বাংলাদেশের অর্থনীতির সামনে পাঁচটি প্রধান চ্যালেঞ্জ : ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি পাঁচটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকিং অ্যালমানাকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ‘ব্যাংকিং অ্যালমানাক’ ৬ষ্ঠ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও প্রয়োজনীয় করণীয়

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আর্থিকখাতের সংস্কার, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বেসরকারি খাত সম্প্রসারণের চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ব্যক্তি খাত ও সরকারকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি বলেন, বাজারে অলিগার্কিক মার্কেটের প্রভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২৫ সালের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান এবং কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে পৌঁছানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

বিনিয়োগ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

অর্থনীতিবিদ আরও জানান, বিনিয়োগ স্থবির থাকার কারণ শুধু অর্থনৈতিক নীতি নয়; এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাজনিত বিষয়গুলোরও জড়িত। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, তবে ধীরে ধীরে সফলতা আসছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের বিশেষ দিক

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “সঠিক তথ্যের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। তথ্য বিভ্রাটের কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, আর্থিকখাতের উন্নয়নে দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকিং অ্যালমানাকের এক্সিকিউটিভ এডিটর সৈয়দ জিয়াউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আবদার রহমান।

 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আর্থিকখাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং বিনিয়োগ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এই লক্ষ্যে সরকারি উদ্যোগ এবং ব্যক্তি খাতের সম্পৃক্ততা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




বিশ্বব্যাংকের ১.১৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পেল বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাংক থেকে ১.১৬ বিলিয়ন বা ১১৬ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্থ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার ৯২০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিশ্বব্যাংকের বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস এ ঋণ অনুমোদন করেছে। এই ঋণ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, পানি ও স্যানিটেশন খাতে উন্নতি, এবং সবুজ ও জলবায়ু-সহনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এই ঋণের মাধ্যমে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

১. সেকেন্ড বাংলাদেশ গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট ক্রেডিট

৫০ কোটি ডলারের এই প্রকল্প সবুজ ও জলবায়ু-সহনশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। এতে বায়ুদূষণ হ্রাস, পরিবেশ সুরক্ষা, এবং টেকসই উৎপাদন ও সেবা নিশ্চিত করার জন্য নীতি সংস্কারে সহায়তা করা হবে।

২. স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম

৩৭.৯ কোটি ডলারের এই প্রকল্প সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে সহায়তা করবে। এটি প্রায় ৫১ লাখ মানুষকে সেবা প্রদান করবে এবং মা ও নবজাতকের মৃত্যু কমাতে ভূমিকা রাখবে।

৩. চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট

২৮ কোটি ডলারের এই প্রকল্প চট্টগ্রামের ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ পানির সংযোগ প্রদান করবে এবং প্রায় ২ লাখ নতুন সংযোগ স্থাপন করবে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক জানান, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। এই অর্থায়ন দেশের পরিবেশ ও জলবায়ু সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এ অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর কার্যক্রম, টেকসই স্যানিটেশন, এবং নির্মাণ খাতের সবুজায়ন নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করা হবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




আলু-পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম, ভোগান্তিতে ক্রেতারা

দেশের বাজারে আলু ও পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রাজধানীর বাজারগুলোতে আলুর দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৭০-৭৫ টাকায় এবং দেশি পেঁয়াজ ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে গত মাসেও আলুর দাম ছিল ৫৫-৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা। তবে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ কিছুটা কম দামে, প্রায় ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলু ও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার ক্ষেত্রে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী ক্রেতা জামাল উদ্দিন বলেন, “আলুর দাম ৭০ টাকা এবং পেঁয়াজের ১৫০ টাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু, পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে আমাদের এই দামেই কিনতে হচ্ছে।”

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আলু ও পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে হওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া, চলতি বছরের শুরু থেকেই এই দুই পণ্যের দাম ছিল চড়া। তাই, বাজার এখনো অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে, সবজির বাজারে দেখা গেছে সামান্য স্বস্তি। ঢ্যাঁড়স, পটোল, ঝিঙা, চিচিঙার মতো সবজির দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমেছে। বেগুন, বরবটি, করলা, কাঁকরোল ৮০-১০০ টাকায় এবং পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এসব সবজির দাম ১০০ টাকার ওপরে ছিল।

বাজারের তেলের দিকেও নজর দেয়া যায়, যেখানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম স্থিতিশীল থাকলেও খোলা তেলের দাম বেড়ে প্রতি লিটার ১৭০-১৭১ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগির দাম কমে এখন ১৭৫-১৮০ টাকায় পৌঁছেছে, যা আগের সপ্তাহে ২০০ টাকার ওপরে ছিল।

সবজি বিক্রেতা আবু হানিফ জানান, শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সামনে দাম আরও কমবে বলে আশা করছেন তিনি।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারন ক্রেতারা

বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ক্রমশ বেড়েই চলেছে। রাজধানীর কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, আগানগর, নয়াবাজার এবং কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে গেছে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে এক মাসের ব্যবধানে এই তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৭৫-১৮০ টাকায়, যেখানে বোতলজাত সয়াবিন তেল এখনও আগের দাম ১৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে খোলা পাম তেলের দামও বেড়ে লিটারপ্রতি ১৮০ টাকা ছুঁয়েছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রায় ১১ শতাংশ এবং খোলা পাম তেলের দাম ১২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত অক্টোবর মাসে ভোজ্যতেলের ওপর মূসক হ্রাস করলেও বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

এনবিআর এর ঘোষণা অনুযায়ী, পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ মূসক এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক মওকুফ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানির ক্ষেত্রে অপরিশোধিত তেলগুলোর মূসক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এই সুবিধা চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

তবে বাজারে এর প্রভাব না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডিলাররা রমজান মাসকে সামনে রেখে তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে দাম বেড়ে যাচ্ছে। কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানি রবিউল জানান, ডিলাররা পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল সরবরাহ করছেন না, যার ফলে দাম বেড়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহও কমে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুনরায় আমদানি শুল্ক কমানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের আশঙ্কা, রমজান মাসের আগেই বাজারে আরও এক দফা দাম বাড়ানোর প্রবণতা দেখা দিতে পারে।

“মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”



বছরে আয় সাড়ে ৩ লাখের কম হলে করমুক্ত

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: বাৎসরিক আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার নিচে হলে ব্যক্তিরা করমুক্ত থাকবেন এবং তাদের কোনো আয়কর দিতে হবে না। এই সীমার ওপরে আয় হলে ন্যূনতম আয়কর প্রযোজ্য হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান এই তথ্য জানান। রবিবার শের ই বাংলা নগরে এনবিআর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘আয়কর তথ্য-সেবা মাস’ উদযাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে কর সচেতনতা বাড়ানো ও আয়কর তথ্যসেবা কার্যক্রমের ব্যাপক আয়োজনের কথা বলা হয়।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের সরকারি কর্মকর্তা, তফসিলি ব্যাংক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া সকল করদাতাকে অনলাইনে ই-রিটার্ন ও আয়কর দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।