পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও ক্লান্তি লাগছে? ভয়ংকর রোগের আভাস কিনা যাচাই করে নিন

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কাজের চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব পালন ও নানাবিধ চিন্তা-ভাবনা অনেক সময় আমাদের ক্লান্ত করে তোলে। অধিকাংশ মানুষই ধরে নেন, অতিরিক্ত কাজের কারণেই ক্লান্তি হচ্ছে। তাই কিছুটা বিশ্রাম বা ঘুম নিয়ে আবার কাজে লেগে পড়েন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ঘুমের পরও যখন ক্লান্তি কাটে না, তখন তা স্বাভাবিক ক্লান্তি নয় বরং ভয়ংকর কিছু রোগের সংকেত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন স্থায়ী ক্লান্তি শরীরে আয়রনের ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে। ভারতীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ফেমিনা এ বিষয়ে জানিয়েছে যে, আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।

ক্লান্তির কারণ আয়রনের ঘাটতি

মানুষের শরীরকে শক্তি যোগানোর জন্য সঠিক পরিমাণে আয়রনের প্রয়োজন। এটি হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে, যা রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সারা শরীরে সরবরাহ করে। কিন্তু যখন আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়, তখন শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। ফলে সাধারণ কাজ করেও ক্লান্ত লাগতে পারে, এবং ত্বক বিবর্ণ হয়ে যায়। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীদের ক্ষেত্রেই এই ঘাটতির প্রভাব পড়তে পারে, যা কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ

শরীরে আয়রনের অভাব হলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, এবং ত্বকের ফ্যাকাসে ভাবের মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়। এছাড়া, অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা হতে পারে। অনেক নারীর ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের সময় এই সমস্যাগুলো মারাত্মক আকারে প্রকাশ পায়। তাছাড়া, যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও ক্লান্তি বোধ করেন, তাদের দ্রুত আয়রন পরীক্ষা করানো উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সঠিক সময়ে শনাক্ত করা হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করা যায়।

বিশ্লেষণ ও প্রতিকার

আয়রনের ঘাটতি দূর করতে প্রথমেই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। পালং শাক, লাল শাক, চিড়াভাজা বাদাম, ডাল ও মাংস থেকে আয়রন পাওয়া যায়, যা শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। এছাড়া, প্রয়োজনীয় পরিমাণে আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। খাদ্য তালিকায় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার যোগ করার পাশাপাশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, পেয়ারা ইত্যাদি খেলে আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বাড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আয়রনের ঘাটতি যদি যথাসময়ে পূরণ না করা হয়, তাহলে তা ধীরে ধীরে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তি বা অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।