বর্ষার পানি ও ঘাম দুয়ে মিলে বারোটা বাজায় ত্বকের: হতে পারে ফাংগাল ইনফেকশন

বৃষ্টির পানি আর ঘাম, মিলেমিশে ফাংগাল ইনফেকশনের সম্ভাবনা বাড়ায়। তাই এই আবহাওয়ায় খুব সতর্ক থাকগে হবে। ভারতীয় এসএসকেএম হাসপাতালের ডার্মাটোলজিস্ট ডা. অলিম্পিয়া রুদ্রের পরামর্শ অবলম্বনে লিখেছেন মোহাম্মদ খান।

বর্ষাকাল মানেই বৃষ্টি। আর বৃষ্টি মানেই শরীর-মনে একটা শান্তির সুর। গরম থেকে স্বস্তি, রোদের চোখরাঙানি থেকে মুক্তি। তবে, কথায় আছে না, ভালর আড়ালে কালো। তেমনই বেশ কিছু সমস্যাও আছে বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়। নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিশেষত ত্বকের জন্য বর্ষা মোটেই ভরসাযোগ্য নয়।

এই সময় বিভিন্ন ফাংগাস ত্বকের আনাচে-কানাচে বাসা বাঁধে। কারণ ভেজা বা আধভেজা জায়গাই এদের মোক্ষম বাসস্থান। তাই এই সময়টা ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।

চিন্তার উপসর্গ: সাধারণত ত্বকে যে কোনও স্থানেই লালচে গোল গোল চাকাচাকা দাগ দেখা দেয়। এগুলো চুলকায়, হালকা চামড়া উঠতে থাকে। অনেকের চুলকাতে থাকে। শরীরে যে কোনও স্থানে এই ফাংগাস ইনফেকশন হতে পারে। বিশেষত শরীরের ভাঁজে এমন হয়। অনেকের যৌনাঙ্গে, স্তনের নিচে, পশ্চাৎ অংশে এই সমস্যা বেশি হয়। প্রথমে চুলকানি দিয়ে সমস্যা শুরু হয়। তারপর চাকাচাকা দাগ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে যদি না চিকিৎসা করানো হয়।

ভুলটা হয় যেখানে: সাধারণত এই ধরনের সমস্যা অধিকাংশ রোগীই এড়িয়ে যান। আর খুব সমস্যা হলে ওষুধের দোকান থেকে ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ কিনে লাগাতে শুরু করেন। এইভাবে নিজের ডাক্তারি নিজে করতে গিয়ে এই সমস্যা আরও জটিল হয়। প্রথম চোটে এই ধরনের ওষুধে সমস্যা কমে, তারপর আবার কয়েকদিন পর শুরু হয়। কারণ, এই ধরনের ওষুধে স্টেরয়েড থাকে। এইভাবে ফেলে রাখতে রাখতে ফাংগাস ইনফেকশন আরও বেড়ে যায়।

ফাংগাল ইনফেকশন কি ছোঁয়াচে? এই ধরনের সংক্রমণ এমন নয় যে হাত দিলেই অন্যের হয়ে যাবে। কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। বিশেষ কিছু পরিচ্ছন্নতা মানতে হবে। শরীরের যে স্থানে ঘাম বেশি জমে সেই স্থানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। নিত্য তোয়ালে, গামছা কেচে নেওয়া প্রয়োজন। এগুলো কারও সঙ্গে শেয়ার না করাই ভাল। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ত্বকের যে কোনও স্থানে এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সুপরামর্শ নেওয়া। নিজে থেকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া এই অসুখে মারাত্মক। প্রয়োজনে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রত্যন্ত গ্রামে থাকলেও এইভাবে চিকিৎসা করে এই রোগ প্রতিহত করা যায়।

বারবার ঘুরে আসে: অসমাপ্ত ট্রিটমেন্ট এক্ষেত্রে দায়ী। রিক্যালসিট্রেন্ট ফাংগাল ইনফেকশন হল, যে ফাংগাল ইনফেকশন বারবার ফিরে আসে। কী হয়, রোগী কিছু দিন ওষুধ ব্যবহার করেন। তারপর যে-ই সমস্যা একটু ঠিক হয় তখন আর নিয়মিত ওষুধ খান না বা লাগান না। নিজের মতোই বন্ধ করে দেন। কিছুদিন পর আবার সেই সমস্যা ফিরে আসে। এই করে রোগ সারার বদলে রোগ আরও বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে মেন্টেনেন্স থেরাপি খুব প্রয়োজনীয়। অর্থাৎ চিকিৎসক যখন ওষুধ শেষ হলে আবার পরামর্শ নিতে আসতে বলেন তখনই যেতে হবে, প্রতি ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক ত্বকের যত্ন নিতে হবে। তাহলেই ধীরে ধীরে রোগ সারবে। না হলে ধীরে ধীরে সারা শরীরে এই ফাংগাল ইনফেকশন ছড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমানে এমন রোগীর সংখ্যাটাও বেশ বেড়েছে।




ঘরের স্যাতঁসেঁতে ভাব দূর করবেন যেভাবে

এই বৃষ্টি, এই রোদ। কখনো কখনো টানা বৃষ্টি এমন অবস্থায় ঘরের ভিতর সব সময়ই একটা স্যাঁতসেঁতে গন্ধ। বুঝতেই পারছেন না কীভাবে দূর হবে। গন্ধ দূর করতে রুম স্প্রে ব্যবহার করেও লাভ হচ্ছে না। চিন্তা নেই। নিচের টোটকাগুলো অনুসরণ করলেই খুব সহজে ঘরোয়া উপায়ে দূর করতে পারবেন বর্ষার গন্ধ। ইন্টারনেট অবলম্বনে লিখেছেন মোহাম্মদ খান।

১) স্যাতঁসেঁতে গন্ধ দূর করতে ঘরের একটি উঁচু জায়গায় বাটিতে কিছুটা ভিনিগার ঢেলে রেখে দিন। দেখবেন ভিনিগার ঘরের গন্ধ শুষে নেবে। ঘরে একটা ফ্রেশভাব আসবে।

২) বাজারে সুগন্ধি মোমবাতি কিনতে পাওয়া যায়। সেই মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন। দেখবেন ঘর থেকে গন্ধ দূর হবে।

৩) বৃষ্টির সময়ে জানলা বন্ধ রাখলেও থেমে গেলে জানলা খুলে দিন। ঘরে মুক্ত হাওয়া আসতে দিন। এতে বাইরের ঠান্ডা হাওয়া এসে ভ্যাপসা ভাবটা অনেকটা কেটে যাবে।

৪) জানলা-দরজার পর্দা থেকেও গন্ধ ছড়াতে পারে। বর্ষায় সপ্তাহে এক বার করে পর্দা কেচে নিন। প্রয়োজনে পর্দায় রুম স্প্রে ব্যবহার করুন। দেখবেন ঘরে সুন্দর গন্ধ খেলা করবে।




সফলতার জন্য ‘টার্গেট’ নাকি ‘হ্যাবিট’ কোনটা গুরুত্বপূর্ণ?

লতিফুর রহমান: ছোটবেলায় পড়েছিলাম নির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকা মানে হচ্ছে লক্ষ্যহীন নৌকার মতো। অর্থাৎ ‘এইম ইন লাইফ’ ছাড়া জীবনে সফলতা সম্ভব না। অথচ লেখক জেমস ক্লিয়ার এটা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তিনি বললেন,

১. একই লক্ষ্য থাকার পরও খেলাধুলায় কেউ বিজয়ী ও কেউ পরাজিত হয়। তাহলে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়াও আরও কিছু রয়েছে যা সফলতার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।

২. লক্ষ্য অর্জনের পর মানুষ হতাশায় ভুগে। কারণ লক্ষ্য অর্জনের পর কী করবে সেটা বুঝতে পারে না। অলিম্পিকে সোনা জিতে অনেকের নাকি এমন দশা হয়েছে।

৩. অনেক সময় লক্ষ্য অর্জনের পর সেটা ধরে রাখা সম্ভব হয় না। যেমন- পরীক্ষার আগে রাতদিন পড়াশোনা করি কিন্তু পরীক্ষা শেষে বই আর ছুয়েও দেখি না। বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য নামাজ পড়ি। বিপদ কেটে যেতেই আল্লাহকে ভুলে যাই।

৪. প্রতিবার আমার লক্ষ্য থাকে ঘর পরিস্কার রাখা। তাই কিছুদিন পরপর সময় নিয়ে পরিশ্রম করি। এর মানে হচ্ছে রেজাল্টকে সমস্যা মনে করছি। অথচ যেই অপরিস্কার অভ্যাসের কারণে ঘর নোংরা হয় সেটাকে সমস্যা মনে করা উচিত।

এজন্য লক্ষ্য অর্জনের চাইতে অভ্যাসকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন লেখক জেমস ক্লিয়ার।

এদিকে আরেক জনপ্রিয় লেখক সাইমন সিনেক বলেন, Goal বা লক্ষ্য থাকার যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে সেটার সমাধান হচ্ছে ‘ভিশন’।

গোল হচ্ছে এমন বিষয় যেটার নির্দিষ্ট মাইলস্টোন রয়েছে। কিন্তু ভিশনের কোনো মাইলস্টোন নেই। যেমন ডাক্তার হয়ে মানুষের উপকার করা। দোকানদারের ভিশন হচ্ছে ক্রেতার কাছে সর্বদা কোয়ালিটি পণ্য বিক্রি করা। অর্থাৎ মরণের আগ পর্যন্ত ভিশনের পেছনে মানুষ ছুটবে।

তাই আগামী একমাসে ৩ কেজি ওজন কমাবো এটা হচ্ছে গোল। কিন্তু ভিশন হচ্ছে সর্বদা সুস্থ থাকা। ফলে ওজন টার্গেটের মধ্যে এলেও সর্বদা স্বাস্থ্যকর ও পরিমিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হবে।

তাদের কথাবার্তা থেকে যেটা বুঝেছি সেটা হচ্ছে গোল, ভিশন ও অভ্যাস সবই গুরুত্বপূর্ণ। একেক বিষয় একেক রকম উপকারের জন্য।

শেষ করছি জেমস ক্লিয়ারের একটা কথা থেকে। তিনি বলছেন, মানুষ যদি প্রতিদিন শতকরা এক ভাগ উন্নতি করে তাহলে বছর শেষে তার ৩৭ গুণ উন্নতি হবে।

তাই আসুন, নিজের ভিশন ঠিক করি। সেটাকে ভেঙে ছোট ছোট টার্গেট সেট করি এবং দিনে দিনে কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তুলি।




ঘরে ঘরে জ্বর, কীভাবে সাবধান থাকবেন : চিকিৎসকদের পরামর্শ

চন্দ্রদীপ ডেস্ক : একে তো অদ্ভুত আবহাওয়া। সকালে বৃষ্টি তো দুপুরে ভ্যাপসা গরম। তার উপর আবার ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার দাপট। ফলে প্রায় সব ঘরে কেউ না কেউ জ্বরে ভুগছে৷ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল একজন আক্রান্ত হলে গোটা পরিবারের সকলেই একে-একে জ্বরের কবলে পড়ছেন।

কিন্তু প্রশ্ন হল এই জ্বরটা আসলে কোন জ্বর,  সাধারণ মানুষতো বটেই যেন-তেন চিকিৎসকদেরও বুঝতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  রক্ত পরীক্ষা ছাড়া উপায় থাকছে না। তাই তাঁদের পরামর্শ, প্যারাসিটামল ছাড়া জ্বরের জন্য অন্য কোনও ওষুধ খেয়ে বিপদ না-বাড়ানোই ভাল৷ প্যারাসিটামলে জ্বর না কমলে জলপট্টি, মাথা ধোয়া, গা মুছিয়ে দেওয়ার মতো চিরকালীন টোটকায় ভরসা রাখার পাশাপাশি অবিলম্বে ডাক্তার দেখানোর কথাও বলছেন তাঁরা।

তবু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাঁদের অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন। এগুলো পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

ফ্লু-র লক্ষণ: সর্দি-কাশি-জ্বর অথবা জ্বর-জ্বর ভাব, পেশিতে ব্যথা, সঙ্গে মাথাব্যথা বা মাথা ভারী থাকা
গলা খুশখুশ, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে কাঁচা জল, চোখ জ্বালা, স্বাদহীনতা, সাধারণ জ্বরের স্থায়িত্ব বাড়ছে, তাপমাত্রা নামার প্রক্রিয়াও মন্থর। ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বরও উঠে যাচ্ছে, প্যারাসিটামলেও ৯৯-এর নিচে নামছে না।

ডেঙ্গুর লক্ষণ: অন্তত ৩-৫ দিন টানা জ্বর থাকে, সহজে কমতে চায় না। মাথা ও চোখের চারপাশ-সহ শরীরে মারাত্মক ব্যথা (মূলত গাঁটে)। দুর্ববলতার পাশাপাশি ত্বকে র‍্যাশ, বমি, ডায়েরিয়া হতে পারে । সর্দি-কাশি-হাঁচি থাকে না। হেমারেজিক ডেঙ্গুতে মাড়ি ও নাক থেকে রক্তপাত। বমি, প্রস্রাব ও মলের সঙ্গেও রক্ত বেরোতে পারে। জ্বর আসার ৫ দিন পর পর্যন্ত এনএস-১ এলাইজা টেস্ট এবং ৫ দিন পেরিয়ে গেলে ডেঙ্গির আইজিএম পরীক্ষা করালে ধরা পড়ে ডেঙ্গু।

ম্যালেরিয়ার লক্ষণ: আচমকা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে
মাথা ও গাঁটে ব্যথা, বমি, দুর্বলতার মতো উপসর্গও দেখা যায়। বাড়াবাড়ি হলে খিঁচুনিও হয়। ম্যালেরিয়ার ডুয়াল কিট (ভাইভ্যাক্স ও ফ্যালসিপেরাম) অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় জ্বরের ২-৩ দিনের মাথাতেই সংক্রমণ চিহ্নিতকরণ সম্ভব।

চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ: ২-৫ দিন জ্বর, দুর্বলতা, গা-বমি ভাব, কনজাংটিভাইটিস, স্বাদহীনতা। হাড়ে ও গাঁটে মারাত্মক যন্ত্রণা। ৪-৫ দিন পরে চিকুনগুনিয়ার আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্টে ধরা পড়ে।

টাইফয়েডের চিহ্ন: ৫-১৪ দিন ধুম জ্বর, জ্বরটা ওঠে ১০৩-১০৬ ডিগ্রি পর্যন্ত, নামে ধীরে, এবং তাপমাত্রা পাল্লা দিয়ে বাড়ে। পেটে ও মাথায় ব্যথা, পেটের গোলমাল, গা গুলানো ও বমি। জ্বরের অন্তত পাঁচ দিন পরে ‘ওয়াইডাল টেস্ট’ করলে ধরা পড়ে।

কী করণীয়: প্রচুর পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম। প্যারাসিটামল ছাড়া জ্বর বা ব্যথার অন্য কোনও ওষুধ নয়।চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল (অ্যাসাইক্লোভির জাতীয়) ওষুধ নয়।

কী বর্জনীয়: অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধ। অসুস্থতা উপেক্ষা করে কায়িক পরিশ্রম
বিড়ি সিগারেট ও তামাক জাতীয় নেশা, মদ্যপান বন্ধ রাখতেই হবে।




চা না কফি, কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি ভালো?

চন্দ্রদীপ ডেস্ক : চা ও কফি প্রায় সবারই পছন্দের পানীয়। সময় অসময়ে কেউ চা পান করেন, আবার কেউ কফিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আর এই চা ও কফির মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। তবে প্রায়ই আড্ডা মহলে কিংবা মনের মাঝে প্রশ্ন জাগে—চা নাকি কফি, কোনটি বেশি স্বাস্থ্য উপকারী।

ব্যক্তিভেদে পছন্দ যেটাই হোক, কম-বেশি দুটোরই উপকারিতা রয়েছে। এ নিয়ে কলকাতার পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। আলোচনায় চা ও কফি পানের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছেন। এবার তাহলে চা ও কফির স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নেয়া যাক।

কফি : কফি হচ্ছে ক্যাফেইনের ভাণ্ডার। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। যা কফির অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট। এই উপাদান স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কফির অনেক গুণাগুণ রয়েছে।

নিয়মিত কফি পানে হার্টের অসুখ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, গলস্টোন এবং পার্কিনসনের মতো জটিল অসুখ প্রতিরোধ হয়। এছাড়া মুড বুস্ট করতে দারুণ ভূমিকা রাখে কফি। স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা এড়াতেও এই পানীয় অবদান রাখে। নিয়মিত কফি পানে শরীর ও মন দুটোই চাঙা থাকে।

চায়ের বিকল্প নেই : চা ও কফি, কোনোটি কারও থেকে কম নয়। চায়েও অনেক গুণাগুণ রয়েছে। এতেও ক্যাফেইন থাকে। এছাড়া চায়ে উপকারী কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। নিয়মিত চা পানে কার্ডিওভাস্কুলারসহ নানা সমস্যাকে হটিয়ে ফেলা যায়। আবার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ওজন কমানো এবং প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যানসার প্রতিরোধে অবদান রাখে।

কফির মতোই অনেকটা মুড ভালো করার ক্ষমতা রয়েছে চায়ে। এ কারণেই চা পানের পর কাজে সহজেই মন বসে।




খালি পেটে যে ৪ খাবার খেলে অ্যাসিডিটি হয়

চন্দ্রদীপ ডেস্ক : অ্যাসিডিটির জন্য আমাদের অনেকগুলো অভ্যাস দায়ী। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভুলভাল খাওয়ার অভ্যাস। সকালে খালি পেটে খাবার খেতে হবে বুঝেশুনে। কারণ রাতে আমরা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর পাকস্থলীতে হজমের প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। যে কারণে সকালে খালি পেটে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড থাকে বেশি। কিছু খাবার আছে যেগুলো এই অ্যাসিডকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কারণ সেসব খাবার বেশি অ্যাসিড তৈরি করে। এর ফলে খাবারটি পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি করে। ফলস্বরূপ পেটে অতিরিক্ত গ্যাস, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়। জেনে নিন খালি পেটে কোন ৪টি খাবার খেলে অ্যাসিডিটি হয়-

কোমল পানীয়: অনেকে পেটের সমস্যা হলে তা সারানোর জন্য কোমল পানীয় খান। তাদের ধারণা, ঠান্ডা এই পানীয় গ্যাস বা অ্যাসিডিটি কমিয়ে দিতে কাজ করে। কিন্তু সত্যিটা হলো, এ ধরনের পানীয় পান করলে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমার বদলে আরও বেড়ে যায়। যে কারণে বাড়ে পেটের সমস্যাও। ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে কোমল পানীয় কখনো পান করবেন না।

কফি: এটি খুবই পরিচিত চিত্র। অনেকেরই দিনের শুরুটা হয় এককাপ কফি দিয়ে। কিন্তু কফিতে থাকে প্রচুর ক্যাফেইন যা খালি পেটে খেলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। কফি পান করলে পেটে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রচুর তৈরি হতে শুরু করে। সকালবেলা খালি পেটে এমনিতেই হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বেশি থাকে। এমন অবস্থায় কফি খেলে গ্যাস এবং অ্যাসিডিটি বাড়তে পারে, সেইসঙ্গে বাড়ে গ্যাস্ট্রিকও।

কমলার জুস: কমলার জুস স্বাস্থ্যকর। অনেকে আছেন যারা এই জুস দিয়ে দিনের শুরু করেন। কিন্তু এই সাইট্রিক জাতীয় ফল সকালে খালি পেটে খেলে আপনাকে সারাদিন ভুগতে হতে পারে। এর কারণ হলো, কমলা পেটে গ্যাস ও অ্যাসিড অনেকটা বাড়িয়ে দেয়, এর ফলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। সকালে খালি পেটে কমলা খেলে পেটে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হয়। যে কারণে পেট ফুলে যায় এবং সারাদিন অস্বস্তি হয়।




এক মাসেই ত্বক সুন্দর করার উপায়

চন্দ্রদীপ ডেস্ক: সুন্দর ত্বক পাওয়ার জন্য নানাজনের থাকে নানা প্রচেষ্টা। কেউ এই পার্লার, সেই পার্লার ঘুরে হাজার হাজার টাকা খরচ করে স্কিন ট্রিটমেন্ট নেন। কেউ আবার বিভিন্ন দামী প্রোডাক্ট কিনে এনে বাড়িতেই যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আপনার ত্বক সুন্দর করার জন্য এসবের দরকার নেই। এর বদলে বাড়িতে বসে মাত্র তিনটি কাজ নিয়মিত করতে পারলেই ত্বক সুন্দর হবে। সেজন্য আপনাকে মেনে চলতে এই উপায়গুলো-

ক্লিনজিং: উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করে যাচ্ছেন? এর জন্য আপনাকে করতে হবে সঠিক ক্লিনজিং। দিনে দুইবার মুখ পরিষ্কার করার প্রয়োজন হবে। আপনি যদি মাত্র একমাস এই নিয়মটি মেনে চলতে পারেন তবে হাতেনাতে ফল পাবেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর একবার রেগুলার ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর আবার দিনশেষে বাড়ি ফিরেও এই নিয়মটি মেনে চলুন। ক্লিনজিং করার জন্য পরিমাণমতো ক্লিনজার মুখে লাগিয়ে নিন এবং ভালো করে মাসাজ করুন। এরপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

টোনার: কোনো কারণে আমাদের ত্বকের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে ত্বকে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। হয়তো ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় বা হঠাৎ তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। আমাদের ত্বকের এই পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে টোনার। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রূপচর্চার রুটিনে টোনারের নাম থাকে না অনেকের ক্ষেত্রেই। অনেকে আবার এর ব্যবহার জানেন না। ক্লিনজিং করার পরে একটি কটন প্যাডে টোনার নিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে নিন। কটন প্যাড ত্বকের উপরে ঘষবেন না। সকালে এবং রাতে দুইবার এভাবে টোনার ব্যবহার করলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন।

ময়েশ্চারাইজিং: ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজিং-এর গুরুত্ব অনেক। টোনার ব্যবহারের পরবর্তী ধাপ হলো ময়েশ্চারাইজিং। সকালে বাইরে বের হওয়ার আগে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্য়ই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। আপনার ত্বক শুষ্ক ধরনের হলে জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল হয় তাহলে ত্বকের যেকোনো যত্ন নেওয়ার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।




টাক পড়ে যাচ্ছে? ৫ ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রাখলে চুল গজাবে দ্রুত

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  টাক পড়ে যাওয়া আটকাতে অনেকেই নানা রকম চেষ্টা করে থাকেন। বাজারচলতি নানা প্রসাধনী ব্যবহার করেন। তবে ঘরোয়া কিছু টোটকায় ভরসা রাখলে উপকার পেতে পারেন।

মানসিক উদ্বেগ, দৈনন্দিন জীবনের অনিয়ম, পর্যাপ্ত খাওয়াদাওয়া না করা, সঠিক যত্নের অভাব— এমন বেশ কিছু কারণ চুল ঝরার নেপথ্যে থাকে। অনেকেই টাক পড়ে যাওয়া নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন। তবে টাক পড়ে যাওয়ার কারণ যা-ই হোক, তা নিয়ে বেশি ভাবলে চলবে না। বরং কোন টোটকায় চুল গজাবে, তা ভাবা জরুরি। টাক পড়ে যাওয়া আটকাতে অনেকেই নানা রকম চেষ্টা করে থাকেন। বাজারচলতি নানা প্রসাধনী ব্যবহার করেন। তবে ঘরোয়া কিছু টোটকায় ভরসা রাখলে উপকার পেতে পারেন।

তেল মালিশ

চুলহীন মাথায় তেল মালিশ করা নিয়ে অনেকেরই অস্বস্তি হতে পারে। তবে অস্বস্তি কাটিয়ে যদি নিয়মিত মাথায় তেল মালিশ করা যায়, তা হলে কিন্তু টাক মাথায় চুল গজাতে বেশি দিন লাগবে না।

অ‍্যালো ভেরা

ত্বকের যত্নে অ্যালো ভেরার উপকারিতা কমবেশি সকলেরই জানা। কিন্তু টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যা রুখতেও যে অ্যালো ভেরার ভূমিকা রয়েছে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। পাতা থেকে জেল বার করে মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। ঘণ্টাখানেক পরে ধুয়ে নিন। উপকার পাবেন।

ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসি়ড

সব চুলে উঠে গিয়ে একেবারে টাক পড়ে যাক, তা না চাইলে ব্যবহার করতে পারেন ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড। ক্যাপসুল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহার করলে চুল ধীরে ধীরে গজাতে শুরু করবে।

পেঁয়াজের রস

চুল ঝরা বন্ধ করতে পেঁয়াজের রস ফলদায়ক। অনেকেই ব্যবহার করে সুফল পেয়েছেন। তাই টাক পড়ে যাওয়ার আগের পরিস্থিতিতে ভরসা রাখতে পারেন পেঁয়াজের রসের উপর।

পাতিলেবু

নারকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার আগে এই মিশ্রণটি মাথায় মেখে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করুন। অল্প কয়েক বার ব্যবহার করে ছেড়ে দিলে চলবে না। ধৈর্য ধরে ব্যবহার করুন। উপকার পাবেন।




দুই মিনিটে ঘুমিয়ে পড়ার উপায়

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক:  আপনি কি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিছানায় শুয়ে থাকেন এবং লাইট অফ করে আপনার ফোন দূরে রেখে দিয়েও কোনো লাভ হয় না? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে আপনি সম্ভবত ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। মাঝে মাঝে এমনটা হলে তা উদ্বেগের কারণ নাও হতে পারে, তবে যদি প্রতিদিনই এমনটা ঘটে তাহলে তা কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হতে পারে। এমন অবস্থায় আপনি জরুরি মনে করলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এটি যদি অস্থায়ী সমস্যা হয় তাহলে কিছু কৌশল ব্যবহার করে আপনি অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো ঘুম পেতে পারেন। জেনে নিন এমন একটি কৌশল যার মাধ্যমে আপনি মাত্র ২ মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন-

মার্কিন সামরিক পদ্ধতিতে ঘুমের কৌশল

ক্লান্ত সৈন্যদের যেকোনো সময় ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করার জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনী এটি তৈরি করেছে। এই কৌশল ১৯৮১ সালের রিলাক্স অ্যান্ড উইন: চ্যাম্পিয়নশিপ পারফরম্যান্স নামে একটি বই থেকে এসেছে। ফিটনেস কোচ জাস্টিন অগাস্টিন টিকটকে তার ১.৯ মিলিয়ন ফলোয়ারের সঙ্গে এই ঘুমের কৌশলটি কীভাবে করবেন তা শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, ‌‘আমার গবেষণা অনুসারে, এটি মূলত ফাইটার পাইলটদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল যাদের কাজের ক্ষেত্রে শতভাগ মনোযোগ প্রয়োজন। ঘুমের অভাব হলে এই মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে, এটি আমাদের সবারই জানা।’

জাস্টিন দাবি করেছেন যে ৯৬ শতাংশ লোক এই কৌশল আয়ত্ত করে তাদের চোখ বন্ধ করার দুই মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে সক্ষম হয়। তিনি কৌশলটি আয়ত্ত করতে ছয় সপ্তাহ ধরে প্রতি রাতে অনুশীলন করার পরামর্শ দেন।

১. আপনার শরীরকে শান্ত করুন এবং হাত-পা ছড়িয়ে শিথিল করুন। মাথা থেকে পা পর্যন্ত আপনার শরীরের প্রতিটি অংশের কার্যক্রম বন্ধ করুন। কপালের পেশী শিথিল করে শুরু করুন। আপনার চোখ, গাল, চোয়াল শিথিল করুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর ফোকাস করুন।

২. এরপর, আপনার ঘাড় এবং কাঁধ শিথিল করুন। জাস্টিন বলেন, ‌‘নিশ্চিত করুন যে আপনার কাঁধে টেনশন নেই। এগুলিকে যতটা সম্ভব ঝেড়ে ফেলুন এবং আপনার হাত, আঙ্গুল ও বাহুগুলো আলগা রাখুন। কল্পনা করুন এই উষ্ণ সংবেদন আপনার মাথা থেকে আপনার আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত যাচ্ছে।’

৩. গভীরভাবে শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন, আপনার বুক, পেট, উরু, হাঁটু এবং পায়ের পাতা শিথিল করুন। আবার, কল্পনা করুন যে এই উষ্ণ সংবেদনটি আপনার হৃদয় থেকে আপনার পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত নেমে যাচ্ছে।

৪. যেকোনো চাপ থেকে আপনার মনকে মুক্ত করুন। জাস্টিন দু’টি পরিস্থিতিতে চিন্তা করার পরামর্শ দেন:

আপনি একটি শান্ত হ্রদে একটি ক্যানোতে শুয়ে আছেন যেখানে আপনার উপরে একটি পরিষ্কার নীল আকাশ ছাড়া কিছুই নেই। অথবা
আপনি একটি পিচ কালো ঘরে একটি কালো মখমল হ্যামক পড়ে শুয়ে আছেন।

জাস্টিন বলেন, ‘আপনি যখন অন্য কিছু ভাবতে শুরু করবেন বা বিভ্রান্ত হতে শুরু করেন, তখন এই শব্দগুলো দশ সেকেন্ডের জন্য পুনরাবৃত্তি করুন – ‘মনে করবো না। ভাববো না।’




ডেঙ্গু জ্বর কমে গেলেও মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে!

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: ডেঙ্গি থেকে সেরে উঠলেই যে পুরোপুরি সুস্থ, বিষয়টি তেমন নয়। জ্বর কমে যাওয়ার পরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। থাকে মৃত্যুর ঝুঁকিও। কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন?

বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি বাড়ছে শহরে। শুধু কলকাতা নয়, শহরতলিতেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী। গত বছরও ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা চিন্তায় ফেলেছিল রাজ্যকে। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এ বছর যেন পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গিকে গুলিয়ে ফেলে অবহেলা করেই অনেক সময়ে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হচ্ছে। শিশু থেকে বয়স্ক— বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গিতে। গত কয়েক দিনে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাটিও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি, সুস্থতার হারও নেহাত কম নয়।

সাধারণত জ্বর, মাথাযন্ত্রণা, হাত-পায়ের সঙ্গে সারা শরীরে ব্যথা, বমি বমি ভাব, মুখে অরুচি, মলের সঙ্গে রক্তপাত— ডেঙ্গি রোগের অন্যতম লক্ষণ। এই লক্ষণগুলি প্রকাশ পেলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অবশ্যই জরুরি। ডেঙ্গি সেরে গেলেই যে আপনি সুস্থ, এমনটি ভাবার কোনও কারণ নেই। সেরে উঠে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর ফের অসু্স্থ হয়ে পড়েছেন, এমন উদাহরণও কম নেই। তাই সেরে ওঠার পর রোগীর যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই মত চিকিৎসক সুর্বণ গোস্বামীরও। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গির জ্বর বেশি দিন থাকে না। ফলে জ্বর চলে যাওয়ার পরে অনেকেরই মনে হয় সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু আসল বিপদের শুরু হচ্ছে সেই সময় থেকেই। জ্বর কমে যাওয়ার ২-৭ দিন পর ডেঙ্গির সঙ্কটজনক অবস্থা তৈরি হয়। তাই এই সময়টিতে অত্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে।’’ অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি, পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা— জ্বর কমে যাওয়ার পরেও যদি এই লক্ষণগুলি দেখা দিতে শুরু করে তা হলে অবশ্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি। এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকলে মৃত্যু এড়ানো যাবে। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসক।

ডেঙ্গি জ্বর কমে যাওয়ার পরে আর কোন বিষয়গুলি মেনে চললে সঙ্কট এড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ে?

১) জ্বর কমে যাওয়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে বাড়তি নজরে রাখতে হবে। রোগীর নিজেরও খানিক সতর্ক থাকা জরুরি। কোনও সমস্যা হলে তা চেপে না রেখে চিকিৎসককে জানাতে হবে।

২) ডেঙ্গি হলে শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হয়। তাই জলের ঘাটতি কতটা কমেছে সেটা মাপার জন্য দিনে ‘পিসিভি’ পরীক্ষা করা জরুরি। এ ছাড়াও প্লেটলেট পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। জ্বর চলে যাওয়ার ২-৩ দিন এই পরীক্ষাগুলি প্রতি দিন করাতে হবে।

৩) ডেঙ্গি শরীর ভিতর থেকে দুর্বল করে দেয়। তাই এই সময় পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন। সঠিক ডায়েট মেনে চললে দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তরল খাবার বেশি করে খাওয়া জরুরি। ঘন ঘন জল খেতে হবে। শরীরে জলের পরিমাণ কমতে দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন সি, আয়রন, ভিটামিন ই-তে সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।