ভিটামিন ডি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। সূর্যের আলো এর প্রধান উৎস হলেও কিছু খাবার থেকেও এটি পাওয়া যায়। তবে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার ধরন অনুযায়ী অনেক সময় শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি সরবরাহ হয় না। এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি হয় যখন সূর্যের অতিবেগুনী বি (UVB) রশ্মি ত্বকে শোষিত হয়। পরে লিভার ও কিডনির মাধ্যমে এটি সক্রিয় অবস্থায় পরিণত হয়, যা শরীর ব্যবহার করতে পারে। চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন হওয়ায় এটি শোষিত হওয়ার জন্য খাদ্যের চর্বি ও শরীরের অন্তঃস্রাব ব্যবস্থার সুস্থতা প্রয়োজন। তবে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে শরীরে নানা সংকেত দেয়।
ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ:
১. হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা
ভিটামিন ডি-এর অভাবে শরীর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণে বাধাগ্রস্ত হয়। এতে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং ব্যথা ও ফাটল দেখা দিতে পারে। বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি হাড়ের ভঙ্গুরতার ঝুঁকি বাড়ায়।
২. পেশী দুর্বলতা ও খিঁচুনি
পেশীর কার্যক্রমের জন্য ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে দুর্বলতা, খিঁচুনি এবং ব্যথা দেখা দেয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এটি মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
৩. দাঁতের সমস্যা
ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁতের গহ্বর ও অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটি দাঁতের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং পিরিয়ডোনটাইটিসসহ মুখের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।
৪. চুল পড়া
ভিটামিন ডি চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে কেরাটিনোসাইট নামক কোষের কার্যকারিতা কমে যায়, যা চুল পড়ার একটি বড় কারণ।
৫. ক্লান্তি
ভিটামিন ডি-এর অভাবে মেজাজের পরিবর্তন, অলসতা এবং মানসিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ভালো ঘুমের পরও যদি ক্লান্তি দূর না হয়, তবে তা এই ভিটামিনের ঘাটতির ইঙ্গিত হতে পারে।
৬. ক্ষুধা কমে যাওয়া
ভিটামিন ডি লেপটিন নামক ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। এর অভাবে ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং খাওয়ার প্রতি অনীহা দেখা দেয়।
ভিটামিন ডি-এর অভাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত সূর্যের আলোতে থাকা, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম