অনলাইন গেম খেলার সতর্কতা: প্রতারণা এড়াতে যা করবেন

বর্তমানে আট থেকে আশি, প্রায় সকল বয়সের মানুষ অনলাইনে গেম খেলার প্রতি আকৃষ্ট। তবে এই শখ কখনো কখনো বিপদের কারণ হতে পারে। সাইবার অপরাধীরা অনলাইন গেমের মাধ্যমে অনেকের অর্থ এবং ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই অনলাইন গেম খেলার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।

বিশ্বস্ত এবং নিরাপদ গেম ডাউনলোড

যে গেম খেলতে চান, তা সবসময় ভেরিফায়েড অ্যাপ স্টোর থেকেই ডাউনলোড করুন। আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে অনিরাপদ কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না।

লিংকে ক্লিক করা এড়ানো

অপরিচিত সোশ্যাল মিডিয়া লিংক কিংবা মেসেজে আসা গেমের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন না। এতে ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার আপডেট

আপনার গ্যাজেট নিয়মিত আপডেট রাখুন। নিরাপত্তার জন্য ভেরিফায়েড অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টিম্যালওয়্যার ব্যবহার করুন।

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা

গেম খেলতে গিয়ে কখনোই অনলাইন প্রতিপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি শেয়ার করবেন না। এছাড়া লিঙ্কের মাধ্যমে কোনো পেমেন্ট অফারে সাড়া দেবেন না।

নিরাপদ নেটওয়ার্ক ব্যবহার

গেম খেলার জন্য সুরক্ষিত নেটওয়ার্ক এবং ভিপিএন ব্যবহার করুন। একই গ্যাজেট থেকে অফিসের কাজ বা অনলাইন ব্যাঙ্কিং এড়িয়ে চলুন।

ব্যাকআপ এবং সুরক্ষা

গ্যাজেটে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ব্যাকআপ নিন এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। গেমিং অ্যাপ ব্যবহারে ভিন্ন ইমেল আইডি ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ।

অনলাইন গেম খেলা নিরাপদ করতে এই সতর্কতাগুলো মেনে চলুন। এতে আপনার শখও পূরণ হবে এবং সাইবার প্রতারণা থেকেও সুরক্ষিত থাকবেন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




সহজ পাসওয়ার্ডে বিপদ, পরিবর্তনে গুরুত্বারোপ

ডিজিটাল যুগে ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের জন্য পাসওয়ার্ড প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তবে পাসওয়ার্ড সহজ রাখার অভ্যাস হ্যাকারদের জন্য সুযোগ তৈরি করে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহারে তথ্য চুরির ঝুঁকি বাড়ে।

প্রযুক্তিবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম নর্ডপাস সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পাসওয়ার্ডগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, টানা দুই বছর ধরে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড হলো ‘১২৩৪৫৬’। এছাড়া তালিকায় অন্যান্য সহজ পাসওয়ার্ড যেমন ‘password’, ‘111111’, এবং ‘qwerty’ উল্লেখযোগ্য।

সহজ পাসওয়ার্ড: ঝুঁকি ও সতর্কতা

নর্ডপাস জানায়, সহজ পাসওয়ার্ড মাত্র মিলিসেকেন্ডে অনুমান করতে পারে হ্যাকাররা। এমনকি অনেকেই সৃজনশীলতার প্রয়াসে ‘P@ssw0rd’ এর মতো জটিল দেখানো পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলেও এটি অনুমান করতেও এক সেকেন্ডের কম সময় লাগে।

নর্ডপাস তাদের বিশ্লেষণে ২.৫ টেরাবাইট ডাটা ব্যবহার করে দেখিয়েছে, ডার্কওয়েবে সহজ পাসওয়ার্ডের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাদের মতে, পাসওয়ার্ড নির্বাচনের সময় ব্যবহারকারীরা সাধারণত গুরুত্ব দেন না।

১০টি ঝুঁকিপূর্ণ পাসওয়ার্ড

নর্ডপাসের মতে, নিম্নলিখিত পাসওয়ার্ডগুলো অত্যন্ত প্রচলিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ:
১. ১২৩৪৫৬ (123456)
২. ১২৩৪৫৬৭৮৯ (123456789)
৩. ১২৩৪৫৬৭৮ (12345678)
৪. পাসওয়ার্ড (password)
৫. কিউডব্লিউইআরটিওয়াই১২৩ (qwerty123)
৬. কিউডব্লিউইআরটিওয়াই১ (qwerty1)
৭. ১১১১১১ (111111)
৮. ১২৩৪৫ (12345)
৯. সিক্রেট (secret)
১০. ১২৩১২৩ (123123)

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির উপায়

বিশেষজ্ঞরা সহজ পাসওয়ার্ড পরিহার করে সৃজনশীল পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির জন্য সংখ্যা, বর্ণ, এবং বিশেষ অক্ষরের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

ডিজিটাল দুনিয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সচেতন হওয়া জরুরি।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রবর্তিত এই সাইবার নিরাপত্তা আইন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল। বিশেষ করে এই আইনকে কালাকানুন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, আজকের বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আইনি যাচাই শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পুনরায় উপদেষ্টা পরিষদের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

এছাড়া, সাইবারস্পেসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় নতুন একটি আইনের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে, যা বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

২০১৮ সালে শেখ হাসিনা সরকারের সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণীত হয়েছিল, তবে এটি সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল। বিশেষ করে, এই আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করার পরেও কিছু বিতর্কিত ধারা নতুন আইনে রাখা হয়েছিল, যার ফলে সরকারের পক্ষ থেকে অপব্যবহার হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

২০২১ সালে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর এই আইনের বিরোধিতা তীব্র হয়ে ওঠে। আইনের অপব্যবহার বন্ধ করার আশ্বাস দেওয়া হলেও, এই আইনের মাধ্যমে গ্রেফতার কার্যক্রম চলতে থাকে। ২০২৩ সালে এক গণমাধ্যমকর্মীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হলে, আইন বাতিলের দাবি আবারও শীর্ষে উঠে আসে।

পরবর্তীতে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটির নাম পরিবর্তন করে ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন’ রাখা হয়, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সংসদে পাস হয়। এই আইনে পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, এক সপ্তাহের মধ্যে এই আইন বাতিল করা হবে এবং এর অধীনে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোকেও বাতিল করা হবে। এছাড়া, মতপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করা এমন সব আইন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



গেম খেলার প্রলোভনে তথ্য চুরি করছে

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: গেম খেলার প্রলোভন দেখিয়ে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করছে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার দল ‘লাজারাস’। তারা একটি ভুয়া গেমের ওয়েবসাইট তৈরি করেছে, যেখানে গেম ডাউনলোডের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

যদি ব্যবহারকারীরা এই ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, তাহলে গোপনে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার ইতিহাস এবং সংরক্ষিত পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে নেয় হ্যাকাররা। পরে এই তথ্যগুলো নানা অপরাধে ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি।

ক্যাসপারস্কির রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্রোম ব্রাউজারের পুরোনো সংস্করণে একটি নিরাপত্তা ত্রুটি রয়েছে। এই ত্রুটির কারণে ব্যবহারকারীরা যদি হ্যাকারদের তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, তাহলে তাদের যন্ত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষতিকর কোড প্রবেশ করে এবং তথ্য চুরি করতে থাকে। গুগল গত মে মাসে ক্রোম ব্রাউজারের নতুন সংস্করণ উন্মুক্ত করেছে, তবে অনেক ব্যবহারকারী তা আপডেট করেননি। ফলে তারা সাইবার হামলার ঝুঁকিতে আছেন। নিরাপদ থাকতে ব্যবহারকারীদের নতুন সংস্করণ ১২৫.০.৬৪২২.৬০/.৬১ ব্যবহার করতে হবে।

হ্যাকাররা গেমারদের আকৃষ্ট করতে ‘ডিট্যাংকজোন’ নামের একটি গেম তৈরি করেছে, যা জনপ্রিয় ‘ডেফিট্যাংক ল্যান্ড’ গেমের আদলে তৈরি। এই কারণে অনেকেই হ্যাকারদের ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছেন, ফলে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি সহজ হয়ে যাচ্ছে।