মুখের কোণে ঘা হলে কীভাবে দ্রুত সেরে উঠবেন: ঘরোয়া উপায়

মুখের কোণে ঘা হলে খাওয়া, কথা বলা এবং হাসা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। এই ঘা সাধারণত মানসিক চাপ, ছোটখাটো আঘাত বা কিছু খাবারের কারণে হয়। যদিও এটি সাধারণত এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়, তবে কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার এই প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করতে এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, মুখের কোণে ঘা হলে তা দূর করার কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায়-

নারিকেল দুধ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
নারিকেল দুধ শুধু খাবারের উপাদান নয়, এটি মুখের ঘা সেরে উঠাতে অদ্ভুতভাবে কার্যকরী। ফাইটোথেরাপি রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নারিকেল দুধের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য মুখের আলসারের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এর শীতল প্রভাব আক্রান্ত স্থানকে প্রশমিত করতে সহায়তা করে।

কীভাবে ব্যবহার করবেন:
পানির সঙ্গে গ্রেট করা নারিকেল ব্লেন্ড করে এবং ছেঁকে নারিকেলের দুধ বের করুন। দিনে ২-৩ বার, ৩০ সেকেন্ডের জন্য আপনার মুখের চারপাশে দুধটি লাগান।

মধু ও হলুদের মিশ্রণ
মধু একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, এবং হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামক যৌগ থাকে যা প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এই দুটি উপাদান মিশিয়ে মুখের ঘা দূর করা যায় দ্রুত।

কীভাবে ব্যবহার করবেন:
১ চা চামচ মধুর সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আক্রান্ত স্থানে এই পেস্টটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা তার ত্বক নিরাময়ের জন্য সুপরিচিত, এবং মুখের ঘা বা আলসারের ক্ষেত্রেও এর কার্যকারিতা কম নয়। এটি প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে এবং দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে।

কীভাবে ব্যবহার করবেন:
একটি তাজা অ্যালোভেরার পাতা কেটে জেল বের করে নিন এবং একটি পরিষ্কার তুলো দিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। দ্রুত ফলাফলের জন্য দিনে ২-৩ বার এটি ব্যবহার করুন।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 




পেটের জন্য উপকারী ৪ খাবার

বর্তমান সময়ে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবারের প্রভাব পরিপাকতন্ত্রে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেকেই খাবারের পর পেট ফাঁপা, বুকে জ্বালাপোড়া কিংবা অস্বস্তিতে ভোগেন। তবে কিছু খাবার রয়েছে যা এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে সহায়তা করতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক পেটের জন্য উপকারী ৪টি খাবারের কথা।

১. হলুদ:

হলুদ একটি জনপ্রিয় মসলা, যা ঔষধি গুণের জন্য পরিচিত। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত হলুদ খেলে এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ এবং পরিপাকতন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। আপনার প্রতিদিনের খাবারে হলুদ যোগ করা এক দারুণ উপায় হতে পারে।

২. বাটারমিল্ক:

বাটারমিল্ক হল এক প্রকারের পানীয় যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত প্রোবায়োটিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। খাবারের পর এক গ্লাস বাটারমিল্ক পান করলে এটি পরিপাকতন্ত্রকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে এবং পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমায়। এর সঙ্গে গোলমরিচ, জিরা বা পুদিনা যোগ করা যেতে পারে।

৩. আমলকি:

আমলকি ভিটামিন সি-এর চমৎকার উৎস এবং এটি পেটের জন্যও উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হজমের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আমলকি নিয়মিত খেলে ডায়রিয়া এবং পেশীর ক্র্যাম্পের মতো সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

৪. ঘি:

ঘি একটি স্বাস্থ্যকর সুপারফুড যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্য বেশ উপকারী। এতে বিউটরিক অ্যাসিড থাকে, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে এবং পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তবে মনে রাখতে হবে, এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম



হলুদ ও মধুর উপকারিতা

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: হলুদ এবং মধু, দুটি প্রাকৃতিক উপাদান, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অসংখ্য উপকারিতা প্রদান করে। এই দুই উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে যেসব স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়, সেগুলো নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

১. অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি পাওয়ার হাউস
হলুদ ও মধুর সংমিশ্রণ অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। হলুদে থাকা কারকিউমিন প্রদাহ দূর করতে সহায়তা করে, যা বাতের মতো প্রদাহজনিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। যারা এসব সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য হলুদ ও মধু খাওয়া বিশেষ উপকারী।

২. ইমিউন সিস্টেম বুস্টার
হলুদ ও মধুর মিশ্রণ একটি শক্তিশালী ইমিউন-বুস্টিং সিস্টেম। হলুদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক, কারণ এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। এটি ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। অপরদিকে, কাঁচা মধু এনজাইম ও পুষ্টির ভালো উৎস, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই ঠান্ডা ঋতুতে এই দুই উপাদান একসঙ্গে খেলে সংক্রমণ ও অসুস্থতা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

৩. হজমের সামঞ্জস্য
মধু এবং হলুদ দুর্দান্ত হজমকারী উপাদান। এটি পিত্তের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে, যা শরীরের চর্বি হজমে সহায়তা করে। মধু একটি হালকা রেচক, যা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টকে শান্ত করে এবং পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা দূর করে। এটি অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়ক, যা পুষ্টি শোষণ এবং পর্যাপ্ত হজমের জন্য অপরিহার্য।

৪. উজ্জ্বল ত্বক সমাধান
হলুদ ও মধুর মিশ্রণ ত্বকের স্বাস্থ্য ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। হলুদ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যে ভরপুর, যা ব্রণ ও জ্বালাপোড়া কমাতে সহায়ক। অন্যদিকে, মধু একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকে পুষ্টি যোগায়। এই দুটি উপাদান সম্মিলিতভাবে মুখের উজ্জ্বলতা এবং স্বাস্থ্যকর টেক্সচার নিশ্চিত করতে পারে।

৫. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি
হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি নিউরোইনফ্লেমেশন এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে বাধা দেয়, যা নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রতিরোধে সাহায্য করে। মধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ফ্রি র‌্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। তাই এই দুই উপাদান একসঙ্গে খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করা সম্ভব।