শীত মোকাবিলায় ৬.৭৯ লাখ কম্বলের বরাদ্দ

চলমান শীতে শীতার্ত ও দুঃস্থ মানুষের সহায়তায় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৬ লাখ ৭৯ হাজার পিস কম্বল ক্রয়ের জন্য ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশের আটটি বিভাগের ৬৪ জেলার ৪৯৫ উপজেলা ও পৌরসভার শীতার্ত মানুষের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। এরই মধ্যে শীতের শুরুতেই দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলায় ১৫ হাজার ২৫০ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

ত্রাণ তহবিল থেকে বরাদ্দকৃত কম্বলগুলো সঠিকভাবে বিতরণ এবং বরাদ্দের অর্থ দিয়ে কম্বল ক্রয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আর্থিক বিধি-বিধান মেনে চলতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় জরুরিভিত্তিতে কম্বল বিতরণ শুরু হয়েছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কম্বল ক্রয় ও বিতরণের প্রতিটি ধাপ নিবিড় তদারকির আওতায় রাখতে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের ভয়াবহ স্মৃতি, পটুয়াখালীতে এখনও আতঙ্কিত মানুষ

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ আঘাত হানে। এক রাতেই পটুয়াখালীতে প্রাণ হারায় প্রায় ৪৬৬ জন, নিখোঁজ হয় আরও ২১১ জন। সিডরের আঘাতে প্রায় ৩,২০০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয় এবং ১,০০,০০০-এরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। যদিও এরপর পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, তবে সিডরের ভয়াবহ স্মৃতি আজও স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

সিডরের প্রভাব পটুয়াখালীতে সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছিল মৎস্য খাতে। প্রচুর মাছের খামার ও জলাশয় ধ্বংস হওয়ায় জেলার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়ক, ঘরবাড়ি, স্কুল-কলেজ, এবং বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তৎকালীন জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন এনজিও যৌথভাবে পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করে, তবে সেই ক্ষতি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।

সিডরের ভয়াবহ স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মো. সেলিম (৫৫) বলেন, “সিডরের দিনটি ভুলতে পারি না। সেদিন অনেক কিছু হারিয়েছি। আবহাওয়া খারাপ হলেই আজও মনে হয় সিডর আবার আসবে।”

জাহানারা বেগম (৬৯) জানান, “আমার বাড়ি সব কিছু ভেঙে গিয়েছিল। সেই ভয়াবহ সময়গুলোর কথা মনে হলে এখনও ভীত হয়ে পড়ি।”

সিডরের রাতে সন্তান হারানো রহিমা বেগম (৬৫) জানান, “সেই রাতের ঝড়ে আমার একমাত্র ছেলে হারিয়ে যায়। অনেক খুঁজেছি, কোথাও পাইনি। আজও আশা করি, সে ফিরে আসবে।” এসব হৃদয়বিদারক স্মৃতি স্থানীয়দের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।

সিডরের পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বেশ উন্নতি হয়েছে পটুয়াখালীতে। বর্তমানে উপকূলীয় অঞ্চলে সাইক্লোন শেল্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দুর্যোগকালীন সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ ও বাঁধ সংস্কারের কাজে ব্যস্ত রয়েছে। ফলে এখনকার মানুষ আরও বেশি প্রস্তুত সাইক্লোনের মতো দুর্যোগের মোকাবিলায়।

তবুও, ২০০৭ সালের সিডরের ভয়াবহ অধ্যায় পটুয়াখালীবাসীর জন্য এক গভীর দুঃস্বপ্ন হয়ে থেকে গেছে, যার স্মৃতি আজও মানুষকে আতঙ্কিত করে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম