণ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি চমৎকার পছন্দ। পেস্তায় স্বাস্থ্যকর চর্বি, ফাইবার এবং প্রোটিনের সংমিশ্রণ রক্ত প্রবাহে চিনির শোষণ ধীর করতে সাহায্য করে, যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং বিপাকীয় স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।




থাইরয়েডের জন্য ৬টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখা জরুরি। পর্যাপ্ত পানি পান, পর্যাপ্ত ঘুম, আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, মানসিক চাপ এড়ানো এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ। এই অভ্যাসগুলো শক্তির মাত্রা, বিপাক এবং সামগ্রিক সুস্থতার উন্নতি করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে এই অভ্যাসগুলো থাইরয়েড রোগ প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক।

### ১. পানি পান করুন

থাইরয়েড রোগীদের জন্য হাইড্রেটেড থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি পান সঠিক বিপাকীয় কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য, টক্সিন বের করতে সহায়ক এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, থাইরয়েড রোগীদের জন্য পানি পান করা উপকারী।

### ২. পর্যাপ্ত ঘুম

থাইরয়েড রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে, শক্তির মাত্রা বাড়ায় এবং মেটাবলিজম উন্নত করে। ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের অভাব থাইরয়েড ফাংশনকে খারাপ করতে পারে। তাই প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

### ৩. আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খান

থাইরয়েডের জন্য আয়োডিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি থাইরয়েড ফাংশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আয়োডিন থাইরয়েডের হরমোন সক্রিয় করতে সহায়তা করে এবং ইমিউন ফাংশন ভারসাম্য রাখে। গবেষণা অনুযায়ী, আয়োডিন গ্রহণ থাইরয়েড রোগের তীব্রতা প্রতিরোধ বা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

### ৪. মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন

থাইরয়েড রোগীদের জন্য মানসিক চাপ এড়ানো উচিত, কারণ এটি থাইরয়েড ফাংশন এবং হরমোনের ভারসাম্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। মানসিক চাপ কমালে এটি ইমিউন স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে এবং শক্তি বাড়াতে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে পারলে তা থাইরয়েডের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

### ৫. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

নিয়মিত ব্যায়াম থাইরয়েড স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারে আসে। এটি বিপাক বাড়ায়, থাইরয়েড ফাংশনকে সমর্থন করে এবং শক্তির মাত্রা বাড়ায়। যোগব্যায়াম, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা এবং হাঁটা থাইরয়েডের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে। ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, মাঝারি ব্যায়াম থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা উন্নত করতে পারে।

### ৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খান

থাইরয়েডের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াও অপরিহার্য। ফল, শাকসবজি, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং প্রোটিনের সমৃদ্ধ খাবার আপনার শরীরের জন্য উপকারী। এই খাবারগুলো শরীরের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে এবং থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।




পেট ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: অনেক সময় আমরা পছন্দের খাবারটি একটু বেশিই খেয়ে ফেলি, ফলে পেট ব্যথা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে আর কখনো অতিরিক্ত খাবো না, কিন্তু পরবর্তীতে সেই ভুল পুনরাবৃত্তি হয়। তবে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার জানা থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন জেনে নিই, পেট ব্যথা থেকে দূরে থাকতে কোন খাবারগুলো খাবেন:

১. **আদা**
আদা পেট ব্যথার লক্ষণ বমি ও বমি বমি ভাব দূর করতে কার্যকরী। এটি কাঁচা বা রান্না করে খাওয়া যেতে পারে এবং তরল হিসেবে খেলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়। আদার চমৎকার হজমশক্তি ও প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মোশন সিকনেস মোকাবেলায়ও সহায়তা করে।

২. **ক্যামোমাইল**
ঐতিহাসিকভাবে পেট ব্যথা ও অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা যেমন গ্যাস, বদহজম, ডায়রিয়া, এবং বমি বমি ভাবের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে ক্যামোমাইল। এটি শিশুদের কোলিক উপশমে সহায়তা করে এবং অন্ত্রের প্রশান্তিদায়ক প্রভাব রাখে।

৩. **পুদিনা**
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) হলে পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া হতে পারে। পেপারমিন্ট পেটের অস্বস্তিকর উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের পেশীর খিঁচুনি কমায়।

৪. **কাঁচা কলা**
কাঁচা কলা ডায়রিয়ার তীব্রতা ও সময়কাল কমাতে সাহায্য করে। এর বিশেষ ধরনের ফাইবার, যা প্রতিরোধী স্টার্চ নামে পরিচিত, অন্ত্রে বাড়তি পানি শোষণ করতে উদ্দীপিত করে। কলা ভিটামিন বি৬, পটাসিয়াম ও ফোলেট সমৃদ্ধ, যা ক্র্যাম্প ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

৫. **দই**
পেটে ব্যাকটেরিয়ারের ভারসাম্যহীনতার কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই ডিসবায়োসিস সংশোধন করতে সহায়তা করে। প্লেইন ইয়োগার্টে জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দূর করতে কার্যকর।




ত্বকের সমস্যা দূর করতে আগে যত্ন নিন অন্ত্রের

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ত্বকের সমস্যার সমাধানে ময়েশ্চারাইজার, সিরাম, টোনার, ফেসওয়াশ, ফেসিয়াল এবং বিউটি ট্রিটমেন্টের মতো নানা পণ্য ব্যবহৃত হলেও, সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের গুরুত্বও অস্বীকার করা যায় না। বর্তমান সৌন্দর্য সচেতন সমাজের মধ্যে এসব স্কিন কেয়ার পণ্য জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও, ত্বককে সুস্থ রাখতে অভ্যন্তরীণ যত্ন অধিক কার্যকর।

আমাদের খাদ্যাভ্যাস শুধু স্বাস্থ্যের উপরই নয়, বরং ত্বকের উপরও প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, ভাজা-পোড়া খাবার বেশি খেলে ত্বকে পিম্পল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে হলে আগে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

ভারতীয় চিকিৎসক কর্ণ রাজন সম্প্রতি তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এ বিষয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, “ত্বকের উন্নতি করতে চাইলে স্কিনকেয়ার ছাড়াও অন্ত্রের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। রঙিন ফল ও শাক-সবজি অন্ত্রের জন্য উপকারী, যার প্রভাব ত্বকেও পড়ে। টমেটো, বেল পেপার, গাজর খেলে ত্বকে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসে।”

একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, যেসব শিশু একজিমা রোগে ভুগছে তাদের অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ঘাটতি রয়েছে। প্রোবায়োটিকসে পর্যাপ্ত পরিমাণ ল্যাকটোবাইসিলি এবং বাইফিডোব্যাকটেরিয়াম পাওয়া যায়, যা একজিমা আক্রান্ত শিশুদের ত্বকের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।

ডাক্তার রাজন আরও বলেন, “খাদ্যে প্রিবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো সিদ্ধান্ত। এই ধরনের খাবারে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ফলে প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌগের উৎপাদন বেড়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।”

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নির্দিষ্ট কোনো খাবার ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ানোর নিশ্চয়তা দেয় না। তবে রঙিন ফল ও শাক-সবজি এই ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ প্রিবায়োটিকস সম্পন্ন এবং বিভিন্ন রঙের খাবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

সুতরাং, পেটের যত্ন নিলে ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়। ত্বকে সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে খাদ্যতালিকা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যাগুলি সমাধান করা সম্ভব।

**তথ্যসূত্র:** হিন্দুস্তান টাইমস

 




 অপ্রাপ্ত বয়সে চুল পাকা: কী করণীয়?

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: অপ্রাপ্ত বয়সে চুল পাকা বা অকালপক্বতা আজকাল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বয়সের আগেই মাথায় পাকা চুল দেখা দিলে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হন। সাম্প্রতিক গবেষণায় চুল পাকার কারণ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।

### চুল পাকার কারণ:

1. **জিনগত প্রভাব:** প্রায় ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে চুল পাকা জিনগত কারণে হয়ে থাকে। অর্থাৎ, পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও যদি চুল পাকা থাকে, তাহলে সন্তানদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

2. **শারীরিক কারণ:** শরীরে ভিটামিন ও খনিজের অভাবের কারণে ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে চুল পেকে যেতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিন বি-১২, আয়রন, এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিডের অভাব এই সমস্যার কারণ হতে পারে।

3. **অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:** শিশুদের মাঝে জাঙ্ক ফুডের প্রচলন বেড়ে গেছে, যার ফলে পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়ার কারণে চুলে পাক ধরতে পারে।

4. **স্ট্রেস:** আধুনিক জীবনের সঙ্গে জড়িত মানসিক চাপও চুল পাকার অন্যতম কারণ। স্ট্রেসের কারণে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজের ঘাটতি দেখা দেয়, যা চুলের স্বাভাবিক রং ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়।

5. **লিভারের সমস্যা:** লিভারের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা থাকলে কম বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। তাই চুল পাকার সঙ্গে লিভারের সমস্যার সম্ভাবনাও পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

### প্রতিকার:

1. **পুষ্টিকর খাদ্য:** খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজযুক্ত খাবার রাখা উচিত, বিশেষ করে সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন বি-১২ এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার।

2. **স্ট্রেস কমানো:** মানসিক চাপ কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।

3. **প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার:** চুলে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন হেনা বা ভেষজ রং ব্যবহার করে পাকা চুল ঢেকে দেওয়া যেতে পারে।

যদিও চুল পাকা পুরোপুরি থামানো যায় না, তবে সঠিক যত্নের মাধ্যমে এর গতি কমানো সম্ভব।