উপকূলজুড়ে শীতের তীব্রতায় কাহিল পটুয়াখালীর মানুষ

পটুয়াখালীর উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষজন। সন্ধ্যার পর থেকেই হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। এতে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে পটুয়াখালীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও বাতাসের কারণে শীতের প্রকোপ আরও বেড়েছে। বিশেষ করে হতদরিদ্র, ছিন্নমূল এবং স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে।

কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা বেশিরভাগ পর্যটক সন্ধ্যার পরপরই হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রাত গভীর হওয়ার আগেই দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটক শফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকায় শীতের প্রকোপ তেমন নেই। কিন্তু কুয়াকাটার শীত ও বাতাসের কারণে বাইরে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে থাকা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার জাহান জানান, “গত এক মাস ধরে উপকূলীয় এলাকায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। তবে শীতের তীব্রতা এখন বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ১৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জানুয়ারি মাসে ২-৩টি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




কুয়াকাটায় বছরের প্রথম দিন ঘন কুয়াশায় মোড়ানো

বছরের প্রথম দিনে কুয়াকাটায় সূর্যের দেখা মেলেনি। সকাল থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে ছিল সমুদ্রসৈকত। এই মনোরম পরিবেশে পর্যটকরা যেমন হতাশ হয়েছেন সূর্যের হাসি দেখতে না পেয়ে, তেমনি উপভোগ করেছেন কুয়াশায় মোড়ানো প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য।

পর্যটকদের অনেকেই বলেন, বছরের শুরুতে কুয়াকাটার পরিবেশ একেবারে সিনেমার দৃশ্যের মতো মনে হয়েছে। ঘন কুয়াশার মধ্যেও সমুদ্রের গর্জন, ঢেউয়ের খেলা এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার সাথে সৈকতে হাঁটার অভিজ্ঞতা ছিল ভিন্ন রকম।

স্থানীয় হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন বছর উপলক্ষে পর্যটকেরা আগের রাত থেকেই কুয়াকাটায় ভিড় করেছেন। তবে ঘন কুয়াশার কারণে অনেকেই সকালবেলার সূর্যোদয়ের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এর পরেও সৈকতে পর্যটকদের উপস্থিতি কমেনি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, এই অঞ্চলে কুয়াশা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। তবে পর্যটকদের আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, দিনের বেলায় সূর্যের দেখা পাওয়া সম্ভব।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরের প্রথম দিন হওয়ায় কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ সবার জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত এনে দিয়েছে। বিশেষ করে পর্যটকদের অনেকেই প্রথমবারের মতো এমন মোহনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেছেন।

কুয়াকাটা পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের শুরুতে এমন আবহাওয়া একদিকে যেমন পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়, তেমনি এটি ভবিষ্যতে কুয়াকাটার পর্যটনশিল্পকে নতুনভাবে পরিচিত করতে পারে।

 

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




রাখাইন পরিবারে সহায়তা: পটুয়াখালীতে নতুন দৃষ্টান্ত

কলাপাড়ার নয়াপাড়া রাখাইন পল্লীতে পাঁচ রাখাইন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৬ শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি এবং পাঁচ শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে এই উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম। রাখাইন নেতা এমং তালুকদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বরিশাল আদিবাসী ফোরামের সভাপতি মংচোথিন তালুকদার এবং কারিতাস কর্মকর্তা রাখাইন মংমিয়া।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, “রাখাইন জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, রাখাইন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে নয়াপাড়ায় দুটি রাখাইন ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানে থাকবে তাঁতসহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী উপকরণ।

উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ শুধু রাখাইন সম্প্রদায়ের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে না, বরং কুয়াকাটায় পর্যটকদের আকর্ষণও বৃদ্ধি করবে। পর্যটকরা এখানে এলে রাখাইন জনগোষ্ঠীর জীবন ও সংস্কৃতির নানাদিক সম্পর্কে জানতে পারবেন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম