ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে শুরু হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম

আগামী রোববার থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের শূন্য কক্ষগুলোতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দাফতরিক কার্যক্রম শুরু হবে। এমন ঘোষণা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর হেয়ার রোডে তার বাসভবনে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “দাফতরিক কার্যক্রম একদিনের জন্যও বন্ধ থাকবে না। রোববার থেকেই নগর ভবনের শূন্য কক্ষগুলোতে মন্ত্রণালয়ের কাজ শুরু হবে। জনবান্ধব উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের আরও সক্রিয় হতে হবে।”

তিনি আরও জানান, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলের দুর্নীতির তথ্য লোপাটের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটতে দেওয়া হবে না।”

উপদেষ্টা আরও বলেন, “আগের চেয়ে আরও দৃঢ়চিত্তে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। জনস্বার্থে কাজের গতি বাড়াতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



দুমকিতে জরাজীর্ণ ডাকঘরের কার্যক্রম চলছে পলিথিন টাঙিয়ে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলায় অবস্থিত প্রধান ডাকঘরের ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যার ফলে ডাকঘরের কার্যক্রম চলছে অত্যন্ত সংকটপূর্ণ পরিবেশে। অফিসের কার্যক্রম চালাতে কর্মকর্তারা পলিথিন টাঙিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।

দুমকি উপজেলা সদরের একমাত্র ডাকঘরটি বহু বছর ধরে সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে, যার ফলে ভবনটির মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে কর্মকর্তারা এবং গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। পলিথিন টাঙানোর ফলে ভেতরের পরিবেশ আরও অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে, এবং জরুরি জিনিসপত্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে গেছে।

সরেজমিনে পরিদর্শন করার সময় দেখা যায়, ডাকঘরের দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফাটল দেখা যাচ্ছে। ছাদ এবং দেয়ালের পলেস্তরা উঠে গিয়ে রডগুলো বের হয়ে গেছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। ডাকঘরের কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও, বৃষ্টির সময় পানির কারণে ফ্লোরে জল জমে যায়, যা কাজকে আরও কঠিন করে তোলে।

দুমকি উপজেলা সদরে একতলা বিশিষ্ট প্রধান ডাকঘরের মূল কার্যক্রম প্রধান কক্ষে পরিচালিত হয়। ভবনটির সামনের দক্ষিণ অংশে ব্যাংক এশিয়া এবং উত্তর পার্শ্বে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চলমান রয়েছে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ ডাকঘরে সেবা নিতে আসেন, যার ফলে ক্রমাগত লোকসমাগমের কারণে পরিবেশ আরও চাপযুক্ত হয়ে পড়ছে।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন যে, ডাকঘরের এই বেহাল দশা তাদের জন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি করছে। ডাকঘরের কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী গ্রাহক রানার ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, “আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। যেন কোন সময় পলেস্তারা খসে পড়ে।”

ডাকঘরের ভিতরে পরিচালিত ব্যাংক এশিয়া’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান রনি জানিয়েছেন, “আমরা ডিজিটাল ডাক সার্ভিসের পাশাপাশি সকল ধরনের ডাক সার্ভিস প্রদান করছি। তবে ভবনটির অবস্থা খুবই খারাপ, যা আমাদের কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি করছে।”

১৯৮১ সালের ১২ জানুয়ারি তৎকালীন কেবিনেট সচিব এম কেরামত আলী ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ১৯৮৭ সালে নির্মাণ করা হয়। তবে এত বছর পরে, ভবনটির অবস্থা এখন অনেকটাই খারাপ। মূল ভবনের পিছনে পোস্ট মাস্টারের জন্য ফ্যামিলি কোয়ার্টারটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ডাকঘরের চারপাশের পরিবেশে ময়লা আবর্জনার দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। মো. রুবেল হোসেন নামের একজন শিক্ষক বলেন, “আমি এখানে বেশ কয়েক বছর আসা-যাওয়া করি। ছাদের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের কারণে ঢুকতেই ভয় লাগে।”

এ বিষয়ে ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মজিবুর রহমান বলেন, “ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, তাই পলিথিন টাঙিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলছে। অনেক লেখালেখির পর ৩/৪ বছর পূর্বে ছাঁদ মেরামত করা হলেও কিছু দিন পর আবার পানি পড়া শুরু হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল পটুয়াখালী বরাবর বেশ কয়েকবার লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।”

এদিকে, ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মাহাবুবুর রহমান জানিয়েছেন, “দুমকি উপজেলার ডাকঘরটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা ডিজি বরাবর লিখিতভাবে অবগত করেছি এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছি।”

ডাকঘরের এই অবস্থা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় জনগণ, যেন তারা একটি নিরাপদ এবং কার্যকর সেবা পেতে পারেন।