গুগল পিক্সেলের নতুন এআই রিপ্লাই ফিচার

গুগল তার পিক্সেল স্মার্টফোনে নতুন একটি এআই-ভিত্তিক ফিচার যুক্ত করেছে, যা মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনে স্বয়ংক্রিয় ও প্রাসঙ্গিক উত্তর প্রদান করবে। ‘এআই রিপ্লাই’ নামের এই ফিচারটি ব্যবহারকারীদের জন্য মেসেজিংকে আরও সহজ ও দ্রুততর করতে ডিজাইন করা হয়েছে।

নাইট টু ফাইভ গুগলের রিপোর্ট অনুযায়ী, এআই রিপ্লাই প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি হয়েছে, যা ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলতে পারবে। এটি অপর প্রান্তের কথোপকথনের প্রাসঙ্গিকতা ধরে রেখে দ্রুত ও সঠিক প্রতিক্রিয়া জানাবে।

ফিচারের কার্যকারিতা ও ভবিষ্যৎ
ফিচারটি কল রিসিভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করবে। এটি মানুষের আবেগ ও প্রাসঙ্গিক তথ্য বুঝে ছোট ছোট বাক্যে উত্তর দেবে, যেমন ‘ক্যান ইউ সে মোর’, ‘কল মি ব্যাক লেটার’। ভবিষ্যতে এটি আরও জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এআই রিপ্লাই ফিচারটি ইতোমধ্যে বিটা পর্যায়ে রয়েছে। এটি গুগলের অ্যাডভান্স ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের ওপর ভিত্তি করে কাজ করবে, যা এটিকে অধিক দক্ষ ও প্রাসঙ্গিক উত্তর দেওয়ার সক্ষম করে তুলবে।

গুগল পিক্সেল স্মার্টফোনের আগের একটি বৈশিষ্ট্য ‘কল স্ক্রিন’ ইতিমধ্যে ব্যবহারকারীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়। এটি টেলি মার্কেটিং ও অজানা কলের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তর দিত। নতুন এআই রিপ্লাই ফিচারটি এই কল স্ক্রিন বৈশিষ্ট্যকে আরও উন্নত করে মেসেজিং অভিজ্ঞতা আরও স্বয়ংক্রিয় ও সুবিধাজনক করে তুলবে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



কবি হেলাল হাফিজের বিদায়: একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি

বাংলা সাহিত্যের অনন্য কবি হেলাল হাফিজ আর নেই। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে যিনি একটি বই দিয়েই জয় করেছিলেন অসংখ্য পাঠকের হৃদয়। গতকাল শাহবাগের সুপার হোমে থাকা অবস্থায় বাথরুমে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। পরে পিজি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর (৭ অক্টোবর ১৯৪৮ – ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪)।

হেলাল হাফিজের লেখা ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ আজও বাংলা ভাষার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া কাব্যগ্রন্থগুলোর একটি। তার কবিতা শুধু শব্দের গাঁথুনি নয়, ছিল স্বাধীনতার স্পন্দন। সমকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে পরিচিত এই সাহিত্যিক স্বাধীন বাংলাদেশে কবিতার নতুন ধারার প্রবর্তন করেছিলেন।

তার মৃত্যুতে শোকাহত হয়েছেন সাহিত্য ও সংস্কৃতিজগতের মানুষ। কবি সাদী কাউকাব লেখেন, ‘বাংলাদেশকে বাংলাদেশি কবিতা উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।’ অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম প্রিয় কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিলেন প্রিয় কবি হেলাল হাফিজ। অনন্তে এই যাত্রা শুভ হোক।’

অভিনেত্রী বন্যা মির্জা শেয়ার করেন তার কবিতার কিছু লাইন, ‘কবিতা কি কেবল শব্দের মেলা, সংগীতের লীলা? কবিতা তো অবিকল মানুষের মতো, চোখ-মুখ-মন আছে, সেও বিবেক শাসিত।’

গুণী নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন স্মরণ করেন কবির বিখ্যাত পঙক্তি, ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’

সাংবাদিক গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ লিখেছেন, ‘যৌবনে তার মিছিলের ডাক উপেক্ষা করা আমাদের প্রজন্মের জন্য কঠিন ছিল। তিনি আজ থেকে আর লৌকিক নন। মিছিলের কবি, ভালোবাসার কবি হেলাল হাফিজ, আপনার প্রস্থান সত্যিই বেদনার।’

তরুণ সাংবাদিক নাজমুস সাকিব রহমান জানান, ‘তার কবিতা আমাদের জীবনের বাস্তবতার পাশে দাঁড়িয়েছিল। এমন একজন কবি আর কখনো আসবেন না।’

নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী লিখেছেন, ‘একজন অভিমানী কবি। তিনি বাংলার কবি। হেলাল হাফিজ। পরপারে ভালো থাকবেন আপনি। শ্রদ্ধা আর প্রণাম।’

সকলেই যেন এক সুরে তাকে স্মরণ করেছেন। তার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন মঞ্চনির্দেশক ওয়াহিদুল ইসলাম, নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, ইরানি বিশ্বাসসহ অনেকে।

কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যজগতে শূন্যতা নেমে এসেছে। তার কবিতায় দ্রোহ, প্রেম ও মানবিকতার যে অমোঘ আহ্বান, তা আজও পাঠকদের মুগ্ধ করে। বিদায় কবি। আপনার শব্দমালা চিরকাল বেঁচে থাকবে বাংলার হৃদয়ে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম