পটুয়াখালীর দুমকিতে মুক্তিযোদ্ধার লাশ আটকে রাখল পাওনাদাররা

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জলিশা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম খানের লাশ পাওনা আদায়ের দাবিতে আটকে রেখেছিলেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ২০১৫ সালে আব্দুল হাকিম খান আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জলিশা গ্রামে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময় ৬৭ জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয় এবং প্রতিষ্ঠানের সরকারি হওয়ার আশ্বাসে তাদের কাছ থেকে ৩ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।

কিন্তু গত ৯ বছরেও প্রতিষ্ঠানটি সরকারি স্বীকৃতি পায়নি। এ সময় শিক্ষকেরা কোনো বেতন ছাড়াই প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কাজ করে আসছিলেন। আব্দুল হাকিম খান বেশ কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর গতকাল সন্ধ্যায় মারা যান।

শনিবার সকাল ১০টায় পবিপ্রবি মাঠে জানাজা শেষে লাশ দাফনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা পবিপ্রবির দ্বিতীয় গেটে লাশ আটকে দেন। তারা দাবি করেন, দীর্ঘদিনের বকেয়া টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত লাশ দাফন করতে দেওয়া হবে না।

প্রায় দুই ঘণ্টা লাশ অবরুদ্ধ থাকার পর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহীন মাহমুদ সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেন। তাদের মধ্যস্থতায় ভুক্তভোগীদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহীন মাহমুদ বলেন, “জানাজা নামাজ শেষে আমি চলে আসার পর ঘটনাটি ঘটে। তবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ দুমকির মনির, প্রয়োজন অর্থনৈতিক সহায়তা

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার কার্তিকপাশা গ্রামের মনির হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পেশায় পোশাক শ্রমিক মনির গত ২০ জুলাই গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এবং সেসময় থেকেই পঙ্গুত্ববরণ করে জীবনযুদ্ধে লড়ছেন।

মনির পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তার আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরো পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। মনিরের স্ত্রী ও তিন বছরের ছেলে ইসমাইলের ভরণপোষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পরিবারের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে হাসপাতালে মনিরের সঙ্গে থাকা দুই-তিনজনের খাবারের ব্যবস্থাও করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে ১ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা পাওয়া গেলেও তা ইতিমধ্যে চিকিৎসার জন্য ব্যয় হয়ে গেছে। বর্তমানে পরিবারটি দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে।

আর্থিক সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে মনির বলেন, “টাকার অভাবে চিকিৎসা চালানো এবং পরিবারের দেখভাল করা সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি।”

এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন মাহমুদ বলেন, “গুলিবিদ্ধ মনিরকে সহায়তার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দ্রুতই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন থেকেও তাকে সহায়তা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”

মানুষের সাহায্য ছাড়া মনিরের চিকিৎসা এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করা সম্ভব নয়।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



খল অভিনেতা ওয়াসিমুল বারী রাজীবের মৃত্যুবার্ষিকীতে দুমকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

 

বাংলাদেশের খ্যাতিমান খল অভিনেতা এবং দুমকী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ওয়াসিমুল বারী রাজীবের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভা, মিলাদ এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় দুমকী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জামাল হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুমকী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মোঃ খলিলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম মৃধা, প্রধান শিক্ষক আঃ রব জোমাদ্দার, আঃ জব্বার হাওলাদার, মোঃ রফিকুল ইসলাম খান ও জিএম ইউসুফ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী বৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেতা ওয়াসিমুল বারী রাজীবের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। তারা তার কর্মময় জীবন, চলচ্চিত্রে অবদান এবং রাজনৈতিক সক্রিয়তার কথা উল্লেখ করেন।

আলোচনা শেষে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র খ্যাতিমান অভিনেতা, রাজনীতিবিদ মরহুম ওয়াসিমুল বারী রাজীব ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের গাবতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালে “রাখে আল্লাহ মারে কে” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি, যেখানে তার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা দিয়ে তিনি দর্শকদের মন জয় করেন। ২০০৩ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে ৪র্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাসাস-এর সভাপতি ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই স্ত্রী, তিন পুত্র ও দুই কন্যাসহ অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অনুভব করেন তার সহকর্মী ও ভক্তরা।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম