ছয় বছরের সংগ্রাম শেষে আর্মি স্টেডিয়ামের মঞ্চে র‍্যাপার হান্নান

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ এবং ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি’ গানগুলো মানুষের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল, তেমনি ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় নতুন প্রজন্মকে উদ্দীপ্ত করেছিল হান্নান হোসেন শিমুলের লেখা ও গাওয়া গান ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’। এই গানটি তারুণ্যের সংগ্রামী চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সেই গণ-অভ্যুত্থান থেকে কারাবাস, তারপর দেশের অন্যতম বৃহৎ মঞ্চ ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’-এ তার পারফরম্যান্স, সব মিলিয়ে এটি এক বিশাল যাত্রা।

শনিবার বিকেলে বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্ট। সেখানে তরুণদের সামনে নিজের সিগনেচার র‍্যাপ গানটি গেয়ে শিমুল তাদের স্মরণ করিয়ে দেন জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের দিনগুলোর কথা। আর্মি স্টেডিয়াম মঞ্চে উঠে নিজের ছয় বছরের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই মঞ্চে পৌঁছাতে আমার ছয় বছর লেগেছে।”

২০১৮ সালে র‍্যাপ গানের জগতে পা রাখা হান্নানের প্রথম গান ছিল ‘ডিসকাউন্ট’। এরপর টানা ছয় বছর ধরে একাধিক মিক্সড অ্যালবামে কাজ করেছেন। তবে গণ-অভ্যুত্থানের সময় তার গান ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’ তাকে পৌঁছে দেয় মানুষের হৃদয়ে।

হান্নান জানান, মঞ্চে গান করতে খুব ভালো লেগেছে, তবে পারফরম্যান্সটি যদি সন্ধ্যার পর হতো, দর্শকদের সংখ্যা আরও বেশি থাকায় তার অনুভূতি আরও পূর্ণাঙ্গ হতো।

কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বয়সী দর্শক। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন শফিক আহমেদ, যিনি বলেন, “জুলাইয়ের আন্দোলনে আমাদের ছেলে বাসায় না ফেরা পর্যন্ত আমরা এই গানটা শুনতাম। মনে হতো, শিল্পী আমাদের মনের কথাই বলছেন।”

কনসার্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থ ব্যয় করা হবে গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারের কল্যাণে। এক চিকিৎসক দম্পতি জানান, দীর্ঘদিন পর তারা কনসার্টে এসেছেন শুধু অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে।

স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশের সূচনা পর্বে হান্নানের গান নতুন শক্তি জুগিয়েছে। কনসার্ট শেষে তিনি জানান, তার সামনে আরও বেশ কিছু কনসার্ট রয়েছে, যেখানে তিনি তার গানের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছাতে চান।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম