মাতৃত্বে প্রথমবার: শিশুর যত্নে করণীয়

প্রতিটি নারীর জন্য মাতৃত্ব একটি আবেগময় অধ্যায়। বিশেষত, প্রথমবার মা হলে সেই আনন্দ ও দায়িত্বের অনুভূতি দ্বিগুণ হয়ে যায়। তবে নবজাতকের সঠিক যত্নের অভাবে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নতুন মায়েদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।

শিশুর যত্নে যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে:

প্রথমত, নবজাতকের চোখে কাজল লাগানো এড়িয়ে চলুন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাজল শিশুর চোখের টিয়ার নালি আটকে দিতে পারে এবং ধুলো-ময়লা জমিয়ে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন।

ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ান। বুকের দুধ শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করে। তবে যদি দুধ উৎপাদনে সমস্যা হয় বা শিশুর হজমে অসুবিধা হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শিশুর ত্বক সংবেদনশীল হওয়ায় দীর্ঘ সময় ডায়াপার ব্যবহার না করাই ভালো। এর বদলে তুলো বা নরম কাপড়ের ন্যাপি ব্যবহার করুন। ত্বক ফুসকুড়ি থেকে বাঁচাতে কয়েক ঘণ্টা পরপর ডায়াপার পরিবর্তন করুন।

নবজাতকের জন্য ব্যবহৃত শ্যাম্পু, লোশন, বডি অয়েল ইত্যাদি পণ্য খুব সাবধানে নির্বাচন করুন। কেনার আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ এবং উপাদান পরীক্ষা করুন। প্রাকৃতিক উপাদানযুক্ত পণ্য ব্যবহার করাই ভালো।

শিশুর যত্নে আরও কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতককে স্পর্শ করার আগে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। ঠান্ডা থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা নিন। শিশুর কান্নার কারণ শনাক্ত করার চেষ্টা করুন এবং খাওয়ানোর পরে পিঠে হালকাভাবে চাপ দিন, যাতে শিশুর আরাম হয়।

নতুন মায়েদের জন্য এই ছোট ছোট বিষয়গুলির যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। সঠিক যত্নই শিশুর সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



লবঙ্গ: মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ির সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান

মুখের দুর্গন্ধ বা মাড়ির সমস্যার কারণে অনেকেই অস্বস্তিতে পড়েন। এর সহজ সমাধান হতে পারে পরিচিত মসলা লবঙ্গ। এটি শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, পাশাপাশি প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে কাজ করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে

লবঙ্গের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদান মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকর। কয়েকটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে মুখের দুর্গন্ধ কমে যায় এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ হয়।

মাড়ির সমস্যায় উপকারী

দাঁতের মাড়ির যন্ত্রণা বা ক্ষয়রোধে লবঙ্গ অত্যন্ত কার্যকর। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বা যন্ত্রণা হলে কয়েকটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে উপশম হয়। এছাড়া লবঙ্গের তেলও দাঁতের যন্ত্রণায় ব্যবহার করা যেতে পারে।

হজম শক্তি উন্নত করে

হজমের সমস্যা থেকেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। লবঙ্গ হজমে সহায়ক এনজাইম ক্ষরণ করে এবং গ্যাস, পেট ফাঁপা দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পুষ্টিবিদের পরামর্শ:

মুখের দুর্গন্ধ বা মাড়ির সমস্যায় দ্রুত সমাধানের জন্য লবঙ্গ একটি সহজলভ্য উপায়।

লবঙ্গ তেল প্রয়োগের সময় সরাসরি মাড়িতে লাগানোর আগে পেশাদার পরামর্শ নেওয়া ভালো।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



ভাত খাওয়ার নিয়ম: ওজন নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায়

বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ভাত খেলে ওজন বেড়ে যায়। ফলে যারা ওজন কমাতে চান, তারা ডায়েট থেকে ভাত বাদ দেন। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পরিমাণমতো ভাত খেলে ওজন বাড়ার ভয় নেই। ভাতে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, প্রোটিন এবং সামান্য ফ্যাট। এটি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে এবং ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ভাত হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে অতিরিক্ত ভাত খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন্য ভাত খাওয়ার নিয়ম জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সঠিক নিয়মে ভাত খাওয়ার পদ্ধতি

১. কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য বজায় রাখুন:
ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েটে ভাত বা রুটির মতো কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার রাখা উচিত। সকাল এবং দুপুরে ভাত খাওয়া যেতে পারে। তবে ওজন কমাতে চাইলে রাতে ভাত এড়িয়ে চলুন।

২. বয়সভিত্তিক পরিমাণ ঠিক করুন:

১৭-৩০ বছর বয়সে: আড়াই থেকে তিন কাপ ভাত পুষ্টির জন্য যথেষ্ট।

৩৬ বছরের বেশি হলে: সারাদিনে আড়াই কাপের বেশি ভাত না খাওয়াই ভালো।

৪২ বছরের পর: দিনে দুই কাপ ভাত খাওয়াই যথেষ্ট।

৩. প্রোটিনের সঙ্গে মিল রাখুন:
ভাতের সঙ্গে মাছ, মাংস, ডিম, সয়া, ডাল বা পনিরের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। এতে পুষ্টি নিশ্চিত হবে।

4. ফাইবারযুক্ত শাক-সবজি খান:
ভাতের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ শাক-সবজি খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।

পুষ্টিবিদের পরামর্শ

পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, “ভাত খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট পরে পানি পান করুন। এতে হজমশক্তি উন্নত হয়। খাবারের মাঝে প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত পানি পান করবেন না।”

ভাত সঠিক নিয়মে এবং পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



খারাপ বসের অধীনে কাজ: কর্মজীবনে বিপদ

চাকরিজীবনে একজন খারাপ বসের অধীনে কাজ করার অভিজ্ঞতা অনেকেরই রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা কেবল কর্মক্ষেত্রেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একজন খারাপ বস সাধারণত কর্মীদের কাজের প্রশংসা করেন না এবং অনেক সময় তাদের সাফল্যের কৃতিত্ব নিজের বলে দাবি করেন। নেতৃত্ব উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও কর্মক্ষেত্রে এখনও খারাপ বসের অধীনে কাজ করতে হয় বহু কর্মীকে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ আমেরিকান কর্মী খারাপ বসের অধীনে কাজ করেন। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জরিপে বলা হয়, ৭৫ শতাংশ কর্মী শুধুমাত্র বসের কারণে কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ অনুভব করেন। গ্যালাপের আরেক গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিজন কর্মীর মধ্যে অন্তত একজন বসের কারণেই চাকরি ছেড়ে দেন।

জাতীয় কর্মক্ষেত্র বিশেষজ্ঞ লিন টেলর বলেন, “একজন খারাপ বস শুধু কর্মজীবনে সমস্যার সৃষ্টি করেন না; এটি ব্যক্তিগত জীবনেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।” গবেষণায় আরও বলা হয়, খারাপ বসের অধীনে কাজ করা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

স্বাস্থ্যঝুঁকি

সুইডেনের এক জরিপে দেখা যায়, খারাপ বসের অধীনে কাজ করা কর্মীরা স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিওভাসকুলার সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ৬০ শতাংশ ঝুঁকিতে থাকেন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এর গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্ষতিকর কাজের পরিবেশে দীর্ঘ সময় কাজ করলে উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

এছাড়া, খারাপ বসের সঙ্গে কাজ করার মানসিক প্রভাবও গুরুতর হতে পারে। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরেও সেই মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে একজন কর্মীর প্রায় ২২ মাস সময় লেগে যেতে পারে।

করণীয়

খারাপ বসের সঙ্গে কাজের প্রভাব এড়াতে নিজেকে মনে করিয়ে দিন, এটি একটি সাময়িক অবস্থা। কাজের বাইরে আনন্দের উৎস খুঁজুন এবং যোগব্যায়াম কিংবা ধ্যানের মতো শিথিলকরণ প্রক্রিয়া চর্চা করুন। পর্যাপ্ত ঘুম ও ব্যায়ামের মাধ্যমে শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন।

একইসঙ্গে কর্মক্ষেত্রে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন। একজন ভালো পরামর্শদাতা বা প্রশিক্ষক খুঁজে নিন, যিনি আপনাকে সমস্যা সমাধানের পথ দেখাতে পারেন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না? জেনে নিন কী করবেন

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: ধার দেওয়া টাকা ফেরত পাওয়া না গেলে তা উদ্ধার করা কখনো কখনো বেশ কঠিন হতে পারে। যদি ঋণগ্রহিতা সত্যিই অসমর্থ হন তবে সেক্ষেত্রে সময় দেওয়া বা ক্ষমা করে দেওয়া উত্তম। তবে যদি এমন হয় যে সামর্থ্য থাকার পরেও ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা ফেরত দিচ্ছে না, তখন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা সহকর্মীই হোক না কেন, এই জাতীয় বিষয়ে সম্পর্ক সুন্দর রেখে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ, ধার দেওয়ার পর যেন সম্পর্ক নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এক্ষেত্রে কী করবেন-

স্পষ্টভাবে কথা বলুন

আপনার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ঋণগ্রহিতার সঙ্গে কথা বলুন। শান্তভাবে তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বা ফোনে কথা বলুন। চাইলে মেসেজেও লিখতে পারেন। অনেক সময় ভুলে যাওয়ার কারণে টাকা বা ঋণের বস্তু ফেরত দেওয়া হয় না, তাই মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যে পরিমাণ অর্থ বা যে বস্তুটি ধার দেওয়া হয়েছিল এবং কখন তা ধার দেওয়া হয়েছিল তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন এবং কখন তা ফেরত পাবেন সে সম্পর্কে আপনার প্রত্যাশা জানান। এমনভাবে বলুন, যেন ঝগড়া না বাঁধে বা ভুল বোঝাবুঝি না হয়।

সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিন

যদি ঋণগ্রহীতা আপনাকে পরিশোধের তারিখ না করে দেন, তাহলে আপনি তাকে টাকা বা জিনিস ফেরত দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ দিতে পারেন। ভদ্রভাবে ঋণগ্রহীতাকে জানান যে কেন আপনার এটি নির্দিষ্ট তারিখে ফেরত প্রয়োজন। তার লক্ষ্য ঠিক থাকলে সে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ধারের টাকা বা বস্ত ফেরত দিতে পারবে।

ভাগ ভাগ করে নিন

যদি ঋণগ্রহিতা একবারে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে না পারে তাহলে টাকাটা ভাগ ভাগ করে নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি দশ হাজার টাকা পান তবে তা একবারে না দিতে পারলে প্রতি মাসে দুই হাজার করে পাঁচ মাসে সমস্ত টাকাটা ফেরত দিতে পারেন। আপনি কিছুটা নমনীয় হলে হয়তো তা ঋণগ্রহিতার জন্য উপকারী হবে। তাই এভাবে বিবেচনা করতে পারেন।

লিখিতভাবে রাখুন

বড় অঙ্কের অর্থ বা মূল্যবান সম্পদ ধারও দেয়ার ক্ষেত্রে লিখিতভাবে ঋণপত্র তৈরি করুন। পরিশোধের শর্তাবলী এবং সে সময়সীমা মিস করলে যেকোনো জরিমানা প্রাপ্ত হবে কি না সে বিষয়ে বিবরণ দিয়ে একটি প্রাথমিক চুক্তি করুন। চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য উভয়ের স্বাক্ষর করা উচিত। লিখিত কাগজ থাকা একটি ভালো অনুস্মারক এবং ঋণগ্রহীতাকে আরও দায়িত্বশীল হতে উৎসাহিত করবে। পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হলে এটি আইনি সুরক্ষা প্রদান করে। পদ্ধতির এই ধাপটি আনুষ্ঠানিক, যার অর্থ হলো বাধ্যবাধকতা গুরুতর এবং পরিশোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।




কোমর ব্যথা: কারণ, প্রতিকার ও সতর্কতা

দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। এটি হতে পারে স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি। সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে চললে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ব্যথা দ্রুত উপশম হয়। তবে অবহেলা করলে সমস্যা জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

কোমর ব্যথার কারণ

কোমরের ব্যথা সাধারণত বয়স, বংশগত সমস্যা, বা আঘাতের কারণে হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কারণ হলো লাম্বার স্পনডোলাইসিস। এটি বয়সের কারণে কোমরের হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ফল। এছাড়া পিএলআইডি (পোস্টারিওর লম্বার ইন্টারভেন্ট্রাল ডিস্ক) নামের সমস্যাটি ২৫-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ডিস্ক সরে গিয়ে স্নায়ুর ওপর চাপ ফেললে এটি কোমর থেকে পায়ে ব্যথা ছড়িয়ে দিতে পারে।

সতর্ক সংকেত

কোমর ব্যথার সঙ্গে যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে তা অবহেলা করা উচিত নয়:

কোমর ব্যথার পাশাপাশি জ্বর, ওজন হ্রাস বা অতিরিক্ত ঘাম।

ব্যথা পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়া।

প্রস্রাব বা পায়খানার সমস্যা।

মলদ্বারের আশপাশে বোধশক্তি কমে যাওয়া।

পায়ে অবশ ভাব বা মাংসপেশির দুর্বলতা।

করণীয়

প্রাথমিক পর্যায়ে কোমর ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা করবেন:

শক্ত ও সমান বিছানায় ঘুমান।

ফোমের বিছানা ও নরম সোফায় দীর্ঘক্ষণ বসা এড়িয়ে চলুন।

ভারী জিনিস তোলার সময় কোমরে চাপ না দিয়ে সঠিক ভঙ্গিতে তুলুন।

নিয়মিত হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করুন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

ঘুম থেকে ওঠার সময় সোজা হয়ে ওঠার পরিবর্তে কাত হয়ে উঠুন।

চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপি

হালকা ব্যথা হলে প্রাথমিক চিকিৎসায় গরম ভাপ বা মলম ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে মালিশ করবেন না। ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অর্থোপেডিকস বা ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ব্যথার জন্য ফিজিওথেরাপি কার্যকর হলেও সঠিক নির্দেশনা মেনে নেওয়া জরুরি।

ওষুধের সঠিক ব্যবহার

ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন কোনো ওষুধ নেই যা মাংসপেশি শক্তিশালী করতে পারে। সুতরাং, ওষুধের পরিবর্তে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করাই শ্রেয়।

লেখক- অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সালাম, অর্থো সার্জন, নিটোর, ঢাকা।
“মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”

 




ভেপিং: সিগারেট ছাড়ার সমাধান নাকি নতুন ঝুঁকি?

ধূমপানের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে ভেপিং অনেকের জন্য কার্যকর মনে হলেও এটি কিশোর ও তরুণদের জন্য বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ভেপের কাজের প্রক্রিয়া

ভেপ বা ই-সিগারেটে তামাকের পরিবর্তে থাকে নিকোটিন সমৃদ্ধ তরল পদার্থ। এটি গরম হয়ে ধোঁয়া তৈরি করে, যা সিগারেটের মতো ক্ষতিকারক উপাদান থেকে মুক্ত বলে অনেকে মনে করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভেপ সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর, কারণ এতে কার্বন মনোক্সাইডের মতো উপাদান নেই।

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিষেধাজ্ঞা

দীর্ঘমেয়াদে ভেপিংয়ের ক্ষতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকলেও বিশেষজ্ঞরা এর সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তরুণদের মধ্যে এটি সিগারেট আসক্তির প্রবণতা বাড়াতে পারে। এ কারণে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশ ভেপ নিষিদ্ধ করেছে।

ধূমপান ছাড়ার বিকল্প, কিন্তু সতর্কতা জরুরি

চেইন স্মোকারদের জন্য ভেপ ধূমপান ছাড়ার একটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে। তবে তরুণ ও কিশোরদের এর প্রতি আসক্তি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। সচেতনতা বাড়িয়ে তাদের এ অভ্যাস থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন।

করণীয়

ভেপিং নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এর সীমিত ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। ধূমপান রোধে এটি উপকারী হতে পারে, তবে এর যথাযথ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

“মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”



আয়রন বাড়ানোর সহজ উপায়: প্রাকৃতিক পানীয়

আয়রন আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে ভূমিকা রাখে, যা শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। আয়রনের অভাবে শরীরে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। তবে এই ঘাটতি পূরণের জন্য সাপ্লিমেন্টের ওপর নির্ভর না করে প্রাকৃতিক কিছু পানীয় গ্রহণ করেও সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১৩.৮-১৭.২ জি/ডিএল এবং নারীদের জন্য ১২.১-১৫.১ জি/ডিএল হওয়া উচিত। এই মাত্রা বজায় রাখতে নিম্নোক্ত পানীয়গুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

বিটরুট এবং গাজরের রস:
বিটরুট এবং গাজর আয়রন এবং ভিটামিন এ-এর চমৎকার উৎস। বিটরুট রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে কার্যকর, আর গাজরের ভিটামিন এ আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এই পানীয়তে এক চামচ লেবুর রস মেশালে তা ভিটামিন সি-এর মাধ্যমে আয়রনের কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

পালং শাক স্মুদি:
পালং শাক আয়রনের একটি প্রাকৃতিক উৎস। এতে থাকা নন-হিম আয়রন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক। কমলা বা আনারসের মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের সঙ্গে পালং শাক ব্লেন্ড করলে আয়রন শোষণের মাত্রা বেড়ে যায়। স্মুদির ক্রিমি টেক্সচার পেতে এর সঙ্গে বাদাম যোগ করা যেতে পারে।

ডালিমের রস:
ডালিমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়ায় এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করে। ডালিমের রসের সঙ্গে খেজুর বা কিশমিশ যোগ করলে এর পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়।

কুমড়ার বীজ স্মুদি:
কুমড়ার বীজে প্রচুর আয়রন এবং জিঙ্ক থাকে, যা শক্তি উৎপাদন এবং রক্ত তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। কুমড়ার বীজ, কলা, দই এবং মধু মিশিয়ে একটি পুষ্টিকর স্মুদি তৈরি করা যায়। এটি শরীরকে সতেজ রাখার পাশাপাশি ক্লান্তি দূর করে।

শরীরকে সুস্থ এবং সতেজ রাখতে প্রাকৃতিক উপায়ে আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য এই পানীয়গুলোকে আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



ক্লান্তি: শারীরিক না মানসিক? বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ

সারাদিনের ব্যস্ততার পর ক্লান্তি অনুভব করা আমাদের জীবনের একটি সাধারণ চিত্র। অফিস, সংসার, আর্থিক চাপ এবং মানসিক উদ্বেগ—সবকিছু মিলিয়ে যেন ক্লান্তির এক অসীম চক্রে আটকে গেছি আমরা। এমনকি ছুটির দিনেও আমরা বিশ্রামের পর হাঁপিয়ে উঠি। তবে কি এই ক্লান্তি কেবল শারীরিক, নাকি এর পেছনে মানসিক কারণও জড়িত? এ বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ সাইকোথেরাপিস্ট ও লেখিকা মোয়া সার্নার তার বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন, যা প্রকাশিত হয়েছে দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে।

মোয়া সার্নার বলেন, ক্লান্তি দুই ধরনের হতে পারে—শারীরিক এবং মানসিক। শারীরিক ক্লান্তি সাধারণত ঘুম বা বিশ্রামের মাধ্যমে দূর হয়। কিন্তু অনেক সময় আমরা দেখছি, দীর্ঘ বিশ্রামের পরেও ক্লান্তি থেকে যায়। এর কারণ হলো আবেগ এবং মানসিক চাপ। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে করতে আমরা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ি।

সার্নারের মতে, নিজের রাগ, দুঃখ, লজ্জা বা ভয়কে দীর্ঘ সময় ধরে দমিয়ে রাখা আমাদের মনের ভেতর শূন্যতার সৃষ্টি করে। এই শূন্যতা আমাদের আরও ক্লান্ত করে তোলে। তিনি বলেন, “নিজের আবেগগুলোকে স্বীকার করতে শিখুন এবং প্রকাশ করুন। এটি মানসিক ক্লান্তি দূর করে, আমাদের আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।”

শুধু শারীরিক নয়, মানসিক বিশ্রামও গুরুত্বপূর্ণ। সার্নার জানান, নিজের আবেগ এবং মানসিক অবস্থাকে বোঝার চেষ্টা করুন। এটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে, তবে এটি মানসিক ক্লান্তি দূর করার একটি কার্যকর উপায়।

শারীরিক ক্লান্তি সহজেই কাটিয়ে ওঠা গেলেও মানসিক ক্লান্তি দূর করতে নিজেকে এবং নিজের আবেগকে বুঝতে হবে। তাই শারীরিক বিশ্রামের পাশাপাশি মানসিক বিশ্রামকেও গুরুত্ব দিন। নিজের মনের সঙ্গে সময় কাটান এবং আবেগ প্রকাশ করুন। এতে শুধু ক্লান্তি দূর হবে না, আপনি হবেন আরও প্রাণবন্ত।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



কোলেস্টেরল: স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য জরুরি তথ্য

কোলেস্টেরল একটি মোম জাতীয় পদার্থ, যা শরীরে ভালো (এইচডিএল) ও খারাপ (এলডিএল) দুই ধরনের থাকে। ভালো কোলেস্টেরল শরীরের জন্য উপকারী হলেও খারাপ কোলেস্টেরলের কারণে রক্তনালিতে প্লেক জমে, যা রক্ত চলাচল ব্যাহত করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

খারাপ কোলেস্টেরলের প্রভাব

জীবনযাত্রায় অনিয়ম ও বিশেষ কিছু খাবার খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায়। এর ফলে শরীরে নানা গুরুতর অসুখের ঝুঁকি দেখা দেয়।

মাখন

পাউরুটির সঙ্গে মাখন খাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে মাখনে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলে ভুগলে মাখন এড়িয়ে চলা উচিত।

চিজ

পিৎজা, পাস্তা বা স্যান্ডউইচের স্বাদ বাড়াতে চিজ অতুলনীয়। তবে এটি উচ্চ কোলেস্টেরল রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। চিজেও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায়।

ডিমের কুসুম

ডিম পুষ্টিকর হলেও এর কুসুমে প্রায় ২০০ এমজি কোলেস্টেরল থাকে। উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগলে পুরো ডিম সপ্তাহে একটির বেশি খাওয়া উচিত নয়। তবে ডিমের সাদা অংশ নিরাপদ।

ঘি

ঘি’র অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে এটি ক্যালোরি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটে ভরপুর। ফলে এটি রক্তনালিতে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায়।

ভাজা খাবার

মুখোরোচক ভাজাপোড়া খাবার খারাপ কোলেস্টেরলের অন্যতম উৎস। বাইরের ভাজা খাবার এড়িয়ে সরিষার তেল ব্যবহার করলে কিছুটা স্বাস্থ্যকর হতে পারে।

খাদ্যাভ্যাসে নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে খারাপ কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম