খাবার খেতে খেতে পানি পান করলে কী হয়?

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  খাবার খেতে খেতে অনেকেই পানি পান করেন। তবে এই অভ্যাস না একেবারেই ভালো না, এমনটিই মত অনেকের। তবে সত্যিই কি খাওয়া মধ্যে পানি পান করলে সমস্যা হয়? অনেকেই ধারণা করেন, খাবার খাওয়ার মধ্যে পানি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।

আবার কারও মতে, এই অ্যভাসের কারণে হজমের সমস্যা হতে পারে। এমনকি খাবারের মাঝে পানি পান করলে খাবারের পুষ্টিগুণ শরীর ঠিকমতো শুষে নিতে পারে না। এছাড়া ওজন বেড়ে যেতে পারে, এমন অনেক মত আছে নানান জনের। তবে আসল সত্য কী?

বিশেষজ্ঞদের মতে, আদতে এই ধারণাগুলোর সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়নি। ২০১৪ সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, জিইআরডি রোগে ভুক্তভোগীদেরই খাওয়ার সময় পানি পান করতে বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা।

এর কারণ পানি পান করলে পেটে মোট খাবারের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা উপরের দিকে চাপ তৈরি করে। তবে জিইআরডি অর্থাৎ গ্য়াস্ট্রোএসোফেগাল রিফ্লাক্স ডিজিজের সমস্যা তো আর সবার থাকে না। তাই এই নিয়ম মেনে চলার নেপথ্যেও আছে যুক্তির অভাব।

পেটের অ্যাসিড উপরের দিকে উঠে এলে জিইআরডির সমস্যা হয়। এই রোগে পেটের অ্যাসিড খাদ্যনালী বরাবর গলার কাছে উঠে আসে। যাকে আমরা বুক জ্বালা, গলা জ্বালার সমস্যা বলে থাকি। এই সমস্যা থাকলে খাবারের মাঝে পানি পান না করাই ভালো।

সূত্র: এবিপি নিউজ




গরমে গোসলের পানিতে নিমপাতা মেশাবেন যে কারণে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে উঠছে। গরমে সবার প্রাণই হাসফাঁস করছে যেন। কী করলে একটু স্বস্তি মিলবে তার নানা উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রায় সবাই। বারবার গোসল করা, ঘর ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করা, সহজে পরিপাক হয় এমন খাবার খাওয়া, ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরা, প্রচুর পানি পান করাসহ নানা উপায় তারা মেনে চলছেন। এই গরমে আপনার গোসলের পানিতে নিমপাতা মিশিয়ে নিলেও পাবেন উপকার। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-



তীব্র দাবদাহের ত্বকের সুরক্ষা দিবে পাচঁ প্রসাধনী

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  শুধু জল নয়, শরীরের পাশাপাশি ত্বকের খেয়াল রাখতে রাখতে হবে প্রয়োজনীয় কিছু প্রসাধনী। তা হলে খানিকটা হলেও তাপপ্রবাহের সঙ্গে ল়ড়াই করা সম্ভব হবে।

এপ্রিলের কলকাতায় তাপমাত্রার পারদ ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি। বাইরে বেরোলেই ঝলসে যাচ্ছে চোখমুখ। সেই সঙ্গে ঘামে ভিজে চুপচুপে হয়ে যাচ্ছে শরীর। এই তীব্র দহনেও বাড়ি থেকে বেরোতে হচ্ছে অনেককেই। নিয়মিত অফিস যেতে হচ্ছে। চিকিৎসকেরা ব্যাগে একটা জলের বোতল রাখার কথা বলছেন। তবে শুধু জল নয়, শরীরের পাশাপাশি ত্বকের খেয়াল রাখতে রাখতে হবে প্রয়োজনীয় কিছু প্রসাধনী। তা হলে খানিকটা হলেও তাপপ্রবাহের সঙ্গে ল়ড়াই করা সম্ভব হবে।

ফুট স্প্রে

রোদচশমা পরে, মাথা সহ মুখে ওড়না জড়িয়ে, ছাতার তলায় আশ্রয় নিয়ে ত্বকের খেয়াল তো রাখছেন। এ দিকে গরমে পায়েরও যে ক্ষতি হচ্ছে, সে কথা মাথায় থাকে না। ঘাম জমে পায়ের পাতায় সংক্রমণ হতে পারে। তেমনই পায়ের পাতার ত্বকও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া পা ঘেমে দুর্গন্ধ তো আছেই। সেক্ষেত্রে ফুট স্প্রে ব্যবহার করুন। উপকার পাবেন।

ফেস মিস্ট

গরমে ঘেমে মুখ তেলেতেলে হয়ে যায়। ফলে চটচট ভাব দূর করতে সব সময় মুখ ধুতে ইচ্ছা করে। আবার অত্যধিক রোদে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গিয়ে জ্বালা করে। ত্বকের আর্দ্রতা কমে যা। তাই ব্যাগে রেখে দিন ফেস মিস্ট। প্রয়োজনে মুখে স্প্রে করে নিন। ত্বক তরতাজা দেখাবে।

অ্যালো ভেরা জেল

গরমে ব্যাগে অ্যালো ভেরা জেল না রাখলেই নয়। ত্বক একটু শুষ্ক হয়ে গিয়েছে মনে হলেই মেখে নিন। তা ছাড়া রোদে পোড়া, র‌্যাশ, ব্রণ— গরমের যেকোনও সমস্যায় ত্বকের জ্বালা ভাব কমিয়ে ঠান্ডা রাখতে পারে অ্যালো ভেরা জেল। তাই ব্যাগে অবশ্যই এটা রাখুন।

সানস্ক্রিন

গরমের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রসাধনী। বাইরে বেরোনোর আগে ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাবেন তো বটেই। তবে সঙ্গেও রাখতে ভুলবেন না। রোদের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।

সুগন্ধি

বাইরে বেরোলেই ঘামে ভিজে যাচ্ছে শরীর। ঘাম জমে দুর্গন্ধও হচ্ছে। ঘাম এবং দুর্গন্ধের অস্বস্তি কাটাতে সুগন্ধি ব্যবহার করতে ভুলবেন না। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় তো মেখে আসবেন বটেই। তবে সঙ্গেও রাখতে হবে।




গরমে ৫ পানীয় রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  শুধু তেষ্টা মিটলেই তো চলবে না, গরমে বাছতে হবে এমন পানীয়, যা শরীরকেও ঠান্ডা রাখবে। তা ছাড়া, গরমে ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই শরীরের প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করার দিকেও নজর দিতে হবে।

জাঁকিয়ে বসেছে গরম। সূর্যের চোখরাঙানিতে হাঁসফাঁস অবস্থা। এই গরমে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা থেকে বাঁচতে মশলা জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে পানীয়ের উপরেই নির্ভর করতে হয় বেশির ভাগ সময়ে। কিন্তু শুধু তেষ্টা মিটলেই তো চলবে না, গরমে বাছতে হবে এমন পানীয়, যা শরীরকেও ঠান্ডা রাখবে। তা ছাড়া গরমে ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই শরীরের প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করার দিকেও নজর দিতে হবে।

আমলকির শরবত: আধ কাপ আমলকির রস একটি গ্লাসে ঢালুন। এক চামচ মধু ও স্বাদ মতো বিটনুন খুব ভাল করে মিশিয়ে নিন। এ বার পরিমাণ মতো জল মিশিয়ে দিন। খুব সহজেই তৈরি হয়ে যাবে আমলকির শরবত।

তরমুজ-অ্যালো ভেরার শরবত: কয়েক টুকরো তরমুজের রসের সঙ্গে কয়েকটি তুলসি পাতা, ২ চামচ অ্যালো ভেরার রস আর কয়েকটা বরফ দিয়ে ভাল করে মিক্সিতে ঘুরিয়ে নিন। এ বার মিশ্রণে সামান্য বিটনুন, গোলমরিচ আর লেবুর রস দিয়ে দিন। গ্লাসে তরমুজের কুচি আর পুদিনা পাতা দিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন তরমুজ-অ্যালো ভেরার শরবত।

গন্ধরাজ ঘোল: দই, জল, কিছু পুদিনা পাতা, একটু জিরেগুঁড়ো, একটু লাল লঙ্কাগুঁড়ো এবং বিটনুন দিয়ে মিক্সারে ঘুরিয়ে নিন। এ বার সেই মিশ্রণে গন্ধরাজ লেবুর রস, লেবুর নির্যাস আর কয়েকটি বরফ মিশিয়ে নিন। পরিবেশন করুন গন্ধরাজ ঘোল।

শিকঞ্জি: পুদিনা পাতা বেটে নিন। তাতে একে একে পাতিলেবুর রস, বিটনুন, চিনি আর ভাজা জিরে গুঁড়ো মিশিয়ে নিন| এ বার উপর থেকে সোডা কিংবা ঠান্ডা জল ঢেলে অল্প নেড়ে বরফ কুচি সহযোগে পরিবেশন করুন শিকঞ্জি।

তেঁতুলের শরবত: তেঁতুলের খোসা ও বীজ ছাড়িয়ে ক্বাথ বার করে রাখুন। গন্ধরাজ লেবুর রস বের করে নিন। এ বার মিক্সিতে একসঙ্গে তেঁতুলের ক্বাথ, লেবুর রস, বরফের কুচি, পুদিনা পাতা কুচি, নুন আর ভাজা জিরে গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। পরিবেশন করার পাত্রে তেঁতুলের শরবত ঢেলে উপর থেকে পুদিনা পাতা কুচিয়ে ও বরফ দিয়ে পরিবেশন করুন।




চেয়ারে বসে কোমরে ব্যথা? ৩ ব্যায়াম করতে পারেন




তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : আগামী তিন দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে দেশের বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে হিট অ্যালার্ট বা আবহাওয়ার সতর্কবার্তাও জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

এমন পরিস্থিতিতে ডায়রিয়ার মতো অসুখ এড়াতে এবং নিজেদেরকে সুস্থ রাখতে খাবার-দাবারে যেসব সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

গরমে যা খাওয়া উচিত নয়
কিছু খাবার আছে, যেগুলো খেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গরম অনুভূত হতে পারে। ল্যাবএইড হাসপাতালের পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম তেমনই কিছু খাবার সম্বন্ধে জানিয়েছেন।

মশলাজাতীয় খাবার
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মশলা জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করলেও গরমের সময় ‘ভুনা মাছ বা গোশত’ খাওয়া এড়াতে হবে। কারণ এ ধরণের খাবার হজম করতে বেশি সময় লাগে। শরীরে বিপাক প্রক্রিয়া যদি বেশি সময় ধরে চলে, তখন গরম লাগতে শুরু করে।

ডিম
শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর অন্যতম মাধ্যম ডিম। কিন্তু গরমের সময় ডিম খেলে অনেকের সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, কিংবা উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাহলে তারা চাইলে ডিম এড়িয়ে চলতে পারে। ডিমের পরিবর্তে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে তারা তাদের খাদ্যতালিকায় নিয়মিত মাছ কিংবা মুরগির গোশত রাখতে পারেন।

আইসক্রিম ও কোমল পানীয়
অনেকে মনে করেন, আইসক্রিম ও ঠাণ্ডা বোতলজাত কোমল পানীয় খেলে গরম কম লাগবে। কিন্তু এগুলো খেলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্যই আইসক্রিম কিংবা কোমল পানীয় খাওয়ার পরপর তৃষ্ণার্ত বোধ করে মানুষ।

ফাস্টফুড
ফাস্টফুড নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বহু আলোচনা-সমালোচনা চললেও মানুষ বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেন, পিৎজা ইত্যাদি হরহামেশা খাচ্ছে। কিন্তু গরমের সময়ে তো বটেও, সাধারণ সময়ে এগুলো খাওয়া উচিৎ নয়। কারণ এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ শর্করা ও চর্বি থাকায় হজম করতে সময় লাগে। ফলে, এগুলো রক্তচাপকে প্রভাবিত করে, প্রদাহ বাড়ায়।

ডুবো তেলে ভাজা খাবার
ডুবো তেলে ভাজা খাবার ও অতিরিক্ত তেলেভাজা খাবার মুখরোচক হলেও তা শরীরের জন্য মোটেও ভালো না। এ ধরনের খাবার গরমে এড়িয়ে চলতে হবে। ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবার শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি করে।

চা-কফি
শীতকালে শরীর গরম রাখার জন্য অনেকে চা-কফি পান করেন। তাহলে যে চা-কফি শীতকালে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে, তা নিশ্চয়ই গরমকালেও একই ভূমিকা পালন করবে। তাই, গরমকালে অতিরিক্ত চা-কফি পান করা উচিৎ নয়। কারণ চা বা কফির ক্যাফেইন দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

দুগ্ধজাতীয় খাবার
গরমকালে দুধ জাতীয় খাবার, যেমন মেয়োনেজ বা বিভিন্ন শেক খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় এ জাতীয় খাবারে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত হয়।

স্টেক
অনেকেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে স্টেক খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু স্টেক যদি সম্পূর্ণরূপে রান্না করা না হয়, তাহলে তার মাঝে ব্যাকটেরিয়া থেকে যেতে পারে। তাই, এক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

তেল-চর্বি জাতীয় খাবার
গরুর গোশত, হাঁসের গোশত, খাসির গোশত কার না পছন্দ? কিন্তু গরমের সময় এগুলো এড়িয়ে চলা উচিৎ। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে। একইসাথে সুস্থ থাকার জন্য পোলাও, বিরিয়ানিতেহারি ইত্যাদি তেলযুক্ত খাবারকেও না বলা উচিৎ।

অতিরিক্ত চিনি ও লবণ
চিনি ও লবণ, এ দু’টো জিনিস এমনিতেই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু গরমের সময় সেই ক্ষতির মাত্রাটা আরো বেশি হয়ে দাঁড়ায়। এ সময় অতিরিক্ত চিনি ও লবণ খেলে শরীরে অস্বস্তি হতে পারে। তাই, গরমে প্যাকেট জাতীয় খাবার বা প্রসেসড ফুড খাওয়া একদমই উচিৎ না।

গরমে যেগুলো খাওয়া যেতে পারে
গরমে ‘যেসব খাবার খাওয়া যাবে’, এমন খাবার সম্বন্ধেও জানিয়েছেন মিজ তাসনিম। তিনি বলেন,

কম মশলা জাতীয় খাবার
মশলা জাতীয় ভারী খাবার খেতে ভালো লাগলেও গরমের সময় কম মশলা জাতীয় খাবারের ওপর জোর দিতে হবে। কারণ এগুলো সহজে হজমযোগ্য।

শাক-সবজি
বাজারে এখন ঝিঙ্গা, চালকুমড়া, লাউ, চিচিঙ্গা, সজনেডাঁটা, শাকের ডাঁটা ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোকে যদি পাতলা ঝোল করে রান্না করে খাওয়া হয়, তাহলে এগুলো একদিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা জোগাবে, অপরদিকে শরীরে গরম অনুভব করাবে না।

পাতলা স্যুপ
স্যুপকে অনেকে মজা করে রোগীর খাবার বলে থাকেন। কিন্তু গরমের সময় একদম ‘ক্লিয়ার ভেজিটেবল’ স্যুপ (পাতলা করে সবজি স্যুপ) খেলে তা শরীরের জন্য উপকারী।

নিরাপদ পানি
গরমে নিরাপদ পানি পানের কোনো বিকল্প নেই। কারণ গরমের সময় ঘাম ও প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে সোডিয়াম, পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার বা ১২ থেকে ১৩ গ্লাস পানি পান করা উচিৎ।

ডাবের পানি
শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে এবং ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে ডাবের পানি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই প্রতিদিন ডাব কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। সেক্ষেত্রে তারা বিকল্প হিসেবে স্যালাইন পানি খেতে পারেন।

লেবু পানি
গরমের সময় লেবুর শরবত পান করলে তা শরীরের ক্লান্তি দূর করবে। সেক্ষেত্রে একদম সাধারণ পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। তবে যাদের হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নেই, তারা স্বাদের জন্য সামান্য লবণও ব্যবহার করতে পারেন।

ফলমূল
গরমে শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য ফলমূল খাওয়া উচিৎ। স্ট্রবেরি, শশা, জাম ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। তবে বাংলাদেশের বাজারে এই সময়ে তরমুজে ভরপুর থাকে। তাই, গরমের ফল হিসেবে তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। কারণ তরমুজে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পানি থাকে।

কাঁচা আমের শরবত
কাঁচা আমের মাঝে ভিটামিন-সি থাকে। কাঁচা আমের সাথে মরিচ যুক্ত না করে যদি এটিকে শরবত হিসেবে খাওয়া যায়, তাহলে গরম কম অনুভব হতে পারে।

টক দই
পাকস্থলীকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন টকদই খাওয়া যেতে পারে। টক দই খালিও খাওয়া যায়, আবার টকদইকে পানি দিয়ে গুলিয়েও খাওয়া যায়। অথবা, টক দইয়ের সাথে শশাও খাওয়া যেতে পারে।

ডিটক্স ওয়াটার
গরমের সময় ভারী খাওয়ার পর ডিটক্স খাবার খাওয়া যেতে পারে। ডিটক্স ওয়াটার হলো পানি, লেবুর রস, শশা, গাজর, পুদিনা ইত্যাদির রসের সমন্বয়ে তৈরি একধরনের পানীয়।

তবে এক্ষেত্রে মিজ তাসনিম এও বলেন, ‘একজনের জন্য যে খাবারটি খাওয়া ভালো হবে, তা সবার জন্য নাও হতে পারে। যেমন, অনেকের শশা খেলে সমস্যা হয়।’

খাবার সংরক্ষণে সতর্কতা
গরমের সময় চারপাশে এত বেশি তাপমাত্রা থাকে, যে খাবারগুলোতে সহজেই ব্যাকটেরিয়া হতে পারে। তবে খাবার একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মাঝে থাকলে ব্যাকটেরিয়া জন্মায় না। তাপমাত্রা লিমিট ক্রস করলেই ব্যাকটেরিয়া হয়।

তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে ও ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে গেলে খাবারে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় না।

ডায়রিয়া এড়াতে করণীয়
বাংলাদেশে প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এবছরও তা শুরু হয়ে গেছে।

কিন্তু গরমের সময় ডায়রিয়া এড়াতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ‘একসাথে ভরপেট না খেয়ে কিছুটা বিরতি দিয়ে’ খাবার খাওয়া উচিত।

এছাড়া, মাছি ডায়ারিয়ার সংক্রমণ ছড়াতে খুব বড় ভূমিকা পালন করে। সেজন্যে সবসময় সব খাবার ঢেকে রাখতে হবে। রাস্তার খাবার, যেমন- ফুচকা, চটপটি, লেবুর শরবত খেতেও বারণ।

এছাড়া, ডায়রিয়া প্রতিরোধে অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো হচ্ছে খাবার প্রস্তুত, স্পর্শ করা, পরিবেশন করা ও খাবার খাওয়ার আগে, টয়লেট থেকে বের হয়ে, বাইরে থেকে ফিরে এসে হাত ধুয়ে নেয়া। কারণ হাত দিয়েই মানুষ সবকিছু স্পর্শ করে এবং সবচেয়ে বেশি জীবাণু বহন করে।

ডায়রিয়ার জীবাণু ছড়ানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হচ্ছে পানি। তাই, যে পানিই আপনি পান করবেন, তা যেন বিশুদ্ধ পানি হয়।

সূত্র : বিবিসি




এই গরমে লেবুপানি খাবেন যে কারণে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  ডিটক্সিফিকেশন, হাইড্রেশন এবং ইমিউন-বুস্টিং বৈশিষ্ট্য সহ অগণিত স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য বিখ্যাত লেবুপানি দীর্ঘকাল ধরে সামগ্রিক সুস্থতায় অবদান রেখে আসছে। লেবুপানির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলোর মধ্যে একটি হলো শরীরকে হাইড্রেট এবং পরিষ্কার করার ক্ষমতা। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ লেবুর রস শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে, যার ফলে ত্বক পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর হয়। পানীয়টির হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্যের জন্য গায়ের রং আরও উজ্জ্বল, কোমল এবং পুনরুজ্জীবিত হয়।



বরিশালে ভোজন বিলাসীদের রসনার তৃপ্তি গৌরনদীর দই

বরিশাল অফিস :: বরিশালের গৌরনদীর দই ২০০ বছর ধরে নানা উৎসবে ভোজন বিলাসীদের রসনার তৃপ্তি মিটিয়ে আসছে। বৃটিশ আমল থেকে গৌরনদী থানার ডাওরি ঘোষের হাতে সুখ্যাতি পায় দইসহ বিভিন্ন মিষ্টি, যা বংশপরম্পরায় এখনো টিকে আছে। বিদেশেও গড়ে উঠেছে গৌরনদীর দইয়ের দোকান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা খান সামসুল হক জানান, ব্রিটিশ কর্তারা গৌরনদীর দই, মিষ্টি, ঘি ও মাখন খুব পছন্দ করতেন। জমিদাররা অতিথিদের এসব সুস্বাদু খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। অভিজাতদের মাধ্যমেই গৌরনদীর দই ও মিষ্টি দেশ-বিদেশে বিখ্যাত হয়ে ওঠে।

গৌরনদীর প্রসিদ্ধ দই-মিষ্টি প্রস্তুতকারক জীবন ঘোষের গৌরনদী মিষ্টান্ন ভান্ডার-এর কর্মচারী রানা ঘোষ ১৯৯০ সালে ডিভি লটারি জিতে আমেরিকায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি গৌরনদী মিষ্টান্ন ভান্ডার নামে দোকান চালু করেন। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে রানা গৌরনদীর দই, মিষ্টি, ঘি ও মাখনের সুখ্যাতি আমেরিকায় ছড়িয়ে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন খোন্দকার বলেন, দইয়ের স্বাদ ও ঘ্রাণ এমন ছিল; কয়েকবার সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করলেও তা থেকে যেত। সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে গৌরনদী থেকে এসব পণ্য কলকাতা, করাচি ও রেঙ্গুন পর্যন্ত সরবরাহ করা হতো। সেই থেকে এখনো বিয়ে, জন্মদিন কিংবা মেজবানের খাবারে অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে গৌরনদীর দই।

শচীন ঘোষের ছেলে গৌরনদী বন্দরের গৌরনিতাই মিষ্টান্ন ভান্ডার-এর কর্ণধার গৌরদাস ঘোষ বলেন, গৌরনদীর দইয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য সহজে পরিবহনযোগ্য এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ৭-৮ দিন ভালো থাকে। একইভাবে শুকনো মিষ্টি ১৫ দিন, মাখন দু-একদিন এবং ঘি এক বছরেও নষ্ট হয় না। দই-মিষ্টি তৈরির উপকরণ দুধ-চিনি; জ্বালানি ও কাঁচামালের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। কষ্ট হলেও বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যবসা অব্যাহত রেখেছি।

ননী ঘোষের ছেলে শ্যামল ঘোষ বলেন,পূর্বপুরুষের গড়া মানের সঙ্গে আপস করিনি। তবে দুর্মূল্যের বাজারে দিন দিন ভালো জিনিস তৈরি কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রস্তুত প্রণালী: প্রথমে সংগ্রহকৃত গরুর দুধ বড় কড়াইতে নিয়ে ভালোভাবে মাটির চুলাতে রেখে জ্বাল দেওয়া হয়। এরপর তা ঠান্ডা করা হয়। কড়াইয়ের ভেতর থেকে বাঁশের চাক দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাখন তুলে ফেলা হয়। এরপর কড়াইয়ে দুধের যে অংশ থাকে তার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে আবারো ভালোভাবে গরম করা হয়। এবার মিশ্রণের রং কিছুটা লালচে আকার ধারণ করলে তা নামিয়ে ফেলা হয়। এরপর ওই মিশ্রণ মাটিতে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন আকৃতির (১ কেজি থেকে ৬ কেজি) মাটির হাঁড়িতে ঢালা হয়। এভাবে দই পাতা হয়। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় চাণক।

এভাবে হাঁড়িতে পেতে রাখা দই এভাবে চারপাশে কচুরিপানা দিয়ে তার ওপর ২৪ থেকে ৩০ ঘণ্টা রাখার পর তা অকেটা জমাট ও কিছুটা শক্ত হয়ে আসে। এরপর শুরু হয় তা বিক্রি ও বাজারজাতকরণের কাজ। এই দই আবহাওয়া ও তাপমাত্রা ভেদে ৬ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।




শাড়ি কোমরে গুঁজে নিজ হাতে পান্তা-ভর্তার আয়োজন করলেন জয়া




বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য : হেপাটাইটিস সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে বাংলাদেশ

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : বাংলাদেশে হেপাটাইটিস সংক্রমণ ক্রমে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চঝুঁকিতে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। প্রথমে রয়েছে চীন এবং দ্বিতীয় ভারত। এমন পরিস্থিতিতে নতুন প্রজন্মের সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি সুচিকিৎসার সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডাব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে হেপাটাইটিস বি ও সি আক্রান্ত রোগী ৩০ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে ২৫ কোটি ৪০ লাখ হেপাটাইটিস বি ও পাঁচ কোটি হেপাটাইটিস সি ভাইরাস বহন করছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের অর্ধেকের বয়স ৩০ থেকে ৫৪ বছর। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ পুরুষ এবং ১২ শতাংশ শিশু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেপাটাইটিসের দুই-তৃতীয়াংশই বাংলাদেশ, চীন, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রাশিয়া ও ভিয়েতনামে। বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে প্রায় ৮৩ লাখ মানুষ আক্রান্ত। এর মধ্যে ৮৬.৭৪ শতাংশ হেপাটাইটিস বি ও ১৩.২৬ শতাংশ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত।গত সপ্তাহে পর্তুগালে বিশ্ব হেপাটাইটিস সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত ডাব্লিউএইচওর প্রতিবেদন অনুসারে ১৮৭টি দেশের নতুন তথ্যে দেখা গেছে, ভাইরাল হেপাটাইটিসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২০২২ সালে ১৩ লাখে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৯ সালে ছিল ১১ লাখ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন তিন হাজার ৫০০ জন মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে হেপাটাইটিস বি থেকে ৮৩ শতাংশ এবং হেপাটাইটিস সি থেকে ১৭ শতাংশ।

২০২২ সালের শেষ নাগাদ দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে এবং ৩ শতাংশ অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা পেয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ ডায়াগনসিস হয়েছে এবং ২০ শতাংশ ওষুধ পেয়েছে। ২০২২ সাল নাগাদ ৭০ লাখ মানুষ হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা পেয়েছে ও এক কোটি ২৫ লাখ হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা পেয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক যে লক্ষ্যমাত্রা এর অনেক কম।

হেপাটাইটিস বি এর উপসর্গ হলো জ্বর, দুর্বলতা, অবসাদ, বমি ভাব বা বমি হওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে অনেকেই এসব উপসর্গ নিয়ে কবিরাজি চিকিৎসা নিচ্ছেন। কবিরাজি চিকিৎসা বিশ্বাসের একটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হলো হেপাটাইটিস এ এবং ই যথাযথ বিশ্রাম নিলে এমনিতেই সেরে যায়। এ ভাইরাসে সংক্রমিতরা ঝাড়-ফুঁক, ডাব পড়া পানি পড়া নিয়ে মনে করেন যে কবিরাজি চিকিৎসায় কাজ হয়েছে। কিন্তু হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস রক্তে সংক্রমিত হলে লিভার সিরোসিস এবং শেষ পর্যন্ত লিভার ক্যান্সার হয়ে মৃত্যু হতে পারে। তাই বাংলাদেশের বিরাট জনগোষ্ঠীকে হেপাটাইটিস থেকে রক্ষা করতে সচেতন করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন বিশেষজ্ঞরা।