বাংলাদেশ কারো ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না: মাহফুজ আলম

বাংলাদেশ কারো ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন। পোস্টে তিনি চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি সহিংসতায় আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলেন।

মাহফুজ আলম বলেন, “হঠকারিতা, নেতিবাচকতা ও ভাঙনের মানসিকতা থেকে বের হয়ে আমাদের সৃজনশীল ও ইতিবাচক মানসিকতায় এ রাষ্ট্রকে গড়তে হবে। এ রাষ্ট্র পরিগঠন করলেই কেবল শহিদ আলিফের শাহাদাতসহ শহিদানদের রক্তের মূল্য হতে পারে।”

পোস্টে তিনি ছাত্র-জনতাকে অভিবাদন জানিয়ে বলেন, “দায়িত্ব ও দরদের নজির দেখিয়ে আপনারা বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন। বাংলাদেশ আর কারো ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না। ইনশাআল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের ব্যক্তি ও সমষ্টির ‘শক্তি’ সাধনায় দরদি ও দায়িত্ববান হয়ে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠা মোক্ষ। আমাদের এই অভ্যন্তরীণ শক্তি যেকোনো বহিঃশত্রুকে পরাজিত করবে। আমরা আর উপনিবেশযোগ্য (Colonizable) হবো না।”

দেশের ‘প্রাজ্ঞ আলেম ও মুসলিম নেতৃবৃন্দের’ ‘বিশেষ ধন্যবাদ’ প্রাপ্য উল্লেখ করে মাহফুজ আলম লিখেছেন, “আপনারা এ গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে বাঙালি মুসলমানকে দায়িত্বশীল আচরণে অনুপ্রাণিত করেছেন। ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে আপনাদের আজ ও আগামীর প্রাজ্ঞ উদ্যোগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রে আপনাদের ইজ্জত ও শরিকানা নিশ্চিত করবে।”

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




থ্রি হুইলার বন্ধের দাবিতে ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ

মহাসড়কে অবৈধ থ্রি হুইলার চলাচল এবং দূরপাল্লার বাসে লোকাল যাত্রী পরিবহনের প্রতিবাদে ঝালকাঠি থেকে ১১টি রুটে বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। আকস্মিকভাবে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় যাত্রীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ভোগান্তি।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকাল থেকে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন এ ধর্মঘটের ডাক দেয়।

জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি টিপু সুলতান জানান, ঝালকাঠির আঞ্চলিক মহাসড়কে অবৈধ মাহিন্দ্রা এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল বে-আইনি হলেও তা অবাধে চলছে। একই সঙ্গে, দূরপাল্লার বাসে স্থানীয় যাত্রী পরিবহনের কারণে বাস মালিকরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। এর প্রতিবাদ হিসেবে বাস মালিক সমিতি গতকাল সকালে মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠি থেকে বরিশাল, ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, বাগেরহাট, খুলনা সহ মোট ১১টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ধর্মঘটের কারণে এসব রুটে বাস চলাচল কবে পুনরায় শুরু হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।

বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের দাবি পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাচ্ছে। তবে এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা।

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম




কুয়াকাটার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রয়োজন দ্রুত উদ্যোগ

পটুয়াখালীর নয়নাভিরাম কুয়াকাটা, যা সাগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ‘সাগরকন্যা’ নামে পরিচিত, আজ জীববৈচিত্র্যের সংকটে ভুগছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এখানে বিভিন্ন বিপন্ন ও সংকটাপন্ন প্রজাতির প্রাণী বাস করলেও ক্রমবর্ধমান দূষণ এবং মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের ফলে এই জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। বিশেষত প্লাস্টিক দূষণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

সম্প্রতি প্লাস্টিক দূষণ রোধে একটি সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ২০ নভেম্বর মাত্র আড়াই ঘণ্টায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ছয় কিলোমিটার এলাকা থেকে ৩২৩ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করা হয়। উদ্ধারকৃত বর্জ্যের মধ্যে ছিল ফুড প্লাস্টিক র‍্যাপার, পলিথিন, ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য, বোতল, সিগারেটের প্যাকেট, মাছ ধরার পুরনো জাল এবং ই-বর্জ্য। এই উদ্যোগে সহায়তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও সিইজিআইএস।

ইয়ুথনেট বরিশাল এবং অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীসহ ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। তারা শুধু বর্জ্য অপসারণ নয়, সৈকতের সাধারণ মানুষ, পর্যটক এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করেন।

গঙ্গামতির চর, জিরো পয়েন্ট, এবং কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানের সম্মুখভাগ প্লাস্টিক দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এসব স্থানে খাদ্য পণ্যের প্যাকেট ও পানীয় বোতল সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের মতে, পর্যটকদের অসচেতনতার কারণেই প্লাস্টিক বর্জ্য দিন দিন বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অভ্যাস সৈকতের জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করে তুলেছে। এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

এই কার্যক্রমের নেতৃত্বে ছিলেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব আশিকুর রহমান সমী। সার্বিক সহযোগিতা করেছেন পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব ও রাস মেলা

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় গতকাল (১৪ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব ও রাস মেলা। ৩ দিনব্যাপী এই উৎসব ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার ভোরে তীর্থযাত্রা শুরু হবে, এবং শনিবার ভোরে পূর্ণ স্নান অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে শেষ হবে এবারের রাস উৎসব।

কুয়াকাটায় রাস পূর্ণিমা ও রাস মেলা উপলক্ষে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং টুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিটগুলো সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। মেলার জন্য নির্ধারিত স্থানে দোকান-পাট গড়ে উঠেছে এবং কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম রাস মেলায় আগত দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

মেলাকে কেন্দ্র করে খেলনা গাড়ির দোকানদার রফিক উদ্দিন বলেন, “প্রতিবছর কুয়াকাটায় রাসমেলা উপলক্ষে দোকান নিয়ে আসি। এখানে হাজার হাজার মানুষ আসেন, আমরা আশা করছি এবারও ভালো মানুষের সমাগম হবে এবং আমরা ভালো বেচাকেনা করতে পারব।”

কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী নীহাররঞ্জন মন্ডল বলেন, “রাস উৎসব শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। শ্রীকৃষ্ণের রসপূর্ণ কথাবাস্তুকে রাসযাত্রার মাধ্যমে জীবাত্মার থেকে পরমাত্মায় রূপান্তরিত করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ উৎসব পালন করে থাকে। তারা বিশ্বাস করেন, বঙ্গোপসাগরে জোয়ারে স্নান করার মাধ্যমে তাদের পাপ মোচন হয়। আমরা আশা করছি, এবার উৎসব ভালোভাবে কাটবে।”

রাস মেলাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা কুয়াকাটায় আসেন। প্রতিবছর এই সময় কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এবারের উৎসবেও স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ট্যুর গাইডরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, “মেলায় আগত দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের জন্য হোটেল-মোটেলগুলি প্রস্তুত রয়েছে। রাস মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক লাখ পর্যটক আসবে, এবং ব্যবসায়ীরা এতে উচ্ছ্বাসিত।”

এবার রাস মেলার জন্য কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন এবং কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন যৌথভাবে ৩ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম জানান, “রাস মেলার জন্য আমরা ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, থাকার স্থান, নিরাপদ পানি, সিসি টিভি স্থাপনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। সেনাবাহিনী, ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ এবং সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা আশা করি, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই এই আয়োজন সফল হবে।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



পর্যটকের ভিড়ে মুখর কুয়াকাটা, পর্যটন খাতে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য

সাগরকন্যা কুয়াকাটার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সেখানে চিরসবুজ প্রকৃতি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রাখাইন পাড়া, লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ, আর পাখির কলকাকলি ভ্রমণপিপাসুদের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্যের টানে সৈকতে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা।

কিছুদিন ধরে হালকা শীতের আমেজে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। এতে স্বস্তি ফিরেছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। কুয়াকাটার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। গতকাল ছুটির দিন সকাল থেকেই পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কেউ সাঁতার কাটছেন, কেউ ওয়াটার বাইক রাইডে মেতে উঠেছেন, আবার কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম)-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির জানিয়েছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আগে কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ায় পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়েছে সৈকত। এতে ব্যবসায়ীরাও খুশি। এভাবে পর্যটকের ভিড় থাকলে তারা দীর্ঘদিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা কুয়াকাটায় কঠোর নজরদারি চালাচ্ছেন।

কুয়াকাটা রিজিওনের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমরা পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। দর্শনীয় স্থানগুলোতে আমাদের একাধিক টিম রাতদিন কাজ করছে।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



কুয়াকাটার সৌন্দর্য রক্ষায় চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার পরিবেশ সুরক্ষায় চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এই অভিযান চলবে আগামী দুদিন।

প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জিরো পয়েন্ট থেকে পৌরভবন পর্যন্ত এলাকায় অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা সরাতে আগে থেকেই নোটিশ ও মাইকিং করা হলেও অনেকেই স্থানান্তর করেনি। ফলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে এসব স্থাপনা সরানোর কাজ করছে।

কুয়াকাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রায় চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দিয়েছি, যা আইনগতভাবে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই চলছে। যারা এখনও স্থানান্তর করেননি, তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করছি।”

এই অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক মো. কৌশিক আহমেদ। সেনাবাহিনী, মহিপুর থানা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় পুরো এলাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।




রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বমুখী গতি, অর্থনীতিতে নতুন গতি

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। গত অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৮৯৪ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, প্রথম মাস জুলাই থেকেই রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়তে থাকে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী গতির পর, অক্টোবর মাসে প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখায় এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭২ কোটি ডলার এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ১৫৪ কোটি ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলো থেকেও রেমিট্যান্স আসলেও কিছু ব্যাংক থেকে কোনো অর্থ আসেনি।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং রিজার্ভও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার না নিয়েও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের সুবিধা হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।




কুয়াকাটায় অটোভ্যান ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে আহত ৪

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর কুয়াকাটার তুলাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অটোভ্যান ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন মোটরসাইকেল চালক বেলাল (২৭), মোটরসাইকেল আরোহী কাউয়ুম (৪০), অটোচালক রনি (২৮), এবং অটোযাত্রী শাহজালাল (৩২)। এদের মধ্যে সেনেটারি মিস্ত্রি কাউয়ুমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আশিকুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল ও অটোভ্যানের সংঘর্ষে আহত ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে কাউয়ুমের মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অটোযাত্রী শাহজালালের মতে, মোটরসাইকেলটি রং সাইড দিয়ে দ্রুতগতিতে অতিক্রম করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে, ফলে ভ্যানটি পুকুরের পাশে পড়ে যায় এবং মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।




ভোলার সাগরমোহনার অপরূপ সবুজদ্বীপ কুকরি-মুকরি পর্যটকদের আকর্ষণে মুখরিত

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জেলা ভোলার সাগর মোহনার মনোরম সবুজ জনপদ চরফ্যাশনের কুকরি-মুকরি এখন পর্যটকদের আগমনে মুখরিত। শীতের আগমনীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ দ্বীপে ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমাচ্ছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা এখানে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করছেন, এবং স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলছেন।

কুকরি-মুকরির মূল আকর্ষণগুলোর মধ্যে ইকোপার্ক, নারিকেল বাগান, কুকরি বীচ, ঝুলন্ত সেতু এবং মাকড়শার জাল অন্যতম। পর্যটকরা এসব দর্শনীয় স্থানে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছেন এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম ও কন্ঠশিল্পী জিয়াউর রহমান বলেন, “রাজধানীর কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে আমরা কুকরি-মুকরিতে এসেছি। এখানকার সবুজ বনভূমি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের মুগ্ধ করেছে। সারাদিন ছবি তোলা ও আনন্দে সময় কেটেছে।”

কুকরি-মুকরির হোটেল ব্যবসায়ী মোরশেদ আলম জানান, পর্যটন খাতে সরকারের সহায়তা পেলে এখানে আরও উন্নত অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হবে, যা পর্যটকদের জন্য সুবিধাজনক হবে। স্থানীয় বাসিন্দা কামাল গোলদার ও ঈমাম হোসেন মনে করেন, পর্যটকদের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে কুকরি-মুকরির পর্যটন আরো সমৃদ্ধ হবে।

কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল হাসেম মহাজন বাসসকে জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা কুকরি-মুকরির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন এবং এখানে ভ্রমণের জন্য স্থানটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ভোলা উপকূলীয় বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, কুকরি-মুকরিকে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে এবং এর জন্য নতুন সবুজ বনায়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। পর্যটকদের পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি দিতে আরও উন্নত অবকাঠামো তৈরি হবে বলে তিনি জানান।

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই দ্বীপটি যেন দক্ষিণাঞ্চলের আরেক সুন্দরবন। এখানকার ম্যানগ্রোভ বনে হরিণ, বানর, কাঠবিড়াল, বন্য মহিষ এবং অতিথি পাখির মেলা পর্যটকদের আরও মুগ্ধ করে তোলে।




কুয়াকাটায় সিসা দূষণ প্রতিরোধে মানববন্ধন ও সচেতনতা র‍্যালি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: কুয়াকাটায় ‘সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ (২০-২৬ অক্টোবর) উপলক্ষে আলোচনা সভা, র‍্যালি এবং সমুদ্রের তীরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মধ্যে সিসা দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা ও এর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরা।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ইয়ুথনেট গ্লোবাল এবং পিওর আর্থ বাংলাদেশ যৌথভাবে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে সেখান থেকে একটি সচেতনতা র‍্যালি বের হয়ে পর্যটন নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং সমুদ্র তীরে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশ’র সহায়তায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে কুয়াকাটা ট‍্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. আবুল কালাম আজাদ, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. হোসাইন আমির, ইয়ুথনেট গ্লোবালের পটুয়াখালী জেলা সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

আয়োজকরা জানান, সিসা একটি অত্যন্ত বিষাক্ত ধাতু, যা শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বাংলাদেশে প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত, যার ফলে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা হ্রাস, পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া এবং শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেও সিসার ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। অনিরাপদে সিসা ব্যাটারি ভাঙা এবং পুনর্ব্যবহার যোগ্য কারখানাগুলো থেকে ব্যাপক হারে সিসা দূষণ ছড়াচ্ছে।

এসময় মানববন্ধনে সিসা দূষণ প্রতিরোধে ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়:

1. ভোগ্যপণ্য ও নিত্য ব্যবহৃত পণ্যে সিসার মিশ্রণ বন্ধ করা।

2. পণ্যের নিরাপদ মানদণ্ড ও কঠোর মনিটরিং নিশ্চিত করা।

3. দেশের বিভিন্ন স্থানে অনিরাপদ সিসা ব্যাটারি কারখানা বন্ধ করে নিরাপদ রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

4. দূষিত এলাকাগুলো মনিটরিং করে পরিষ্কার রাখার পদক্ষেপ নেওয়া।

5. সিসা দূষণ প্রতিরোধে আইন পর্যালোচনা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।

 

ইয়ুথনেট গ্লোবালের জেলা সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সিসা দূষণ দূরীকরণে সকলকে সচেতন করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা যুব সমাজের প্রতিনিধিরা সরকারের কাছে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”