শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং লন্ডনে এই পাচারের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকালে দুদক সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে, ৯টি প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। ১৭ ডিসেম্বর থেকে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়।

দুদক জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প, বেপজাসহ ৯টি প্রকল্পে এসব অনিয়ম এবং দুর্নীতি ঘটেছে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ

ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে দুটি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে লঞ্চ দুটির সম্মুখভাগের বিভিন্ন অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সৌভাগ্যক্রমে কোনো যাত্রী হতাহত হননি।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পদ্মার হাইম চরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ দুটি একে অপরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের পর, এমভি কীর্তনখোলা-১০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও, এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ নামের অপর লঞ্চটি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে নোঙর করে রাখা হয়।

এ ঘটনায়, যদিও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, তবে লঞ্চ দুটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত লঞ্চগুলোর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

মো: তুহিন হোসেন,**
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে সংঘর্ষ, নিহত ১

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে প্রায় সাত থেকে আটটি যানবাহন একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা নাগাদ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের সিংপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিংপাড়া আন্ডারপাসে একটি সাকুরা পরিবহনের বাস কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয়। এরপর পেছনে থাকা মাইক্রোবাসসহ তিনটি যাত্রীবাহী বাস একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী জানান, দুর্ঘটনার ফলে মাইক্রোবাসের চালক গুরুতর আহত হন। তাকে শ্রীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, চিকিৎসকরা সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যান্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে গেছেন।

এ ঘটনায় এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর এলাকায় প্রায় ৪০ মিনিটের জন্য সড়কে তীব্র জ্যাম সৃষ্টি হয়, যার ফলে যাত্রীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর সড়ক চলাচল স্বাভাবিক হয়।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




হাসিনা পালিয়ে দিল্লিতে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তলানিতে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: কয়েক দশক ধরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের মধ্যে ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে সেই সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরে এবিসি নিউজের করা এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভের ফলে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘দেশব্যাপী আন্দোলনে’ পরিণত হয়।

ছাত্র-জনতার এই গণআন্দোলনকে “বিশ্বের প্রথম জেন-জি বিপ্লব” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান — এবং এরপর থেকে তিনি দিল্লিতেই নির্বাসিত রয়েছেন।

এর পরের মাসগুলোতে নানা ঘটনাবলীর প্রেক্ষপটে বাংলাদেশে এক হিন্দু নেতাকে গ্রেপ্তার এবং ভারতে বাংলাদেশের একটি কনস্যুলেটে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতার হামলার ঘটনা দুই দেশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

এখন দক্ষিণ এশীয় এই দুই জায়ান্ট দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে নেমেছে এবং সম্পর্কের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনাও বিদ্যমান রয়েছে।

‘সহিংসতা আমাদের শত্রু’
‘আয়রন লেডি’ খ্যাত শেখ হাসিনার কট্টর ও স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে তার অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল অংশীদার বলে মনে করেত।

যদিও আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা সকলেই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। কিন্তু হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল গত আগস্টে আকস্মিকভাবে অবসান ঘটার পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।

বাংলাদেশের ১৭৪ মিলিয়ন বা ১৭ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ এবং তাদের অনেকেই ঐতিহাসিকভাবে হাসিনার আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ অনেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রতীক এবং কিছু ক্ষেত্রে দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিন্দুদেরও টার্গেট করেছিল।

সেই সময়ে ড. ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে “অর্থহীন সহিংসতার” নিন্দা করেছিলেন এবং হামলা বন্ধ না হলে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সহিংসতা আমাদের শত্রু। দয়া করে আর শত্রু তৈরি করবেন না। শান্ত হোন এবং দেশ গড়তে প্রস্তুত হন।

তবুও ড. ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট কাজ না করার অভিযোগ করেছে ভারত। ভারতে নির্বাসিত থাকা হাসিনাও দাবি করেছেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে “গণহত্যার” জন্য দায়ী এই সরকার।

পাকিস্তানের সঙ্গে সংলাপ : যে শর্ত দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-গাজার মধ্যে চলমান সংঘাত এবং বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উল্লেখ করে “অপ্রত্যাশিত” পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

কিন্তু গত নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশে একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এটি ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে বড় ধরনের কূটনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

‘স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক’
চলতি বছরের অক্টোবরে এক সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করার অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তার সমর্থকদের বিশ্বাস, হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে সোচ্চার থাকায় তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় এক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার দাবিগুলো অতিরঞ্জিত করে সামনে আনা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই ভারতে উগ্র কট্টরপন্থি হিন্দু গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং বাংলাদেশের ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি অনেক দলই ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে এবং উভয় দেশের সরকার — যারা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করেছে — ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় রয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসিনা সরকারের পতনের অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশে ভারতকে নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো অমিত রঞ্জন বলেন, “বাংলাদেশি সমাজের সবসময়ই এই অনুভূতি থাকে যে— বাংলাদেশের বিষয়ে খুব বেশি হস্তক্ষেপ করে ভারত। বাংলাদেশিদের এই অনুভূতিও আছে যে— হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন টিকে ছিল ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টের সমর্থনে।”

বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির গবেষক খন্দকার তাহমিদ রেজওয়ান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শুধুমাত্র “হাসিনার আওয়ামী শাসনামলের সাথে উষ্ণ ছিল, সাধারণ মানুষের সাথে নয়। এখানে বাংলাদেশে আমরা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বলে উপহাস করতাম।”

হাসিনার পতনের পর ভারতীয় কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা করেছে। আর উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের এমন ছবি যা বাংলাদেশে ভারতের প্রতি ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এবং চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরুতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে সম্প্রতি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সময় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সেখানে ভাঙচুর চালায় এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার পাশাপাশি অবমাননা করে।




শের-ই–বাংলা মেডিকেলের চক্ষু বিভাগ: অর্ধযুগ ধরে প্যাকেটবন্দি ১২ কোটি টাকার ল্যাসিক যন্ত্র

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের অত্যাধুনিক ল্যাসিক মেশিনটি গত ছয় বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এই অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলার প্রায় দেড় কোটি মানুষ উন্নত চোখের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু ল্যাসিক মেশিনই নয়, চোখের ছানি অপারেশনের ফ্যাকো মেশিনটিও দীর্ঘ সাত মাস ধরে অকেজো অবস্থায় রয়েছে, যার ফলে রোগীরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

চক্ষু বিভাগের স্টাফরা জানালেন, “এখানে আগে রোগীদের ভিড় থাকত, কিন্তু বর্তমানে বড় অপারেশন বন্ধ হওয়ায় ঢাকায় রেফার করা হচ্ছে।” এক রোগী, হোসনেয়ারা বেগম জানান, “গত বছর চোখে ছানি অপারেশন করিয়েছিলাম, কিন্তু এখন আবার সমস্যা হচ্ছে, ডাক্তার বলছে অপারেশন বাইরে করাতে হবে কারণ হাসপাতালের মেশিন নষ্ট।”

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের মেশিনটি ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহ করা হয় এবং এটি বাংলাদেশে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপার্টমেন্ট (সিএমএসডি) থেকে কেনা হয়েছিল। তবে প্রথম বছরেই মেশিনের ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ পাওয়া যায়নি এবং টেকনিশিয়ানরা মেশিনটি চালানোর প্রক্রিয়া জানতেন না। এর পর ২০১৫ সালে মেশিনটি চালু করা হলেও ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে এটি বিকল হয়ে যায়। পরবর্তীতে একাধিকবার মেরামত করা হলেও ২০১9 সাল থেকে এটি আর চলতে পারেনি।

চক্ষু বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই মেশিনটি সারাতে কমপক্ষে ১ কোটি টাকা প্রয়োজন এবং এটি চালু রাখার জন্য বিশেষ যন্ত্রাংশ ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, “ল্যাসিক মেশিনটি চালু থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য চোখের উন্নত চিকিৎসার সুযোগ থাকত।”

এদিকে, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে এম মশিউল মুনির বলেন, “শেবাচিম হাসপাতাল বহু পুরোনো হলেও প্রয়োজনীয় জনবল এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। আমরা এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি এবং মন্ত্রণালয় ও সিএমএসডির সাথে আলোচনা শুরু করেছি।” তিনি আশাবাদী যে, শীঘ্রই এই সমস্যা সমাধান হবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




পটুয়াখালীর বাউফলে সড়ক দুর্ঘটনায় কৃষি কর্মকর্তার মৃত্যু

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় মিলন হাওলাদার (৩০) নামে এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল ৭টার দিকে বাউফল-বগা মহাসড়কের ভুবন সাহার কাচারি এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

মিলন হাওলাদার বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। তিনি ২০১৮ সালে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম চাকরিতে যোগ দেন। মিলনের স্ত্রী এবং তিন বছর বয়সি একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

সূত্র জানায়, মিলন হাওলাদার কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সিএনজি চালিত গাড়িতে ছিলেন। বাউফল-বগা মহাসড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে সিএনজির একাংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে মিলন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিলনের অকাল মৃত্যুতে তার পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, “অ্যাম্বুলেন্স ও সিএনজির চালক পালিয়ে গেছে। তাদের আটক করার জন্য চেষ্টা চলছে এবং এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মো. আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




নির্দেশনা মানছে না বরিশালের দেড়শ কলকারখানা

বরিশাল নগরীতে আবাসিক এলাকায় চলমান বৃহৎ কলকারখানাগুলোর কারণে নগরবাসীকে প্রতিবছর নতুন করে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১৫ বছর ধরে প্রতি বছর শিল্প কারখানাগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, গত এক দশকে মাত্র একটি ওষুধ কারখানা আংশিক সরানো হয়েছে। বাকিরা এখনও সেই নির্দেশনা মানেনি, ফলে পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হচ্ছে।

নগরবাসীর অভিযোগ, কারখানার মেশিনের শব্দ এবং নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের কারণে প্রতিদিনই অসহনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। একদিকে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি, অন্যদিকে বিশুদ্ধ বাতাস ও শান্ত পরিবেশের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বরিশাল পরিবেশ অধিদফতর জানায়, গত ১৫ বছরে ওষুধ কোম্পানিগুলোসহ অন্যান্য কারখানার মালিকদের মোট ১৫ বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে কিছু কারখানা নিজ উদ্যোগে অন্যত্র চলে গেলেও অধিকাংশই এখনও আবাসিক এলাকায় রয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম জানান, সেগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় রেখে দূষণমুক্ত উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ সংগঠক সিলভিয়া বলেন, “বরিশাল শহরের মধ্যে দেড়শ কলকারখানা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব অনুভূত হচ্ছে।”

প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, যারা দিনদিন এই কলকারখানার কারণে সমস্যায় পড়ছেন। এক বাসিন্দা, আরাফাত হোসেন বলেন, “শব্দদূষণের কারণে মাথা ধরেছে, আর রাতের বেলা তো ঘুমানোর উপায় থাকে না।” আরেক বাসিন্দা, খাইরুল জানান, “ফ্যাক্টরির কারণে আমাদের গাছপালাও নষ্ট হয়ে গেছে, ফলন কমে গেছে।”

এদিকে, কিছু কারখানা যেমন অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড এবং কেমিস্ট ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড সরানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে অধিকাংশ কারখানা এখনও নগরীতেই রয়ে গেছে। সিলভিয়া বলেন, “যতদিন না কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ততদিন নাগরিকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

এছাড়া, বরিশাল কলকারখানা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল মহানগরীতে দেড়শেরও বেশি বৃহৎ কলকারখানা রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি বৃহৎ ওষুধ কোম্পানির কারখানাও অন্তর্ভুক্ত। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




২২ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া-গৌরনদী হানাদারমুক্ত দিবস

বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা ২২ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশে বিজয় ঘোষণা হলেও, ছয় দিন পর ২২ ডিসেম্বর বরিশালের এই দুই উপজেলায় উড়েছিল বিজয়ের পতাকা।

দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে মুক্তিবাহিনী ও মুজিব বাহিনীর যৌথ আক্রমণের পর, ২২ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা বাধ্য হয়ে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় আত্মসমর্পণ করে। শতাধিক পাকিস্তানি সেনা মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, এবং এর মাধ্যমে এই দুই অঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে এই অঞ্চলে প্রবেশ করে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। তাদের প্রবেশের পর, গৌরনদীর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা সাউদের খালপাড়ে অবস্থান নেয় এবং পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরোধ করে। সেদিন, পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন গৌরনদীর সৈয়দ আবুল হাসেম, চাঁদশীর পরিমল মণ্ডল, গৈলার আলাউদ্দিন (আলা বক্স), ও বাটাজোরের মোক্তার হোসেন হাওলাদার। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে আটজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল। এটি বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম স্থলপথে যুদ্ধ ছিল।

পাকিস্তানি সেনারা ও তাদের দোসররা এই অঞ্চলের হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। অনেক মা-বোনের ইজ্জত হারাতে হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অবিরাম প্রতিরোধের পর, ২২ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে গৌরনদী কলেজ ক্যাম্পে অবস্থানরত শতাধিক পাকিস্তানি সেনা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, এবং এর মাধ্যমে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া হানাদারমুক্ত হয়ে ওঠে।

এই বিশেষ দিবসটি প্রতিবছর আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলায় ‘হানাদারমুক্ত দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। বিজয়ের এই দিনের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




গলাচিপা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি দুই বছর পরেও, স্থানীয়দের মধ্যে উৎকণ্ঠা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পাওয়ার দুই বছর পরেও শুরু হয়নি গলাচিপা সেতুর নির্মাণ কাজ। স্থানীয় প্রশাসন এখনো জানে না সেতুর নির্মাণ কাজ কবে শুরু হবে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময় ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল।

রামনাবাদ নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২১ কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তর। সেতু নির্মাণ হলে গলাচিপা উপজেলার মানুষের জন্য বরিশাল বিভাগীয় সদর এবং পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে নিরাপদ ও সহজ সড়ক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

নদী পারাপারে প্রতিদিন শতাধিক যানবাহন ফেরির মাধ্যমে চলাচল করে, তবে এতে সময়, খরচের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে গুরুতর রোগী এবং তাদের স্বজনরা। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় গলাচিপা, রাঙ্গাবালী এবং দশমিনা উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গাড়িচালক মো. রনি বলেন, “গত ৩০ বছর ধরে শুনে আসছি গলাচিপা সেতুটি হবে। কিন্তু বাস্তবে কোনো কার্যক্রম চোখে পরছে না। আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হয়।”

সাবেক এক সেনা সদস্য জানান, “দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি ব্রিজ হবে, কিন্তু হচ্ছে না। বিভিন্ন সময় সরকার পরিবর্তন হলেও কার্যকর কিছুই হচ্ছে না। জীবিত অবস্থায় ব্রিজটি দেখে যেতে পারবো কি না জানি না।”

গণ অধিকার পরিষদের গলাচিপা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আশা প্রকাশ করেন যে, শিগগিরই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইহাইয়া খান বলেন, “যে এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা যতো ভালো, সে এলাকা ততো উন্নত হয়। ব্রিজটি নির্মাণ হয়ে গেলে গলাচিপা আর অবহেলিত থাকবে না।”

গলাচিপা বিএনপির উপজেলা শাখার সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “ব্রিজটি লাখ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি। কাজেই সেতুটি জরুরিভিত্তিতে নির্মাণ হওয়া প্রয়োজন।”

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান জানান, “রামনাবাদ চ্যানেলে সেতুটি বর্তমানে প্রস্তাবিত ও অনুমোদিত। তবে এর নির্মাণ কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কে অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু

কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের মোস্তফাপুর এলাকায় একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উল্টে গিয়ে প্রান্ত (৬) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রান্ত উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজন হাওলাদারের পুত্র।

স্থানীয় সূত্র ও স্বজনদের বরাতে জানা যায়, শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে অটোরিকশায় করে নিজ বাড়ি থেকে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামে খালাবাড়িতে যাচ্ছিল। মহাসড়কে চলার সময় অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ঢালে উল্টে যায়। এতে প্রান্ত গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, “দুর্ঘটনার বিষয়টি জানার পর হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম