এআই অ্যাপ: মৃত্যুর সময় জানার প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই আজ মানুষের জীবনে বিশাল ভূমিকা পালন করছে। রান্নার রেসিপি থেকে শুরু করে চাকরির সিভি লেখা, স্কুলে পড়ানো, অফিসের কাজ, এমনকি নিউজ প্রেজেন্টিং—এআই সব জায়গায় তার দক্ষতার প্রমাণ দিচ্ছে।

সম্প্রতি এআই-এর সাহায্যে এমন একটি অ্যাপ তৈরি হয়েছে, যা মানুষের মৃত্যুর সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করতে সক্ষম বলে দাবি করা হচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে এই অ্যাপটি বাজারে আসার পর থেকেই এটি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।

এআই কীভাবে জানাবে মৃত্যুর সময়?

এই অ্যাপটি বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে মৃত্যুর সময় সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়। ব্যবহারকারীর বয়স, উচ্চতা, ওজন, বিএমআই, প্রতিদিনের শারীরিক পরিশ্রম, ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ, জীবনযাপনের ধরন, ধূমপানের অভ্যাসসহ নানা তথ্য সংগ্রহ করে এআই একটি সম্ভাব্য সময় জানায়।

অ্যাপটির ডেভেলপার ব্রেন্ট ফ্যানসন জানান, এটি ১২০০টি লাইফ এক্সপেক্টেন্সি সমীক্ষার তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। অ্যাপটি বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও সাবস্ক্রিপশন বাধ্যতামূলক। এরই মধ্যে এটি ১ লাখ ২৫ হাজার বার ডাউনলোড হয়েছে।

সমালোচনা এবং বাস্তবতা

বিভিন্ন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কারো মৃত্যুর সময় নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব। তবে রোগীর অবস্থা বিশ্লেষণ করে চিকিৎসকরা অনুমান করতে পারেন। এআই এই তথ্য বিশ্লেষণ করেই পূর্বাভাস দেয়।

কীভাবে কাজ করে এই অ্যাপ?

অ্যাপটি ব্যবহারকারীর জীবনযাপনের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন পরামর্শও দিয়ে থাকে। যেমন:

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম

ধূমপান বন্ধ করা

পর্যাপ্ত ঘুম

দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা

অ্যাপের ইতিবাচক দিক

এই অ্যাপটি মূলত ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য সচেতন করতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে মানুষ তাদের জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে দীর্ঘায়ু লাভ করতে পারে।

পর্যালোচনা

যদিও মৃত্যুর সময় নির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবে এআই-এর এই প্রয়োগ মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে এটি ভূমিকা রাখতে পারে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




গুগলের নতুন এআই টুল: স্প্যাম কল ঠেকাতে দারুণ উদ্যোগ

বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে গুগল শুধু সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ব্যবহারকারীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ফিচার এনে সেবাকে আরও উন্নত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। এবার গুগল নিয়ে আসছে একটি এআই-চালিত স্প্যাম ডিটেকশন টুল, যা ব্যবহারকারীদের স্প্যাম কল এবং মেসেজের বিরক্তি থেকে মুক্তি দেবে।

সারাবিশ্বে স্প্যাম কল এবং মেসেজের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। ব্যক্তিগত তথ্য চুরি থেকে আর্থিক ক্ষতিসহ নানা সমস্যার মূল কারণ এই স্প্যাম। গুগল এবার এই সমস্যার সমাধানে এক নতুন যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে।

গুগল স্প্যাম এবং ডেঞ্জারাস অ্যাপ অ্যালার্ট টুল:
গুগলের নতুন টুলের নাম “গুগল স্প্যাম এবং ডেঞ্জারাস অ্যাপ অ্যালার্ট টুল”। এটি গুগলের পিক্সেল ফোনের সাথে প্রি-ইনস্টল করা ফোন অ্যাপে কাজ করবে। এই টুলটি এআই এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলের ঝুঁকি নির্ধারণ করে ব্যবহারকারীকে সতর্ক করবে।

কীভাবে কাজ করবে এই টুল?

১. ঝুঁকিপূর্ণ কল শনাক্ত:
এআই টেকনোলজি ব্যবহার করে ইনকামিং কল বিশ্লেষণ করবে এবং সম্ভাব্য স্ক্যাম বা সন্দেহজনক কার্যকলাপ শনাক্ত করবে।

২. লাইভ সতর্কতা:
কল আসার সময় স্ক্রিনে “লাইকলি স্ক্যাম” বা “সাস্পিশিয়াস অ্যাক্টিভিটি ডিটেক্টেড ফর দিজ কল” লেবেল দেখাবে। ব্যবহারকারী চাইলে কলটি কেটে দিতে পারবেন অথবা এটি “নট অ্যা স্প্যাম” হিসেবে মার্ক করতে পারবেন।

৩. কলারের কথার বিশ্লেষণ:
মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলারের কথোপকথন শুনে এটি প্রতারক কি না তা চিহ্নিত করবে।

অ্যাপ নজরদারি:
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু কল নয়, ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাপগুলোর কার্যকলাপের উপরও নজরদারি চালাবে গুগল। এতে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা ক্ষতির ঝুঁকি কমবে।

কেন এটি ব্যতিক্রম?

অন্যান্য স্প্যাম ডিটেকশন অ্যাপ থেকে গুগলের এই টুল আলাদা কারণ এটি ইনকামিং কল বিশ্লেষণ ছাড়াও কলারের কথোপকথন বিশ্লেষণ করে প্রতারণা শনাক্ত করতে সক্ষম।

গুগলের এই পদক্ষেপ ব্যবহারকারীদের প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও স্বস্তি এনে দেবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



এআই: মানুষের মতো কথা বলবে এবং আচরণ করবে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি এখন মানুষের কাজ করার পদ্ধতিকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। যে কাজগুলো করতে মানুষকে সময় এবং প্রচেষ্টা ব্যয় করতে হয়, এআই সেগুলো খুব সহজে এবং দ্রুত করতে সক্ষম। তবে এখন এই প্রযুক্তি আর শুধু কাজের জন্য নয়, মানুষের মতো কথা বলবে এবং আচরণ করবে বলেও জানিয়েছেন মাইক্রোসফটের সিইও মোস্তফা সুলেমান।

মাইক্রোসফটের সিইও তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, কল্পনা করুন, আপনার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এমনভাবে কাজ করছে, যেমন আপনি নিজেই কাজটি করছেন। এর মধ্যে আপনার স্টাইল, ছন্দ, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানার বিষয়টি গভীরভাবে ব্যক্তিগত হয়ে ওঠে। এটি আপনার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং আপনার জীবনযাপনকে আরও স্মার্ট এবং নিখুঁত করে তুলবে।

এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে আরও সুস্পষ্ট করে তোলেন এইচসিএলের সাবেক সিইও বিনীত নায়ার। তিনি দাবি করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এমন একটি বিপ্লব ঘটাবে, যার ফলে অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষের উপস্থিতি ছাড়াই কাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

এআই প্রযুক্তি, বিশেষ করে চ্যাটজিপিটি ও কপিলট, বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর আগেও এআই সম্পর্কে মানুষের ধারণা খুবই সীমিত ছিল, কিন্তু আজকের দিনে এটি প্রযুক্তি এবং মানুষের জীবনযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম