সাগরে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি, গতিবেগ ৬০ কিমি

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপটি বতর্মানে নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। যা মোংলা থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। সকল সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক-৪) এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর- উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে বর্তমানে গভীর নিম্নচাপ আকারে উত্তরপশ্চিম ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় (১৯.২° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.২° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।

এটি সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিঃ মিঃ পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮৫ কিঃ মিঃ পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৫০ কিঃ মিঃ দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পুরীর নিকট দিয়ে উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসে সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. যা দমকা/কড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।




বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ – পায়রা বন্দরে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আজ রবিবার সকাল ছয়টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিনপশ্চিমে অবস্থান করছিলো।

এ নিম্নচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। উপকূলের অনেক স্থানে থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে।

এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। তাই উপকূলীয় এলাকায় দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শংকায় পায়রা বন্দরসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

মহিপুর মৎস আড়ৎ মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম বলেন, বেশির ভাগ ট্রলারই সাগরে রয়েছে। তবে কিছু ট্রলার মহিপুর শিব্বারিয়া নদীতে আশ্রয় নিয়েছে। বাকি সবাইকে মোবাইল করে বলা হচ্ছে।




বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস




কেমন থাকবে আজ দিনের আবহাওয়া?




সাগরে মৌসুমি নিম্নচাপ – বন্দরে সতর্ক সংকেত

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে উত্তর অন্ধ্র-দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) মধ্যরাত নাগাদ উত্তর অন্ধ্র-দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে এর প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে।

উপকূলীয় এলাকার অনেক স্থানের আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। বৃষ্টি না থাকলেও বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ সময় সব মাছ ধরার ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

মহিপুর বিএফডিসি মৎস্য মার্কেটের শ্রমিক রিয়াজ হোসেন বলেন, গত দুই দিন ধরে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবে আজ আকাশ কিছুটা মেঘলা রয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, মৌসুমি নিম্নচাপটি আজ রাতে উত্তর অন্ধ্র-দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে।




বন্যায় ৫৯ জনের মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়

 

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। গতকাল শুক্রবারের তুলনায় মৃতের সংখ্যা পাঁচজন বেড়ে আজ শনিবার পর্যন্ত ৫৯ জনের মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নতুন করে যে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তারা সবাই শিশু। আর বন্যায় সবচেয়ে মারা গেছে ফেনীতে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৮টি উপজেলা বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট।

মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফেনীতে ২৩, কুমিল্লায় ১৪, নোয়াখালীতে ৯, চট্টগ্রামে ৬, কক্সবাজারে ৩, খাগড়াছড়িতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ ও মৌলভীবাজারে ১ জন রয়েছেন। মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন।




উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ :: উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’। আসনা’র প্রভাবে গুজরাটের জামনগর, সুরাট, পোরবন্দর, মোরবি, স্বর্কা এবং কুচ জেলায় গত বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণ। অতি বর্ষণের জেরে এসব জেলার অনেক এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

আরব সাগরের উত্তরাংশ কয়েক দিন আগে যে গভীর নিম্নচাপ দেখা দিয়েছিল, সেটি ইতোমধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঝড়টি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)।

শনিবার (৩১ আগস্ট) আইএমডির সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে গুজরাটের নালিয়া শহরের পশ্চিম উপকূল থেকে ২৫০ কিলোমিটার, পাকিস্তানের করাচির উপকূল থেকে ১৬০ কিলোমিটার এবং বেলুচিস্তানের পাসনি উপকূল থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। ঘণ্টায় প্রায় ১৪ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে ‘আসনা’। এই নামটি পাকিস্তান থেকে নামকরণ করা হয়েছে।

গুজরাটের পাশাপাশি পাকিস্তানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধেও ‘আসনা’ আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর। তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কচ্ছ জেলায়। আইএমডির জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ রামাশ্রয় যাদব এনডিটিভিকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কচ্ছ জেলায় ৮৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি। এছাড়া সুরাট এবং কুচ জেলাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণ হয়েছে।




রাতেই ছাড়া হবে কাপ্তাই হ্রদের পানি

এতে বলা হয়, কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা আজ বিকেল ৩টায় ১০৭ দশমিক ৬৬ ফুট এমএসএল, যা বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় লেকের উজান ও ভাটি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে আজ রাত ১০টায় স্পিলওয়ের ১৬টি গেট ছয় ইঞ্চি পরিমাণ উঠিয়ে পানি নিষ্কাশন শুরু করা হবে। এতে নয় হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হবে।

আরও জানানো হয়, বর্তমানে লেকের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে, অর্থাৎ পানির লেভেল অস্বাভাবিক বাড়লে স্পিলওয়ে গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, যার ফলে ৩২ হাজার সিএফএস পানি নিনিষ্কাশিতl




আগামী ৩ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস

 

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: দেশের অধিকাংশ স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমেছে। ফলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে,  এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

শনিবার (২৪ আগস্ট) রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

রোববার (২৫ আগস্ট) খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

সোমবার (২৬ আগস্ট) রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।

শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ১৭৬ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।




দুর্যোগ ঘিরে এমন ‘একতাবদ্ধ বাংলাদেশ’ আগে দেখেনি কেউ

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে নৌকা-স্পিডবোট নিয়ে বন্যায় প্লাবিত এলাকার মানুষজনকে উদ্ধারে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবী মানুষজন। অনেকে কভার্ড ভ্যান, ট্রাক, পিক-আপ ভরে নিয়ে যাচ্ছেন শুকনো খাবার, জরুরি ওষুধ, নিরাপদ পানি, চাল-ডাল। কিছু জায়গায় বানভাসিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নগদ অর্থ। আবার বন্যার্তদের সহযোগিতায় অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কর্মীরা একদিনের বেতন দান করেছেন। লাইন ধরে দাঁড়িয়ে দাতা প্রতিষ্ঠানে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা পৌঁছে দিতেও দেখা গেছে। অর্থাৎ যে যার জায়গা থেকে যেভাবে পারছেন সেভাবেই দাঁড়াচ্ছেন বানভাসি মানুষদের পাশে। অনেকেই বলছেন, দুর্যোগ ঘিরে এমন ‘একতাবদ্ধ বাংলাদেশ’ আগে দেখেননি তারা।

মূলত, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে ফেনীতে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার জেলাও বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব জেলাগুলোতে বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেক জায়গায় মানুষ মারা যাওয়ার পর কবর দেওয়ার জায়গাও মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে  সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন সাধারণ বেসামরিক মানুষজনও। এর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দল, সামাজিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ফান্ড সংগ্রহ করছেন।

অরাজনৈতিক, অলাভজনক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, তারা ৫০০ টন ত্রাণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) তাৎক্ষণিক ১০ টন খেজুর, ১০ টন চিড়া, ৫ টন চিনি, ৫ টন লবণ ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আমাদের তিনটি ট্র্যাক ফেনী পৌঁছেছে। সেসব মালামাল পাঁচ হাজার পরিবারের মধ্যে বিতরণ করার কার্যক্রম চলছে। ত্রাণের ব্যাগে প্রতিটি পরিবারকে এজন্য প্রথম ধাপে ২ কেজি খেজুর, ২ কেজি চিড়া, ১ কেজি লবণ ও ১ কেজি চিনি দেওয়া হয়েছে।

এরপর দ্বিতীয় ধাপে আবারও আরও ৩৫ হাজার পরিবারের জন্য শুকনো ও ভারী ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করেছে সংগঠনটি। যার জন্যে ৫০০ টন মালামাল কেনা হয়েছে।

টিএসসিতে ‘গণত্রাণ সংগ্রহ’ কার্যক্রম

বন্যার্তদের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে  চলছে গণমানুষের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে এই কার্যক্রমে প্রথমদিনেই অসংখ্য মানুষ সাড়া দিয়েছেন।

এখানেও অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে নজির স্থাপন করছেন। গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে ৬ বছর ছোট্ট ইহান নিয়ে এসেছেন ৩ বছর ধরে জমানো সব টাকা। পুরো প্লাস্টিকের ব্যাংকই তুলে দিয়েছেন বানভাসি মানুষের সহযোগিতার জন্য। এমন অনেকেই যার যার অবস্থান থেকে দাঁড়িয়েছেন।

দুর্গোৎসবের বাজেট থেকে বন্যার্তদের জন্য অর্থ সহায়তা

এবার বন্যা ঘিরে সম্প্রীতির এক নতুন নজির সৃষ্টি করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও। তাদের দুর্গোৎসব আয়োজনের বাজেট থেকে বন্যাদুর্গতদের অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে বরিশালের বেশ কয়েকটি মন্দির কমিটি। আরো কয়েকটি কমিটি সহায়তা পাঠাতে তহবিল প্রস্তুত করেছে বলে জানা গেছে।

বরিশালের সবচেয়ে বড় শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তন্ময় দাস বলেছেন, ফেনী-কুমিল্লাসহ ১০টি জেলায় বন্যায় মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। আমাদের শংকর মঠের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসবের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছিল তার বড় একটি অংশ বন্যাদুর্গতদের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে আমাদের মন্দিরের পক্ষ থেকে সাত সদস্যের একটি স্বেচ্ছাসেবী দলও পাঠানো হয়েছে। আরো কয়েকটি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকার বেশি পাঠানো হয়েছে। আমরা আরও কিছু কমিটির সাথে যোগাযোগ করেছি এবং সকলের প্রতি আহ্বান রেখেছি দুর্গত এলাকার মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য।

সর্বোচ্চ সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে পুলিশ, সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী

বন্যা দুর্গত সাধারণ মানুষজনের সহযোগিতায় কাজ করছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সংস্থা। উদ্ধার তৎপরতার পাশাপাশি রান্না করা খাবারও বিতরণ করছেন তারা। এছাড়া এরকম এলাকাগুলোতেই হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছেন তারা।

বন্যার্তদের সহযোগিতায় ১ দিনের বেতন দিচ্ছেন অনেকেই

আকস্মিক বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষজন।

বন্যার্তদের জন্য ফ্রি মিনিট ও ইন্টারনেট দিয়েছে অপারেটররা

বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ফ্রি টকটাইম এবং ইন্টারনেট সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে দেশের অপারেটররা। সবার আগে তারাই বন্যার্তদের জন্য সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের ৪টি বেসরকারি অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং এয়ারটেল এবং সরকারি অপারেটর কোম্পানি টেলিটকের পক্ষ থেকে এমন সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে জুমার নামাজে বয়ানে ইমামদের আহ্বান

ভয়াবহ ও আকস্মিক এই বন্যায় ১৫টিরও বেশি জেলায় তৈরি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। এমন অবস্থায় বানভাসি ও বন্যাকবলিত মানুষদের পাশে সামর্থ্য অনুযায়ী দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন মসজিদের খতিবরা। এক্ষেত্রে অনেক মসজিদে কমিটির পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করার উদ্যোগ।

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী অনেক মানুষ

সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য-সহায়তা করার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আর বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই মহতী আগ্রহকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকেও স্বাগত জানানো হয়েছে। আগ্রহী ব্যক্তিরা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের সহায়তার অর্থ পাঠাতে পারবেন।

dhakapost

◑ হিসাবের নাম : ‘প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল’

◑ ব্যাংক : সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

◑ হিসাব নম্বর : ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩

এ তহবিলের অর্থ ত্রাণ ও কল্যাণ কাজে ব্যয় করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।