খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ স্থগিত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে মুক্তিযোদ্ধা দলের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। এ সমাবেশটি আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সকালেই নিশ্চিত করেন যে, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

এদিকে, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। দলের অভ্যন্তরে আলোচনা চলছে কবে সমাবেশটি পুনরায় আয়োজন করা হবে। তবে, নেতারা বেগম জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য সকলের দোয়া চেয়েছেন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



রাঙ্গাবালীতে বিএনপি সভাপতির আহ্বান, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে আলোচনার ঝড়

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহমান ফরাজী সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিএনপিতে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওটি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। গত শুক্রবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ডের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়, যেখানে ফরাজীকে আওয়ামী লীগের নিরীহ নেতাকর্মীদের বিএনপিতে আমন্ত্রণ জানাতে দেখা গেছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, শনিবার রাঙ্গাবালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত একটি জনসভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এ উপলক্ষে গত ৬ নভেম্বর বিকেলে রাঙ্গাবালী বাজার এলাকায় আয়োজিত এক পথসভায় আবদুর রহমান ফরাজী বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “রাঙ্গাবালীতে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপি দলে স্বাগত জানানো হবে। আমি, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহমান ফরাজী, আপনাদের পাশে আছি।” তার এই বক্তব্য ভিডিও আকারে ধারণ করে ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপলোড করা হলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ফরাজীর আহ্বান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “এটি মূলত বিএনপির একটি রাজনৈতিক কৌশল। আমাদের দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগদানের কোনো প্রশ্নই আসে না।” অন্যদিকে, অনেকেই মনে করছেন, ফরাজীর বক্তব্য আওয়ামী লীগের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে আবদুর রহমান ফরাজী বলেন, “আমি বিষয়টি ওভাবে বলিনি। আমি শুধুমাত্র নিরীহ ও নির্যাতিত আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিএনপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। যারা সন্ত্রাসে লিপ্ত, তাদের কোনো ছাড় নেই। আমরা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। বিএনপি সবসময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, তাই নিরীহ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”

রাঙ্গাবালী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, “আমরা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। ফরাজী সাহেবের বক্তব্য আমাদের দলের নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। আমরা আশা করি, আওয়ামী লীগের নির্যাতিত কর্মীরা বিএনপিতে যোগদান করে আমাদের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবেন।”

এই ভিডিও ভাইরালের পর রাঙ্গাবালীতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতর হচ্ছে। ফরাজীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে আলোচনা হচ্ছে এবং দুই দলের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুম বিল্লাহ জানান, “আমরা এই ভিডিওটি সম্পর্কে অবগত আছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সবসময় প্রস্তুত আছি। কোনো পক্ষ যদি আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করে, তবে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।”

এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ফরাজীর এই আহ্বান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, এটি একটি রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ, আবার কেউ কেউ ভাবছেন, ফরাজী হয়তো সত্যিই আওয়ামী লীগের নিরীহ কর্মীদের রক্ষা করতে চান।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, “রাজনীতির মাঠে এমন আহ্বান নতুন কিছু নয়। তবে আগামী নির্বাচনের আগে এমন বক্তব্য রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তুলছে। আমরা আশা করি, দুই দলই সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজ করবে।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির গ্রেফতার

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক ::গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু মামলা অত্যন্ত গুরুতর এবং তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের উপর এর প্রভাব পড়েছে।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ২০১১ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হন।

এরপর শেখ হাসিনার গঠিত মন্ত্রিসভায় তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। তবে তার বিরুদ্ধে চলমান আইনগত সমস্যাগুলো তার রাজনৈতিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করেছে, যা দলের জন্যও একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, উবায়দুল মোকতাদিরের গ্রেফতার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং এ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন যে, এটি সরকারের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।




দেশে ফিরলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

দেশে ফিরলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক :: অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১০টা ২৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

বিএনপির মহাসচিবের এই সফরটি ছিল মূলত ব্যক্তিগত। পরিবারকে সময় দিতে গত ৯ অক্টোবর তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। সফরের আগে তিনি জানান, তার বড় মেয়ে ড. শামারুহ মির্জা এবং অন্যান্য স্বজনরা অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বসবাস করছেন। তিনি স্ত্রী রাহাত আরা বেগমের সঙ্গেও দেখা করতে অস্ট্রেলিয়া যান, যিনি বিগত দেড় মাস ধরে মেয়ের কাছে রয়েছেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্যই মূলত এই সফর।

মির্জা ফখরুলের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিএনপির সমর্থকদের মাঝেও আলোচনা ছিল। তার মেয়ে ড. শামারুহ মির্জা ২০০৬ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানেই তার স্বামী ও সন্তানদের সঙ্গে জীবনযাপন করছেন। ছোট মেয়ে সাফারুহ মির্জা ঢাকায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতা করেন এবং বাবার এই সফরকালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়েও তার উদ্বেগ প্রকাশিত হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশে ফেরার পর, বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। দেশে ফিরে আসার পরপরই রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল বিএনপির চলমান আন্দোলন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন।