ধীরে খাবার খেলে কী হয়? অভ্যাস করবেন যেভাবে

ধীরে ধীরে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। এটি অতিরিক্ত খাওয়া রোধ, হজমের উন্নতি, ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। ধীরে ধীরে খাওয়ার অভ্যাস আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারে, যা খাবারের সঙ্গে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। যারা তাদের খাওয়ার গতি কমাতে চায় তাদের জন্য বিশেষজ্ঞরা সহজ কৌশল এবং পদ্ধতির পরামর্শ দেন। এটি শুধু স্বাস্থ্য ঝুঁকিই কমায় না, সেইসঙ্গে খাবারের সময়কে আনন্দদায়ক করে তোলে।

১. খাওয়ার পরিবেশ পরিবর্তন করা

যদিও প্রাথমিকভাবে এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করার জন্য সংগ্রাম করতে হতে পারে তবে শেষ পর্যন্ত সাফল্য পাবেন। টিভির আশপাশ থেকে খাবার টেবিলে স্থানান্তর করা আপনাকে খাওয়ার দিকে মনোযোগ রাখতে এবং আপনি যে খাবার খাচ্ছেন তার সঙ্গে আরও সংযুক্ত বোধ করতে সহায়তা করতে পারে।

২. চিবানো গণনা

ধীরে ধীরে খাওয়ার এই পদ্ধতিটি বেশিরভাগের জন্য কম কার্যকর বলে মনে হতে পারে। কারণ এটি গণনা করতে ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক বা এই পদ্ধতিকে বিভ্রান্তিকর বলে মনে করতে পারে। তবে একবার খাবার গলানোর আগে ২৪ বার চিবিয়ে নিলে এটি অভ্যাসে পরিণত হবে।

৩. অল্প অল্প পানি পান করা

ধীরে ধীরে খাওয়ার আরেকটি কৌশল হলো পানির ছোট চুমুক নেওয়া বা আসল খাবারের মধ্যে সালাদ খাওয়া। এটি হাইড্রেশন উন্নত করে এবং খাদ্য গ্রহণ করা কমায়। সেইসঙ্গে এটি আপনাকে ধীরে ধীরে খেতেও সাহায্য করতে পারে।

৪. ধীরে খায় এমন কারও সঙ্গে খাওয়া

ধীরে ধীরে খাবার খাওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো আপনার গতিকে একজন ধীরে খাবার খাওয়া বন্ধুর সঙ্গে মেলানো। আপনার বন্ধুর খাওয়ার গতি অনুকরণ করার চেষ্টা করলে তা খাবার খাওয়ার সময় আপনাকে ধীর করতে সাহায্য করতে পারে।

৫. চামচ নামিয়ে রাখুন

যারা ধীরে ধীরে খেতে চান তাদের জন্য এই সহজ কৌশলটি সবচেয়ে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। একটি কামড় খাওয়া এবং তারপর প্লেটে চামচটি বিশ্রামে রাখার অভ্যাস আপনাকে আরও ধীরে ধীরে খেতে এবং খাবার উপভোগ করতে সহায়তা করতে পারে।




ডিপ্রেশন কেন হয়? জানুন মুক্তির উপায়

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ডিপ্রেশন একটি মানসিক অবসাদ যা দেহের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে এবং বিভিন্ন কারণে ঘটে। ব্যক্তির জীবনের চাহিদা বৃদ্ধি ও প্রাপ্তির মধ্যে অসঙ্গতি থাকলে তা ডিপ্রেশনে রূপান্তরিত হতে পারে।

### ডিপ্রেশনের কারণ:

**১. অপমান বোধ:**
যারা আত্মমর্যাদার ওপর নির্ভরশীল, তারা অপরের দ্বারা অপমানিত হলে মানসিকভাবে আহত হতে পারেন। এ অবস্থায় তারা ডিপ্রেশনে পড়ার ঝুঁকিতে থাকেন।

**২. একাকিত্ব:**
যারা সামাজিক, কোলাহল পছন্দ করেন, কিন্তু একাকী জীবন যাপন করতে বাধ্য হন, তারা মানসিকভাবে অসহায় অনুভব করতে পারেন।

**৩. বংশগত কারণ:**
কিছু পরিবারের সদস্যরা জিনগতভাবে ডিপ্রেশনের প্রতি ঝোঁক থাকতে পারেন। এরা সাধারণত ছোট বিষয়গুলোকে বড় করে দেখেন।

**৪. জীবনে বড় পরিবর্তন:**
কোনও বড় পরিবর্তন, যেমন চাকরি হারানো, জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে এবং এটি ডিপ্রেশনে রূপান্তরিত হতে পারে।

### ডিপ্রেশনের লক্ষণ:

– হতাশা, রাগ, এবং দুঃখ
– খিদে ও ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত বৃদ্ধি
– একাকী হয়ে যাওয়া, কারো সাথে কথা বলতে না চাইলে
– শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা অনুভব করা
– কোন বিষয়ে আগ্রহের অভাব

যদি উপরের লক্ষণগুলোর পাঁচটি বা তার বেশি দু’সপ্তাহ ধরে থাকে, তাহলে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেয়া উচিত।

### ডিপ্রেশনের ধরনের পরিচয়:

– **মেজর ডিপ্রেশন:** দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণ প্রকাশ পেলে, যা আত্মহত্যার প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে।
– **মাইনর ডিপ্রেশন:** কোন দুঃখজনক ঘটনার কারণে ঘটে।
– **অ্যাটিপিকাল ডিপ্রেশন:** মেজর ডিপ্রেশনের একটি ধরনের যা চিকিৎসা ও সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে।

### মুক্তির উপায়:

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে হলে:

– **চিকিৎসা:** চিকিৎসার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা।
– **সমর্থন:** কাছের মানুষের সমর্থন ও বোঝাপড়া প্রয়োজন।
– **স্বাস্থ্যকর খাদ্য:** পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করা।

 

নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুখের দায়িত্ব নিতে হবে। নিজের মধ্যে সুখ খোঁজার চেষ্টা করুন এবং অন্যান্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমান। ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির জন্য প্রথমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

 




চোখের সুস্থতার জন্য যেসব খাবার খাবেন লাইফস্টাইল

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: চোখ ভালো রাখা সবার আগে জরুরি। কারণ এই চোখ দিয়েই আমরা রঙিন পৃথিবীটা দেখতে পাই। তবে চোখের প্রতি আমরা বেশিরভাগই যত্নশীল নই। বিশেষ করে চোখের জন্য যেসব খাবার উপকারী, সেগুলোর প্রতি আমাদের খেয়াল থাকে কম। কিন্তু চোখের সুস্থতার জন্য আপনাকে অবশ্যই খাবারের তালিকার দিকে নজর দিতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক চোখ ভালো রাখার জন্য কী খাবেন-

১. ভিটামিন এ

গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক এবং পেঁয়াজ কলিতে পাওয়া যায় ভিটামিন এ। ভালো দৃষ্টিশক্তি, বিশেষ করে রাতের দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখার জন্য এই ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই খাবারের তালিকায় এ ধরনের খাবার নিয়মিত যোগ করার চেষ্টা করুন।

২. ভিটামিন সি

এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখকে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। সাইট্রাস ফল, বেরি এবং টমেটো ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস। আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ভিটামিন সি যুক্ত ফল রাখুন। এটি চোখ ভালো রাখা ছাড়াও আরও অনেক উপকারিতা দেবে।

৩. ভিটামিন ই

বাদাম, বীজ এবং উদ্ভিজ্জ তেলে পাওয়া ভিটামিন ই ফ্রি র‌্যাডিক্যালের গঠন প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফ্রি র‌্যাডিক্যাল চোখের ক্ষতি করতে পারে। তাই ভিটামিন ই যুক্ত খাবার নিয়মিত খেতে হবে। এতে চোখ ভালো রাখা সহজ হবে।

৪. কপার

এই খনিজটি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য এবং এটি ঝিনুক, মাংস ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় কপার পেতে নিয়মিত খাবারের তালিকায় এ ধরনের খাবার রাখতে হবে। এতে আপনার চোখ ভালো থাকবে।

৫. ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

এই স্বাস্থ্যকর চর্বি ফ্যাটি মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল এবং টুনাতে পাওয়া যায়। এগুলো মস্তিষ্ক এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তাই এ ধরনের মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। সামুদ্রিক মাছ নিয়মিত খেলে তা সুস্থতার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।

৬. সুষম খাদ্য খান

ফল, শাক-সবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার চোখের স্বাস্থ্য সহ সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তাই নিয়মিত সুষম খাবার খেতে হবে। এতে চোখের পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত হবে।




ধুমপানের ক্ষতি ও মুক্তির উপায়: স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: ধুমপান বর্তমানে বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ধুমপানের ফলে শুধু ধূমপায়ীদের জীবন নয়, বরং আশেপাশের মানুষের জীবনও ঝুঁকিতে পড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধুমপান সংক্রামক রোগ, হৃদরোগ এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের অন্যতম কারণ।

ধুমপানের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি

ধুমপানের ফলে শরীরে যে সকল ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে তা নিম্নরূপ:

1. **ফুসফুসের স্বাস্থ্য**:
– ধুমপান ফুসফুসের কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি ব্রঙ্কাইটিস, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) এবং ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
– ধূমপায়ীদের ফুসফুসের ক্ষমতা কমে যায়, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করে।

2. **হৃদরোগ**:
– গবেষণা দেখিয়েছে, ধুমপায়ীদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। সিগারেটের ধূঁয়া রক্তের ভিতরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

3. **ক্যান্সার**:
– ধূমপান ক্যান্সারের প্রধান কারণ। এটি শুধু ফুসফুসের ক্যান্সারই নয়, বরং মুখ, গলা, খাদ্যনালী এবং প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার সৃষ্টি করে।

4. **গর্ভাবস্থা**:
– গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ধুমপান মারাত্মক ক্ষতিকর, যা গর্ভপাত এবং অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া শিশুর জন্মগত ত্রুটি এবং জন্মের পর শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করে।

5. **মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি**:
– ধূমপায়ীরা বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে পারে।

পরিবেশগত ক্ষতি

ধুমপানের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া বায়ু দূষণের জন্য দায়ী। এটি পরিবেশে বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি বাড়িয়ে দেয় এবং বায়ুর গুণগত মানকে খারাপ করে। সিগারেটের আবর্জনা মাটি এবং জলকে দূষিত করে, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর ৪.৫ ট্রিলিয়ন সিগারেটের তামাক খোঁজার কারণে এশিয়ার দেশগুলোর পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

অর্থনৈতিক ক্ষতি

ধূমপায়ীদের জন্য সিগারেট ক্রয় একটি বড় খরচ। সিগারেটের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক পরিবার আর্থিক সংকটে পড়ে। চিকিৎসা খরচের কারণে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় আক্রান্তদের অর্থনৈতিক অসুবিধারও সম্মুখীন হতে হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে বছরে ৩৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্যের ক্রয় করা হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলে।

মুক্তির উপায়

ধুমপান ছাড়ার জন্য একাধিক কার্যকরী উপায় রয়েছে:

1. **সঠিক পরিকল্পনা**:
– ধুমপান ছাড়ার একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন এবং একটি নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করুন।

2. **মানসিক প্রস্তুতি**:
– নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন এবং ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলুন।

3. **সমর্থন নিন**:
– বন্ধু ও পরিবারের সমর্থন গ্রহণ করুন, যা আপনাকে উৎসাহিত করবে।

4. **অভ্যাস পরিবর্তন**: 
– ধুমপান করার সময় বিকল্প কিছু করুন, যেমন হাঁটতে যাওয়া বা অন্য কিছু খাওয়া।

5. **নিকোটিন প্রতিস্থাপন থেরাপি**:
– নিকোটিন গাম বা প্যাচ ব্যবহার করে আসক্তি কমানোর চেষ্টা করুন।

6. **পেশাদার সাহায্য**:
– ডাক্তার বা কাউন্সেলরের সাহায্য নিন, যারা আপনাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ দিতে পারবেন।

7. **ধূমপান বিরোধী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ**:
– বিভিন্ন ধূমপান বিরোধী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করুন।

8. **নতুন শখ ও আগ্রহ তৈরি করুন**:
– নতুন শখ গড়ে তুলুন, যা আপনাকে ধূমপানের চিন্তা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

বিশেষজ্ঞদের বার্তা

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “ধুমপান ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। এটি শুধু আপনার জন্যই নয়, বরং আপনার আশেপাশের সকলের জন্য নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করবে।”

দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। ধুমপান এখন একটি সামাজিক সমস্যা, তাই সকলকে একত্রিত হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। একটি সুস্থ জাতি গড়ার লক্ষ্যে ধুমপান ত্যাগই হবে প্রথম পদক্ষেপ।

সুতরাং, প্রত্যেক ধূমপায়ীকে আহ্বান করা হচ্ছে—এখনই সিগারেটের নেশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিন, যাতে নিজেদের এবং সমাজের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।




চুলে সরিষার তেল ব্যবহার করলে কী হয়?




নবজাতককে মেনিনজাইটিস থেকে বাঁচাতে সতর্কতা: কী করবেন, কী করবেন না

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: মেনিনজাইটিস একটি ভয়াবহ রোগ, যা মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের চারপাশের পর্দায় প্রদাহ সৃষ্টি করে। নবজাতকরা মেনিনজাইটিসের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ তাদের ইমিউন সিস্টেম এখনও পুরোপুরি বিকশিত হয় না। এ ধরনের সংক্রমণ শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে, তাই শুরু থেকেই সঠিক সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি।

মেনিনজাইটিসের কারণ:

মেনিনজাইটিস সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা প্যারাসাইটের সংক্রমণের মাধ্যমে হয়। নবজাতকরা সাধারণত ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয়, যা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে মারাত্মক হতে পারে।

লক্ষণ:

নবজাতকদের ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিসের কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা অভিভাবকদের জানা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে:
– বারবার কান্না করা
– খাবার গ্রহণে অস্বীকৃতি
– জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
– খিচুনি বা অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরা
– শরীরের অংশগুলোতে খিচুনির উপস্থিতি
– শ্বাসকষ্ট বা অসুস্থ দেখানো

প্রতিরোধের উপায়:

১. **স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা**: নবজাতককে নিয়ে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শিশুর আশপাশে থাকা ব্যক্তিদের হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

২. **টিকা গ্রহণ**: নবজাতককে নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজনীয় টিকা দিতে হবে, যা মেনিনজাইটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

৩. **সংক্রমণ থেকে দূরে রাখা**: নবজাতককে যে কোনও প্রকার সংক্রমণ থেকে দূরে রাখা উচিত। বাচ্চার সংস্পর্শে আসা লোকজনের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থাকলে সতর্ক থাকতে হবে।

কী করবেন না:

– নবজাতককে ভিড় বা দূষিত জায়গায় নিয়ে যাবেন না।
– শিশুর আশপাশে ধূমপান বা দূষণমূলক কিছু করবেন না।
– অসুস্থ লোকদের কাছ থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।

চিকিৎসা:

মেনিনজাইটিসের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। মেনিনজাইটিস প্রতিরোধে প্রাথমিক সতর্কতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা নবজাতকের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

নবজাতকের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষার জন্য মেনিনজাইটিস সম্পর্কে সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।




গ্যাস্ট্রিক সমস্যা: কারণ, প্রতিকার, এবং প্রতিরোধের উপায়

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: বর্তমান ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অনেকেই গ্যাস্ট্রিক সমস্যার মুখোমুখি হন। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদনের ফলে সৃষ্ট এই সমস্যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। কিন্তু এর মূল কারণগুলো জানা এবং প্রতিকার গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যাকে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

**গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণ**

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে হয়, যা খাদ্য হজমের প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে। এর কিছু প্রধান কারণ হলো:

1. **অনিয়মিত খাবার খাওয়া**: অনেকেই ব্যস্ততার কারণে সময়মতো খাবার খেতে পারেন না। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে পাকস্থলী অ্যাসিড উৎপন্ন করে, যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা তৈরি করে।
2. **অতিরিক্ত মশলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার**: বেশি মশলা ও চর্বিযুক্ত খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দেখা দেয়।
3. **ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল**: অতিরিক্ত চা, কফি বা অ্যালকোহল গ্রহণ পাকস্থলীতে অ্যাসিড উৎপাদনকে বাড়িয়ে দেয়।
4. **মানসিক চাপ**: উদ্বেগ এবং মানসিক চাপের কারণে হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়, যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সৃষ্টি করে।
5. **অনিয়মিত ঘুম**: ঘুমের অভাবে পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়ে।

**গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণ**

গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:

– পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়া
– বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা
– ঢেঁকুর তোলা
– গলা জ্বালা করা
– পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি

 **গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচার উপায়**

গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রতিকার এবং প্রতিরোধের জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:

1. **নিয়মিত খাবার খাওয়া**: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়মতো পরিমিত খাবার খেলে পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হবে না। বড় খাবার এড়িয়ে কয়েকটি ছোট ছোট খাবারের অভ্যাস করা যেতে পারে।
2. **মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা**: ঝাল, মশলাযুক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবার কম খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
3. **ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল পরিহার**: চা, কফি ও অ্যালকোহলের অতিরিক্ত সেবন থেকে বিরত থাকা উচিত।
4. **প্রচুর পানি পান**: দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করলে পাকস্থলীর অ্যাসিড নির্গমন কম হয়।
5. **নিয়মিত ব্যায়াম**: শরীরকে ফিট রাখতে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
6. **খাওয়ার পর শুয়ে না পড়া**: খাবারের পরপরই শুয়ে পড়লে অ্যাসিড রিফ্লাক্স হতে পারে। তাই খাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা বসে থাকা উচিত।
7. **ধূমপান পরিহার**: ধূমপান পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
8. **চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ**: প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টাসিড বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।

**গ্যাস্ট্রিক সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ**

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এড়াতে দীর্ঘমেয়াদে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপ কমানোর জন্য ধ্যান, ইয়োগা বা রিলাক্সেশন থেরাপির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পাকস্থলীর সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াও অপরিহার্য।

 

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা প্রতিদিনের জীবনের একটি অস্বস্তিকর দিক হতে পারে, তবে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তন এবং সঠিক চিকিৎসা নিলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।




বরিশালের জনপ্রিয় শরবত মলিদা

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ :: বরিশাল অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় পানীয় হলো মলিদা। বিভিন্ন উৎসব পার্বণে এই অঞ্চলে মলিদা খাওয়ার চল অনেক পুরোনো। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকে এই মলিদার সঙ্গে পরিচিত নন। এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে জনপ্রিয় পানীয় মলিদার নামটি সর্বাঙ্গে জড়িয়ে। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বড় কোনো উৎসব ছাড়া মলিদার আয়োজন এখন আর দেখা যায় না। তবে কেউ কেউ এখনও সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য ধরে রাখতে ছোট পরিসরে মলিদা খাওয়ানোর আয়োজন করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক মলিদা তৈরির রেসিপি।

রেসিপি-
উপকরণ: নতুন পোলাওয়ের চাল, নারিকেল, আদা, লবণ, খাঁটি আঁখের গুড়, খই/মুড়ির প্রয়োজন হয়। পরিমাণের হিসাব কষলে বড় এক কাপ বাটা পোলাওয়ের চালের সঙ্গে, কিছুটা মুড়ি/খই বাটা, বড় টেবিল চামচ নারিকেল বাটা, চা চামচ আদা বাটার সাথে পরিমাণ মতো আঁখের গুড়, লবণ মিশিয়ে ৩-৪ কাপ পানির সাথে মিশ্রণ করতে হবে।

প্রণালি: একটি পাত্রে প্রথমে পরিমাণ মতো পোলাওয়ের চাল বাটা, মুড়ি বা খই বাটা, নারিকেল বাটা ও খাঁটি আঁখের গুড় মিশিয়ে হাত দিয়ে কচলে নিন যেন সবগুলো উপাদান একসঙ্গে মিশে যায়। আরেকটি পাত্রে পানি দিয়ে তাতে আগের মিশ্রণগুলো অল্প অল্প করে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন, তবে এ মিশ্রণে পানির পাশাপাশি তরল দুধ বা ডাবের পানিও ব্যবহার করেন অনেকে। এবারে সবগুলো মিশ্রণ ঢালার পর পরিমাণ মতো লবণ ও আদা বাটা দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। মিশ্রণ হয়ে গেলে পছন্দমতো গ্লাসে ঢেলে তার ওপর মুড়ি বা খই ছিটিয়ে অল্প নারিকেল বাটা ছিটিয়ে দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু মলিদা।

মলিদাকে আরও সুস্বাদু করতে অনেক জায়গাতে চিড়াও মিশানো হয়। আগে মিশ্রণ ও বাটার কাজ শীলপাটা ও ঘুঁটনি দিয়ে করা হতো, তবে এখন চাইলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে পারেন। যদিও চাল বাটার কাজটি শীলপাটায় করলে স্বাদটা অনেক ভালো হবে। ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।




ডেঙ্গু রোগীকে খাওয়াতে পারেন যেসব খাবার

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এ সময় সুস্থ থাকাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ ডেঙ্গুতে শরীরের প্লাটিলেট কমে যেতে শুরু করে। এছাড়া শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বাড়তে পারে। তাই ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে শরীরে পুষ্টি গ্রহণ আরও বাড়াতে হবে।

পুষ্টিবিদদের মতে, ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। জ্বর হলে অনেকেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেন। এর থেকে হতে পারে পানিশূন্যতা। পাশাপাশি কমে যেতে পারে প্লাটিলেট সংখ্যা। তাই বাড়িতে কারও ডেঙ্গু জ্বর হলে অবশ্যই কয়েকটি খাবার খাওয়ানো জরুরি।

ডাবের পানি

শারীরিক সুস্থতায় ডাবের পানি অনেক উপকারী। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের শূন্যতা থেকে সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। তাই এ সময় বেশি করে ডাবের পানি পান করুন। এতে থাকে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

ডালিম

ডালিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। এ সময় ডালিম খেলে বাড়বে প্লাটিলেটের সংখ্যা। এই উপকারী ফলটি খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

কমলা

কমলা বা মালটার রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এ দুটি উপাদান ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে উপকার করে।

হলুদ

রান্নাঘরের একটি উপাদান হলো হলুদ। যা চিকিৎসায় যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ডেঙ্গু জ্বর হলে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করুন। হলুদ দুধ খাওয়ার একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।

ব্রোকলি

ব্রোকলি হলো ভিটামিন কে’র একটি ভালো উৎস। অন্যদিকে ভিটামিন কে রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে সহায়তা করে। যদি কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, তাহলে অবশ্যই তাকে ব্রোকলি খাওয়াতে হবে।

পালং শাক

পালং শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করতে সহায়তা করে এই শাক। পালং শাক গ্রহণে ডেঙ্গু রোগীর প্লাটিলেট দ্রুত বাড়বে।

ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন। একই সঙ্গে মসলাযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে।

এছাড়া ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করবেন না। এসব খাবার শরীরের কোনো উপকারেই আসে না বরং ক্লান্তি ও অসুস্থতা বাড়িয়ে দেয়।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 




চিনি খেয়ে ফেলছি কি না, বুঝব কী করে?

 

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: অ্যাডেড সুগার (খাবারে যে চিনি যোগ করা হয়)’ খাওয়া উচিত নয়। কেননা আমরা যে চিনি খাই তার বেশির ভাগই অবচেতনভাবে। মিষ্টি, কেক, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাবার, পানীয়র সুক্রোজ, ডেক্সট্রোজ, ফ্রুক্টোজ ও কর্ন সিরাপের মাধ্যমে ‘লুকায়িত’ চিনি ঢুকে পড়ে।
আমরা যে চিনি খাই তার বেশির ভাগই অবচেতনভাবে। মিষ্টি, কেক, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাবার, পানীয়র সুক্রোজ, ডেক্সট্রোজ, ফ্রুক্টোজ ও কর্ন সিরাপের মাধ্যমে ‘লুকায়িত’ চিনি ঢুকে পড়ে l

চিনি তো আমরা কমবেশি সবাই খাই। কিন্তু আমরা বেশি চিনি খেয়ে ফেলছি কি না, বুঝব কী করে? জার্মানির ডার্মাটোলজিস্ট ও পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ডা. লিলা আহলেমান চিনি বেশি খেলে যেসব লক্ষণ দেখা দেয়, তা জানিয়েছেন।

১. বারবার খিদে লাগে, ওজন বেশি

চিনিতে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে। পাশাপাশি বেশি চিনি খেলে বারবার ক্ষুধা লাগে। কারণ, স্বল্প মেয়াদে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায় চিনি, কিন্তু ফাইবারের অভাবের কারণে এর কোনো স্থায়ী প্রভাব থাকে না। ফলে ‘সুগার স্পাইক’ হয় আর বারবার ক্ষুধা লাগে। পরিণতিতে বেশি বেশি খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলি আমরা।

২. ত্বকের স্বাস্থ্য নষ্ট

চিনি খেলে শুধু ইনসুলিনের মাত্রাই বাড়ে না, রক্তে ইনসুলিনের মতো গ্রোথ ফ্যাক্টর-১ বা জিএফ-১ নামে একটি হরমোনও বাড়ে। ইনসুলিন ও জিএফ-১ সেবেসিয়াস গ্রন্থিগুলোকে উদ্দীপ্ত করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বকের প্রোটিন। আর ব্রণসহ বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়। তাই ব্রণ দেখা দিলে বুঝতে পারবেন যে আপনি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চিনি খাচ্ছেন।

আমরা যে চিনি খাই তার বেশির ভাগই অবচেতনভাবে। মিষ্টি, কেক, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাবার, পানীয়র সুক্রোজ, ডেক্সট্রোজ, ফ্রুক্টোজ ও কর্ন সিরাপের মাধ্যমে ‘লুকায়িত’ চিনি ঢুকে পড়ে l

চিনি তো আমরা কমবেশি সবাই খাই। কিন্তু আমরা বেশি চিনি খেয়ে ফেলছি কি না, বুঝব কী করে? জার্মানির ডার্মাটোলজিস্ট ও পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ডা. লিলা আহলেমান চিনি বেশি খেলে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় l

৩. মুড সুইং, বদমেজাজ

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ার ফলে ইনসুলিন নিঃসরণও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘটে। এটি মাঝেমধ্যে এতটাই শক্তিশালী হয় যে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক স্তর থেকে কমে ন্যূনতম মাত্রার নিচে চলে যায়। তখন আপনার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। তখন ক্ষুধা লাগে আর ‘মুড সুইং’ হয়। ফলে হুট করে রেগে যাওয়া, অল্পতে হতাশ হয়ে পড়া ও মেজাজ হারানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

৪. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া

সাধারণত ক্ষুদ্রান্ত্রের মাধ্যমে চিনি শোষিত হয়। যখন গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের মতো সাধারণ চিনির পরিমাণ আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ধারণক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়, তখন এই চিনি বৃহদন্ত্রে শোষিত হয়। পুষ্টিবিশেষজ্ঞদের মতে, এই চিনি বৃহদন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হয়ে ওঠে। এর ফলে এন্ডোটক্সিন নামের বিষ উৎপন্ন হয়। এটি লাইপোপলিস্যাকারাইড নামেও পরিচিত। এটি রক্তে প্রবেশ করে নীরব প্রদাহ তৈরি করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থাকে দুর্বল করে। আর শরীরের বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে।

৫. দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া

এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে বেশি বেশি চিনি খেলে ‘অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন অ্যান্ড প্রোডাক্টস’(এজিইএস) তৈরি হয়। এর ফলে বয়স ৩০-এর পর আমাদের ত্বকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যে ক্ষয় হয়, তা আর পূরণ করে উঠতে পারে না। ফলে মানুষ দ্রুত বুড়িয়ে যেতে থাকে।