কুয়াকাটার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রয়োজন দ্রুত উদ্যোগ
পটুয়াখালীর নয়নাভিরাম কুয়াকাটা, যা সাগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ‘সাগরকন্যা’ নামে পরিচিত, আজ জীববৈচিত্র্যের সংকটে ভুগছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এখানে বিভিন্ন বিপন্ন ও সংকটাপন্ন প্রজাতির প্রাণী বাস করলেও ক্রমবর্ধমান দূষণ এবং মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের ফলে এই জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। বিশেষত প্লাস্টিক দূষণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
সম্প্রতি প্লাস্টিক দূষণ রোধে একটি সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ২০ নভেম্বর মাত্র আড়াই ঘণ্টায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ছয় কিলোমিটার এলাকা থেকে ৩২৩ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করা হয়। উদ্ধারকৃত বর্জ্যের মধ্যে ছিল ফুড প্লাস্টিক র্যাপার, পলিথিন, ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য, বোতল, সিগারেটের প্যাকেট, মাছ ধরার পুরনো জাল এবং ই-বর্জ্য। এই উদ্যোগে সহায়তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও সিইজিআইএস।
ইয়ুথনেট বরিশাল এবং অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীসহ ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। তারা শুধু বর্জ্য অপসারণ নয়, সৈকতের সাধারণ মানুষ, পর্যটক এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করেন।
গঙ্গামতির চর, জিরো পয়েন্ট, এবং কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানের সম্মুখভাগ প্লাস্টিক দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এসব স্থানে খাদ্য পণ্যের প্যাকেট ও পানীয় বোতল সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের মতে, পর্যটকদের অসচেতনতার কারণেই প্লাস্টিক বর্জ্য দিন দিন বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অভ্যাস সৈকতের জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করে তুলেছে। এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
এই কার্যক্রমের নেতৃত্বে ছিলেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব আশিকুর রহমান সমী। সার্বিক সহযোগিতা করেছেন পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম