এআই: মানুষের মতো কথা বলবে এবং আচরণ করবে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি এখন মানুষের কাজ করার পদ্ধতিকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। যে কাজগুলো করতে মানুষকে সময় এবং প্রচেষ্টা ব্যয় করতে হয়, এআই সেগুলো খুব সহজে এবং দ্রুত করতে সক্ষম। তবে এখন এই প্রযুক্তি আর শুধু কাজের জন্য নয়, মানুষের মতো কথা বলবে এবং আচরণ করবে বলেও জানিয়েছেন মাইক্রোসফটের সিইও মোস্তফা সুলেমান।

মাইক্রোসফটের সিইও তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, কল্পনা করুন, আপনার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এমনভাবে কাজ করছে, যেমন আপনি নিজেই কাজটি করছেন। এর মধ্যে আপনার স্টাইল, ছন্দ, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানার বিষয়টি গভীরভাবে ব্যক্তিগত হয়ে ওঠে। এটি আপনার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং আপনার জীবনযাপনকে আরও স্মার্ট এবং নিখুঁত করে তুলবে।

এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে আরও সুস্পষ্ট করে তোলেন এইচসিএলের সাবেক সিইও বিনীত নায়ার। তিনি দাবি করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এমন একটি বিপ্লব ঘটাবে, যার ফলে অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষের উপস্থিতি ছাড়াই কাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

এআই প্রযুক্তি, বিশেষ করে চ্যাটজিপিটি ও কপিলট, বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর আগেও এআই সম্পর্কে মানুষের ধারণা খুবই সীমিত ছিল, কিন্তু আজকের দিনে এটি প্রযুক্তি এবং মানুষের জীবনযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



এমআইটির নতুন প্রযুক্তিতে রোবটকে দক্ষতা শেখানোর বিপ্লব

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) সম্প্রতি একটি নতুন প্রযুক্তি পদ্ধতির উন্মোচন করেছে, যা রোবটকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে। এই পদ্ধতিতে, রোবটকে নতুন দক্ষতা শেখানোর জন্য ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম)’ ব্যবহৃত বিশাল তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করা হবে, যা ডেটার দিকে মনোযোগ না দিয়ে বিভিন্ন নতুন কাজ শেখাতে সক্ষম।

গবেষকরা বলছেন, এ নতুন পদ্ধতিতে রোবটকে অনুকরণভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ শেখানো হবে, যেখানে রোবট অন্যদের কাজ অনুসরণ করে। তবে, চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকতে পারে ভিন্ন আবহাওয়া, লাইটিং পরিস্থিতি অথবা নতুন বাধা, যা রোবটের জন্য কঠিন হতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই ধরনের পরিস্থিতিতে রোবটের কাছে পর্যাপ্ত ডেটা না থাকার কারণে তারা সফলভাবে কাজ করতে পারবে না।

এই সমস্যার সমাধানে, গবেষক দলটি জিপিটি ৪-এর মতো বিভিন্ন এআই মডেলকে খতিয়ে দেখেছে এবং তাদের লক্ষ্য হলো একটি ‘হেটেরোজেনাস প্রিট্রেইনড ট্রান্সফরমার্স (এইচপিটি)’ তৈরি করা, যা বিভিন্ন ধরনের সেন্সর এবং পরিবেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। পরে, এই তথ্যগুলোকে একটি ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করা হবে, যা ডেটা সমন্বয়ের কাজ করে। গবেষণার প্রধান লেখক লিরুই ওয়াং জানিয়েছেন যে, রোবটিক্স খাতে কার্যকর প্রশিক্ষণের জন্য একটি ভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োজন।

এমআইটির এই উদ্যোগের মাধ্যমে রোবটের নকশা এবং কনফিগারেশন ব্যবহারকারীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ডাউনলোড করে কাজে লাগাতে পারবেন। সহকারী অধ্যাপক ডেভিড হেল্ড বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো একটি বৈশ্বিক রোবট ব্রেইন তৈরি করা, যা প্রশিক্ষণ ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে।”

এ গবেষণাটি শুরু হয়েছিল ‘টয়োটা রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ দ্বারা, এবং এটি আরও গভীর গবেষণার জন্য বস্টন ডাইনামিক্সের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এমআইটির এই নতুন পদ্ধতি রোবটিক্সের ভবিষ্যতে একটি নতুন বিপ্লবের সম্ভাবনা তৈরি করছে।




স্যামসাংয়ের এআই প্রতিযোগিতায় ক্ষতি

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং প্রযুক্তি জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ক্ষেত্রে প্রবেশের পর কোম্পানিটি এক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, মাত্র চার মাসের মধ্যে স্যামসাংয়ের বাজার মূল্য ১২২ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে, যা কোম্পানির মোট সম্পদের এক তৃতীয়াংশের সমান। এটি স্যামসাংয়ের জন্য একটি গুরুতর সংকেত, বিশেষ করে যখন বর্তমান প্রযুক্তিগত বাজারের প্রতিযোগিতা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে।

ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, স্যামসাং এআই প্রযুক্তিতে প্রবেশ করলেও কোম্পানির প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে তারা বাজারে গুরুত্ব হারাচ্ছে। বিশেষ করে এআই মেমোরি উৎপাদনে স্যামসাংয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী এসকে হাইনিক্স বেশ কিছু চমকপ্রদ উদ্ভাবন নিয়ে আসছে, যা তাদের বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সাহায্য করছে। অন্যদিকে, তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) এর অগ্রগতি স্যামসাংয়ের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, স্যামসাংয়ের ব্যবসার প্রসারের জন্য তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি।

এআই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া স্যামসাং, বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে চাইলে তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। বর্তমানের বাজার পরিবেশে স্যামসাং যদি তাদের প্রযুক্তিগত দুর্বলতাগুলি কাটিয়ে উঠতে না পারে, তবে ভবিষ্যতে কোম্পানিটির জন্য আরো চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কোম্পানির ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং, স্যামসাংয়ের উচিত বর্তমান বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাদের পণ্যের গুণগত মান এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

অবশেষে, স্যামসাংয়ের জন্য এটি একটি সংকটজনক মুহূর্ত। তাদের দ্রুত গতিতে পরিবর্তিত প্রযুক্তিগত পরিবেশে টিকে থাকতে হলে স্বল্পমেয়াদী সমস্যাগুলি সমাধান করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। স্যামসাং যদি শীঘ্রই নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়, তবে এটি কোম্পানির জন্য একটি বড় ধরনের পরিণতি ডেকে আনতে পারে।




এআই উপস্থাপক নিয়োগ: সাংবাদিকদের প্রতি নতুন চ্যালেঞ্জ

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উপস্থাপক নিয়োগের মাধ্যমে পোল্যান্ডের একটি রেডিও স্টেশন নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ক্রাকোভের ওএফএফ রেডিও ক্রাকোভ এআইয়ের মাধ্যমে তাদের সম্প্রচার পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা দেশটির মিডিয়া ক্ষেত্রে একটি প্রথম।

এই রেডিও স্টেশনটি সাংবাদিকদের পরিবর্তে এআই-নির্মিত ভার্চুয়াল চরিত্র ব্যবহার করে অনুষ্ঠান সঞ্চালনার পরিকল্পনা করছে। তারা আশা করছে যে, তরুণ শ্রোতাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করবে। স্টেশনটির প্রধান মার্সিন পুলিত জানিয়েছেন, “মিডিয়া ও সাংবাদিকতার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্ভাবনা নাকি হুমকি—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো আমরা।”

এদিকে, সাবেক সাংবাদিক মাতেউশ ডেমস্কি এক খোলা চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এআইয়ের মাধ্যমে মানব কর্মীদের প্রতিস্থাপন একটি বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি করছে। তিনি বলেছেন, “এটি সংবাদমাধ্যম ও সৃজনশীল শিল্পের অভিজ্ঞ কর্মীদের চাকরি হারানোর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।” তার খোলা চিঠিতে বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৫,০০০-এরও বেশি স্বাক্ষর জমা পড়েছে, এবং তরুণদের মধ্যে এ ধরনের পরীক্ষার বিরুদ্ধে বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে।

পুলিত জানিয়েছেন, এআইয়ের জন্য কাউকে চাকরি থেকে সরানো হয়নি, বরং শ্রোতাদের সংখ্যা কম থাকায় সাংবাদিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে। অপরদিকে, দেশটির ডিজিটাল বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিশ্টোফ গাওকভস্কি এআইয়ের ব্যবহার বিষয়ে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।