মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার সহজ কিছু নিয়ম

আপনার মস্তিষ্কের সুস্থতা নিশ্চিত করা আপনার সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মস্তিষ্ক ভালো রাখতে প্রতিদিন কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। চলুন, জেনে নিই কোন নিয়মগুলি আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করবে।

ঘুমের গুরুত্ব
মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সঠিক এবং পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি। একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলুন যা আপনার ঘুম উন্নত করতে সাহায্য করবে। ঘুমানোর আগে মন শান্ত রাখুন, ঘর অন্ধকার করুন এবং আরামদায়ক বিছানায় ঘুমাতে যান। ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে মনের অস্থিরতা কমে যেতে পারে, যা আপনার মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।

শিথিলায়ন চর্চা করুন
আপনার মানসিক ও শারীরিক অস্থিরতা চিহ্নিত করে শিথিলায়ন প্রশিক্ষণ নিন। ঘুমানোর আগে মিউজিক শোনাও একটি ভালো শিথিলায়ন কৌশল হতে পারে। এটি আপনাকে সমস্যা মোকাবিলার দক্ষতা শিখতে সাহায্য করবে।

নতুন চিন্তা করুন
প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন। নতুন ভাষা বা বাদ্যযন্ত্র শেখার চেষ্টা করুন। নতুন কিছু শেখা আপনার মস্তিষ্কের চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
ওমেগা-৩ ও ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার, ফল এবং শাকসবজি নিয়মিত খেতে চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। যারা শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকেন, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কম।

সামাজিকতা বাড়ান
আপনার মা-বাবার সঙ্গে নিয়মিত কথা বলুন, পরিচিতজনদের সঙ্গে আড্ডা দিন এবং দূরবর্তী বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করুন। সামাজিক সম্পর্কগুলি মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




গোপনে ব্রেইনের ক্ষতি করে যে অভ্যাস

আমরা প্রায়ই শারীরিক সুস্থতার দিকে মনোযোগী থাকলেও, কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে গোপনে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। ফোনে অতিরিক্ত সময় কাটানো, প্রয়োজনীয় পুষ্টি না নেওয়া, এবং কিছু সহজ অভ্যাস যা স্বাভাবিক মনে হয়, তা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং সুস্থতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু অভ্যাস যেগুলো ব্রেইনের স্বাস্থ্যকে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করে, আসুন জেনে নিই সেগুলো সম্পর্কে।

ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার
আমাদের দিনকে ফোন ছাড়া কল্পনা করাও যেন অসম্ভব। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ ফোন ব্যবহার আমাদের মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এটি মনোযোগের মাত্রা কমিয়ে দেয়, মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে এবং ঘুমের গুণগত মানেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত ঘুমানোর আগে ফোন ব্যবহার করার ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মানসিক স্বচ্ছতা কমে যায়। সময়-সুযোগে ফোন-মুক্ত সময় কাটানো এবং স্ক্রীন থেকে বিরতি নেওয়া মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
ভাজা খাবার, চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি আকর্ষণ মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে। এ ধরনের খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ব্রেইনের কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে ব্রেইনকে সুস্থ রাখা সম্ভব। সবুজ শাক-সবজি, বাদাম, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছসহ সঠিক খাবারের মাধ্যমে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়।

নতুন কিছু না শেখা
মস্তিষ্ক সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ পায় এবং এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যখন আমরা নতুন কিছু শেখা বন্ধ করে দিই, তখন মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। মস্তিষ্কের সংযোগ শক্তিশালী রাখতে পড়াশোনা, নতুন ভাষা শেখা কিংবা মস্তিষ্কের গেমস খেলা প্রয়োজন। এটি মস্তিষ্কের ধার্মিকতা এবং তীক্ষ্ণতা বজায় রাখে।

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা
শারীরিক কার্যকলাপ কেবল শরীরের জন্য নয়, এটি মস্তিষ্কের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগের জন্য উপকারী। দীর্ঘ সময় বসে থাকার অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। তাই কিছুক্ষণ পরপর দাঁড়িয়ে হাঁটাহাঁটি বা ডেস্ক এক্সারসাইজ করা উচিত।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম