বার্ধক্যে বধিরতার ঝুঁকি এড়াতে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :একটু বয়স বাড়লেই অনেকেই কানে কম শুনতে শুরু করেন। তবে সবসময় বয়সজনিত কারণেই যে কানের এমন সমস্যা হতে পারে, তা কিন্তু নয়। কানে কম শোনার পেছনে কারণ হতে পারে অপুষ্টি। তাই প্রয়োজন সঠিক পুষ্টিকর খাবারের জোগান। চলুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো বধিরতার ঝুঁকি এড়াতে আপনাকে সাহায্য করবে:

পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
হিয়ারিং হেলথ ফাউন্ডেশনের মতে, শ্রবণশক্তি হ্রাস প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাশিয়াম। এটি দেহে বিভিন্ন তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। অন্তঃকর্ণে তরল পদার্থ থাকে। তাই অন্তঃকর্ণ ভাল রাখতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেতে পারেন কালো ডাল, আলু, কলার মতো পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
শ্রবণশক্তি ভাল রাখতে সহায়তা করে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও। তাই পাতে রাখুন সামুদ্রিক মাছ, আখরোট, চিয়া বীজ, তিসি বীজ, ডিম ও মাছের তেল।

জিঙ্ক
শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি হলে শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই খেতে হবে জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার। পাতে রাখুন রাজমা, কাঁচা মুগ, ছোলা, কাবলি ছোলা, দুধ, ডিম ও দই।

দুগ্ধজাত খাবার
দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, ডি, ই, কে-র মতো উপাদান। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ পনির, টোফু খেতে পারেন।




ভিটামিন ডির ঘাটতি হয় কেন, ৭ লক্ষণ

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ভিটামিন ডি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর ঘাটতি শরীরের নানা রকম ঝুঁকির কারণ হয়।

খাদ্যে ভিটামিন ডির অপ্রতুলতা এবং সূর্যরস্মির অভাবে অনেকের শরীরেই ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হয়। ভিটামিন ডি শরীরের বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর অভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে যেকোনো বয়সী মানুষ।

যেসব কারণে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হতে পারে, তাদের মধ্যে নিম্নলিখিত কারণগুলো উল্লেখযোগ্য। যেমন :

• শরীরের রং বেশি কালো হওয়া
• বয়স্ক হলে
• অতিরিক্ত ওজন
• পর্যাপ্ত মাছ বা দুধ না খাওয়া
• অতিরিক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা
• সবসময় ঘরে বসে থাকা ইত্যাদি

ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার লক্ষণ

১. ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। প্রায়ই সর্দি-কাশি বা ফ্লুতে ভোগার জন্য দায়ী হতে পারে ভিটামিন ডি-এর কম মাত্রা।

২. ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড়, জয়েন্ট, পিঠ ও স্নায়ুতে ব্যথা হতে পারে।

৩. ভিটামিন ডি-এর অভাবের সঙ্গে বিষণ্নতার সম্পর্ক রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই বিষণ্ন লাগলে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষা করে নিন।

৪. অত্যধিক চুল পড়া হতে পারে ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার লক্ষণ।

৫. অস্ত্রোপচার বা আঘাতের পরে ধীরে ধীরে ক্ষত নিরাময় হওয়া ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ হতে পারে।

৬. বাড়তি ওজনের কারণ হতে পারে অপর্যাপ্ত ভিটামিন ডি।

৭. ক্লান্তবোধ করা ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার লক্ষণ। শরীরের এনার্জি লেভেল কমতে শুরু করে এই ভিটামিনের অভাবে, ফলে অল্প কাজ করেও লাগতে পারে ক্লান্ত।

ভিটামিন-ডি পাওয়া যায় যেসব খাবারে

ভিটামিন-ডি একটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। এর কাজ হচ্ছে দেহের অন্ত্র (ইনটেসটাইন) থেকে ক্যালসিয়ামকে শোষণ করা; এটি আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। ভিটামিন-ডি নিয়ে আগে এত কথা না হলে বর্তমানে এ বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। পুষ্টিবিদরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন-ডি জাতীয় খাবার রাখার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন-ডি’র অভাবে শিশুদের দেহের হাড় ঠিকমতো বৃদ্ধি পায় না এবং হাড় বাঁকা হয়ে যায়। এর অভাবে বয়স্ক লোকদের হাড় নরম হয়ে যায়; আলঝেইমার রোগ হতে পারে। যাঁদের দেহে ভিটামিন-ডি’র অভাব রয়েছে, তাঁদের অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে।

মাছ

বিভিন্ন মাছে রয়েছে ভিটামিন-ডি। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত মাছ, যেমন : স্যালমন, সারদিনস, টুনা, ম্যাককেরেল ইত্যাদি। দৈনিক ভিটামিন-ডি’র চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ হতে পারে একটি টুনা মাছের স্যান্ডউইচ বা তিন আউন্স ওজনের একটি স্যালমান মাছের টুকরো থেকে।

মাশরুম

মাশরুমে রয়েছে ভিটামিন-ডি। পরটোবেললো মাশরুম সূর্যের আলোয় বড় হয়, এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-ডি। তাই চাহিদা পূরণে নিয়মিত মাশরুম খেতে পারেন।

কমলার জুস

বাজারে কিছু ভালো ব্র্যান্ড রয়েছে, যারা কমলার জুস তৈরিতে ভিটামিন-ডি যোগ করে। অন্যান্য জুসের মধ্যে এটি দেওয়া হলেও কমলার জুস ভিটামিনের উপাদান ধরে রাখতে পারে। তাই ভিটামিন-ডি’র জন্য ভালো ব্র্যান্ডের জুসও খাওয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার আগে প্যাকেটের গায়ে দেখে নিন, কী কী উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছে এটি।

ডিম

ডিমে হালকা পরিমাণ ভিটামিন-ডি রয়েছে। তবে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে, তাঁদের ডিমের কুসুম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জাতীয় খাবার

অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জাতীয় খাবারে ভিটামিন-ডি রয়েছে, যেমন : গরুর মাংসের লিভারে ভিটামিন-ডি আছে। তবে এটা রান্না করে খাওয়ার চেয়ে অনেকেই হয়তো দুধ থেকে ভিটামিন-ডি খেতে বেশি পছন্দ করবেন।

 




ঈদের পরে বদ হজম এড়াতে যা করবেন




হেপাটাইটিসে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ: ডব্লিউএইচও

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ক্রমশই আরও বেশি প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে ভাইরাসজনিত রোগ হেপাটাইটিস। এই রোগের কারণে বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। এমনটিই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এমন অবস্থায় দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সংক্রামক প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বুধবার (১০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস ভাইরাসে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি লোক মারা যাচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী এই সংখ্যা বাড়ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবার সতর্ক করেছে। হেপাটাইটিস রিপোর্ট প্রকাশ করে সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রতি বছর ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই রোগে। যা যক্ষ্মায় মৃত্যুর সমান।

ডব্লিউএইচওর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ১৮৭টি দেশের রিপোর্ট অনুসারে- ২০১৯ সালে যেখানে ১১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল হেপাটাইটিসে, সেখানে ২০২২ সালে মৃত্যু হয়েছে ১৩ লাখ মানুষের। এর মধ্যে ৮৩ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হেপাটাইটিস বি।

অন্যদিকে হেপাটাইটিস সি কেড়েছে ১৭ শতাংশ মানুষের প্রাণ। আর এই সব মৃত্যুর ক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশ মৃত্যুই হয়েছে বাংলাদেশ, চীন, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রাশিয়া ও ভিয়েতনামে।

মনে করা হচ্ছে, ২০২২ সালেই হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ। হেপাটাইটিস সি-এর ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৫ কোটি। আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকই ৩০-৫৪ বছর বয়সী মানুষ। ১২ শতাংশ নাবালক। নারী ও পুরুষদের মধ্যে দেখলে আক্রান্তের ৫৮ শতাংশই পুরুষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল হেপাটাইটিস রিপোর্ট অনুযায়ী, ভাইরাল হেপাটাইটিসে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। ২০১৯ সাল থেকে রিপোর্ট দেখলে বোঝা যাবে, ১৮৭টি দেশে হেপাটাইটিসে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের। এই সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

ডব্লিউএইচওর সমীক্ষা বলছে, বিশ্বজুড়ে ২৫ কোটির বেশি মানুষ হেপাটাইটিস নিয়ে বেঁচে আছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ‘এই রিপোর্ট বিপন্ন দৃশ্যকে তুলে ধরছে। যদিও হেপাটাইটিসের সংক্রমণ ও মৃত্যু রুখতে বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তবুও খুব অল্প মানুষেরই হেপাটাইটিস ধরা পড়ে ও চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। এই পরিস্থিতিতে ডব্লিউএইচও এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সব দেশের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

প্রসঙ্গত, লিভারের মারাত্মক অসুখই হলো হেপাটাইটিস। মূলত লিভারের প্রদাহজনিত অসুখ এটি। হেপাটাইটিসের কারণ ভাইরাল ইনফেকশন। এর নানা ধরন আছে। হেপাটাইটিস-এ এবং ই সংক্রমিত হয় দূষিত খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে। আর হেপাটাইটিস-বি, সি এবং ডি সংক্রমিত হয় রক্তের মাধ্যমে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর মোট ১০ কোটিরও বেশি মানুষ হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হন। কিশোর-কিশোরী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, এই সংক্রমণের উপসর্গ অনেক বেশি মারাত্মক হতে পারে।




স্বামীকে বাঁচাতে একাই লড়ছেন ৭০ বছরের বরগুনার পিয়ারা বেগম

বরিশাল অফিস:: এক বছর আগে মিনি স্ট্রোক করা পিয়ারা বেগমের সব থাকতেও যেন কিছুই নেই। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে শয্যাশায়ী হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন স্বামী আব্দুল মালেক। তার চিকিৎসার খরচ যোগাতে একাই লড়ছেন ৭০ বছর বয়সী পিয়ারা বেগম।

বরগুনা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ স্মৃতি সড়কের বরিয়ালপাড়া এলাকায় বসবাস করেন পিয়ারা বেগম। প্রায় ৩০ বছর আগে তার স্বামী আব্দুল মালেক পৌরসভার ঝাড়ুদার হিসেবে নিযুক্ত হন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসারের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে রাতে রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি দিনের বেলায় বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি দেওয়ার কাজও করতেন তিনি। পরবর্তীতে সংসারের হাল ধরতে স্বামীর সঙ্গে পিয়ারা বেগমও যুক্ত হন কাজে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনিও পৌরসভার রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার কাজ কাজ করছেন।

দীর্ঘ বছর কাজ করে মালেক এখন বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে ৬ মাস ধরে শয্যাশায়ী। আগের মতো আর চোখেও দেখেন না তিনি। পিয়ারা বেগমও একবার স্ট্রোক করে বেঁচে ফিরে চলছেন লাঠি ভর দিয়ে। ছেলে-মেয়েরা ব্যস্ত তাদের যে যার সংসার নিয়ে। এক টাকাও খরচ দেন না বাবা-মায়ের সংসারে। স্বামী ও নিজের চিকিৎসা খরচ এবং তিন বেলা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে বাধ্য হয়ে রাতে ঝাড়ু হাতে লাঠি ভর দিয়ে রাস্তায় নামছেন পিয়ারা। তবে যে টাকা বেতন পান তা দিয়ে একজনের ওষুধ কিনতেই হিমশিম খেতে হয় তাকে। অনেক সময় টাকা না থাকায় ১৫ দিনেও ওষুধ জোটে না তাদের।

সরেজমিনে বরগুনা পৌর শহরের বাজার রোড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় মানুষের ব্যস্তাতা কমার পরেই লাঠি ভর দিয়ে রাস্তা ঝাড়ু দিতে নেমে পড়েছেন পিয়ারা বেগম। ঠিকমতো চোখে না দেখায় চশমা পড়ে কাজ করছেন তিনি। এছাড়াও একটু কাজ করেই হাঁপিয়েও উঠছেন তিনি। শরীর না চাইলেও তিন বেলা খাবার জোটাতে, নিজের ও স্বামীর চিকিৎসার খরচ যোগাতে কাজ করে যাচ্ছেন পিয়ারা বেগম।

কাজের সুবাদে প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফেরা সাইদুল শিকদার নামে এক এনজিও কর্মী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই পিয়ারা খালাকে রাস্তা ঝাড়ু দিতে দেখি। তার যে অবস্থা তাতে এই বয়সে এখন তার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব না। তার স্বামী সেও অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি এ কাজ করেন। অন্য কোনো কাজ করতে না পারায় শুধু ঝাড়ু দিয়ে পৌরসভা থেকে যে টাকা পান তা দিয়ে তাদের চলে না।

পৌরসভার বাজার রোড এলাকার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী সুকুমার দত্ত বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে তার স্বামী ও তাকে রাস্তা ঝাড়ু দিতে দেখি। তার স্বামী অসুস্থ তিনিও অসুস্থ, কেউই এখন ঠিকমতো চোখেও দেখেন না।

পিয়ারা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে জাকির এখন বাবার পরিবর্তে যুক্ত হয়েছেন পৌরসভার রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার কাজে। এছাড়াও তিনি দিনের বেলায় শ্রমিকের কাজ করে মাসে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করেন। তার আয়ের এক টাকাও দিচ্ছেন না বৃদ্ধ মা-বাবাকে। ঈদের সময়ে মা-ছেলে দুজনে মিলে যে সব রাস্তা ঝাড়ু দিয়েছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা খুশি হয়ে যে টাকা বকশিস দিয়েছেন তাও ভাগ করে নিয়েছেন সমান ভাগে। অপরদিকে অন্য দুই ছেলের মধ্যে বাদল কাজ করেন শ্রমিকের, আর জাফর নামে আরেক ছেলে কাজ করেন বালুর জাহাজে। তারাও যে যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত।

বৃদ্ধ বাবা-মাকে কোনো খরচ না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ছেলেদের মধ্যে জাকির বলেন, পৌরসভায় কাজ করে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদেরই খরচ হয় না। ছেলে-মেয়ে তারপরে মা-বাবার জন্য কীভাবে কী করব তা বুঝি না।

অসহায় পিয়ারা বেগম অসহায়ত্বের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমার এই বয়সে রাস্তায় ঝাড়ু দিয়ে খেতে হয়। আমার স্বামীকে কীভাবে খাওয়াব? তার ওষুধ কিনতে পারি না। মানুষের কাছে টাক চাইয়া যা পাই তা দিয়ে ওষুধ কিনে স্বামীকে খাওয়াই আবার আমি নিজেও খাই। কিন্তু সবাই তো আর সব সময় টাকা দেয় না। কেউ ১৫ দিন বা ১ মাস পরে কিছু টাকা দেয় তা দিয়ে কিছুই হয় না। কোনো কোনো দিন খাবার জোটাতে না পেরে না খেয়ে থাকতে হয়। নিয়মিত ওষুধ না খাওয়ায় আমার স্বামী ও আমি দুজনেই এখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। ছেলে-মেয়েরা যে টাকা আয় করে তা দিয়ে নিজেরাই চলতে পারে না আমাদেরকে তারা টাকা দেবে কীভাবে। তিন বেলা খাবার জোটাতেই আমার কষ্ট হয়। ঈদের সময় যে একটু সেমাই রান্না করে স্বামীকে খাওয়াব তাও আমি পারি না।

বরগুনা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাইদুর রহমান সজীব বলেন, পিয়ারা বেগমকে পৌরসভার বেতন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করা হয়। পৌরসভার ভিজিএফসহ বরাদ্দকৃত চাল দিয়েও তাকে সহযোগিতা করা হয়। অসহায় পিয়ারা বেগমকে সহযোগিতা করতে পৌরসভার পাশাপাশি সমাজে যারা বিত্তশালী ও সামর্থ্যবান রয়েছেন তাদেরকেও তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম মিঞা বলেন, অসহায় অনেকেই আমাদের কাছে আসেন না। এ কারণে অনেকের তথ্য আমরা পাই না। পিয়ারা বেগমের সব তথ্য পেলে এবং তিনি যদি উপজেলা প্রশাসনের কোনো ধরনের সহযোগিতা ও বরাদ্দকৃত ভাতা না পেয়ে থাকেন তাহলে তাকে তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও যদি প্রয়োজন হয় আমাদের অপ্রত্যাশিত আয়ের মাধ্যমে পিয়ারা বেগমকে প্রতি মাসে কিছু পরিমাণ আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব।




গরম বাড়ছে, সুস্থ থাকার উপায়?




মানসিক চাপ? জেনে নিন দূর করার জাদুকরী ৫ উপায়




চুলের সঠিক বৃদ্ধিতে কোন কোন খনিজ উপকরণ জরুরি?

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  চুলের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের খাদ্যাভ্যাস। চুলের সঠিক মাত্রায় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপকরণ। জেনে নেওয়া যাক কোন খনিজ উপাদানের কি কাজ আর এটি কতটুকু জরুরি।



যে ৪ কারণে খুশকি হতে পারে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  খুশকি হলো মাথার ত্বকের একটি সাধারণ অবস্থা যা মৃত ত্বকের কোষ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ম্যালাসেজিয়া নামক একটি খামিরের মতো ছত্রাকের অত্যধিক বৃদ্ধির ফলে হয়, যার ফলে চুলকানি এবং জ্বালা হয়। শুষ্ক ত্বক, তৈলাক্ত মাথার ত্বক এবং ত্বকের কিছু সমস্যার কারণে খুশকি বেড়ে যেতে পারে। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি এবং চিকিৎসার মাধ্যমে খুশকি দূর করা সম্ভব। কিছু খাবার খাওয়া কিংবা কিছু খাবারের অভাবের কারণেও খুশকি হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-



ওজন কমাতে হলুদ যেভাবে খাবেন

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  হলুদ আমাদের অনেক রান্নায়ই ব্যবহৃত হয়। মসলাটি ওজন কমাতে সাহায্য করা সহ আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য পরিচিত। হলুদের সক্রিয় যৌগ কারকিউমিনের মধ্যে প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করা হয়। তবে শুধু হলুদ ওজন কমানোর জন্য জাদুকরী কোনো সমাধান নয়, এটি সঠিক উপায়ে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত যোগ করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-